ফ্যাসিবাদের বিচারকদেরও বিচার হওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেছেন, ‘তাদের বিচার নিশ্চিত করলে ভবিষ্যতে কেউ কোনো আদালতকে দিয়ে তার অশুভ ইচ্ছা ও অগণতান্ত্রিক নির্যাতন–নিপীড়ন মানুষের ওপর চালানোর সাহস পাবে না। এটাই হওয়া উচিত।’

আজ শনিবার দুপুরে ঢাকায় জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘ফ্যাসিবাদের মিথ্যা মামলায় ৬০ লাখ আসামি, মুক্তি কতদূর’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে রুহুল কবির রিজভী এসব কথা বলেন। ‘ন্যাশনালিস্ট রিসার্চ ফাউন্ডেশন’ এ আলোচনা সভার আয়োজন করে।

রুহুল কবির রিজভী অভিযোগ করে বলেন, ‘যাঁরা এই ফ্যাসিজমকে প্রতিষ্ঠিত করতে সাহায্য করেছেন, তাঁদের অন্যতম হচ্ছেন আদালত। বিচারপতি খায়রুল হক, বিচারপতি এনায়েতুর রহিম, বিচারপতি আসাদুজ্জামান—(আছে) এ রকম অসংখ্য নাম।’

‘এঁরা সবচেয়ে নির্দোষ যে নারী, জনগণের পক্ষে সংগ্রাম করেছেন নিরবিচ্ছিন্নভাবে, শত নিপীড়ন–নির্যাতন ভোগ করে জনগণকে ছেড়ে যাননি, মাটিকে ছেড়ে যাননি, সেই দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলায় আসাদুজ্জামান তাঁকে সাজা দিয়েছেন। সেই বিচারকেরা কেন শাস্তির আওতায় আসবেন না’, বলেন রিজভী।

বিএনপির নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের সময় হওয়া মামলা প্রসঙ্গে রিজভী বলেন, ৬০ লাখ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে যে মামলা, সেই মামলা আট মাস চলে যাওয়ার পরও আদালতের সেলফে থাকার কথা ছিল না। অতি দ্রুত এ মামলাগুলোর নিস্পত্তি করতে হবে।

বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘ফ্যাসিবাদের বিচারক, তাঁদেরও বিচার হতে হবে। আমরা নুরেমবাগ ট্রায়ালে দেখেছি—হিটলারের আদালতের যাঁরা বিচারক ছিলেন, কোনো ধরনের যুক্তির কথা না শুনে হিটলারের কথায় লাখ লাখ কয়েদিকে পুড়িয়ে মারার যাঁরা সিদ্ধান্ত দিয়েছেন, বিচার করেছেন, তাঁদের বিচার হয়নি? তাঁদের যদি বিচার হতে পারে, তাহলে আজকে শেখ হাসিনার আমলের ফ্যাসিবাদকে যাঁরা প্রলম্বিত করেছেন, তাঁদের কেন বিচার হবে না। তাঁদের বিচার নিশ্চিত করতে হবে।’

বিএনপির নেতা–কর্মীদের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের সময় হওয়া মামলা প্রসঙ্গে রিজভী বলেন, ‘৬০ লাখ নেতা–কর্মীর বিরুদ্ধে যে মামলা, সেই মামলা আট মাস চলে যাওয়ার পরও আদালতের সেলফে থাকার কথা ছিল না। অতি দ্রুত এ মামলাগুলোর নিস্পত্তি করতে হবে।’

আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের উপদেষ্টা মাহাদী আমিন বলেন, ‘পৃথিবীতে এমন অনেক দেশ আছে, যে দেশের জনসংখ্যা ৬০ লাখ নেই। অথচ বিএনপির ৬০ লাখ নেতা–কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হয়েছে।’

মাহাদী আমিনের এ বক্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে রুহুর কবির রিজভী বলেন, ‘একটি দেশের জনসখ্যার চেয়ে বাংলাদেশে আসামির সংখ্যা বেশি। ডেনমার্কে ৫০ লাখ লোক বসবাস করেন। অথচ আমাদের দেশে বিএনপির ৬০ লাখের বেশি নেতা–কর্মীকে আসামি করা হয়েছে।’ আওয়ামী লীগের সময় হওয়া মুহাম্মদ ইউনূসের সব মামলা প্রত্যহার হলেও বিএনপি নেতা–কর্মীদের মামলাগুলো প্রত্যাহার না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।

আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন আয়োজক সংগঠন ন্যাশনালিস্ট রিসার্চ ফাউন্ডেশনের আহ্বায়ক সৈয়দ আবদাল আহমেদ। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিএনপির আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক নাসির উদ্দিন আহমেদ।

সভায় আরও বক্তব্য দেন বিএনপির তথ্যবিষয়ক সম্পাদক আজীজুল বারী হেলাল, নাটোর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ফারজানা শারমিন প্রমুখ। সঞ্চালনায় ছিলেন ন্যাশনালিস্ট রিসার্চ ফাউন্ডেশনের সদস্যসচিব ফরিদ উদ্দিন আহমেদ।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ৬০ ল খ ন ব এনপ র কর ছ ন

এছাড়াও পড়ুন:

শাহবাজ শরিফ–জয়শঙ্করকে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ফোন, কী বললেন

কাশ্মীরে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা নিয়ে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করকে ফোন করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। গতকাল বুধবার দুজনকে ফোন করেন তিনি। এ সময় হামলার ঘটনা নিয়ে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সৃষ্টি হওয়া উত্তেজনা কমানোর ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন রুবিও।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস এক বিবৃতিতে বলেন, শাহবাজ শরিফের সঙ্গে ফোনকলে পেহেলগামে হামলার ‘নিন্দা জানানোর প্রয়োজনীতা নিয়ে’ কথা বলেন রুবিও। একই সঙ্গে ‘অযৌক্তিক’ এই হামলার তদন্তে পাকিস্তানি কর্মকর্তাদের সহযোগীতার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

এদিকে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে করা আলাদা একটি ফোনকলে নয়াদিল্লির সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। পাশাপাশি পেহেলগামে হামলার পেছনে পাকিস্তানের হাত আছে বলে ভারত যে অভিযোগ তুলেছে এবং প্রতিশোধের যে হুমকি দিচ্ছে—এ বিষয়ে সতর্কতা অবলম্বন করার আহ্বান জানান তিনি।

ট্যামি ব্রুস বলেন, ‘পেহেলগামে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলায় যে প্রাণহানি হয়েছে, তা নিয়ে দুঃখ প্রকাশ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী (রুবিও)। সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ভারতের সঙ্গে একজোট হয়ে কাজ করার যুক্তরাষ্ট্রের যে প্রতিশ্রুতি রয়েছে, তা–ও পুনর্ব্যক্ত করেন তিনি। একই সঙ্গে উত্তেজনা কমাতে এবং দক্ষিণ এশিয়ায় শান্তি ও নিরাপত্তা বজায় রাখতে পাকিস্তানের সঙ্গে কাজ করার জন্য ভারতের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