একসঙ্গে উঠলেন নাগরদোলায়, হঠাৎ অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে গলা কেটে হত্যা
Published: 14th, April 2025 GMT
পারিবারিক কলহের জেরে নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে নাগরদোলায় উঠিয়ে গলা কেটে হত্যা করেছে সাকিব হোসেন (২৫) নামে এক ব্যক্তি। নিহতের নাম লাকি বেগম (১৯)। তিনি ওই উপজেলার কালাপুল এলাকার বেদে পল্লীর মনছুর আলীর মেয়ে। সোমবার রাত ৮টার দিকে উপজেলার একলাশপুর ইউনিয়নের হাফেজ মহিন উদ্দিনের মাজরের ওরসের মেলায় এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর তাৎক্ষণিকভাবে স্থানীয় লোকজন সাকিবকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছে। তিনি নোয়াখালী সদর উপজেলার এওজবালিয়া বেদে পল্লীর মঙ্গল মিয়ার ছেলে।
বেগমগঞ্জ মডেল থানার ওসি লিটন দেওয়ান সোমবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, হত্যার ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।
নিহতের মা শেফালী বেগম জানান, এক বছর আগে পারিবারিকভাবে সদর উপজেলার এওজবালিয়া ইউনিয়নের মান্নান নগরের বেদে পাড়ার মঙ্গলের ছেলে শাকিবের সঙ্গে লাকীর বিয়ে হয়। লাকী পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। গত ১৫ দিন আগে তিনি শ্বশুরবাড়ি থেকে স্বামীসহ বাবার বাড়িতে আসেন। রোববার স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া হয়। একপর্যায়ে শাকিব স্ত্রীকে মারধর করে জামা কাপড় ছিঁড়ে ফেলেন। পরে নিজের ব্যবহৃত একটি মুঠোফোনে ভেঙে ফেলেন এবং নিজের মাথা নিজে ফাটান। সোমবার সন্ধ্যার দিকে লাকীর স্বামী ও তার পরিবারের সদস্যরা একলাশপুর ইউনিয়নের মহিন উদ্দিন হাফেজের ওরসের মেলায় ঘুরতে যান। সেখানে স্বামী-স্ত্রী একসঙ্গে নাগরদোলায় ওঠেন।
শেফালী বেগম নাগরদোলায় থাকা প্রত্যক্ষদর্শী এক নারীর বরাত দিয়ে জানান, একপর্যায়ে নাগরদোলায় শাকিব তার স্ত্রী গলায় ছুরিকাঘাত করে গুরুত্বর আহত করে। পরে রক্তাক্ত অবস্থায় স্ত্রীকে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসক লাকীকে মৃত ঘোষণা করেন।
বেগমগঞ্জ থানার ওসি লিটন দেওয়ান বলেন, অভিযুক্ত সাকিব হোসেনকে আটক করা হয়েছে। পারিবারিক কলহের জের ধরে এ ঘটনা ঘটে। নিহতের মরদেহ ২৫০ শয্যার নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের মর্গে রয়েছে। নিহতের পরিবারের লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব গমগঞ জ ন গরদ ল য় উপজ ল র
এছাড়াও পড়ুন:
অপহরণে বাঁধা দেওয়ায় যুবককে গুলি করে হত্যা, আটক ৩
অপহরণে বাঁধা দেওয়ায় নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে মো. শাকিল (৩১) নামের এক যুবককে গুলি করে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় নিহতের ছোটভাই শুভকেও (২৮) গুলি করলে লক্ষ্যভ্রষ্ট হলে তিনি প্রাণে বেঁচে যান। পরে তাকে পিস্তলের বাট দিয়ে মাথায় আঘাত করে আহত করে। পুলিশ তাৎক্ষণিক হত্যাকাণ্ডের কোনো কারণ জানাতে পারেনি।
