যুদ্ধবিরতি বারবার লঙ্ঘন করছে পাকিস্তান: ভারত
Published: 10th, May 2025 GMT
যুদ্ধবিরতি ঘোষণার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই পাকিস্তান তা একাধিকবার লঙ্ঘন করেছে বলে অভিযোগ তুলেছে ভারত। দেশটির পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রি বলেছেন, ভারতের সশস্ত্র বাহিনী এর ‘যথাযথ ও উপযুক্ত’ জবাব দিচ্ছে।
শনিবার রাত ১১টার কিছুক্ষণ আগে নয়াদিল্লিতে সংবাদ সম্মেলন করেন বিক্রম মিশ্রি। তিনি বলেন, শনিবার সন্ধ্যায় যুদ্ধবিরতি–সংক্রান্ত যে সমঝোতা হয়েছে পাকিস্তান তা বারবার লঙ্ঘন করছে। ভারতের সশস্ত্র বাহিনী পাকিস্তানের যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের ‘যথাযথ ও উপযুক্ত’ জবাব দিচ্ছে।
এ বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে পাকিস্তানের প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। আর ভারতের অভিযোগের সত্যতা যাচাই করতে পারেনি এএফপি।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দু জানায়, বিক্রম মিশ্রি সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘আমরা যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনকে অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছি। আমরা পাকিস্তানের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি, তারা যেন যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের ঘটনাগুলো গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করে এবং দায়িত্বশীলভাবে পরিস্থিতি মোকাবিলা করে।’ তিনি বলেন, পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে কঠোর নজর রাখছে ভারতের সশস্ত্র বাহিনী। আন্তর্জাতিক সীমান্ত ও নিয়ন্ত্রণরেখায় যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের ঘটনা পুনরায় ঘটলে তা কঠোরভাবে মোকাবিলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে সশস্ত্র বাহিনীকে।’
ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের শ্রীনগরে শনিবার রাতে বিকট বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। ভারত সরকারের একটি সূত্র অভিযোগ করেছে, যুদ্ধবিরতি ঘোষণার মাত্র কয়েক ঘণ্টার মাথায় পাকিস্তান যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করেছে। শ্রীনগরে বার্তা সংস্থা এএফপির কর্মীরা বিকট বিস্ফোরণের শব্দ শুনেছেন।
জম্মু ও কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে এক পোস্ট লিখেছেন, ‘সবে হওয়া যুদ্ধবিরতি কি তবে ছাইয়ে পরিণত হলো? শ্রীনগরজুড়ে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যাচ্ছে।’
আরও পড়ুনভারত যুদ্ধবিরতি মেনে চলবে, তবে সেনাবাহিনী প্রস্তুত থাকবে: ব্রিফিংয়ে সামরিক মুখপাত্র৪ ঘণ্টা আগেশ্রীনগর কর্তৃপক্ষ, স্থানীয় বাসিন্দা ও প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শ্রীনগর ও জম্মুতে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে এবং জম্মুর আকাশে রাতের বেলায় গোলাবারুদ ও ঝলকানি দেখা গেছে, যা শুক্রবারের সন্ধ্যার ঘটনার সঙ্গে মিলে যাচ্ছে।
এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় দীর্ঘ আলোচনার পর যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয় ভারত ও পাকিস্তান। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প শনিবার এক্স হ্যান্ডলে এ কথা জানান। এরপর ভারত ও পাকিস্তানের কর্মকর্তারা আলাদা করে তা নিশ্চিত করেন।
আরও পড়ুনভারত–পাকিস্তান যুদ্ধবিরতিতে রাজি: ট্রাম্প৭ ঘণ্টা আগে.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: সশস ত র ব হ ন শ র নগর
এছাড়াও পড়ুন:
আফগানিস্তানে ভূমিকম্পে নিহত বেড়ে ২০, আহত তিন শতাধিক
উত্তর আফগানিস্তানে ৬ দশমিক ৩ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্পে এখন পর্যন্ত ২০ জনের প্রাণহানির খবর পাওয়া গেছে। এছাড়া প্রায় ৩২০ জন আহত হয়েছেন। দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এ তথ্য জানিয়েছে। খবর দ্য গার্ডিয়ানের।
মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র শরাফাত জামান আজ সোমবার এক ভিডিও বার্তায় বলেন, বালখ এবং সামাঙ্গান প্রদেশে প্রাথমিকভাবে নিহত ও আহতের সংখ্যা রেকর্ড করা হয়েছে, যেখানে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে।
আরো পড়ুন:
ভূমি অফিসকে আস্থার প্রতিক হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে হবে: সিনিয়র সচিব
ফিলিপাইনে শক্তিশালী ভূমিকম্পে নিহত বেড়ে ৬৯
ক্ষতি প্রত্যক্ষকারী এএফপির সাংবাদিকের মতে, ভূমিকম্পে ১৫ শতকের স্মৃতিস্তম্ভ মাজার-ই-শরিফের নীল মসজিদও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস) জানিয়েছে, ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল ছিল আফগানিস্তানের খুলম থেকে ২২ কিলোমিটার (১৪ মাইল) পশ্চিম-দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং ২৮ কিলোমিটার গভীরে। স্থানীয় সময় রাত ১২ টা ৫৯ মিনিটে এটি আঘাত হানে বলে জানিয়েছে ইউএসজিএস।
আফগানিস্তানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এক ঘোষণায় বলেছে, উদ্ধার ও জরুরি সহায়তা দলগুলো বালখ এবং সামাঙ্গান প্রদেশের ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় পৌঁছেছে। আহতদের স্থানান্তর ও ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে সহায়তাসহ উদ্ধার কার্যক্রম শুরু করেছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা গেছে, ভূমিকম্পে মাজার-ই-শরিফের নীল মসজিদ কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এএফপি জানিয়েছে, অলঙ্কৃত কাঠামোর টুকরো, বিশেষ করে এর একটি মিনার ভেঙে মাটিতে পড়ে গেছে।
শতাব্দী প্রাচীন এই স্থানটি আফগানিস্তানের সবচেয়ে সম্মানিত ধর্মীয় নিদর্শনগুলোর মধ্যে একটি এবং ইসলামিক ও সাংস্কৃতিক উৎসবের সময় একটি প্রধান সমাবেশস্থল। এটি দেশটির কয়েকটি পর্যটন স্থানের মধ্যে একটি।
রাজধানী কাবুল এবং আফগানিস্তানের আরো কয়েকটি প্রদেশেও ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, পাহাড় থেকে পাথর পড়ার কারণে কাবুলের সঙ্গে মাজার-ই-শরিফের সংযোগকারী একটি প্রধান মহাসড়ক কিছুক্ষণের জন্য বন্ধ হয়ে যায়, তবে পরে রাস্তাটি পুনরায় খুলে দেওয়া হয়।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে আফগানিস্তান ধারাবাহিকভাবে ভূমিকম্পে কেঁপে উঠছে। অর্থনৈতিক সংকটে থাকা দেশটি প্রায়শই এই ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় অসুবিধার সম্মুখীন হয়, বিশেষ করে প্রত্যন্ত অঞ্চলে।
গত ৩১ আগস্ট পাকিস্তান সীমান্তের কাছে পূর্ব আফগানিস্তানে ৬ মাত্রার ভূমিকম্পে ২ হাজার ২০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছিল। তালেবান সরকারের মতে, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ৬ দশমিক ৩ মাত্রার একটি ভূমিকম্প এবং তার পরে শক্তিশালী আফটারশকে কমপক্ষে চার হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছিল।
ঢাকা/ফিরোজ