ভারত ও পাকিস্তানের নেতাদের প্রতি চলমান উত্তেজনা কমিয়ে আনার আহ্বান জানিয়েছেন শান্তিতে নোবেলজয়ী মালালা ইউসুফজাই। তিনি বলেন, ‘উত্তেজনা কমিয়ে আনতে এবং বেসামরিক মানুষজন, বিশেষ করে শিশুদের সুরক্ষায় পদক্ষেপ নিন। বিভেদ সৃষ্টিকারী শক্তির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হোন।’

ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে পাল্টাপাল্টি হামলার পরিস্থিতিতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে মালালা লেখেন, ‘একে অপরের নয়, বরং ঘৃণা ও সহিংসতা আমাদের সাধারণ শত্রু।’

সীমান্তে পাল্টাপাল্টি হামলায় উভয় দেশে প্রিয়জন হারানো বেসামরিক মানুষদের প্রতি সহানুভূতি জানিয়ে মালালা আরও লেখেন, এই ‘বিপজ্জনক সময়ে’ তিনি পাকিস্তানে তাঁর বন্ধুবান্ধব, পরিবার এবং তাঁর সঙ্গে কাজ করা সব সমর্থক, শিক্ষাবিদ ও মেয়েদের কথা ভাবছেন।

পোস্টে মালালা আরও লিখেছেন, ‘আমাদের সম্মিলিত নিরাপত্তা ও সমৃদ্ধির জন্য শান্তিই একমাত্র পথ।’ তিনি লেখেন, ‘এই পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে এখনই সংলাপ আর কূটনৈতিক প্রচেষ্টা শুরু করতে হবে।’

আরও পড়ুনভারত-পাকিস্তানকে অবিলম্বে সংঘাত থামাতে বললেন ট্রাম্প, প্রয়োজনে সহায়তার আশ্বাস৩ ঘণ্টা আগে

মালালা ১৯৯৭ সালের ১২ জুলাই পাকিস্তানের সোয়াত উপত্যকার মিনগোরায় জন্মগ্রহণ করেন। ২০১২ সালের ৯ অক্টোবর স্কুল থেকে ফেরার পথে হামলার শিকার হয় কিশোরী মালালা। স্কুলের গাড়িতে মালালা ও তার দুই বান্ধবী তালেবানের গুলিতে জখম হয়।

আরও পড়ুনপাকিস্তানে ভারতের হামলা উত্তেজনা বাড়াল৬ ঘণ্টা আগে

উন্নত চিকিৎসার জন্য যুক্তরাজ্যে নিয়ে যাওয়া হয় মালালাকে। সুস্থ হয়ে সেখানেই পড়াশোনা শুরু করেন তিনি। মাত্র ১৭ বছরে বয়সে শান্তিতে নোবেল পান মালালা। এত অল্প বয়সে এর আগে কেউ নোবেল পাননি।

মালালা এখন সপরিবার যুক্তরাজ্যেই বাস করছেন। এরই মধ্যে আত্মজীবনী লিখেছেন এই নোবেলজয়ী। বইয়ের নাম ‘আই অ্যাম মালালা: হাউ ওয়ান গার্ল স্টুড আপ ফর এডুকেশন অ্যান্ড চেঞ্জড দ্য ওয়ার্ল্ড’। শত বাধা ও প্রতিকূলতার মধ্যেও নারীশিক্ষা বিস্তারে সক্রিয় অবদান রেখে আসছেন তিনি।

আরও পড়ুনতিন রাফাল, এক মিগসহ ভারতের পাঁচ যুদ্ধবিমান ‘ভূপাতিত’০৭ মে ২০২৫আরও পড়ুনপাকিস্তানে ভারতের অভিযানের নাম ‘অপারেশন সিঁদুর’ কেন২০ ঘণ্টা আগে.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

ইসিকে নিশানা করে ‘অ্যাটম বোমা’ ফাটালেন রাহুল গান্ধী, এখনো বাকি ‘হাইড্রোজেন বোমা’

ভারতের নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে ভোটচুরির অভিযোগ এনে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী বলেছিলেন, এটা ‘অ্যাটম বোমা’। তবে আরও ভয়ংকর তথ্য তিনি পরে আনবেন, যা ‘হাইড্রোজেন বোমার সমতুল্য’।

আজ বৃহস্পতিবার নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে আবার বিস্ফোরক অভিযোগ এনে রাহুল বলেন, নির্বাচন কমিশনের মদদে কিছু লোক, সংস্থা ও কল সেন্টার সংগঠিতভাবে কেন্দ্রে কেন্দ্রে বেছে বেছে কংগ্রেস, দলিত, আদিবাসী ভোটারদের নাম বাদ দিচ্ছে।

