যেভাবে বাসা ভাড়া নেন শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইন ও মোল্লা মাসুদ
Published: 27th, May 2025 GMT
রোজার ঈদের পর পরই কুষ্টিয়ার পৌর শহরের কালিশংকরপুর এলাকায় তিন রুমে বাসা ভাড়া নেন শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইন ও মোল্লা মাসুদ। মীর মহিউদ্দিনের তিনতলা বাড়ির নিচতলা ভাড়া নের তারা। ওই বাড়ির দোতলা ও তিনতলায় থাকেন ছাত্ররা।
আজ মঙ্গলবার ভোরে যৌথবাহিনীর একটি দল বাড়িটি ঘিরে ফেলে। এ সময় ওই বাসার নিচতলা থেকে সন্ত্রাসী সুব্রত বাইন ও মোল্লা মাসুদকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে একটি কালো রঙের মাইক্রো বাসে তাদের নিয়ে যাওয়া হয়।
জানা গেছে, বাড়ির মালিক মীর মহিউদ্দিন চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা পৌরসভার মেয়র ছিলেন। তিনি মারা গেছেন। তিনতলা বাসার উপরের দুই তলায় মেস করে থাকেন কয়েকজন ছাত্র। ওই ছাত্রদের একজন ভাড়া তুলে বাড়ির মালিক মীর মহিউদ্দিনের স্বজনদের পাঠাতেন। তবে স্বজনরা এখানে আসতেন না।
রবিউল আলম নামের এক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, ‘মীর মহিউদ্দিনের বাড়ির পাশের একটি বাড়িতে কয়েকজন ব্যবসায়ী ভাড়া থাকেন। তাদের মালামাল রাখার জন্য একটি বাসা দরকার, এ কথা বলে বাসা নেন তারা। পরে তাদের দু’জন গেস্ট ভাড়া নেওয়া বাসায় থাকবেন বলে জানান ওই ব্যবসায়ীরা।’
তিনি আরও বলেন, ‘আজ ভোরে যখন নামাজ আদায় করতে যাই, তখন পুরো এলাকা ঘিরে রেখেছিল সেনাবাহিনী। তারা সবাইকে যে যার অবস্থানে থাকবে বলে। কয়েক ঘণ্টা ধরে তারা তল্লাশি চালায়। একপর্যায়ে একটি কালো রঙের মাইক্রো আসে। সেখানে চারজনকে তোলা হয়। দু’জনের কাছে ব্যাগ ছিল। একজনের হাতে হ্যান্ডকাপ পরানো ছিল। অন্যজনকে দড়ি দিয়ে বেঁধে রাখা হয়।’
মেসের ভাড়া তোলার দায়িত্বে থাকা এক ছাত্র জানান, ‘পাশের বাসার ব্যবসায়ী হেলাল উদ্দিন ঘর ভাড়া নেওয়ার জন্য আসেন। এরপর হেলাল জানান, তার গেস্ট ওই বাসায় থাকবেন। এভাবে তারা বাসায় ওঠেন। ঘটনার পর হেলাল পলাতক আছেন। হেলালের বাড়িতে গেলে তার মা জানান, কেউ বাড়িতে নেই।’
মেসের ছাত্ররা জানান, ‘নিচতলায় কারা থাকতেন তা তারা জানতেন না। সুব্রত বাইনের মত একজন শীর্ষ সন্ত্রাসী দুই মাস তাদের সঙ্গে থাকলেও তারা কোনোভাবেই টের পাননি। তবে মোল্লা মাসুদকে না চিনলেও তিনি তিনবেলা বের হতেন বাড়ি থেকে। পাশের একটি বাড়ি থেকে খাবার আনতেন মোল্লা মাসুদ। তবে কখনো তিনি কারো সঙ্গে কথা বলতেন না।’
মেসের আরও এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘পাশের বাসায় ভাড়া থাকেন এমন একজন ব্যক্তি ব্যবসার কাজের জন্য রুমটি ভাড়া নেন রোজার ঈদের পরে। দোতলা ও তিনতলায় ওঠার জন্য সিঁড়ি আছে। নিচতলায় আসা-যাওয়ার জন্য সামনেই একটি দরজা আছে। সেই দরজা তারা ব্যবহার করতেন। এ কারণে তাদের সঙ্গে দেখা হতো না।’
সকাল সাড়ে ৮টার দিকে ওই বাড়িতে গিয়ে দেখা গেছে, গেটে তালা ঝুলছে। মেসের ছেলেরা কাউকে ঢুকতে দিচ্ছে না। পরে পরিচয় দিলে কথা বলতে রাজি হন। তাদের একজনের বাড়ি চুয়াডাঙ্গা জেলায়। তিনি বলেন, মীর মহিউদ্দিন আলমডাঙ্গা পৌরসভার মেয়র ছিলেন। তিনি বিএনপির রাজনীতি করতেন। কয়েক মাস আগে মারা গেছে। আমরা এ মেসে থাকি। নিজেরা ভাড়া তুলে মালিকের লোকজনকে বুঝিয়ে দেই। নিচতলায় নতুন ভাড়াটিয়া ওঠে কয়েক মাস আগে।
