হবিগঞ্জে মা–মেয়েসহ তিনজনকে হত্যার দায়ে শাহ আলম ওরফে তাহের উদ্দিন নামের এক ব্যক্তিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। আজ মঙ্গলবার দুপুরে হবিগঞ্জ অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক সৈয়দ মো. কায়সার মোশাররফ ইউসুফ এ রায় ঘোষণা করেন।

মৃত্যুদণ্ড পাওয়া শাহ আলম জেলার মাধবপুর উপজেলার বীর সিংহপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। আসামির উপস্থিতিতে আদালত রায় ঘোষণা করেন। পরে তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়।

মামলার সংক্ষিপ্ত এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২০১৬ সালের ২৩ আগস্ট মাধবপুরের বীর সিংহপাড়া গ্রামের বাসিন্দা গিয়াস উদ্দিনের স্ত্রী জাহানারা খাতুনের সঙ্গে টাকার লেনদেন নিয়ে আসামি শাহ আলমের বিরোধ দেখা দেয়। এ নিয়ে বাগ্‌বিতণ্ডার এক পর্যায়ে শাহ আলম ধারালো অস্ত্র দিয়ে জাহানারাকে এলোপাতাড়ি কোপান। এ সময় ওই নারীর চিৎকারে পাশের ঘর থেকে তাঁর মেয়ে শারমিন আক্তার, ছেলে সুজাত মিয়া ও প্রতিবেশী শিমুল মিয়া তাঁকে বাঁচাতে এগিয়ে যান। পরে তাঁদেরও কুপিয়ে জখম করেন আসামি। এতে ঘটনাস্থলেই জাহানারা মারা যান। তাঁর মেয়ে শারমিন ও প্রতিবেশী শিমুলকে উপজেলা হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাঁদের মৃত ঘোষণা করেন।

এ ঘটনায় নিহত জাহানারার ভগ্নিপতি মোহন মিয়া বাদী হয়ে তিনজনকে হত্যার অভিযোগে থানায় মামলা করেন। মামলায় ১৮ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করেন আদালত। মামলার একমাত্র আসামি শাহ আলম আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দেন। আজ আসামির উপস্থিতিতে আদালত তাঁকে মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণা করেন। পাশাপাশি প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় এক লাখ টাকা করে অর্থদণ্ড দেন।

রাষ্ট্রপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন অতিরিক্ত সরকারি কৌঁসুলি (এপিপি) মো.

আফজাল হোসেন। তিনি রায়ের বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেন।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: শ হ আলম

এছাড়াও পড়ুন:

আদাবরে কুপিয়ে হত্যা: তিনজনকে গ্রেপ্তারের তথ্য দিল সেনাবাহিনী

রাজধানীর আদাবরে আধিপত্য বিস্তার ও মাদক ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বিরোধে রিপন সরদার (৪২) খুনের ঘটনায় তিনজন গ্রেপ্তার হয়েছে বলে জানিয়েছে সেনাবাহিনী। গতকাল মঙ্গলবার রাত নয়টার দিকে অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।

সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়, রিপন হত্যার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ইমন ওরফে ভাইগ্না ইমন ওরফে দাঁতভাঙা ইমনকে তাঁর দুই সহযোগীসহ গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁদের কাছ থেকে দুটি সামুরাই উদ্ধার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে ইমন হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। তাঁদের সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

সেনাবাহিনী জানায়, গতকাল ভোরের দিকে রাজধানীর আদাবর থানার বালুর মাঠ এলাকায় বাসায় ঢুকে রিপন নামের এক যুবককে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। কিশোর গ্যাং এই হত্যাকাণ্ড ঘটায় বলে অভিযোগ। পরে আহত অবস্থায় রিপনকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় সন্ধ্যা পৌনে ছয়টার দিকে তিনি মারা যান।

৪৬ স্বতন্ত্র পদাতিক ব্রিগেডের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানান, গতকাল সকালে বালুমাঠ এলাকায় একটি হত্যাকাণ্ডের খবর পাওয়া যায়। বিভিন্নভাবে তথ্য সংগ্রহ করে জানা যায় এলেক্স সবুজ, মনির ও ইমন এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। পরে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় অবস্থান নির্ণয় করে অভিযান চালিয়ে ইমন ও তাঁর দুই সহযোগীকে দুটি সামুরাইসহ গ্রেপ্তার করা হয়। অভিযান চালানোর কিছুক্ষণ আগে সবুজ ও মনির সেই জায়গা থেকে পালিয়ে যান। তাই তাঁদের গ্রেপ্তার করা যায়নি। বাকিদের গ্রেপ্তারে বিভিন্ন জায়গায় অভিযান অব্যাহত রয়েছে। গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

এদিকে পুলিশ জানায়, মঙ্গলবার সকাল সাতটার দিকে আদাবরের ১০ নম্বরের বালুর মাঠ এলাকায় ‘বেলচা মনির’ ও ‘রাজু গ্রুপে’র মধ্যে এ মারামারি হয়। ‘বেলচা মনিরের’ লোকজন ‘রাজু গ্রুপের’ রিপনকে হাঁসুয়া দিয়ে কুপিয়ে আহত করে। সন্ধ্যা সাতটার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রিপন সরদারের মৃত্যু হয়।

আদাবর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম জাকারিয়া প্রথম আলোকে বলেন, স্থানীয় মাদক ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ ও বিরোধকে কেন্দ্র করে মারামারির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় একজনের মৃত্যু হয়েছে। ঘটনাটির বিষয়ে বিস্তারিত তদন্ত চলছে।

আরও পড়ুনআদাবরে মাদক ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে মারামারিতে নিহত ১১৮ ঘণ্টা আগে

তবে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রিপন সরদারের ছেলে ইমন সরদার গতকাল দাবি করেন, রিপন মাদক ব্যবসায়ী ছিলেন না। রিপন পেশায় চা–দোকানি। বেলচা মনিরের লোকজনের সঙ্গে দুই দিন আগে তাঁর বাবার কথা-কাটাকাটি হয়। এর জেরে তাঁর বাবাকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় তাঁর মা আরজু বেগমও আহত হয়েছেন। তাঁদের বাড়ি ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলায়।

পুলিশের ভাষ্য, নিহত রিপন সরদার মাদক কারবারি রাজুর চাচাতো ভাই। ‘রাজু গ্রুপ’ ও ‘বেলচা মনিরের’ নেতৃত্বে আদাবরের ১০ ও ১৭ নম্বর এলাকায় মাদক ব্যবসা হয়। ওই বিরোধের জেরেই এই হত্যাকাণ্ড হয়েছে বলে প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা গেছে। নিহত রিপনের বিরুদ্ধে ভোলায় একাধিক মামলা থাকার তথ্য পাওয়া গেছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আদাবরে কুপিয়ে হত্যা: তিনজনকে গ্রেপ্তারের তথ্য দিল সেনাবাহিনী