মন্দির কমিটির নেতাসহ ৩০ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা
Published: 21st, April 2025 GMT
সিলেট নগরীর প্রাণকেন্দ্র জিন্দাবাজার এলাকায় শ্রীশ্রী রাধাগোবিন্দ জিউর আখড়ার দেবোত্তর সম্পত্তি বিক্রি, হস্তান্তর, দলিল জালিয়াতি ও টাকা আত্মসাতের ঘটনায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত। সোমবার সিলেট মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট প্রথম আদালতের বিচারক মো. শরিফুল হক তাদের বিরুদ্ধে পরোয়ানা জারি করেন।
এর আগে দীর্ঘ ২১ মাস তদন্ত শেষে গত ১৩ এপ্রিল সিলেটের অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেন পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) পরিদর্শক মোহন লাল তালুকদার। পিবিআই তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের এক সপ্তাহের মাথায় আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আদালতের বেঞ্চ সহকারী মিজানুর রহমান।
গ্রেপ্তারি পরোয়ানাপ্রাপ্তরা হলেন– আখড়া পরিচালনা কমিটির বিভিন্ন সময়ের দায়িত্বশীল বিরাজ মাধব চক্রবর্তী, দিবাকর ধর রাম, সুধাময় মজুমদার, মিহির লাল দে, অমলেন্দু ধর, কিশোর কুমার কর, বিমান দাস, প্রদীপ কুমার ভট্টাচার্য, শান্তনু দত্ত শন্তু, চন্দন রায়, মলয় পুরকায়স্থ, সুপর্ণ দে মন্তু, সুদীপ রঞ্জন দেব, সুদীপ সেন বাপ্পু, কৃপেশ পাল, তপন মিত্র, উদয়ন পুরকায়স্থ, দলিলের সাক্ষী আব্দুর রহিম শামীম, আবুল কালাম, এজাজ উদ্দিন, খন্দকার কামরুজ্জামান, দলিল লেখক বীরেশ দেবনাথ, সেবায়েত বিভা বসু গোস্বামী বাপ্পা, দলিলগ্রহীতা নিতাই চন্দ্র পাল, ফখর উদ্দিন, এরশাদ উদ্দিন, ফারহানা রহমান, ইমরানা বেগম, সুলতানা বেগম ও রওশন আরা বেগম।
জানা গেছে, ১৮৬৮ সালে স্থানীয় বিত্তবান মায়ারাম দাস বৈষ্ণব শ্রীশ্রী রাধাগোবিন্দ জিউর আখড়ার জন্য প্রায় তিন একর জমি দান করেন। জীবদ্দশায় তিনি মন্দিরটি পরিচালনাও করেন। জিন্দাবাজারের সরকারি অগ্রগামী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও পাঁচপীরের মাজারসংলগ্ন আখড়াটি সিলেট মিউনিসিপ্যালিটি মৌজার জেএল নম্বর ৯১-এর অন্তর্গত।
মন্দিরের সেবায়েত বিভা বসু গোস্বামী বাপ্পার তথ্যমতে, মন্দিরের রেকর্ডে ৮৬ দশমিক ৫৯ শতাংশ জমি। এর মধ্যে দখলে রয়েছে ৪০ শতাংশ, বাকি জমি বেহাত। বিভিন্ন সময়ে জায়গা বেহাতের পর সর্বশেষ ২০০৫ সালে পরিচালনা কমিটি মন্দিরের ১১ দশমিক ৪৪ শতাংশ জমি হস্তান্তর করে। এ ঘটনায় ২০২৩ সালের ১৩ জুলাই আদালতে মামলা করেন আখড়ার বাসিন্দা ও ভক্ত রাহুল দেবনাথ। তিনি মামলায় আখড়ার জায়গা অবৈধভাবে হস্তান্তর ও ১২ কোটি ২৭ লাখ ৪০ হাজার টাকা আত্মসাৎ, দলিল জালিয়াতি ও বিক্রির অভিযোগ করেন। গত ১৩ এপ্রিল আদালতে মামলার পঞ্চম তদন্ত কর্মকর্তা মোহন লাল তালুকদার প্রতিবেদন দাখিল করেন। প্রতিবেদনে তিনি আখড়ার জায়গা হস্তান্তর ও দলিল জালিয়াতি হয়েছে বলে উল্লেখ করেন।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: গ র প ত র পর য় ন পর য় ন মন দ র আখড় র
