চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণে ঘূর্ণিঝড় শক্তির প্রভাবে হওয়া বৃষ্টিতে কাঁচা রাস্তার ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এভাবে বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে এ ক্ষতির সম্ভাবনা আরও বাড়তে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

রবিবার (১ জুন) নন্দীখোলা, পিতাম্বদী ও গ্রামীণ অর্থনীতির নবনির্মিত রাস্তাগুলোর মাটি অধিকাংশ স্থানেই বৃষ্টির পানিতে ধসে গেছে।

মতলবের প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, এই উপজেলায় চলতি অর্থ বছরে প্রায় ৪ কোটি টাকা ও ২৩৮ মেট্টিক টন খাদ্যশস্যে নির্মিত টিআর-কাবিখা কর্মসূচির আওতায় মোট পাঁচটি ইউনিয়ন ও দুইটি পৌরসভায় ২৭৮টি প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়েছে। অধিকাংশ প্রকল্প বাস্তবায়ন কাজ ইতোমধ্যেই শেষ হয়েছে।

আরো পড়ুন:

দুর্বল হচ্ছে নিম্নচাপ, শুক্রবারও ভারী বৃষ্টির আভাস

আম্ফানের ৫ বছর
জীবন-জীবিকার লড়াই আরো কঠিন!

এছাড়া মতলব দক্ষিণ উপজেলায় প্রায় ৭ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণাধীন ২০টি সেতু প্রকল্পের মধ্যে ১৮টির কাজ শেষ হয়েছে।

তুষপুর ঘোনা সংযোগ রাস্তা নির্মাণ প্রকল্পের সভাপতি ও নায়েরগাঁও ইউপি সদস্য শারমিন আক্তার জানান, মাত্র এক সপ্তাহ আগে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন কাজ শেষ করা হয়। কিন্তু চলমান বৃষ্টির অঝোর ধারায় রাস্তার স্লোপের মাটি সরে গিয়ে অকেজো হয়ে পড়েছে।

খাদেরগাও-লামছড়ি সংযোগ রাস্তার উপকারভোগী সৌদি প্রবাসী মো.

আলমগীর আমিন জানান, ধনাগোদা নদীর পাড় ঘেঁষা এই ইউনিয়নের খাদেরগাও-লামছড়ি সংযোগ সড়কটি প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয়ের মাধ্যমে নির্মাণ করা হয়। এ রাস্তাটি নির্মিত হওয়ায় এবার ঢাকা বিমানবন্দর থেকে থেকে সরাসরি গাড়ি নিয়ে বাড়িতে আসেন তিনি। কিন্তু বিগত কয়েকদিনের বৃষ্টি ও জোয়ারের পানিতে নতুন রাস্তাগুলোর ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, “অতিবর্ষণ ও জোয়ারের পানির ঢেউয়ে নির্মিত অ্যাপ্রোচ রোডের সলিং ও মাটির রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গ্রামীণ মাটির রাস্তায় এইচবিবিকরণ প্রকল্পের আওতায় ৮০ লাখ টাকায় নির্মিত প্রকল্পটির নায়েরগাঁও উত্তর অংশটিও অতিবৃষ্টিতে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।”

তিনি বলেন, “আমাদের সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যান ও প্রকল্প চেয়ারম্যানগন জানিয়েছেন কাবিখা-কাবিটা প্রকল্পের আওতায় নির্মিত কাঁচা রাস্তাগুলো অবিরাম বর্ষণে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এছাড়া নবনির্মিত ব্রিজের অ্যাপ্রোচ সড়ক ও এইচবিবি রাস্তাও আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।”

তিনি আরো বলেন, “এই এলাকায় কাদামাটি ও বেলেমাটি হওয়ায় লাগাতার বৃষ্টিতে প্রকল্পের রাস্তার মাটি ধুয়ে গেছে। এছাড়া ড্রেসিং-এ লাগানো ঘাস এখনও মাটি ধরে রাখার সুযোগ পায়নি। মূলত কাবিটা-টিআরে নির্মিত রাস্তাগুলো মাটির হওয়ায় অধিকাংশ প্রকল্প প্রবল বর্ষণে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আমরা বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করছি।”

এ বিষয়ে মতলব দক্ষিণের উপজেলা প্রকৌশলী মো. মেহেদী হাসান বলেন, “ঘূর্ণিঝড় শক্তির প্রভাবে প্রবল বর্ষণ চলমান থাকায় কাঁচা রাস্তাগুলো ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। সবকিছুই আমাদের পর্যবেক্ষণে রেখেছি।”

চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণের উপজেলা নির্বাহী অফিসার আমজাদ হোসেন বলেন, “প্রকল্প বাস্তবায়ন কাজ সমাপ্ত হতে না হতেই ঘূর্ণিঝড় শক্তির প্রভাবে সৃষ্ট অতিবর্ষণে কাঁচা রাস্তাগুলো বিধ্বস্ত হয়েছে। আগামী অর্থবছরে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ক্ষতিগ্রস্থ রাস্তাগুলো মেরামতের উদ্যোগ নেওয়া হবে।”

