ভোজ্যতেলের চাহিদা পূরণের পাশাপাশি টিসিবির ফ্যামিলি কার্ডধারীদের মাঝে ভর্তুকি দামে বিক্রির জন্য দুই কোটি ২০ লাখ লিটার পরিশোধিত পাম অয়েল কেনার উদ্যোগ নিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। স্থানীয়ভাবে উন্মুক্ত দরপত্র (জাতীয়) পদ্ধতিতে এই তেল সংগ্রহ করা হবে। এতে মোট ব্যয় হবে ৩৫৬ কোটি ৮১ লাখ ৮০ হাজার টাকা। প্রতি লিটারের দাম ১৬২.

১৯ টাকা।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)। টিসিবির ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বার্ষিক ক্রয় পরিকল্পনায় ২৮ কোটি লিটার ভোজ্যতেল কেনার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। এর মধ্যে ১৫ কোটি ৪১ লাখ ৯০ হাজার লিটার ক্রয় চুক্তি সম্পন্ন হয়েছে। মোট চাহিদার অংশ হিসেবে আরো দুই কোটি ২০ লাখ লিটার পরিশোধিত পাম অয়েল কেনার উদ্যোগ নিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।

সূত্র জানায়, উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতির অধীন স্থানীয় ক্রয়ের ক্ষেত্রে পণ্য সরবরাহ, কার্যসম্পাদন বা ভৌত সেবার জন্য বিজ্ঞাপন পত্রিকায় প্রকাশের তারিখ থেকে দরপত্র প্রণয়ন ও দাখিলের জন্য ন্যূনতম ২৮দিন সময় ধার্য থাকলেও পিপিআর-২০০৮ এর বিধি ৬১ (৫) অনুযায়ী অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির গত ৪ জুন সভায় টিসিবির জন্য স্থানীয় দরপত্র আহ্বানের ক্ষেত্রে দরপত্র প্রণয়ন ও দাখিলের সময়সীমা ২৮ দিনের পরিবর্তে ১৪ দিন করার সিদ্ধান্ত হয়। স্থানীয়ভাবে দুই কোটি ২০ লাখ লিটার পরিশোধিত পাম অয়েল কেনার জন্য পাবলিক প্রকিউরমেন্ট বিধিমালা ২০০৮ অনুসরণকরে গত ১৩ জানুয়ারি উন্মুক্ত দরপত্র আহ্বান করা হয়। দরপত্রের বিপরীতে আংশিক অর্থাৎ সর্বনিম্ন ৫৫,০০,০০০ লিটার এর প্রস্তাব দাখিলের সুযোগ রাখা হয়।

দরপত্র দাখিলের সর্বশেষ সময় ২৬ জানুয়ারি এবং দরপত্র উন্মুক্তকরণের সময় ২৭ জানুয়ারি  বেলা ১২ টা পর্যন্ত ধার্য ছিল। কিন্তু কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তে দরপত্র দাখিলের সর্বশেষ সময় ২ ফেব্রুয়ারি এবং দরপত্র উন্মুক্তকরণের সময় ৩ ফেব্রুয়ারি পুনঃ নির্ধারণ করে। পরবর্তীতে সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান কর্তৃক বৈধতার মেয়াদ ১৪ মে পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়।

দরপত্র উন্মুক্তকরণ কমিটি ৩ ফেব্রুয়ারি প্রাপ্ত দরপত্রসমূহ উন্মুক্ত করে একটি দরপত্র পাওয়া যায়। দরদাতা প্রতিষ্ঠান শবনম ভেজিটেবল অয়েল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড তাদের প্রস্তাবে ২ লিটারের পেট বোতলে ১,১০,০০,০০০ লিটার পাম অয়েল তেল প্রতি লিটারের দাম ১৬২.১৯ টাকা দরে সরবরাহের প্রস্তাব করে। যার দাপ্তরিক প্রাক্কলিত দর ছিল ১৭৪.৬৩ টাকা। অর্থাৎ প্রাক্কলিত দরের চেয়ে ১২.৪৪ টাকা কম।

দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির সভা ৪ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হয়। মূল্যায়ন কমিটি প্রাপ্ত একটি দরপত্র, তুলনামূলক বিবরণী এবং সংযুক্ত দাখিলকৃত কাগজ পর্যালোচনা করেন। পর্যালোচনা শেষে, দাখিলকৃত দরপত্রটি রেসপনসিভ হিসেবে বিবেচিত হয়। দরপত্র মূল্যায়ন কমিটি প্রাপ্ত প্রস্তাবিত দরের বিষয়ে আলোচনা করেন। আলোচনা শেষে, পিপিআর ২০০৮ এর বিধি ৯৯ (জ) অনুযায়ী রেসপনসিভ দরদাতা শবনম ভেজিটেবল অয়েল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড এর দরপত্রে প্রস্তাবিত ১,১০,০০,০০০ লিটার পাম অয়েল এর সঙ্গে প্রতি লিটার ১৬২.১৯ টাকা দরে অবশিষ্ট ১,১০,০০,০০০ লিটারসহ সম্পূর্ণ পরিমাণ অর্থাৎ ২,২০,০০,০০০ লিটার পাম অয়েল সরবরাহ করার জন্য সম্মতি চাওয়া হলে প্রতিষ্ঠানটি অবশিষ্ট পরিমাণ পাম অয়েল সরবরাহে সম্মতি প্রকাশ করে এবং লিখিতভাবে জানায়।

