ধামরাই ও গাজীপুরে পোশাক শ্রমিকদের মহাসড়ক অবরোধ
Published: 24th, April 2025 GMT
ঢাকার ধামরাইয়ে ও গাজীপুরের শ্রীপুরের পোশাক শ্রমিকরা তাদের বিভিন্ন দাবিতে গতকাল বুধবার মহাসড়ক অবরোধ করেন। এতে উভয় এলাকায়ই ব্যাপক যানজট সৃষ্টি হয়।
ধামরাই প্রতিনিধি জানান, ১৪ দফা দাবিতে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন রেডিসন ক্যাজুয়াল ওয়্যার লিমিটেড নামে একটি তৈরি পোশাক কারখানার শ্রমিকরা। গতকাল দুপুর আড়াইটার দিকে সুতিপাড়া এলাকায় কারখানার সামনে মহাসড়কে এ কর্মসূচি পালন করেন তারা। এতে মহাসড়কের দুই পাশে প্রায় ৩ ঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ থাকে। এ সময় সড়কের দুই পাশে প্রায় ১০ কিলোমিটার এলাকায় দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হয়। পুলিশ প্রশাসনের মাধ্যমে কিছু দাবি-দাওয়া মেনে নেওয়ার আশ্বাস দিলে বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে শ্রমিকরা অবরোধ তুলে নেন এবং যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
কারণ ছাড়াই বন্ধ, জিএমের পদত্যাগ, সন্ধ্যা ৭টার পর টিফিন, রাত ৯টার পর কাজ করলে নাইট বিল, টাকা কর্তন ছাড়া কারখানার গাড়ি সবাইকে ব্যবহার করতে দেওয়াসহ ১৪ দফা দাবি তুলে ধরেন আন্দোলরত শ্রমিকরা।
শ্রমিকরা জানান, ১৪ দফা দাবি না মানলে কর্মবিরতিসহ কঠোর আন্দোলন চালিয়ে যাবেন।
এ বিষয়ে ধামরাই থানার ওসি মনিরুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, শ্রমিকদের সঙ্গে আলোচনার পর কারখানা কর্তৃপক্ষ যৌক্তিক দাবির বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দেন এবং সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেন। এর পর শ্রমিকরা মহাসড়ক থেকে সরে যান। তবে এ বিষয়ে কারখানা কর্তৃপক্ষ বৃহস্পতিবার (আজ) শ্রমিকদের সঙ্গে সমঝোতায় বসবেন বলেও জানিয়েছেন।
এদিকে গাজীপুর প্রতনিধি জানান, শ্রীপুরে পৌরসভা এলাকার বহেরার চালা এলাকার নিট হরাইজন কারখানার শ্রমিকরা বকেয়া বেতন পরিশোধ ও কারখানা খুলে দেওয়ার দাবিতে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন। এতে মহাসড়কের উভয় পাশে ছয় কিলোমিটার সড়কে দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হয়।
কারখানার মানবসম্পদ বিভাগের কর্মকর্তা জসিম উদ্দিন জানান, শ্রম আইন লঙ্ঘনের জন্য কর্তৃপক্ষ কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধের নোটিশ দেয়।
শ্রীপুর থানার ওসি জয়নাল আবেদীন মণ্ডল বলেন, খবর পেয়ে থানা পুলিশ, হাইওয়ে পুলিশ, সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে এসে শ্রমিকদের বুঝিয়ে সরিয়ে দেন সড়ক থেকে।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
অমর একুশে বইমেলা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক
