কুষ্টিয়ায় নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের ব্যানারে মিছিলের প্রস্তুতিকালে ছয়জনকে আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছেন স্থানীয় লোকজন। আজ বৃহস্পতিবার সকাল ছয়টার দিকে শহরের বাইপাস মহাসড়ক থেকে তাঁদের আটক করে পুলিশে দেন স্থানীয় লোকজন।

আটকের সময় ধারণ করা একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। ভিডিওতে দেখা যায়, বাইপাস মহাসড়কে কয়েকটি মোটরসাইকেলে করে একদল যুবক যাচ্ছিল। হঠাৎ আরও কয়েকটি মোটরসাইকেল তাদের ধাওয়া দেয়। ভিডিওতে একাধিকবার ‘ধর ধর’, ‘এই দিক ধর’ ইত্যাদি শব্দ শোনা যায়। পরে ধাওয়া দিয়ে তাঁদের থামিয়ে দেওয়া হয়।

ভিডিওতে আরও দেখা যায়, আটক হওয়া দুজন যুবক বলছেন, তাঁরা কাজ করেন এবং কাজে যাচ্ছিলেন। এ ঘটনার সঙ্গে তাঁদের কোনো সম্পর্ক নেই। পরে তাঁদের কাছ থেকে একটি ব্যানার পাওয়া যায়। তাতে লেখা ছিল, ‘আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ নিষিদ্ধের প্রতিবাদে মিছিল’। এরপর ছয়জনকে আটক করে তাঁদের কোমরে দড়ি বেঁধে মহাসড়ক দিয়ে হাঁটিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। খবর পেয়ে কুষ্টিয়া মডেল থানা-পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাঁদের থানায় নিয়ে যায়।

কুষ্টিয়া মডেল থানার পরিদর্শক (অপারেশন) আবদুল আলীম প্রথম আলোকে বলেন, ‘স্থানীয়রা ওই ছয়জনকে আটক করে আমাদের কাছে দিয়েছে। তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তথ্য যাচাই-বাছাই করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

ট্রেনের ছাদে ভ্রমণকালে বৈদ্যুতিক লাইনের নেটের আঘাতে নিহত ১, আহত ৫

টাঙ্গাইলে ট্রেনের ছাদে অবৈধভাবে ভ্রমণের সময় বৈদ্যুতিক সঞ্চালন লাইনের নেটের সঙ্গে ধাক্কা লেগে একজন নিহত ও পাঁচজন আহত হয়েছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত ব্যক্তির নাম রিপন আলী (৩৭)। তিনি রাজশাহীর পবা উপজেলার কালিয়ানপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। আহতদের মধ্যে অজ্ঞাতপরিচয়ের এক ব্যক্তি টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

রেলওয়ে পুলিশের টাঙ্গাইল ফাঁড়ির দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হারুন অর রশীদ জানান, ঢাকা থেকে রাজশাহীগামী আন্তনগর সিল্কসিটি এক্সপ্রেস ট্রেনটি বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টার দিকে টাঙ্গাইল স্টেশনে পৌঁছানোর পর ছাদে রক্তাক্ত অবস্থায় ছয়জনকে পাওয়া যায়। আহত যাত্রীরা পুলিশকে জানান, তাঁরা ঢাকা থেকে ট্রেনের ছাদে উঠেছিলেন। টাঙ্গাইল স্টেশনে পৌঁছানোর ১৫–২০ মিনিট আগে রেলপথের ওপর দিয়ে অতিক্রম করা একটি বৈদ্যুতিক সঞ্চালন লাইনের নিচের নেটের সঙ্গে ধাক্কা লেগে তাঁরা আহত হন।

আহত ছয়জনকে পুলিশ উদ্ধার করে টাঙ্গাইল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ১০টার দিকে রিপন আলীর মৃত্যু হয়। আহতদের মধ্যে আশরাফুলকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। আহত আমিরুল ইসলাম (২৫), আলিম (২৫) ও ফয়সাল (২৭) চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন। অজ্ঞাতপরিচয়ের এক কিশোর (১৫–১৬) এখনো টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের ৬ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন। দুপুরে গিয়ে দেখা যায়, তার হাতে ব্যান্ডেজ বাঁধা অবস্থায় শুয়ে আছে। কর্তব্যরত নার্স জানান, ছেলেটি কথা বলতে পারছে না।

এদিকে নিহত রিপন আলীর রাজশাহীর বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। আজ শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে কালিয়ানপাড়া গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, বাড়ির ভেতরে স্বজন ও প্রতিবেশীরা আহাজারি করছেন। বাইরে রিপনের দাফনের জন্য কবর খোঁড়া হচ্ছে, কেউ বাঁশ কাটছেন।

রিপনের বাবা ইসরাফিল হোসেন জানান, রিপন ঢাকার একটি ইলেকট্রনিকস কোম্পানিতে চাকরি করত। কয়েক মাস আগে চাকরি ছেড়ে দিয়ে নতুন কাজ খুঁজছিল। গত বুধবার (২৯ অক্টোবর) দুপুরে কাউকে কিছু না বলে বাড়ি থেকে বের হয়। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় টাঙ্গাইল হাসপাতাল থেকে রিপনের মোবাইল নম্বর ব্যবহার করে তার ছোট ছেলের ফোনে যোগাযোগ করা হয়। তখনই তাঁরা জানতে পারেন, রিপন ট্রেন দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ট্রেনের ছাদে ভ্রমণকালে বৈদ্যুতিক লাইনের নেটের আঘাতে নিহত ১, আহত ৫