৩১ বার এভারেস্ট জয় করে রেকর্ড গড়লেন পঞ্চাশোর্ধ্ব কামি রিতা
Published: 27th, May 2025 GMT
নিজের এভারেস্ট জয়ের রেকর্ডকে প্রতিনিয়ত অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যাচ্ছেন নেপালের কামি রিতা শেরপা। আজ মঙ্গলবার তিনি ৩১তম বার এভারেস্টের চূড়ায় উঠেছেন, ভেঙেছেন গত বছর গড়া নিজের রেকর্ড। কামি রিতা ‘এভারেস্ট ম্যান’ নামেও পরিচিত।
বিশ্বের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্টের উচ্চতা ৮ হাজার ৮৪৯ মিটার (২৯ হাজার ৩২ ফুট)। ১৯৯৪ সালে কামি রিতা প্রথম এভারেস্টের চূড়ায় ওঠেন। তার পর থেকে তিন বছর বাদে প্রতিবছর তিনি এভারেস্ট জয় করেছেন। যে তিন বছর তিনি এভারেস্টে যেতে পারেননি, ওই সময় বিভিন্ন কারণে এভারেস্টে আরোহণ বন্ধ ছিল। গত বছর মে মাসে তিনি দুবার এভারেস্টের চূড়ায় ওঠেন।
কামি রিতার বয়স এখন ৫৫ বছর। কর্মকর্তারা বলেন, এ বছর তিনি প্রথাগত দক্ষিণ-পূর্ব চূড়াপথ ধরে ভারতীয় সেনাবাহিনীর ২২ সদস্যের একটি দলকে এভারেস্টের চূড়ায় নিয়ে গেছেন। দলটির সঙ্গে আরও ২৭ জন শেরপা রয়েছেন।
কামি রিতা সেভেন সামিট ট্রেক কোম্পানির হয়ে কাজ করেন। প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক পাসাং ফুরবা বলেন, তিনি (কামি রিতা) একজন খুবই উজ্জীবিত পর্বতারোহী। এভারেস্ট জয় করার পর কামি রিতা তাঁর দল নিয়ে নিচে নেমে আসছেন বলেও জানান তিনি।
কামি রিতার পর সবচেয়ে বেশি ২৯ বার এভারেস্টের চূড়ায় উঠেছেন আরেক শেরপা পাসাং দাওয়া। শেরপা নন, এমন ব্যক্তিদের মধ্যে ব্রিটিশ গাইড কেন্টন কুল সর্বোচ্চ ১৯ বার এভারেস্টের চূড়ায় উঠেছেন। তাঁর পরই ১৫ বার করে এভারেস্ট জয় করেছেন মার্কিন পর্বতারোহী ডেভ হান ও গ্যারেট ম্যাডিসন।কামি রিতার পর সবচেয়ে বেশি ২৯ বার এভারেস্টের চূড়ায় উঠেছেন আরেক শেরপা পাসাং দাওয়া।
শেরপা নন, এমন ব্যক্তিদের মধ্যে ব্রিটিশ গাইড কেন্টন কুল সর্বোচ্চ ১৯ বার এভারেস্টের চূড়ায় উঠেছেন। তাঁর পরই ১৫ বার করে এভারেস্ট জয় করেছেন মার্কিন পর্বতারোহী ডেভ হান ও গ্যারেট ম্যাডিসন।
আরও পড়ুন৩০ বার এভারেস্টের চূড়ায় উঠলেন তিনি২২ মে ২০২৪বিশ্বের দরিদ্র দেশগুলোর একটি নেপাল। বিশ্বের ১৪টি সুউচ্চ শৃঙ্গের ৮টিই নেপালে অবস্থিত। দেশটির বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের অন্যতম খাত পর্বতারোহণ ও ট্রেকিং–সংশ্লিষ্ট পর্যটন। দেশটির অর্থনীতি পর্যটনশিল্পের ওপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল।
নেপালে শেরপাদের পারিবারিক আয়ের গুরুত্বপূর্ণ উৎস বিদেশি পর্যটকদের পথ দেখিয়ে এভারেস্টের চূড়ায় নিয়ে যাওয়া।
কর্মকর্তারা বলেছেন, চলতি বছরের মার্চ থেকে মে মাস পর্যন্ত এভারেস্টে ওঠার মৌসুমে ৪৬৮টি ‘ক্লাইম্বিং পারমিট’ (পর্বতারোহণের অনুমতি) দেওয়া হয়েছে। এ সময়ের মধ্যে তিন শতাধিক পর্বতারোহী ও শেরপা এভারেস্ট শৃঙ্গ জয় করেছেন।
এ মাসে এভারেস্টে দুই পর্বতারোহীর মৃত্যুর খবর নিশ্চিত হওয়া গেছে। আরও কয়েকজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেলেও তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
আরও পড়ুন২৯ বার এভারেস্টের চূড়ায়১২ মে ২০২৪.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
২ হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে মামলা হচ্ছে সালমান এফ রহমানের বিরুদ্ধে
জালিয়াতির মাধ্যমে এলসির বিপরীতে প্রায় দুই হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ ও পাচারের অভিযোগে পাঁচটি মামলা করতে যাচ্ছে দুর্নীতি দমন কমিশন, তাতে বেক্সিমকো গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান সালমান এফ রহমানও আসামি হতে যাচ্ছেন।