দরপত্রে প্রস্তাবিত ২,১০,০০,০০০ লিটার এর সাথে অবশিষ্ট ১,১০,০০,০০০ লিটারসহ সর্বমোট দুই কোটি ২০ লাখ লিটার বোতলজাত পরিশোধিত পাম অয়েল ২ লিটার পেট বোতলে প্রতি লিটার অগ্রিম আয়কর, প্রযোজ্য মুসক ও টিসিবির গুদামসমূহে পরিবহন খরচসহ ১৬২.১৯ টাকা দরে সর্বমোট তিনশ ছাপান্ন কোটি একাশি লাখ আশি হাজার টাকা মূল্যে ক্রয়ের সুপারিশ করে দরপত্র মূল্যায়ন কমিটি।

সূত্র জানায়, উক্ত পাম অয়েল মে মাসে গ্রহণ করা হবে এবং টিসিবির বিক্রয় কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার স্বার্থে উক্ত সময়ে মজুত বিবেচনায় ভোজ্যতেলের প্রয়োজনীয়তা থাকায় দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির সব সদস্য ক্রয়ের একমত পোষণ করেন।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এ সংক্রান্ত একটি ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির সভায় উপস্থাপন করা হবে বলে সূত্র জানায়।

ঢাকা/হাসনাত/এসবি

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ২০ ল খ ল ট র প ক ত দরপত র দরপত র প প রস ত ব সরবর হ কম ট র র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

যুক্তরাজ্য থেকে আসছে মাদক এমডিএমএ, গ্রেপ্তার ৫

‘খ’ শ্রেণির মাদক এমডিএমএ সরবরাহকারী চক্রের হোতা ও ডিজে পার্টির আয়োজকসহ ৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর (ডিএনসি)।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন মো. জুবায়ের (২৮), জি এম প্রথিত সামস (২৫), আসিফ মাহবুব চৌধুরী (২৭), সৈয়দ শায়ান আহমেদ (২৪) ও অপূর্ব রায় (২৫)।

আরো পড়ুন:

যুক্তরাজ্যের প্রথম মুসলিম নারী স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শাবানা মাহমুদ

বিশ্বের সবচেয়ে প্রবীণ মানুষ তিনি

এ সময় তাদের কাছ থেকে যুক্তরাজ্য থেকে আমদানি করা ‘খ’ শ্রেণির মাদকদ্রব্য লালচে বর্ণের এমডিএমএ ট্যাবলেট ৩১৭ পিস, কুশ ১ কেজি ৬৭৬ গ্রাম, গাঁজা ২৫০ গ্রাম ও পাঁচটি কাচের বোতলে কেটামিন ৫০ (পঞ্চাশ) মিলিলিটার জব্দ করা হয়েছে। পাশাপাশি ৬টি মোবাইল ফোন ও একটি ল্যাপটপ এবং নগদ ৭ লাখ ১১ হাজার টাকা জব্দ করা হয়েছে।

সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের (ডিএনসি) প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) মো. হাসান মারুফ।

হাসান মারুফ বলেন, “সংবাদের ভিত্তিতে জানা যায় আসামি মো. জুবায়েরসহ স্বনামধন্য প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় ও ইংলিশ মিডিয়ামে পড়ুয়া প্রযুক্তি-দক্ষ, শিক্ষিত ও উচ্চবিত্ত শ্রেণির বেশ কয়েকজনের একটি চক্র গাঁজা, কুশ, এমডিএমএ ও কেটামিনসহ অন্যান্য আধুনিক মাদক পার্সেলযোগে উন্নত দেশ থেকে আমদানি করে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন মহানগরে পার্টি ড্রাগ হিসেবে বিভিন্ন ডিজে পার্টিতে এবং অভিজাত সোসাইটিতে সরবরাহ করছে।”

