গণতান্ত্রিক দলগুলোর ঐক্যের ওপর নির্ভর করবে সংলাপের সাফল্য। এ মন্তব্য করেছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ। মঙ্গলবার জাতীয় সংসদের এলডি হলে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সঙ্গে সংলাপের সূচনা বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।

রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপের বিষয়ে আলী রীয়াজ বলেন, অনেক বিষয়ে ঐকমত্য আছে। বিভিন্ন বিষয়ে ভিন্ন মত দেখতে পাই, সেগুলো আলোচনার মধ্য দিয়ে অগ্রসর হব। গণতান্ত্রিক সমাজ অবশ্যই ভিন্ন ভিন্ন মতের সমাজ। আমরা সকলেই এক ভাষায় কথা বলব না। তবে আমাদের লক্ষ্য এক। সেই জায়গায় ঐক্যবদ্ধ আছি, থাকব। বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক শক্তির ঐক্যের ওপর নির্ভর করবে আমরা কতটুকু সাফল্য অর্জন করতে পারব। 

সংলাপের অংশ নেওয়া সকলের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য অভিন্ন উল্লেখ করে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি বলেন, আমরা চাই, দেশের মানুষ চায়, যারা প্রাণ দিয়েছেন তাদের কাছে আমাদের অঙ্গীকার ও দায় হচ্ছে, যেন সুযোগকে হাতছাড়া না করি। আমরা প্রকৃতপক্ষে রাষ্ট্র বিনির্মাণে প্রক্রিয়া শুরু করতে পারি। 

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের লক্ষ্যের বিষয়ে আলী রীয়াজ বলেন, বাংলাদেশে দীর্ঘদিন ধরে যে গণতন্ত্রের সংগ্রাম, বিশেষ করে ১৬ বছরের ফ্যাসিবাদী শাসন দেশের প্রাতিষ্ঠানিক সমস্ত রকম সম্ভাবনাকে প্রায় তিরোহিত করে দিয়েছিল। যার বিরুদ্ধে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক শক্তিগুলো লড়াই করেছে, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি অন্যতম অংশীদার থেকেছে। সেই প্রক্রিয়াকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়া কমিশনের লক্ষ্য। 

আলী রীয়াজ বলেন, সকলে মিলে আমরা একটি জাতীয় সনদ তৈরি করতে চাই। এটা কেবল ঐকমত্য কমিশনের আকাঙ্খার বিষয় নয়, এটি কেবল সরকারের বিষয় নয়। আজকে আমরা যে কথা বলতে পারছি, স্বাধীনতার পর প্রথমবারের মতো প্রকৃতপক্ষে রাষ্ট্র বিনির্মাণে সকলে মিলে, সকলে একত্রে বসে কথা বলতে পারছি। পথ খুঁজবার চেষ্টা করছি। সেটা সম্ভব হয়েছে কমপক্ষে ১৪ শ’ মানুষের রক্তপাত ও প্রাণনাশের মধ্য দিয়ে। 

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দারের সঞ্চালনায় আরও উপস্থিত আছেন কমিশনের সদস্য সফর রাজ হোসেন, ড.

বদিউল আলম মজুমদার, ড. ইফতেখারুজ্জামান।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: আল র য় জ গণত ন ত র ক র লক ষ য

এছাড়াও পড়ুন:

গণভোট নিয়ে মতভেদে উপদেষ্টা পরিষদের উদ্বেগ

জুলাই জাতীয় সনদ বা সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়নের বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যে মতভেদ দেখা দিয়েছে, তাতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ। এ বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোকে নিজ উদ্যোগে নিজেদের মধ্যে আলাপ-আলোচনা করে সম্ভাব্য দ্রুতত সময়ে অন্তর্বর্তী সরকারকে ঐক্যবদ্ধ দিকনির্দেশনা দেওয়ার জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে।

সোমবার (৩ নভেম্বর) দুপুরে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে এ তথ্য জানানো হয়। যদিও এর আগেই এক সংবাদ সম্মেলনে এমন কথায় জানান আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল।

প্রেস উইং জানায়, জাতীয় ঐক্যমত কমিশন থেকে প্রণীত জুলাই সনদ এবং এর বাস্তবায়ন সংক্রান্ত বিষয়ে উপদেষ্টা পরিষদের একটি জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সংস্কার বিষয়ে ঐকমত্য স্থাপনের প্রচেষ্টার জন্য এবং বহু বিষয়ে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার জন্য ঐকমত্য কমিশন ও রাজনৈতিক দলগুলির প্রতি ধন্যবাদ জ্ঞাপন করা হয়।  

