গ্রাহকদের সচেতনতা বাড়াতে পদক্ষেপ নিন
Published: 20th, April 2025 GMT
সরকারি অফিসের সেবা গ্রহণ মানে ভোগান্তি আর এর জন্য দালালই ভরসা—এটি যেন এ দেশের রেওয়াজ হয়ে দাঁড়িয়েছে। যে কারণে সরকারি সেবা মানে বাড়তি খরচ। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সেবাদানের প্রক্রিয়া সহজ করার নানা প্রচেষ্টা চলমান আছে। কিন্তু আমলাতান্ত্রিক জটিলতা, দালাল চক্রের দৌরাত্ম্য ও গ্রাহক বা ভোক্তাদের অসচেতনতার কারণে এর খুব বেশি সুফল পাওয়া যাচ্ছে না। যেমনটি দেখা যাচ্ছে রাজশাহীর বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) রাজশাহী অফিসে।
রাজশাহীর বিআরটিএ অফিসে বেশ কিছু সেবার জন্য গ্রাহকেরা প্রতিদিনই ভিড় করেন। ড্রাইভিং লাইসেন্স, গাড়ির রেজিস্ট্রেশন, গাড়ির মালিকানা পরিবর্তন, নম্বর প্লেট, ফিটনেস নবায়নের সেবা দেওয়া হয় এখানে। কিন্তু বেশির ভাগ গ্রাহক এসব কাজ করিয়ে নিচ্ছেন দালালের মাধ্যমে। তাঁদের ভাষ্য, কাজ করতে এসে নানা রকম হয়রানি হতে পারে, সময় লাগতে পারে—এ কারণে দালালের মাধ্যমে কাজ করিয়ে নেন তাঁরা। এতে অতিরিক্ত দুই হাজার থেকে পাঁচ হাজার টাকা খরচ হয় একেকজনের। অথচ বিআরটিএ অফিসে সেবার মান বাড়ানো হয়েছে, ২০২৩ সালের মাঝামাঝি সময় থেকে ড্রাইভিং লাইসেন্সসহ অন্যান্য কার্যক্রম অনলাইনে পুরোপুরি করা যায়। আগে একটি ড্রাইভিং লাইসেন্স করতে হলে সেবাগ্রহীতাকে চার থেকে পাঁচবার বিআরটিএতে আসতে হতো। এখন একবার এলেই হয়ে যাচ্ছে। স্মার্ট কার্ড হয়ে গেলে বাসায় পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। প্রতিটি ধাপ সম্পন্ন হলে গ্রাহক মুঠোফোনে খুদে বার্তাও পাচ্ছেন। দালাল ছাড়াই কাজ করা সম্ভব গ্রাহকদের এখন।
বিআরটিএর মতো গুরুত্বপূর্ণ সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানে এমন পরিবর্তন অবশ্যই আশাব্যঞ্জক। ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য পরীক্ষা আগে বছরে কয়েকবার হতো। এখন প্রতি সপ্তাহে নেওয়া হয়। ফলে এই পরীক্ষার জন্য দীর্ঘ জটেরও অবসান ঘটেছে। আর সব কাজ অনলাইনভিত্তিক হয়ে যাওয়া সেবাগ্রহীতাকে শুধু পরীক্ষা ও ফিঙ্গারের জন্য একবার আসতে হয়। এরপরও দালালনির্ভরতা সত্যিই হতাশাজনক।
প্রশ্ন হচ্ছে, গ্রাহকেরা দালাল চক্রের শরণাপন্ন হচ্ছেন কেন? সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, বিআরটিএর এ পরিবর্তন সম্পর্কে গ্রাহকেরা বেশির ভাগই জানেন না। কথা হচ্ছে, গ্রাহকদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য বিআরটিএ কোনো পদক্ষেপ নিয়েছে কি না? মোটরসাইকেল নিবন্ধনের ক্ষেত্রে এমন অভিযোগও এসেছে, মোটরসাইকেলের শোরুমের লোকজনই নিবন্ধনের সব কাজ করে দিচ্ছেন। এতে মোটরসাইকেল ক্রেতার বাড়তি খরচ হচ্ছে। আর শোরুমের লোকজনের সঙ্গে বিআরটিএর কতিপয় কর্মকর্তা–কর্মচারীদের যোগাযোগ আছে। তার মানে, সেবার মান বাড়ানো হলেও শর্ষের মধ্যে এখনো ভূত থেকে গেছে।
আমরা আশা করব, বিআরটিএর সেবার বিষয়ে গ্রাহকদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধিতে পদক্ষেপ নেওয়া হবে। বিআরটিএর কার্যালয়ে একটি হেল্প ডেস্ক বসানো হবে, সেই প্রত্যাশাও আমরা করছি। যেভাবেই হোক, পরিবর্তনের সুফল গ্রাহকদের মধ্যে পৌঁছে দিতে হবে বিআরটিএকেই।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: গ র হকদ র ব আরট এ র জন য গ র হক ক জ কর
এছাড়াও পড়ুন:
৪,৫০০ কোটি টাকা রাজস্ব ক্ষতির অভিযোগ অনুসন্ধানে দুদক
ভারতের আদানি গ্রুপের সঙ্গে বিদ্যুৎ আমদানি চুক্তিতে সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব ক্ষতির অভিযোগ অনুসন্ধানে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সচিব আহমদ কায়কাউসের বিরুদ্ধে অভিযোগটি অনুসন্ধানের দায়িত্ব পেয়েছেন দুদকের প্রধান কার্যালয়ের উপপরিচালক রেজাউল করিম। গতকাল বুধবার এক ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান দুদক মহাপরিচালক আক্তার হোসেন।
দুদক গত ১৬ এপ্রিল এ নিয়ে আদেশ জারি করলেও গতকালই বিষয়টি জানাজানি হয়। দুদকের আদেশে বলা হয়েছে, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ, বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) পাশ কাটিয়ে আদানির সঙ্গে চুক্তি করে সরকারের সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকার শুল্ক ফাঁকি দিয়েছেন আহমদ কায়কাউস। সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে এ চুক্তি-সংক্রান্ত কাগজপত্র খতিয়ে দেখা প্রয়োজন। এ জন্য চুক্তির শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত যাবতীয় নথিপত্রের সত্যায়িত ফটোকপি, বিদ্যুৎ কেনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীর নাম, পদবি, বর্তমান ঠিকানা এবং এ নিয়ে কোনো বিভাগীয় তদন্ত করা হয়েছে কিনা– খতিয়ে দেখতে হবে।
আদানি গ্রুপের কাছ থেকে বিদ্যুৎ আমদানির চুক্তিটি শুরু থেকেই বিতর্কিত। ২৫ বছরের এ চুক্তির পদে পদে রয়েছে অসমতা। চুক্তিতে এমন অনেক শর্ত রয়েছে, যেগুলোর কারণে ২৫ বছরে প্রায় ৩ লাখ ৭৫ হাজার কোটি টাকা বাড়তি নিয়ে যাবে আদানি।