সোমবার রাত ৮টার দিকে উপজেলার ছয়ানী ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের গঙ্গাবর বাজারের ইসলামিয়া মার্কেটের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত শাকিল একই গ্রামের মো. সোলাইমান খোকনের ছেলে এবং পেশায় একজন থাই গ্লাস মিস্ত্রি ছিলেন। ঈদুল আযহার আগে শাকিলের সৌদি আরব যাওয়ার কথা ছিল।
স্থানীয়রা জানায়, রাত ৮টার দিকে শাকিলসহ কয়েকজন ছয়ানীর গঙ্গাবর বাজারের ইসলামিয়া মার্কেটের একটি দোকানে বসে চা খাচ্ছিলেন। ওই সময় এলাকায় একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশাযোগে নয়জন অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী এসে লাবিব নামে এক যুবককে জোরপূর্বক তুলে নিতে চেষ্টা করে। তখন শাকিলসহ আরো কয়েকজন তাদের বাঁধা দিলে সন্ত্রাসীরা শাকিলকে গুলি করে। পিস্তলের গুলি শাকিলের বুকে ও মাথায় বিদ্ধ হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন।
এ সময় তার ছোটভাই শুভ বড়ভাই শাকিলকে বাঁচাতে গেলে তাকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে সন্ত্রাসীর দল কিন্তু গুলি লক্ষ্যভ্রষ্ট হলে তাকে পিস্তলের বাট দিয়ে মাথায় আঘাত করে আহত করে। গুলি করে পালিয়ে যাওয়ার সময় স্থানীয় লোকজন ধাওয়া করে তিন জনকে আটক করে গণধোলাই দিয়ে আটক করে রাখে। তবে তাৎক্ষণিক আহতদের নাম পরিচয় জানা যায়নি।
তাৎক্ষণিক এলাকার লোকজন দুই ভাইকে উদ্ধার করে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক শাকিলকে মৃত ঘোষণা করে। নিহতের ছোট ভাই শুভ জানান, আটকসন্ত্রাসীদের সাথে স্থানীয় গঙ্গাবর গ্রামের যুবক লাবিবের সাথে পূর্ব বিরোধ ছিল। ওই বিরোধকে কেন্দ্র করে বেগমগঞ্জ উপজেলার আগলাইয়ার পুর ইউনিয়নের নয়জন সন্ত্রাসী সিএনজিচালিত অটোরিকশাযোগে এসে লাবিবকে গঙ্গাবর বাজারে এসে জোরপূর্বক অপহরণ করে নিতে চেষ্টা করে। এসময় বাজারের লোকজনের সাথে শাকিল ও লাবিবকে রক্ষা করতে এগিয়ে যায়। ওই সময় সন্ত্রাসীরা শাকিলকে লক্ষ্য করে পিস্তল দিয়ে গুলি ছোড়ে। গুলি বুকে ও মাথায় বিদ্ধ হলে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। এ সময় তিনি তার ভাইকে বাঁচাতে গেলে তাকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে অপহরণকারীরা। পরে স্থানীয় লোকজন তার ভাই ও শাকিলকে উদ্ধার করে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগে আনা হলে তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়।
নিহত শাকিল বিবাহিত ছিলেন। তার ৮মাস বয়সী একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। তিন ভাই এক বোনের মধ্যে সে ছিল দ্বিতীয়।
নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের রেজিস্ট্রার বই সূত্রে জানা যায় রাত ৮ টা ৩৫ মিনিটের দিকে শাকিলকে মৃত অবস্থায় আনা হয়েছে। তার বুকে ও মাথায় গুলির চিহ্ন রয়েছে।
ঘটনাস্থলে অবস্থানরতম বেগমগঞ্জ মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. হাবীবুর রহমান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, স্খানীয় এলাকাবাসী অস্ত্রধারী তিনজনকে গণধোলাই দিয়ে আটক করে রেখেছে। তাদের অবস্থাও আশঙ্কাজনক। আমরা তাদের উদ্ধারে চেষ্টা করছি।