উপদেষ্টা আসিফের পদত্যাগ দাবিতে মুরাদনগরে বিক্ষোভ, পুলিশের বাধা
Published: 30th, April 2025 GMT
কুমিল্লার মুরাদনগরে স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার পদত্যাগ দাবি করে ঝটিকা বিক্ষোভ করা হয়েছে। আজ বুধবার দুপুরে উপজেলার কাজী নোমান আহমেদ কলেজসহ আশপাশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বেশ কিছু শিক্ষার্থী ও বিএনপি নেতাকর্মী এ বিক্ষোভ মিছিলে অংশগ্রহণ করেন। তবে অনুমতি ছাড়া মিছিল করার অভিযোগে পুলিশ বাঁধা দিলে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে মুরাদনগর উপজেলা সদরে কয়েক শ’ শিক্ষার্থী ও বিএনপির নেতাকর্মী একত্রিত হয়ে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করেন। ব্যানারে লেখা ছিল- বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও সচেতন জনগণ। এ সময় স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের পদত্যাগ দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দেওয়া হয়। খবর পেয়ে পুলিশ এসে মিছিলে বাধা দিলে হট্টগোল সৃষ্টি হয়। ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, পুলিশ বিক্ষোভকারীদের কাছ থেকে ব্যানার ছিনিয়ে নিচ্ছেন।
তবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন মুরাদনগর উপজেলার সমন্বয়ক ওবাইয়দুল হক বলেন, ব্যানারে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন লেখা থাকলেও তাদের কেউ ছিল না। বিক্ষোভ মিছিলে অংশগ্রহণকারীরা সাবেক এমপি শাহ মোফাজ্জল হোসাইন কায়কোবাদের নিজস্ব নোমান কলেজের শিক্ষার্থী। মিছিলে নেতৃত্ব দেন উপজেলা বিএনপি ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। এর আগে গত মঙ্গলবার এই চক্রটি ঢাকায় আসিফ মাহমুদের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলনও করেছে।
উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মহিউদ্দিন অঞ্জন বলেন, উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের পদত্যাগ দাবি করে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। এতে পুলিশ বাঁধা দিলে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। তবে অপ্রীতিকর কোনো ঘটনা ঘটেনি।
মুরাদনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুর রহমান বলেন, কোনো প্রকার অনুমতি ছাড়াই নোমান আহমেদ কলেজের কিছু শিক্ষার্থী এসে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করে। এতে উপজেলা বিএনপির সভাপতি সাধারণ সম্পাদকসহ বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী মিছিলের নেতৃত্ব দেয়। খবর পেয়ে আমরা সেখানে গিয়ে তাদের অনুমতি আছে কিনা জানতে চাইলে তারা পুলিশের ওপর চড়াও হয় এবং বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করে। আমরা কৌশলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনি।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: র পদত য গ দ ব ম র দনগর ন ত কর ম উপদ ষ ট ব এনপ উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগে যশোর আইনজীবী সমিতির চার সদস্যকে সাময়িক বহিষ্কার
অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে যশোর আইনজীবী সমিতির চার সদস্যকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। গতকাল বুধবার বিকেলে সমিতির নির্বাহী কমিটির সভায় ওই চারজনের কারণ দর্শানো নোটিশের জবাবের শুনানি শেষে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বহিষ্কৃত সদস্যরা হলেন আইনজীবী আবদুর রাজ্জাক, সৈয়দ কবির হোসেন, রফিকুল ইসলাম রফিক ও তরফদার আবদুল মুকিত। তাঁদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত আদালতের সব কার্যক্রম থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে।
এ সমিতির সাধারণ সম্পাদক এম এ গফুর বলেন, ‘অভিযোগ প্রমাণিত হওয়াতে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কেউ সমিতির নিয়মনীতির ঊর্ধ্বে নন। বৃহস্পতিবার ওই চার সদস্যকে বহিষ্কারের বিষয়টি নোটিশ দিয়ে জানানো হবে।’
সমিতি সূত্রে জানা গেছে, যশোর জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য সৈয়দ কবির হোসেনের (জনি) কাছে ৩৫ লাখ টাকায় শহরের বারান্দীপাড়া কদমতলা এলাকায় জমি বিক্রি করেন ইমরান হাসান। জমি রেজিস্ট্রির আগে সব টাকা পরিশোধের কথা থাকলেও সৈয়দ কবির হোসেন ১০ লাখ টাকা দিয়েছিলেন। বাকি ২৫ লাখ টাকা না দিয়ে টালবাহানা করতে থাকেন। পরে তিনি আরও ১৭ লাখ টাকা দেন। বাকি ৮ লাখ টাকা চাইলে হুমকি দিতে থাকেন কবির হোসেন। টাকা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে ইমরান হাসান আইনজীবী সমিতি বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন।
সমিতির নির্বাহী কমিটির সভায় তদন্ত প্রতিবেদনের ওপর শুনানি শেষে কবির হোসেনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। নোটিশের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় সমিতির সুনাম ক্ষুণ্ন করায় গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কবির হোসেনকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়।
এ বিষয়ে আইনজীবী কবির হোসেন বলেন, ‘বহিষ্কারের বিষয়টি আমি শুনেছি। তবে যে বিষয়ে আমাকে অভিযুক্ত করা হয়েছে, সেই বিষয়ে অভিযুক্ত আমি নই। তারপরও আইনজীবী সমিতি আমার অভিভাবক; তারা যে ব্যবস্থা নিয়েছে, তার বিষয়ে আমার কিছু বলার নেই।’
অন্যদিকে অভয়নগরের নওয়াপাড়ার জয়েন্ট ট্রেডিং করপোরেশন পাওনা টাকা আদায়ে আবদুর রাজ্জাককে মামলার আইনজীবী নিয়োগ দিয়েছিল। ২০১৯ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত আবদুর রাজ্জাক আটটি চেকের মামলা পরিচালনা করেন। এসব মামলার রায় ও আপিল বাদীর অনুকূলে যাওয়ার পর আটটি চেকের ৪১ লাখ ১২ হাজার ৫০০ টাকা ব্যাংক থেকে উত্তোলন করে নেন আবদুর রাজ্জাক। এ টাকা জয়েন্ট ট্রেডিং কর্তৃপক্ষকে না দিয়ে তিনি ঘোরাতে থাকেন। চলতি বছরের ৪ জুন তিনি ১৫ লাখ টাকার একটি চেক দেন। চেকটি ব্যাংকে জমা দিলে পর্যাপ্ত টাকা না থাকায় নগদায়ন করা যায়নি। টাকা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে জয়েন্ট ট্রেডিং করপোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল ওহাব গত ২৮ জুলাই আবদুর রাজ্জাকের বিরুদ্ধে যশোর আইনজীবী সমিতি বরাবর অভিযোগ করেন।
এ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আবদুর রাজ্জাককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয় যশোর আইনজীবী সমিতি। নোটিশের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় আবদুর রাজ্জাককে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। এ ছাড়া রফিকুল ইসলাম রফিক তাঁর সহকর্মীর সঙ্গে অসদাচরণ ও মামলা করতে টাকা ও কাগজপত্র নিয়ে মামলা না করায় সমিতির সুনাম ক্ষুণ্ন করায় সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। আইনজীবী তরফদার আবদুল মুকিতের বিরুদ্ধেও নানা ধরনের অভিযোগ রয়েছে। এ কারণে তাঁকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।