ভারতের সঙ্গে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার মধ্যে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে পাকিস্তান। ভারত পাকিস্তানে চেনাব নদীর পানিপ্রবাহ কমিয়ে দিয়েছে-এমন খবর প্রকাশ্যে আসার পর রোববার পাকিস্তান এ সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে।

পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়, ভারতের সঙ্গে তীব্র উত্তেজনার মধ্যে এই অঞ্চলের সর্বশেষ অবস্থা জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদকে অবহিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পাকিস্তান। নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠক আহ্বানে অবিলম্বে পদক্ষেপ নিতে জাতিসংঘে পাকিস্তানের স্থায়ী প্রতিনিধি আসিম ইফতিখারকে নির্দেশ দিয়েছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার।

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘ভারতের আগ্রাসী কর্মকাণ্ড, উসকানি এবং উসকানিমূলক বক্তব্যের বিষয়টি জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদকে অবহিত করবে পাকিস্তান।’ 

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘বিশেষ করে সিন্ধু পানিচুক্তি স্থগিতের মতো ভারতের বেআইনি পদক্ষেপের বিষয়টি তুলে ধরবে পাকিস্তান।’ দিল্লির ‘আগ্রাসী কর্মকাণ্ড’ কীভাবে এ অঞ্চলের শান্তি ও নিরাপত্তা বিঘ্নিত করছে, সে বিষয়ও স্পষ্ট করা হবে বলে জানিয়েছে ইসলামাবাদ।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে প্রকৃত ঘটনা তুলে ধরতে পাকিস্তানের প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে এ গুরুত্বপূর্ণ কূটনৈতিক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।’

উল্লেখ্য, ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে গত ২২ এপ্রিল বন্দুকধারীদের হামলায় ২৬ জন নিহত হন, যাদের বেশির ভাগই পর্যটক। এ হামলার পেছনে পাকিস্তানের হাত রয়েছে দাবি করে দেশটির বিরুদ্ধে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছে নয়াদিল্লি। তবে অভিযোগ নাকচ করে পাল্টা ব্যবস্থা নিচ্ছে পাকিস্তানও। এ নিয়ে পারমাণবিক শক্তিধর দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে তীব্র উত্তেজনা বিরাজ করছে।
 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: পদক ষ প

এছাড়াও পড়ুন:

পুলিশের উপস্থিতিতে অপহরণের অভিযোগ, দুইদিনেও উদ্ধার হয়নি পল্লী চিকিৎসক

গাইবান্ধার সাদুল্লাপুরে পুলিশের উপস্থিতিতে তরিকুল ইসলাম (৩৫) নামে এক পল্লী চিকিৎসককে অপহরণের অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার বিকেল সাড়ে চারটার দিকে উপজেলার ভাতগ্রাম ইউনিয়নের হাতি চামটার ব্রিজ এলাকা থেকে তাকে অপহরণ করেন দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। 

ভিডিওতে দেখা যায়, মাথায় হেলমেট এবং পুলিশের পোশাক পরিহিত এক ব্যক্তি দাঁড়িয়ে রয়েছেন। তার সামনেই কয়েকজন ব্যক্তি তরিকুল ইসলামকে টেনে-হিঁচড়ে একটি অটোভ্যানে তুলছেন। এ সময় আশপাশের কয়েকজন তাকিয়ে দেখেন। তরিকুল তাদের সাহায্য চাইলেও সবাই দাঁড়িয়ে ছিলেন। এ সময় দুর্বৃত্তদের একজনকে বলতে শোনা যায়, 'এ এখানে প্রশাসনের লোক আছে।' 

অপহরণের শিকার তরিকুল ইসলাম ভাতগ্রাম ইউনিয়নের কৃষ্ণপুর কুটিপাড়া গ্রামের নুরুল ইসলামের ছেলে। ভাতগ্রাম বাজারে পল্লি চিকিৎসক হিসেবে তার চেম্বার ও ওষুধের দোকান রয়েছে। তিনি স্থানীয় একটি মসজিদে ইমামের দায়িত্ব পালন করতেন।

এদিকে অপহরণের দুইদিন পার হলেও পুলিশ তাকে উদ্ধার করতে না পারায় উদ্বেগ জানিয়েছেন স্বজনরা। তবে অপহরণকারীরা এ পর্যন্ত ৪ থেকে ৫ বার ফোন দিয়ে অপহৃত তরিকুলের ছোটভাই হিরুর কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করেছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে। 

এ ঘটনায় গত শনিবার রাতে পল্লী চিকিৎসকের ছোটভাই হিরু মিয়া সাদুল্লাপুর থানায় ৮ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও সাত-আটজনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেছেন। 

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, তরিকুল ইসলামের ঔষধের দোকানে সুমন নামে এক ব্যক্তি ৬ মাস কাজ করেছেন। পরে তাকে কাজ থেকে বাদ দেওয়া হলে বিভিন্ন অজুহাতে তিনি  টাকা দাবি করে আসছিলেন দোকান মালিক তরিকুলের কাছে। এ নিয়ে কয়েকবার স্থানীয়ভাবে শালিসি বৈঠকও হয়। গত শুক্রবার বিকেলে তরিকুল বাড়ি থেকে মোটরসাইকেলে ভাতগ্রাম বাজারে তার দোকানে যাচ্ছিলেন। পথে সুমনসহ স্থানীয় কয়েকজন দুর্বৃত্ত তার পথরোধ করে মারধর করেন এবং জোরপূর্বক তাকে অটোরিকশা ভ্যানে তুলে নিয়ে যায়।

পল্লি চিকিৎসকের ছোটভাই হিরু মিয়া বলেন, অভিযোগ দেওয়ার দুইদিন হয়ে গেল, এখনো আমার ভাইকে উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ। অথচ সেখানে সাদুল্লাপুর থানার একজন এএসআই উপস্থিত ছিলেন। অপহরণকারীরা সবার পরিচিত। দিনে দুপুরে এ ধরনের ঘটনা ঘটানোর কারণে ভাইকে নিয়ে খুব দুঃশ্চিন্তায় আছি আমরা। তার দুই মেয়ে শুধু কাঁদছে। 

তিনি আরও বলেন, সবশেষ রোববার দুপুরে অপহৃত তরিকুলের কাছে থাকা মোবাইল ফোন থেকে দুর্বৃত্তরা ফোন করে মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করেছেন। প্রশাসনের কাছে তার বড়ভাইকে দ্রুত উদ্ধার করে পরিবারের কাছে ফেরত দেওয়ার অনুরোধ করেন তিনি। 

রোববার রাত ৯টায় সাদুল্লাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তাজউদ্দিন খন্দকার সমকালকে বলেন, ‘অপহরণের সময় পুলিশের পোশাক পরিহিত এক ব্যক্তির উপস্থিতির কথা শুনেছি। কিন্তু স্পষ্ট নয়। অপহরণের শিকার তরিকুল ইসলামকে উদ্ধারে পুলিশের অভিযান চলামান রয়েছে।’ 
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