আজ সোমবার দুদকের প্রধান কার্যালয় মামলাগুলোর অনুমোদন দেয়। সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি, শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান রহমানের পাশাপাশি তাঁর ছেলে, ভাই, ভাতিজা, জনতা ব্যাংকের কর্মকর্তাসহ ৩৪ জনের বিরুদ্ধে এই মামলাগুলো হবে।
রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে সংস্থাটির মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, অনুমোদিত পাঁচ মামলায় ৩৪ জন আসামির বিরুদ্ধে মোট ২১ কোটি ৫৫ লাখ ২৮ হাজার ৮০১ মার্কিন ডলার বা প্রায় ১ হাজার ৯৩৯ কোটি ৭৫ লাখ ৯২ হাজার টাকা আত্মসাৎ ও মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগ আনা হয়েছে।
মামলায় সালমান এফ রহমান ছাড়া আসামিদের মধ্যে রয়েছেন তাঁর ছেলে শায়ান এফ রহমান, ভাই বেক্সিমকো গ্রুপের চেয়ারম্যান সোহেল এফ রহমান, সোহেল রহমানের ছেলে আহমেদ শাহরিয়ার রহমান, বেক্সিমকো গ্রুপের পরিচালক ইকবাল আহমেদ, ব্যবস্থাপনা পরিচালক ওসমান কায়সার চৌধুরী, পরিচালক এ বি সিদ্দিকুর রহমান, মাসুদ ইকরামুল্লাহ খান, শাহ মঞ্জুরুল হক ও রীম এইচ শামসুদ্দোহা।
এ ছাড়া স্কাইনেট অ্যাপারেলস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আনোয়ারুল বাশার ও পরিচালক নাসরিন আহমেদ, ক্রিসেন্ট অ্যাকসেসরিজের এমডি আবু নাঈম মাহমুদ সালেহিন ও পরিচালক মো. মোস্তাফিজুর রহমান তানভীর, প্লাটিনাম গার্মেন্টস লিমিটেডের এমডি মোহাম্মদ আলিফ ইবনে জুলফিকার ও পরিচালক নুসরাত হায়দার, পিয়ারলেস গার্মেন্টস লিমিটেডের এমডি ওয়াসীউর রহমান ও পরিচালক রিজিয়া আক্তার, নিউ ঢাকা ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের এমডি সালাউদ্দিন খান মজলিস ও পরিচালক আবদুর রউফ, কাঁচপুর অ্যাপারেলস লিমিটেডের এমডি মাহফুজুর রহমান খান ও পরিচালক সৈয়দ তানবির এলাহী আফেন্দী সম্ভাব্য আসামির তালিকায় রয়েছেন।
জনতা ব্যাংকের মধ্য থেকে আসামি করা হচ্ছে ব্যাংকটির সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুছ ছালাম আজাদ ও আবদুল জব্বার, সাবেক মহাব্যবস্থাপক মিজানুর রহমান, অবসরপ্রাপ্ত উপমহাব্যবস্থাপক আবদুর রহিম, সাবেক মহাব্যবস্থাপক শহিদুল হক, অবসরপ্রাপ্ত ডিজিএম (রপ্তানি বিভাগ) মমতাজুল ইসলাম, সিনিয়র অফিসার রফিকুল ইসলাম, ব্যবস্থাপক সালেহ আহম্মেদ, অবসরপ্রাপ্ত এজিএম মোয়াজ্জেম হোসেন, সাবেক এজিএম (রপ্তানি) মোহাম্মদ শাজাহান, সাবেক এজিএম (রপ্তানি) হুমায়ুন কবির ঢালী ও প্রিন্সিপাল অফিসার শ ম মাহাতাব হোসাইন বাদশাকে।
দুদকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আসামিদের যোগসাজশে জনতা ব্যাংকের লোকাল অফিস থেকে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামে বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ ও বিদেশে পাচার করা হয়। এর মধ্যে পিয়ারলেস গার্মেন্টস লিমিটেডের নামে ৫ কোটি ২ লাখ ৫০ হাজার ৭৭২ দশমিক ২৫ ডলার, প্লাটিনাম গার্মেন্টস লিমিটেডের নামে ১ কোটি ৮৮ লাখ ৩ হাজার ৬৫৮ দশমিক ৯১ ডলার, কাঁচপুর অ্যাপারেলস লিমিটেডের নামে ৮ কোটি ৪০ লাখ ২৯ হাজার ৫৪৭ দশমিক ৪৫ ডলার, স্কাইনেট অ্যাপারেলস লিমিটেডের নামে ১ কোটি ৪৭ লাখ ২৯ হাজার ৩৪০ ডলার এবং ঢাকা ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের নামে ৪ কোটি ৭৭ লাখ ১৫ হাজার ৪৮২ দশমিক ৪৬ ডলার আত্মসাৎ হয়।
সব মিলিয়ে আত্মসাৎ করা অর্থের পরিমাণ দাঁড়ায় প্রায় ২১ কোটি ৫৫ লাখ ডলার, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় দুই হাজার কোটি টাকা।
সাবেক সংসদ সদস্য সালমান এফ রহমান গত বছর জুলাই অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের কয়েক দিনের মধ্যে গ্রেপ্তার হয়ে এখন কারাগারে রয়েছেন। এরপর তাঁর বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগে বেশ কয়েকটি মামলা হয়।