অমর একুশে বইমেলা বাংলাদেশের মানুষের প্রাণের মেলা। মূলত প্রকাশকদের উদ্যোগে মুক্তিযুদ্ধ উত্তর বাংলাদেশে এই বইমেলার সূত্রপাত। সম্প্রতি এই বইমেলা নানা কারণে-অকারণে ডিসেম্বরে করার কথা শোনা যাচ্ছে। এ প্রেক্ষিতে সুস্পষ্টভাবে বলতেই হচ্ছে -ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলা করা যাবে না। কারণ সেসময় সারাদেশে শিক্ষার্থীদের বার্ষিক পরীক্ষা চলবে।
বইমেলার প্রধান পাঠক আমাদের শিক্ষার্থী। তারা ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলায় আসতে পারবে না। প্রধান পাঠকই যদি মেলায় আসতে না পারে তাহলে মেলা প্রাণহীন হয়ে পড়বে। বইমেলায় অংশগ্রহণকারি প্রকাশকরাও ভয়াবহ ক্ষতির মুখে পড়বে। তাছাড়া একুশের চেতনাকে ধারণ করে যে অমর একুশে বইমেলা, সেটা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক। ভাষা শহীদদরর প্রতি বইমেলার মাধ্যমে আমাদের যে শ্রদ্ধাঞ্জলি, তা অক্ষুন্ন থাকুক।
আরো পড়ুন:
রাজশাহীতে বইপড়ায় কৃতিত্বের পুরস্কার পেল ২৩০৩ শিক্ষার্থী
‘গল্পকারের পছন্দের ৫০ গল্প’ গ্রন্থ প্রকাশিত
সর্বোপরি ৫ জানুয়ারি থেকে ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, এই সময়ে বইমেলা হতে কোন সমস্যা হওয়ার কথা নয়। অথবা তারিখ দুই একদিন এদিক-সেদিক করে নেয়া যেতে পারে। এ সময়ে রোজা নেই, নির্বাচনও নেই। নির্বাচনী ক্যাম্পেইন চলবে। এই মাঠে বইমেলা চলাকালীন সর্বদলীয় সিদ্ধান্তে কেউ সভা-সমাবেশ না করার সিদ্ধান্ত নিলে অনায়াসে এই সময়টাতে বইমেলা করা যেতে পারে। আমার বিশ্বাস- সব দলই অমর একুশে বইমেলার জন্য এই ছাড়টুকু দেবেন।
প্রায় পঞ্চাশ বছরের অধিক সময়ের প্রচেষ্টায় অমর একুশে বইমেলা মহিরুহ হয়ে আমাদের কাছে আবির্ভূত, হঠকারি কোন সিদ্ধান্তে তা যেনো ধ্বংস হওয়ার উপক্রম না হয়। জেনে শুনে বাঙালির এতো বড় একটি সাংস্কৃতিক উৎসবকে ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্থ না করে বরং তা যে কোন মূল্যে আমাদের রক্ষা করা উচিত।
জানুয়ারিতে বাণিজ্যমেলায়ও হয়ে থাকে। এতে অমর একুশে বইমেলার ওপর কোনো বিরূপ প্রভাব পড়বে বলে আমি তা মনে করি না। বইমেলার প্রধান পাঠক শিক্ষার্থী। তারা বইমেলায় আসার জন্য মুখিয়ে থাকে। বাণিজ্য মেলায় যাওয়ার লোকজন বেশির ভাগই আলাদা। তবে অনেকেই বইমেলা এবং বাণিজ্যমেলা দুটোতেই যান। এটা তারা ম্যানেজ করে নিতে পারবেন বলে আমার বিশ্বাস।
আমি বলেছি শুধুমাত্র মেলার মাঠ প্রাঙ্গনে সভা-সমাবেশ না করার মাধ্যমে যদি সর্বদলীয় একটা সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় তাহলে জানুয়ারি- ফেব্রুয়ারি মিলিয়ে বইমেলা করা সম্ভব।আমার মনে হয়, বইমেলা চলাকালীন এই মাঠ কোন দলকে সভা-সমাবেশের জন্য সরকার বরাদ্দ না দিলে, অথবা বইমেলা চলাকালীন দলগুলো নিজের থেকেই এই মাঠের বরাদ্দ না চাইলে সমস্যা আর থাকে না।
লেখক: প্রকাশক পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স লিমিটেড
ঢাকা/লিপি