প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এ মাসে বলেছেন, তাঁর শুল্কের কারণে যুক্তরাষ্ট্র এরই মধ্যে দিনে ২০০ কোটি মার্কিন ডলার রাজস্ব আয় করতে শুরু করেছে। বাস্তবতা হচ্ছে, এই সময়ে দৈনিক গড়ে ১৯ কোটি ২০ লাখ মার্কিন ডলার রাজস্ব আয় হয়েছে।

এটা ঠিক যে ট্রাম্পের শুল্ক আরোপের ফলে যুক্তরাষ্ট্রে পণ্য আমদানি শুল্ক থেকে আয় কিছুটা বেড়েছে। তবে সেটা প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প আয় যেভাবে বাড়বে বলেছেন, তার ধারেকাছেও নেই। যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য অধিদপ্তর ২৫ এপ্রিল শুক্রবার এ বিষয়ে সর্বশেষ তথ্য প্রকাশ করেছে। ওই তথ্য অনুযায়ী, সেদিন যুক্তরাষ্ট্র শুল্ক ও কিছু নির্দিষ্ট আবগারি কর থেকে ২৮ কোটি ৫০ লাখ ডলার রাজস্ব আয় করেছে।

আর সেদিন পর্যন্ত এপ্রিলে শুল্ক থেকে মোট রাজস্ব আয় ১ হাজার ৬১০ কোটি ডলারের বেশি।

যুক্তরাষ্ট্রে গত ১৭ জানুয়ারি শুল্ক থেকে রাজস্ব আয় ছিল ১২ কোটি ৮০ লাখ ডলার। পূর্ববর্তী প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের আমলে সেদিনই শুল্ক থেকে যুক্তরাষ্ট্রের দৈনিক রাজস্ব আয়ের সর্বশেষ তথ্য প্রকাশ করা হয়েছিল।

সারা বিশ্বে যুক্তরাষ্ট্রের যত বাণিজ্য অংশীদার রয়েছে, তাদের প্রায় সবার ওপরই পাল্টা শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়ে রেখেছেন ট্রাম্প। সবচেয়ে বেশি শুল্ক আরোপ করেছেন চীনের ওপর। দেশটির ওপর আগে থেকে ২০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা ছিল। তার সঙ্গে বাড়তি আরও ১২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছেন।

আরও পড়ুনপাল্টা শুল্ক তিন মাসের জন্য স্থগিত করলেন ট্রাম্প, এ সময় এই শুল্ক থাকছে ১০ শতাংশ০৯ এপ্রিল ২০২৫

তবে ট্রাম্প চীন বাদে অন্য দেশগুলোর ওপর ২ এপ্রিল ঘোষণা করা শুল্কের বাস্তবায়ন আপাতত স্থগিত রেখেছেন। তার পরিবর্তে ৯ এপ্রিল তিনি যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করা সব পণ্যের ওপর ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছেন।

এ ছাড়া মার্চে ট্রাম্প গাড়ি, ইস্পাত, অ্যালুমিনিয়াম ও পটাশ আমদানিতে যে শুল্ক আরোপ করেছেন, সেটাও বহাল আছে। এসব শুল্কের কারণে এই খাত থেকে যুক্তরাষ্ট্রে রাজস্ব আয় বেড়েছে।

আরও পড়ুন১৮ ঘণ্টায় কী ঘটেছিল, যা ট্রাম্পকে শুল্কনীতি স্থগিত করতে বাধ্য করেছিল১০ এপ্রিল ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র ওপর

এছাড়াও পড়ুন:

পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসা ভিনগ্রহের বস্তু নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে ইলন মাস্ক

