সপ্তাহে ১ দিন কাজ ছয় দিন ছুটি—বিশ্বের কোন দেশে আছে এমন চাকরি
Published: 22nd, April 2025 GMT
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে চার দিনের অফিস ও তিন দিন ছুটি শুরু করেছে। এ কাজে ভালো ফলও পাচ্ছে দেশগুলো। তাদের ভাষ্য এতে কর্মীদের উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি পেয়েছে। অনেক দেশে স্থায়ীভাবে এ পদ্ধতিতে যেতে চায়। এর পরও কর্মঘণ্টার দৈর্ঘ্য নিয়েও নানা আলোচনা শোনা যায়। ‘ওয়ার্ক কালচার’ নিয়ে দিনে দিনে সচেতনতা বাড়ছে মানুষের মধ্যে। অল্প বেতনে অনেক কাজ করিয়ে নেওয়া বা ঘণ্টার পর ঘণ্টা অফিসে থাকার চেয়ে অনেক দেশ ৪ দিনের সপ্তাহের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। এরই মধ্য সপ্তাহে মাত্র এক দিন কাজ হয় এমন দেশও আছে। সিএনবিসির এক প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে এমন তথ্য।
অলীক কল্পনা কিন্তু নয়। ৬ দিন ছুটি আছে এমন দেশও আছে। এমন নিয়ম আছে প্রশান্ত মহাসাগরের দ্বীপরাষ্ট্রে। দেশটির নাম ভানুয়াতু। কাজের পরিবেশের দিক দিয়ে অনন্য নজির গড়ে তুলেছে ছোট্ট দ্বীপদেশটি। দেশটি বিশ্বের সবচেয়ে কম গড় কর্মঘণ্টায় এগিয়ে অন্য সবার চেয়ে। দেশটির মানুষ প্রতি সপ্তাহে গড়ে মাত্র ২৪ দশমিক ৭ ঘণ্টা কাজ করেন।
এখন মনে হতে পারে এভাবে কি সম্ভব। দেশটি এটিই সম্ভব করে দেখিয়েছে। ভানুয়াতুর এই স্বল্প কর্মঘণ্টার সংস্কৃতি তাদের সমাজ ও সংস্কৃতির মধ্য প্রোথিত। দেশটির মানুষ ব্যক্তিগত সুখ, পরিবার সঙ্গে সময় কাটানোকে গুরুত্ব দেয়। বন্ধুবান্ধব এবং আপনজনের সঙ্গে সময় কাটানোকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া দেশটি এ মনোভাব কর্মজীবনের সঙ্গে ব্যক্তিগত জীবনের সুষম সমন্বয় সাধন করেছে।
আরও পড়ুন৪৬তম বিসিএস লিখিত পরীক্ষা, মানতে হবে যে ৪ গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা২১ এপ্রিল ২০২৫ভানুয়াতুর উদাহরণ দেখিয়ে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কম কর্মঘণ্টার অর্থ কম উৎপাদনশীলতা নয়। বরং, এটি কর্মীদের মানসিক ও শারীরিক সুস্থতা বজায় রাখতে সহায়তা করে। আর এর ফলে দীর্ঘ মেয়াদে কর্মদক্ষতা বৃদ্ধি পায় কর্মীর।
এদিকে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) এক প্রতিবেদন অনুসারে ভুটানে ৬১ শতাংশ কর্মজীবী প্রতি সপ্তাহে ৪৯ ঘণ্টার বেশি কাজ করেন। ভারতে এ হার ৫১ শতাংশ, বাংলাদেশে ৪৭ শতাংশ এবং পাকিস্তানে ৪০ শতাংশ। এই অতিরিক্ত চাপ কর্মীদের মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। তাই বিশ্বের বিভিন্ন দেশ এখন কর্মঘণ্টা কমানোর দিকে মনোযোগ দিচ্ছে। আইসল্যান্ডে চার দিনের কর্মসপ্তাহ পরীক্ষামূলকভাবে চালু করেছে অনেক আগেই। যুক্তরাজ্যও সাপ্তাহিক ৫ দিন থেকে ৪ দিন কাজের সপ্তাহের করা চিন্তাভাবনা করছে। স্পেন ও নিউজিল্যান্ডও এ উদ্যোগের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। এমনকি সৌদি আরবের একটি কোম্পানি পরীক্ষামূলকভাবে চার দিনের অফিস শুর করেছে।