আজ সংবাদ সম্মেলন করে রাহুল বলেন, নির্দিষ্ট সফটওয়্যারের মাধ্যমে নকল আবেদন করে ভোটারদের নাম বাদ দেওয়া হয়েছে।

‘অ্যাটম বোমা’ ফাটানোর দিন রাহুল কর্ণাটকের মহাদেবপুরা বিধানসভা কেন্দ্রের ‘ভোট চুরির’ নমুনা পেশ করেছিলেন। আজ তিনি উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরেন কর্ণাটকেরই আলন্দ কেন্দ্রকে।

রাহুলের অভিযোগ, নকল আবেদনের মাধ্যমে ওই কেন্দ্রের ৬ হাজার ১৮ জন ভোটারের নাম বাদ দেওয়ার চেষ্টা হয়েছে। যেসব কেন্দ্রে কংগ্রেস শক্তিশালী, বেছে বেছে সেসব কেন্দ্রকেই নিশানা করা হয়েছে। ভুয়া ভোটারের নাম তোলার পাশাপাশি বৈধ ভোটারদের নাম বাদ দেওয়া হচ্ছে। এটা সংগঠিতভাবে করা হচ্ছে। কর্ণাটক পুলিশ সেই বিষয়ে তথ্য জানতে চাইলেও নির্বাচন কমিশন কোনো তথ্য দিচ্ছে না।

রাহুলের অভিযোগ, যাঁদের নামে আবেদন জানানো হচ্ছে এবং যাঁদের নাম মোছার আরজি জানানো হচ্ছে, তাঁদের কেউ–ই তা জানতে পারছেন না। সংবাদ সম্মেলনে এই ধরনের কিছু মানুষকে রাহুল হাজিরও করান।

কিছু নম্বরও দাখিল করে রাহুল বলেন, এসব নম্বর থেকে ভোটারদের নাম বাদ দেওয়ার আবেদন জানানো হয়। তাঁর প্রশ্ন, ওই নম্বরগুলোয় ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ড বা ‘ওটিপি’ কীভাবে গেল?

কংগ্রেস নেতা বলেন, নির্দিষ্ট কিছু ঠিকানা থেকে নির্দিষ্ট ‘আইপি’ অ্যাড্রেস ব্যবহার করে নাম বাদ দেওয়ার আবেদন জানানো হচ্ছে। অভিযোগ তদন্ত করে দেখতে কর্ণাটক পুলিশের গোয়েন্দারা ইসির কাছে কিছু তথ্য চেয়েছিলেন। প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) জ্ঞানেশ কুমার কোনো তথ্যই দেননি। এতেই বোঝা যাচ্ছে, ইসি ভোটচোরদের আড়াল করছে।

রাহুল বলেন, কর্ণাটক সিআইডি ভোটারদের নাম বাদ দেওয়া বিষয়ে তথ্য জানতে চেয়ে ইসিকে ১৮ বার চিঠি লিখেছে। অথচ একটি চিঠিরও জবাব ইসি দেয়নি। ইসিকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে রাহুল বলেন, কমিশন স্বচ্ছ হলে এক সপ্তাহের মধ্যে কর্ণাটক সিআইডিকে যাবতীয় তথ্য দিয়ে সাহায্য করুক।

রাহুল মহারাষ্ট্রের রাজুরা বিধানসভা আসনের ভোটার তালিকা তুলে ধরে বলেন, সেখানে অনলাইনে ৬ হাজার ৮৫০ জনের নাম অবৈধভাবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। তাঁর অভিযোগ, বিভিন্ন রাজ্যে ভোটার তালিকায় এভাবে সংযোজন–বিয়োজন চলছে।

এর আগেও রাহুল নিশানা করেছিলেন সিইসি জ্ঞানেশ কুমারকে। আজও তিনি তাঁকে কাঠগড়ায় তোলেন। রাহুল বলেন, নির্বাচন স্বচ্ছ ও অবাধ করার বদলে তিনি পক্ষপাতমূলক আচরণ করেই চলেছেন। ভোট চুরি করাচ্ছেন। ভোটচোরদের রক্ষাও করছেন।

রাহুলের অভিযোগ এবারও খারিজ করে দিয়েছে ইসি। রাহুলের ডাকা সংবাদ সম্মেলনের পর আজ ইসি এক বিবৃতি দেয়। তাতে রাহুলের অভিযোগ ‘অসত্য ও ভিত্তিহীন’ জানিয়ে বলা হয়, অনলাইনে কেউ কোনো ভোটারের নাম বাদ দিতে পারেন না। নাম বাদ দেওয়ার আগে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির বক্তব্য শোনা হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