গত জুলাই মাসে শনাক্ত হওয়া রহস্যময় ‘৩আই/অ্যাটলাস’ নামের আন্তনাক্ষত্রিক বস্তুর পরিচয় নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে বিজ্ঞানীদের মধ্যে। আমাদের সৌরজগতের মধ্যে থাকা বস্তুটি এমন আচরণ করছে, যা বিজ্ঞানীরা আগে কখনো দেখেননি। কারও ধারণা এটি ধূমকেতু, আবার কারও মতে ভিনগ্রহ থেকে আসা মহাকাশযান। উৎস ও পরিচয় সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানাতে না পারলেও বস্তুটি পৃথিবীর জন্য কোনো হুমকি নয় বলে ধারণা করছে যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা। তবে যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের খ্যাতনামা জ্যোতির্বিজ্ঞানী অভি লোব অভিযোগ করেছেন, নাসা বস্তুটির বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য গোপন করছে। বিশাল আকারের অতিদ্রুতগামী মহাজাগতিক বস্তুটি অস্বাভাবিক রাসায়নিক উপাদান নিঃসরণ করছে, যা বিজ্ঞানের প্রচলিত ধারণাকে চ্যালেঞ্জ করছে। অনেকের ধারণা, ৩আই/অ্যাটলাস কোনো কৃত্রিম উৎস থেকে তৈরি হতে পারে। এবার এই বিতর্কে নাম লিখিয়েছেন মহাকাশ সংস্থা স্পেসএক্সের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ইলন মাস্ক।

জনপ্রিয় মার্কিন পডকাস্ট দ্য জো রোগান এক্সপেরিয়েন্সে ইলন মাস্ক ৩আই/অ্যাটলাস নামের আন্তনাক্ষত্রিক বস্তু সম্পর্কে নিজের ভাবনা প্রকাশ করেছেন। বস্তুটি কোনো ভিনগ্রহের মহাকাশযান হতে পারে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে ইলন মাস্ক বলেন, ‘আপনি যদি এটিকে সম্পূর্ণ নিকেল দিয়ে তৈরি করেন, তবে তা হবে একটি অত্যন্ত ভারী মহাকাশযান। এটি এমন একটি যান হতে পারে, যা একটি মহাদেশকে নিশ্চিহ্ন করে দিতে পারে। তার চেয়েও খারাপ কিছু ঘটাতে পারে। যদি আমি ভিনগ্রহের কোনো প্রমাণ সম্পর্কে জানতে পারি, তাহলে কথা দিচ্ছি আপনার অনুষ্ঠানে আসব। আর এখানেই তা প্রকাশ করব।’

অভি লোবের দাবি, আন্তনাক্ষত্রিক বস্তুটি পৃথিবীর ওপর নজরদারি করতে পাঠানো ভিনগ্রহের কোনো মহাকাশযান হতে পারে। অস্বাভাবিক লেজযুক্ত বস্তুটি প্রতি সেকেন্ডে চার গ্রাম নিকেল নিঃসরণ করছে; যদিও সেখানে কোনো লোহার উপস্থিতি নেই। ধূমকেতুর ক্ষেত্রে এমন আচরণ আগে দেখা যায়নি।

জো রোগান তাঁর আলোচনায় ধূমকেতুর রহস্যময় বৈশিষ্ট্যের ওপর জোর দেন। ধূমকেতুর গ্যাসের মেঘে নিকেলের উপস্থিতি উল্লেখ করেন। এই ধাতু পৃথিবীতে প্রধানত শিল্পক্ষেত্রে ব্যবহৃত সংকর ধাতুতে পাওয়া যায়। অন্যদিকে ইলন মাস্ক নিকেলের উপস্থিতির একটি পার্থিব ব্যাখ্যা দেন। তিনি বলেন, অনেক ধূমকেতু ও গ্রহাণু প্রাথমিকভাবে নিকেল দিয়ে তৈরি। পৃথিবীতে যেখানে নিকেলখনি দেখা যায়, সেখানে আসলে অতীতে নিকেলসমৃদ্ধ কোনো গ্রহাণু বা ধূমকেতু আঘাত করেছিল।

সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া

সম্পর্কিত নিবন্ধ