এছাড়াও পড়ুন:
করিডোরের জন্য দু’দেশের সম্মতি লাগবে: জাতিসংঘ
রাখাইন রাজ্যের বেসামরিক নাগরিকের জন্য মানবিক সহায়তা পাঠাতে করিডোরের বিষয়ে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের সম্মতি প্রয়োজন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ।
ঢাকার জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারীর কার্যালয় সমকালকে এক বিবৃতিতে জানায়, বাংলাদেশে জাতিসংঘ রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সহায়তা অব্যাহত রেখেছে। একই সঙ্গে রাখাইনে মানবিক পরিস্থিতির অবনতি নিয়েও উদ্বিগ্ন তারা।
জাতিসংঘ অন্য অংশীদারকে সঙ্গে নিয়ে রোহিঙ্গাদের আশ্রয়দাতা হিসেবে বাংলাদেশের প্রতি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমর্থন জোরদার করবে। বাংলাদেশ থেকে মিয়ানমার সীমান্ত পেরিয়ে যে কোনো মানবিক সহায়তা বা সরবরাহের জন্য প্রথমে দুই সরকারের মধ্যে সম্মতি প্রয়োজন। সীমান্ত অতিক্রম করে সহায়তা দেওয়ার জন্য জাতিসংঘের সংশ্লিষ্ট সরকারগুলোর অনুমতি নেওয়ার আইনি বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এটি ছাড়া জাতিসংঘের সরাসরি ভূমিকা সীমিত।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে গত রোববার এক ব্রিফিংয়ে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেছিলেন, ‘নীতিগতভাবে আমরা রাখাইন রাজ্যে মানবিক করিডোরের ব্যাপারে সম্মত। কারণ এটি একটি মানবিক সহায়তা সরবরাহের পথ হবে। তবে আমাদের কিছু শর্ত আছে। সেই শর্ত যদি পালন করা হয়, অবশ্যই আমরা জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে সহযোগিতা করব।’
এ খবর চাউর হলে রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়। সরকারের এমন সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব ও জাতীয় নিরাপত্তা বিঘ্নের শঙ্কা করছে রাজনৈতিক দলগুলো। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা ছাড়া সরকার কীভাবে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
তথাকথিত মানবিক করিডোর স্থাপন নিয়ে জাতিসংঘ বা অন্য কারও সঙ্গে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনা হয়নি বলে দাবি করছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
গত অক্টোবরে জাতিসংঘের উন্নয়ন প্রকল্প (ইউএনডিপি) রাখাইন পরিস্থিতি নিয়ে ১২ পাতার একটি প্রতিবেদন তৈরি করে। প্রতিবেদনে রাখাইনের অর্থনৈতিক পরিস্থিতির অবনতির কথা উল্লেখ করা হয়। রাখাইনের পণ্য প্রবেশের জন্য আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ সীমান্ত বন্ধ রয়েছে, আয়ের কোনো উৎস নেই। ভয়াবহ মূল্যস্থিতি, অভ্যন্তরীণ খাদ্য উৎপাদনে ধস, জরুরি সেবা এবং সামাজিক সুরক্ষায় ঘাটতি দেখা দিয়েছে। কয়েক মাসের মধ্যে সেখানে ঝুঁকিতে থাকা জনগোষ্ঠীর পরিস্থিতি আরও অবনতির শঙ্কা করছে জাতিসংঘ।