আরও পড়ুন৬০০ বৃত্তির সুযোগ গ্র্যাজুয়েট রিসার্চ স্কলারশিপে, জেনে নিন বিস্তারিত২১ এপ্রিল ২০২৫আরও পড়ুনচার দিনের অফিস শুরুর ফল যেমন হচ্ছে২৩ মার্চ ২০২৩.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
রোনালদোর অদম্য ক্ষুধা, দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে জেতালেন আল-নাসরকে
চলতি বছরের শুরুতে ৪০ পেরিয়ে গিয়েছেন। কিন্তু তার পা যেন বয়সকে পাত্তাই দেয় না। ফুটবল মাঠে ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর উপস্থিতি মানেই উত্তেজনা, প্রত্যাশা আর গোলের গন্ধ। এবারও তার ব্যতিক্রম হলো না। এক প্রীতি ম্যাচে ফরাসি ক্লাব তুলুজের বিপক্ষে দারুণ এক গোল করে দলকে জয় এনে দিলেন পর্তুগিজ তারকা।
অস্ট্রিয়ার আন্টার্সবার্গ-অ্যারেনায় অনুষ্ঠিত এই গ্রীষ্মকালীন ম্যাচে শুরুতে পিছিয়ে পড়েছিল সৌদি ক্লাব আল-নাসর। ম্যাচের ২৫তম মিনিটে ইয়ান বোহোর গোলে এগিয়ে যায় তুলুজ। কিন্তু খেলা তখনও শেষ হয়নি। কারণ, মাঠে ছিলেন রোনালদো।
৮ মিনিট পরই পাল্টা জবাব দেন আল-নাসরের ফরোয়ার্ড ওয়েসলি। প্রতিপক্ষের রক্ষণের ফাঁক গলে তার পাস পেয়ে বল জালে জড়ান রোনালদো, দারুণ এক ওয়ান টাচ ফিনিশে। সমতায় ফেরার পর আল-নাসরের খেলায় আসে নতুন ছন্দ।
আরো পড়ুন:
মেসির জাদুতে জয়ে ফিরল ইন্টার মায়ামি, ডি পলের অভিষেকে উচ্ছ্বাস
মেসি বনাম ইয়ামাল: ফিনালিসিমার সময়সূচি ঘোষণা
দ্বিতীয়ার্ধে একাধিকবার সুযোগ তৈরি করেন রোনালদো। একটি সুযোগ তো প্রায় নিশ্চিত গোল হয়ে যেত, যদি না জোয়াও ফেলিক্সের সঙ্গে বোঝাপড়ায় সামান্য ভুল হতো। বাঁ দিক থেকে আসা ক্রসটিতে দুজনই একসঙ্গে পা লাগাতে গিয়ে গোলটা মিস করেন।
তবে ম্যাচে তার প্রভাব ছিল চোখে পড়ার মতো। একাধিকবার দূরপাল্লার শটে তুলুজ গোলরক্ষককে ব্যতিব্যস্ত করে তোলেন। শুধু গোলই নয়, তার দৌড়, পাস, আর শারীরিক ভাষা বুঝিয়ে দিচ্ছিল; তিনি থামার মতো কেউ নন।
৭৬তম মিনিটে মোহাম্মদ মারান দুর্দান্ত এক হেডে আল-নাসরের জয় নিশ্চিত করেন। নাওয়াফ বুশালের দুর্দান্ত ক্রসে ভেসে ওঠা হেডটি সোজা গোললাইনের ভেতর গিয়ে জড়ায়।
ম্যাচ শেষে রোনালদো ফেসবুকে নিজের ‘সিউ’ উদযাপনের ছবি পোস্ট করে লেখেন, “এই ক্ষুধা কখনোই শেষ হবে না। আমরা কেবল শুরু করেছি।” তার এই বার্তা যেন একধরনের হুঙ্কার, এক নতুন লড়াইয়ের ইঙ্গিত।
আল-নাসরে যোগ দেওয়ার পর বড় কোনো শিরোপা জেতা না গেলেও রোনালদো থেমে থাকেননি। গত মৌসুমে সব মিলিয়ে ৩৫টি গোল করেছেন ক্লাবটির হয়ে। এবার নতুন চুক্তি অনুযায়ী ২০২৭ সাল পর্যন্ত আল-নাসরে থাকছেন। লক্ষ্য এবার আরও বড়; ট্রফি জয় এবং ক্যারিয়ারে ১০০০ গোলের ঐতিহাসিক মাইলফলক স্পর্শ করা।
আল-নাসরের পরবর্তী প্রীতি ম্যাচ আগামী ১০ আগস্ট, স্পেনের পাওয়ার হর্স স্টেডিয়ামে লা লিগার ক্লাব আলমেরিয়ার বিপক্ষে। আর মৌসুমের প্রথম বড় লড়াই শুরু ১৯ আগস্ট, সৌদি সুপার কাপের সেমিফাইনালে আল-ইত্তিহাদের বিপক্ষে। সেই লড়াইয়ের আগে রোনালদোর এই বার্তা একটাই— তাকে এখনো অনেক কিছু জিততে হবে!
ঢাকা/আমিনুল