বেঙ্গালুরু ও হায়দরাবাদ ভারতের দক্ষিণের দুই রাজ্য কর্ণাটক ও তেলেঙ্গানার রাজধানী। নানা বিষয়ে তাদের মাঝেমধ্যে ঝামেলায় জড়াতে দেখা যায়।

আইপিএলে ট্রাভিস হেড আবার দুই রাজ্যের দলের হয়েই খেলেছেন। ২০১৬ ও ২০১৭ মৌসুম রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুতে কাটানো হেড এখন খেলছেন সানরাইজার্স হায়দরাবাদে। বিজ্ঞাপনে বেঙ্গালুরুকে খোঁচা দিতে মোবাইল অ্যাপভিত্তিক পরিবহন পরিষেবা কোম্পানি উবার হয়তো অস্ট্রেলিয়ার এই ওপেনারকেই উপযুক্ত মনে করেছে।

কিন্তু বিজ্ঞাপনে হেডকে দিয়ে বেঙ্গালুরুকে যেভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে, সেটিকে অপমানজনক মনে হয়েছে ফ্র্যাঞ্চাইজিটির মালিকপক্ষ রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স স্পোর্টস প্রাইভেট লিমিটেডের। উবারের বিরুদ্ধে তাই দিল্লি উচ্চ আদালতে মামলা করেছে তারা।

গত ৫ এপ্রিল একটি বিজ্ঞাপনের ভিডিও প্রকাশ করে উবার। ৫৮ সেকেন্ডের ভিডিওটি ইউটিউবে এখন পর্যন্ত প্রায় ১৪ লাখ বার দেখা হয়েছে। ভিডিওতে দেখা যায়, উবার চালককে সঙ্গে নিয়ে ট্রাভিস হেড একটি স্টেডিয়ামে যান (যেটিকে বেঙ্গালুরুর ঘরের মাঠ এম চিন্নাস্বামী স্টেডিয়াম বোঝানো হয়েছে)। সেখানে বেঙ্গালুরুর-হায়দরাবাদ ম্যাচ হওয়ায় কথা।

বিজ্ঞাপনের শুরুতে হেড বলেন, ‘বেঙ্গালুরু, তোমরা কি হেডেকের (মাথাব্যথা) জন্য প্রস্তুত?’ এরপর স্টেডিয়ামের গেটে গিয়ে পাহারাদারদের জানান, তিনি সম্প্রচারকর্মী। এই কথা বলে স্টেডিয়ামের ভেতরে ঢুকে পড়েন।

আরও পড়ুন১ মিনিটের বিজ্ঞাপনে মেসির আয় ১৫৩ কোটি টাকা৩০ জানুয়ারি ২০২৪

এরপর সঙ্গে নিয়ে আসা স্প্রে পেইন্টিং বের করে বেঙ্গালুরুর নামের ওপর ‘রয়্যালি চ্যালেঞ্জড’ লিখে দেন হেড। পাহারাদাররা সেটি বুঝতে পেরে হেড ও তাঁর এক সঙ্গীকে তাড়া করেন। বিপদ আঁচ করতে পেরে হেড সঙ্গে সঙ্গে দৌড়ে স্টেডিয়াম ত্যাগ করেন এবং বাইরে অপেক্ষারত উবারের বাইকে চড়ে পালিয়ে যান। পালিয়ে যেতে যেতে হেড বলেন, ‘আমি ট্রাভিস হেড এবং আমরা হায়দ্রাবাদি।’

বিজ্ঞাপনটি দেখার পর রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু মালিকপক্ষের মনে হয়েছে, উবার তাদের ব্র্যান্ডকে নিয়ে উপহাস করেছে। এ কারণে তারা দিল্লি উচ্চ আদালতে উবারের বিরুদ্ধে মামলা ঠুকে দিয়েছে।

বিজ্ঞাপনে স্প্রে পেইন্টিং বের করে বেঙ্গালুরুর নামের ওপর ‘রয়্যালি চ্যালেঞ্জড’ লিখে দেন ট্রাভিস হেড.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন

চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।

লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্‌যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।

চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।

লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।

প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।

লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।

লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’

তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্‌যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?

সম্পর্কিত নিবন্ধ