জেলেনস্কি বেসামরিক স্থাপনায় ৩০ দিনের জন্য হামলা বন্ধ চান
Published: 21st, April 2025 GMT
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, ইস্টার সানডেতে যুদ্ধবিরতির ঘোষণা সত্ত্বেও রুশ বাহিনী দুই হাজারের বেশি যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটিয়েছে। তবে এ সময়ে ইউক্রেনে বিমান হামলার কোনো সতর্কতা দেওয়া হয়নি। এমন অবস্থায় ৩০ দিনের জন্য বেসামরিক স্থাপনায় দূরপাল্লার ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা বন্ধে একটি যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব করেছেন তিনি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এ প্রস্তাব করেন। তবে ক্রেমলিন আপাতত তাঁর এ প্রস্তাবে সাড়া দেয়নি।
গত শনিবার সন্ধ্যায় আকস্মিকভাবে ৩০ ঘণ্টার সাময়িক যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করেন ভ্লাদিমির পুতিন। তিনি বলেন, মানবিক কারণে এ যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করা হয়েছে।
আরও পড়ুনইস্টারে হামলা বন্ধে নিজের ঘোষণা মানছেন না পুতিন, অভিযোগ জেলেনস্কির২০ এপ্রিল ২০২৫তবে যুদ্ধবিরতির মেয়াদ শেষ হওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে রাশিয়া হামলা চালিয়েছে বলে জানিয়েছেন ইউক্রেনের কর্মকর্তারা। ইউক্রেনের নিপ্রোপেত্রভস্কের গভর্নর সের্গেই লিসাক বলেছেন, ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে ড্রোন হামলা চালিয়েছে রাশিয়া।
সের্গেই লিসাক বার্তা আদান–প্রদানের অ্যাপ টেলিগ্রামে বলেন, হামলায় একটি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ও খাবারের একটি স্থাপনায় আগুন ধরে গেছে। তবে এ ঘটনায় কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
আরও পড়ুনশিগগির অগ্রগতি না হলে যুদ্ধ বন্ধে মধ্যস্থতা বাদ দেবে যুক্তরাষ্ট্র১৮ এপ্রিল ২০২৫অপর দিকে ইউক্রেনের দক্ষিণাঞ্চলের মিকোলাইভ অঞ্চলের গভর্নর ভিতালি কিম টেলিগ্রামে লিখেছেন, ভোররাতে শত্রুপক্ষ ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে বলে তাঁরা খবর পেয়েছে। তবে হামলায় কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
আরও পড়ুনচুক্তির জন্য ‘প্রস্তুত’ পুতিন, ‘যুদ্ধ শুরুর’ জন্য জেলেনস্কিকে দুষলেন ট্রাম্প১৫ এপ্রিল ২০২৫গত জানুয়ারিতে দ্বিতীয় মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেওয়ার পর রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের উদ্যোগ নেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। কিন্তু তিন মাসেও রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে শান্তিচুক্তিতে পৌঁছানোর স্পষ্ট ইঙ্গিত দেখা না গেলে যুক্তরাষ্ট্র কয়েক দিনের মধ্যে দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধবিরতির মধ্যস্থতা থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। গত শুক্রবার তাঁর ওই ঘোষণার পরই পুতিন ৩০ ঘণ্টার সাময়িক যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দেন।
২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে সর্বাত্মক যুদ্ধ শুরু হয়। এর পর থেকে তিন বছরের বেশি সময় ধরে এ যুদ্ধ চলছে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
কার্টুন, মিমে অভ্যুত্থানের ভিন্ন ধারার দৃশ্যায়ন
টাকার বস্তার ভেতর থেকে মাথা উঁচিয়ে আছেন শুভ্র কেশ, সফেদ দাড়ি, চশমা পরিহিত এক লোক। তাঁর ছবি দেখে তো বটেই, এই বর্ণনা থেকেও তাঁকে চিনবেন দেশবাসী। বর্তমানে কারাগারের বাসিন্দা পতিত স্বৈরশাসকের এই উপদেষ্টা বলছেন, ‘টাকার ওপর আমার বিশ্বাস উঠে গেছে।’ এই ছবির পাশেই এক কাটআউট। সেখানে ‘শেখ হাসিনা পালায় না’ বলতে বলতে দৌড়ে পালাচ্ছেন ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতার মসনদ থেকে উৎপাটিত শেখ হাসিনা।
এমন মজার মজার কার্টুন, মিম, গ্রাফিতি, ভিডিও স্থাপনাকর্মসহ বৈচিত্র্যময় সৃজনসম্ভার নিয়ে শুরু হয়েছে ‘বিদ্রূপে বিদ্রোহ’ নামের ব্যতিক্রমী এক প্রদর্শনী। আয়োজন করেছে অনলাইনভিত্তিক স্যাটায়ার সাময়িকী ‘ইয়ারকি’। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ধানমন্ডির আলিয়ঁস ফ্রঁসেজের লা গ্যালারিতে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে ছয় দিনের এ প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। চলবে ৫ আগস্ট পর্যন্ত। সবার জন্য প্রতিদিন বেলা তিনটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত খোলা।
গত বছর ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে উত্তাল ছিল জুলাই। একটি বৈষম্যহীন, উদার গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য পথে নেমেছিলেন অগণিত মানুষ। শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী সরকারকে উৎখাত করতে জীবন উৎসর্গ করেছেন তাঁদের অনেকে। আহত হয়েছেন বেশুমার। রক্তরঞ্জিত রাজপথ বেয়ে এসেছে জনতার বিজয়।
প্রদর্শনীতে প্রবেশপথটির দুই পাশে লাল রঙের পটভূমিতে বড় বড় ডিজিটাল পোস্টার। সেখানে ২ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিনের বিভিন্ন ঘটনার আলোকচিত্র, সংবাদপত্র, অনলাইন পোর্টাল, টেলিভিশনের রিপোর্ট, ছবি, ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমের পোস্ট—এসব তুলে আনা হয়েছে এ পোস্টারগুলোতে। প্রবেশপথটিও লাল রঙের। ‘জুলাই করিডর’ নামে এই রক্তিম পথটি বেয়ে দর্শনার্থীরা প্রদর্শনীতে প্রবেশের সময় অভ্যুত্থানের উত্তাল দিনগুলোর উত্তাপ ফিরে পাবেন।