এতে বলা হয়, উপদেষ্টা পরিষদের সভায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রস্তাবিত জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) আদেশ চূড়ান্তকরণ এবং এতে উল্লেখিত গণভোট আয়োজন ও গণভোটের বিষয়বস্তু নিয়ে আলোচনা করা হয়। এতে লক্ষ্য করা হয় যে, ঐকমত্য কমিশনে দীর্ঘদিন আলোচনার পরও কয়েকটি সংস্কারের সুপারিশ বিষয়ে ভিন্ন মত রয়েছে। এছাড়া, গণভোট কবে অনুষ্ঠিত হবে ও এর বিষয়বস্তু কী হবে এসব প্রশ্নে রাজনৈতিক দলগুলোর  মধ্যে যে মতভেদ দেখা দিয়েছে সে জন্য সভায় উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। এই পরিপ্রেক্ষিতে গণভোটের সময় কখন হবে, গণভোটের বিষয়বস্তু কী হবে, জুলাই সনদে বর্ণিত ভিন্নমতগুলো প্রসঙ্গে কী পদক্ষেপ নেওয়া হবে তা নিয়ে ঐক্যমত কমিশনের প্রস্তাবগুলোর আলোকে জরুরী ভিত্তিতে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা প্রয়োজন বলে সভা অভিমত ব্যক্ত করে।

এসব ক্ষেত্রে ফ্যসিবাদবিরোধী আন্দোলনের দীর্ঘদিনের মিত্র রাজনৈতিক দলগুলোকে স্বীয় উদ্যোগে নিজেদের মধ্যে আলাপ আলোচনা করে দ্রুততম সময়ে ( সম্ভব  হলে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে) সরকারকে ঐক্যবদ্ধ দিকনির্দেশনা প্রদান করার আহ্বান জানানো হয়। এমন নির্দেশনা পেলে সরকারের পক্ষে সিদ্ধান্ত গ্রহণ অনেক সহজ হবে। বলেও উল্লেখ করা হয়। পরিস্থিতিতে কালক্ষেপণের যেকোনো সুযোগ নাই সেটাও সবার বিবেচনায় রাখার জন্য বলা হয়।

সভায় ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্থে আগামী সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়ে সরকারের সংকল্প পুনর্ব্যক্ত করা হয়।

রাজনৈতিক দলগুলোর কাছ থেকে ঐক্যবদ্ধ নির্দেশনা না পেলে কী হবে এমন প্রশ্নের জবাবে আইন উপদেষ্টা বলেন, “রাজনৈতিক দলগুলো নিজেরা আলাপ-আলোচনা করে এই বিষয়েও আমাদের একটি ঐক্যবদ্ধ নির্দেশনা দেবে—এ প্রত্যাশা করছি। ওনারা যদি আলাপ-আলোচনা করেন, আমাদের জন্য কাজটি অত্যন্ত সহজ হয়। ওনারা যদি ঐক্যবদ্ধ সিদ্ধান্ত দিতে না পারে, অবশ্যই সরকার সরকারের মতো সিদ্ধান্ত নেবে।” 

ঢাকা/ইভা 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ভোট ছাড়া সমঝোতায় জুয়েলার্স সমিতির নতুন পর্ষদ, সভাপতি এনামুল হক খান
  • ঝিনাইদহে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষে আহত ১৫, এলাকায় উত্তেজনা
  • প্রথম আলোরও একটা ঐকমত্য সনদ আছে, আর তা আছে আমাদের হৃদয়ে
  • রাজনৈতিক দলগুলোকে ৭ দিনের সময় দিলে সরকার
  • গণভোট নিয়ে মতভেদে উপদেষ্টা পরিষদের উদ্বেগ
  • ছাত্রদলের কমিটি নেই ১৪ মাস, স্থবির কার্যক্রম
  • মামলায় ঝুলে গেছে এফবিসিসিআইয়ের নির্বাচন
  • গণসংযোগ ও লিফলেট বিতরণ করলেন সিলেট-৬ আসনে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী আদিবা হোসেন
  • সম্মেলনের প্রায় তিন মাস পর রাজশাহী মহানগর বিএনপির আংশিক কমিটি
  • হিন্দুদের ভাগ্যোন্নয়নে প্রয়োজন ইসলামি সরকার: গোলাম পরওয়ার