সবটা যে সত্য তা না, আবার মিথ্যা তা–ও না: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
Published: 23rd, April 2025 GMT
সীমান্তের সব ভিডিও সত্য নয়, আবার সবটা যে মিথ্যা তা–ও নয়—সম্প্রতি বান্দরবানে মিয়ানমার সীমান্তের একটি ভিডিও নিয়ে এমন মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্র ও কৃষি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
আজ বুধবার দুপুরে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে মতবিনিময় সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি এই মন্তব্য করেন।
সম্প্রতি বান্দরবানের রেমাক্রিতে বৈসাবি উৎসবে মিয়ানমারের বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া প্রসঙ্গে সাংবাদিকেরা জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘এখন দেখতে হবে আরাকান আর্মি ফাইট করতেছে অনেক দিন যাবৎ। এদের অনেকে এপারে বিয়ে করে ফেলছে—এটা অস্বীকার করার কিছু নেই। কিন্তু যে হারে ভিডিওতে আসছে বিষয়টা তা নয়। টিকটক ভিডিও অনেকভাবে করা যায়। সবটা যে সত্য তা না, আবার সবটা যে মিথ্যা তা–ও না। এটার ক্ষেত্রে আপনাকে ব্যালান্স করতে হবে।’
উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘আরাকান ওই বর্ডারটা ডিফিকাল্ট বর্ডার। আমরা তো মিয়ানমারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখি; কিন্তু বর্ডারটা দখল করে আছে আরাকান আর্মি। এখন মিয়ানমার থেকে কিছু আমদানি-রপ্তানি করতে হলে মিয়ানমার সরকারকে ট্যাক্স দিতে হয়, আবার আরাকান আর্মিতে যারা আছে তারাও পয়সা নিচ্ছে। এখানে একটা সমস্যা আছে, আপনাকে বুঝতে হবে। এটার সমাধানের চেষ্টা চলছে। আর সীমান্ত পুরোভাবে রক্ষিত আছে।’
সীমান্তের পর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচ শিক্ষার্থী অপহরণের বিষয়টি নিয়েও প্রশ্ন করেন সাংবাদিকেরা। পাহাড় অশান্ত কি না জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মো.
সম্প্রতি চট্টগ্রামের রাউজানে গুলি করে খুনের ঘটনা বেড়ে যাওয়া প্রসঙ্গে সাংবাদিকেরা জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘ফটিকছড়ি, রাউজান, পটিয়া ও সাতকানিয়া এলাকা হলো পাহাড় ও সমতলের সংমিশ্রণ। এখানকার সমস্যা অন্যান্য এলাকার চেয়ে ডিফারেন্ট। আমরা এই ব্যাপারে আলাপ করছি, এখানে সন্ত্রাসীরা অপকর্ম করে পাহাড়ের দিকে চলে যায়। প্রকাশ্যে কেউ যদি করে থাকে আমি আপনাদের সামনে বলে গেলাম আইনানুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
গণমাধ্যমকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘যে ঘটনা ঘটে, সত্যি ঘটনা আপনারা অবশ্যই প্রকাশ করে দেবেন। তখন আমাদের কাজ করতে সুবিধা হয়। কিন্তু অনেক সময় আছে দু-একজন করে কি, ঘটনা সত্যি নয় কিন্তু প্রকাশ করে দেয়। সেসময় ইনভেস্টিগেশন করে দেখা যায় যে ঘটনা সত্যি নয়, তখন অসুবিধা হয়। পার্শ্ববর্তী দেশের সাংবাদিকেরা এর সুবিধাটা নেয়। যেহেতু জানেন যে, তারা মিথ্যা সংবাদ বেশি পরিবেশন করে।’
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আর ক ন আর ম
এছাড়াও পড়ুন:
মাগুরায় শিশু ধর্ষণ-হত্যা মামলায় সাক্ষ্য ৩ চিকিৎসকের
মাগুরায় আট বছরের শিশু ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় চতুর্থ দিনের মতো সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। গতকাল বুধবার জেলার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক এম জাহিদ হাসানের আদালতে সাক্ষীদের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়।
এ দিন শিশুকে চিকিৎসা প্রদানকারী তিন চিকিৎসক সাক্ষ্য দেন। তারা হলেন– মাগুরা ২৫০ শয্যা হাসপাতালের ডা. সোহাস হালদার, নাকিবা সুলতানা এবং ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ডা. ইসরাত জাহান। তারা সবাই শিশুটিকে ধর্ষণ করা হয়েছিল মর্মে সাক্ষ্য প্রদান করেন।
এর আগে সকালে কড়া নিরাপত্তার মধ্যে মামলার ৪ আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়। বাদীপক্ষের আইনজীবী ও নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের পিপি মনিরুল ইসলাম মুকুল জানান, বিগত চার কার্যদিবস একটানা সাক্ষ্য গ্রহণ চলেছে। এ নিয়ে মোট ১৯ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে। মামলায় মোট ৩৭ জনের সাক্ষ্য নেওয়া হবে। আগামী রোববার মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বাদে অন্য সব সাক্ষী সাক্ষ্য দেবেন। বুধবার আসামিপক্ষের আইনজীবী স্বাধীনভাবে সাক্ষীদের সাক্ষ্য গ্রহণ করেছেন। তিনি আদালতে আসামিরা নির্দোষ বলে যুক্তি উপস্থাপন করেন। আসামিরাও নিজেদের নির্দোষ দাবি করেছেন।
বেড়াতে এসে ৬ মার্চ রাতে মাগুরা সদরের নিজনান্দুয়ালী গ্রামে বোনের শ্বশুর হিটু শেখের দ্বারা ধর্ষণের শিকার হয় ৮ বছরের শিশুটি। এই ধর্ষণের ঘটনা দেশজুড়ে ক্ষোভের সৃষ্টি করে। মাগুরা ২৫০ শয্যা হাসপাতাল, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ঘুরে ঢাকা সিএমএইচে তাকে ভর্তি করা হয়েছিল। ১৩ মার্চ শিশুটি সেখানে মারা যায়। এ ঘটনায় শিশুটির মা আয়েশা আক্তার বড় মেয়ের শ্বশুর হিটু শেখসহ চারজনকে আসামি করে মাগুরা সদর থানায় মামলা করেন। রিমান্ডে হিটু শেখ ধর্ষণের কথা স্বীকার করেছে।