নিচের তিনটি রুম ভাড়া নিয়ে থাকতেন সুব্রত ও মাসুদ। একটি রুমের দরজা আংশিক খোলা ছিল। ব্যবহৃত জিনিসপত্র ছড়ানো-ছেটানো ছিল।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: র জন য ব যবস ত নতল ন চতল
এছাড়াও পড়ুন:
শিরোপাজয়ী লিভারপুলের সমর্থকদের ভিড়ে উঠে পড়ল গাড়ি, হাসপাতালে ২৭ জন
ইংল্যান্ডের শীর্ষস্থানীয় ফুটবল ক্লাব লিভারপুলের সমর্থকদের ভিড়ে একটি গাড়ি উঠে যাওয়ার ঘটনায় আহত ২৭ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে দুজনের অবস্থা গুরুতর। তবে পুলিশ বলেছে, তারা ঘটনাটিকে ‘সন্ত্রাসবাদ-সংশ্লিষ্ট’ মনে করছে না।
ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে এবারের শিরোপা জিতে নিয়েছে লিভারপুল। এই জয় উদ্যাপন উপলক্ষে গতকাল সোমবার যুক্তরাজ্যের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের লিভারপুল শহরে শোভাযাত্রার আয়োজন করা হয়েছিল। এই শোভাযাত্রায় ক্লাবটির হাজারো সমর্থক অংশ নেন। এই সমর্থকদের ভিড়ের মধ্যে একটি গাড়ি উঠে পড়ে।
পুলিশ জানিয়েছে, এ ঘটনায় লিভারপুল থেকে ৫৩ বছর বয়সী এক শ্বেতাঙ্গ ব্রিটিশ পুরুষকে আটক করা হয়েছে। পুলিশের ধারণা, ভিড়ে উঠে পড়া গাড়িটির চালক ছিলেন তিনি।
ঘটনাস্থলে ২০ জনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। লিভারপুল অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস জানিয়েছে, ২৭ জনকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে, যাদের মধ্যে চারটি শিশু আছে। একটি শিশু ও একজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির অবস্থা গুরুতর।
ঘটনার সময় ভিড়ে থাকা চারজন গাড়িটির নিচে চাপা পড়েন। পরে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা এসে তাঁদের উদ্ধার করেন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, প্রচণ্ড ভিড়ের মধ্যে গাড়িটি ঢুকে পড়লে লোকজন ছিটকে পড়ছেন।
ঘটনার বিষয়ে সাময়িক ডেপুটি চিফ কনস্টেবল জেনি সিমস সাংবাদিকদের বলেন, তাঁরা মনে করছেন, এটা একটা বিচ্ছিন্ন ঘটনা। এর সঙ্গে আর কেউ জড়িত আছে বলে তাঁরা মনে করছেন না। ঘটনাটিকে সন্ত্রাসবাদ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে না।
একজন প্রত্যক্ষদর্শী বিবিসিকে বলেন, লিভারপুল দলের খেলোয়াড়রা একটি ছাদখোলা বাসে প্রিমিয়ার লিগ ট্রফি নিয়ে শহরের কেন্দ্র অতিক্রম করার ১০ মিনিট পর ঘটনাটি ঘটে।
লিভারপুলের সিটি কাউন্সিলের নেতা লিয়াম রবিনসন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া পোস্টে বলেন, একটি আনন্দমুখর দিনের ওপর অন্ধকারের ছায়া ফেলেছে এই ঘটনা।
ঘটনাটি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) পোস্ট দিয়েছেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার। এই ঘটনার খোঁজখবর রাখছেন জানিয়ে তিনি আহতসহ ভুক্তভোগী ব্যক্তিদের প্রতি সহমর্মিতা জানিয়েছেন।
করোনা মহামারির সময় ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের সর্বশেষ শিরোপা জিতেছিল লিভারপুল। তবে তখন উদ্যাপনে বিধিনিষেধ ছিল। তাই এবারের শিরোপা জয় নিয়ে ক্লাবটির ভক্ত-সমর্থকদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা দেখা গেছে।