ঢাকা/অমরেশ/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ঘ র ণ ঝড় প রকল প র উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

অমর একুশে বইমেলা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক

অমর একুশে বইমেলা বাংলাদেশের মানুষের প্রাণের মেলা। মূলত প্রকাশকদের উদ্যোগে মুক্তিযুদ্ধ উত্তর বাংলাদেশে এই বইমেলার সূত্রপাত। সম্প্রতি এই বইমেলা নানা কারণে-অকারণে ডিসেম্বরে করার কথা শোনা যাচ্ছে। এ প্রেক্ষিতে সুস্পষ্টভাবে বলতেই হচ্ছে -ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলা করা যাবে না। কারণ সেসময় সারাদেশে শিক্ষার্থীদের বার্ষিক পরীক্ষা চলবে।

বইমেলার প্রধান পাঠক আমাদের শিক্ষার্থী। তারা ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলায় আসতে পারবে না। প্রধান পাঠকই যদি মেলায় আসতে না পারে তাহলে মেলা প্রাণহীন হয়ে পড়বে। বইমেলায় অংশগ্রহণকারি প্রকাশকরাও ভয়াবহ ক্ষতির মুখে পড়বে। তাছাড়া একুশের চেতনাকে ধারণ করে যে অমর একুশে বইমেলা, সেটা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক। ভাষা শহীদদরর প্রতি বইমেলার মাধ্যমে আমাদের যে শ্রদ্ধাঞ্জলি, তা অক্ষুন্ন থাকুক। 

আরো পড়ুন:

রাজশাহীতে বইপড়ায় কৃতিত্বের পুরস্কার পেল ২৩০৩ শিক্ষার্থী

‘গল্পকারের পছন্দের ৫০ গল্প’ গ্রন্থ প্রকাশিত

সর্বোপরি ৫ জানুয়ারি থেকে ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, এই সময়ে বইমেলা হতে কোন সমস্যা হওয়ার কথা নয়। অথবা তারিখ দুই একদিন এদিক-সেদিক করে নেয়া যেতে পারে। এ সময়ে রোজা নেই, নির্বাচনও নেই। নির্বাচনী ক্যাম্পেইন চলবে। এই মাঠে বইমেলা চলাকালীন সর্বদলীয় সিদ্ধান্তে কেউ সভা-সমাবেশ না করার সিদ্ধান্ত নিলে অনায়াসে এই সময়টাতে বইমেলা করা যেতে পারে। আমার বিশ্বাস- সব দলই অমর একুশে বইমেলার জন্য এই ছাড়টুকু দেবেন।

প্রায় পঞ্চাশ বছরের অধিক সময়ের  প্রচেষ্টায় অমর একুশে বইমেলা মহিরুহ হয়ে আমাদের কাছে আবির্ভূত, হঠকারি কোন সিদ্ধান্তে তা যেনো ধ্বংস হওয়ার উপক্রম না হয়। জেনে শুনে বাঙালির এতো বড় একটি সাংস্কৃতিক উৎসবকে ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্থ না করে বরং তা যে কোন মূল্যে আমাদের রক্ষা করা উচিত।

জানুয়ারিতে বাণিজ্যমেলায়ও হয়ে থাকে। এতে অমর একুশে বইমেলার ওপর কোনো বিরূপ প্রভাব পড়বে বলে আমি তা মনে করি না। বইমেলার প্রধান পাঠক শিক্ষার্থী। তারা বইমেলায় আসার জন্য মুখিয়ে থাকে। বাণিজ্য মেলায় যাওয়ার লোকজন বেশির ভাগই আলাদা। তবে অনেকেই বইমেলা এবং বাণিজ্যমেলা দুটোতেই যান। এটা তারা ম্যানেজ করে নিতে পারবেন বলে আমার বিশ্বাস।

আমি বলেছি শুধুমাত্র মেলার মাঠ প্রাঙ্গনে সভা-সমাবেশ না করার মাধ্যমে যদি সর্বদলীয় একটা সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় তাহলে জানুয়ারি- ফেব্রুয়ারি মিলিয়ে  বইমেলা করা সম্ভব।আমার মনে হয়, বইমেলা চলাকালীন এই মাঠ কোন দলকে সভা-সমাবেশের জন্য সরকার বরাদ্দ না দিলে, অথবা বইমেলা চলাকালীন দলগুলো নিজের থেকেই এই মাঠের বরাদ্দ না চাইলে সমস্যা আর থাকে না।

লেখক: প্রকাশক পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স লিমিটেড

ঢাকা/লিপি

সম্পর্কিত নিবন্ধ