তিনি বলেন, “সম্প্রতি মাদকের একটি চালান ডাকযোগে যুক্তরাজ্য থেকে বাংলাদেশে আসবে-এমন তথ্যের ভিত্তিতে গত ১৪ সেপ্টেম্বর পল্টনের পুরাতন ডাক ভবনের বৈদেশিক ডাক শাখা থেকে যুক্তরাজ্য থেকে আগত এয়ার পার্সেল তল্লাশি করে একটি কাগজের কার্টনের ভেতর বিভিন্ন বিদেশি ব্র্যান্ডের চকলেটের নীচে লুকানো অবস্থায় একটি বাবল পেপারে মোড়ানো স্বচ্ছ পলি প্যাকেটে রক্ষিত লালচে বর্ণের এমডিএমএ ট্যাবলেট উদ্ধার করা হয়। তারপর জব্দকৃত কাগজপত্র পর্যালোচনা ও তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় পার্সেলটির প্রাপক, মাদক চক্রের অন্যতম হোতা মো. জুবায়েরের অবস্থান শনাক্ত করে ঢাকা উদ্যান এলাকা থেকে তাকে আটক করা হয়।”

তিনি আরো বলেন, “জিজ্ঞাসাবাদে মো. জুবায়ের জানান এই পার্সেলটি যুক্তরাজ্য থেকে তার পূর্বপরিচিত অরণ্য ডাকযোগে অরণ্যের বন্ধু অপূর্ব রায়ের নাম, ঠিকানা ও মোবাইল নম্বর ব্যবহার করে পাঠিয়েছে। যা তাকে রিসিভ করে তার আরেক বন্ধু জি এম প্রথিত সামসের নিকট পৌঁছে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করে। এর বিনিময়ে তাকে ৫০ হাজার টাকা দেবে বলে জানায়। কাজটি করার জন্য অরণ্যের কথায় প্রথিত তাকে বিকাশের মাধ্যমে তিন বারে ১৫-১৬ হাজার টাকা অগ্রিম প্রদান করে।”

ডিজি আরো বলেন, “আসামি মো. জুবায়েরের বর্ণনা অনুযায়ী ও তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় এই আধুনিক মাদক চোরাকারবারি চক্রের অন্যতম হোতা জি এম প্রথিত সামসের অবস্থান শনাক্ত করে তাকে সেগুনবাগিচা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং তার কাছ থেকে যুক্তরাজ্য থেকে আমদানিকৃত ‘খ’ শ্রেণির মাদকদ্রব্য এমডিএমএ ট্যাবলেট, গাঁজা ও কেটামিন নামক মাদকদ্রব্য উদ্ধার করা হয়।”

তিনি বলেন, “জুবায়ের এবং জি এম প্রথিত সামসকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মেট্রো (উত্তর) কার্যালয়ে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ ও তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে নিশ্চিত হয়ে সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) ভোর রাতে আসিফ মাহবুব চৌধুরীর বাসা ঘেরাও করে তাকে হাতেনাতে এমডিএমএ, গাঁজা, কুশ ও নগদ টাকাসহ গ্রেপ্তার করা হয়। আসামি জুবায়েরের দেওয়া তথ্যমতে অপূর্ব রায়কে গাঁজাসহ গ্রেপ্তার করা হয় এবং প্রয়োজনীয় সাক্ষ্য-প্রমাণাদি জব্দ করা হয়। অপূর্বর দেওয়া তথ্যে সৈয়দ শায়ান আহমেদকে গাঁজা ও এমডিএমএ চালানের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সাক্ষ্য-প্রমাণাদি জব্দ করা হয়।”

তিনি বলেন, “আসামিদের মোবাইল ফোন পর্যালোচনা করে দেখা যায়, তারা হোয়াটসঅ্যাপ, টেলিগ্রাম এবং অন্যান্য এনক্রিপ্টেড অ্যাপ ব্যবহার করে নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ স্থাপন করে এ ব্যবসা পরিচালনা করে আসছিল।”

ঢাকা/মাকসুদ/সাইফ 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জকসুর রোডম্যাপ ঘোষণা, নির্বাচন ২৭ নভেম্বর
  • শিগগিরই প্রশাসকরা দায়িত্ব নেবে ৫ ব্যাংকের
  • গুদামে খাওয়ার অনুপযোগী চাল নিয়ে রাজশাহী খাদ্য বিভাগে তোলপাড়, ৮ তদন্ত কমিটি
  • ‘কেনতো পারমু না, হেইতে ইলশার সুরতটা দেইখ্যা যাই’
  • প্রকৌশল পেশাজীবীদের দাবি পূরণে উপাচার্য-অধ্যক্ষদের সঙ্গে আগামীকাল বৈঠক
  • চরাঞ্চলের মানুষের স্বার্থ রক্ষা করে উৎসবমুখর পরিবেশে সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবি
  • চারটি দলের সঙ্গে বিক্ষোভ কর্মসূচিতে যুক্ত হলো জাগপা
  • নারীদের আসন বাড়ানো, সবার অংশগ্রহণ নিশ্চিত, প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর স্বার্থ সুরক্ষার দাবি
  • এক সপ্তাহের মধ্যে জকসু নির্বাচনের রূপরেখাসহ ৫ দাবি গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের
  • যুক্তরাজ্য থেকে আসছে মাদক এমডিএমএ, গ্রেপ্তার ৫