দৈনিক খবর প্রতিদিন পত্রিকার ১৬তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালন
Published: 1st, June 2025 GMT
দৈনিক খবর প্রতিদিন পত্রিকার ১৬ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভা, দোয়া মাহফিল, কেককাটা ও মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে। রবিবার (১ জুন) সন্ধ্যায় শহরের জামতলা হীরা কমিউনিটি সেন্টারে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
নারায়ণগঞ্জ নিউজ পেপার ওনার্স এসোসিয়শনের সাধারণ সম্পাদক, নারায়ণগঞ্জ সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি, বাংলাদেশ চলচিত্র সাংবাদিক সমিতি (বাচসাস) এর সাবেক দপ্তর সম্পাদক দৈনিক খবর প্রতিদিন পত্রিকার প্রকাশক/সম্পাদক এস এম ইকবাল রুমীর সভাপতিত্বে উক্ত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহবায়ক এড.
এছাড়া আরো উপস্থিত ছিলেন, দৈনিক যোদ্ধা পত্রিকার সম্পাদক মামুনুর রশিদ সুমন, সাংবাদিক এম আর হায়দার রানা, বিশিষ্ট নাট্য পরিচালক শাহ আলম ভূইয়া, নাট্য অভিনেতা জুয়েল চৌধুরী, নাট্যশিল্পী মোঃ বাবুল, আলমগীর আজিজ ইমন, এস এম রাসেল, ঢাকা নাট্যমঞ্চের জনপ্রিয় অভিনেত্রী বণশ্রী অধিকারী, মোঃ জুয়েল চৌধুরী, সাংবাদিক হাবিব খন্দকার, মিজানুর রহমান, সেলিম হোসেন ও মোসাঃ সোনালী প্রমুখ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে এড. সাখাওয়াত হোসেন খান বলেন, বিএনপির নাম শুনলে যারা সামনে আসে নাই, তারা আজ বিএনপির কথা বলতে চায়। বিএনপি থেকে নমিনেশন চায়। অনুষ্ঠান করেন, কিন্তু আমাদের নেতা তারেক রহমান বলেছেন পরীক্ষা শেষ হয়েছে ৫ আগস্ট ২০২৪এ।
আজকে যারা বিএনপিতে এসে বিএনপিকে বিভক্ত করতে চায়, তাদের উদ্দেশ্যে ভালো না। আপনারা সুসময়ে মধু খেতে এসেছেন। মধু আপনাদের ভাগ্যে হবে না ইনশাআল্লাহ।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এড. আবু আল ইউসুফ খান টিপু বলেন, আমাদের নেতা তারেক রহমান নির্দেশ দিয়েছেন সমাজের বঞ্চিত ও অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে। আপনারা তারেক রহমানের পক্ষ থেকে এই ঈদ সামগ্রী গ্রহণ করে আমাদের কৃতজ্ঞ করবেন। আমরা এত বছর ভাল ছিলাম না। ফ্যাসিস্ট হাসিনা মানুষের সমস্ত অধিকার কেড়ে নিয়েছিল। আমাদের নেতা দেশের মানুষকে এই ফ্যাসিস্টের হাত থেকে জনগণকে মুক্ত করতে আমাদের নির্দেশনা দিয়ে আন্দোলন পরিচালনা করেছেন। সেই ধারাবাহিকতায় হাসিনার পতন ঘটেছে। এছাড়াও হাসিনার পতনে সংবাদিকদের অনেক ভুমিকা ছিলো।
জেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক মাশুকুল ইসলাম রাজিব বলেন, সাংবাদিকরা হলেন জাতির দর্পন। সাংবাদিকদের লেখনীর জন্য দেশ ও জাতি এগিয়ে যাচ্ছে। আমরা সাংবাদিকদের পাশে সবসময় আছি।
জেলা যুবদলের সদস্য সচিব মশিউর রহমান রনি বলেন, দৈনিক খবর প্রতিদিন পত্রিকায় সবসময় বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশন করে আসছে। তারপরও সবসময় আপনার খবরের সত্যতা তুলে ধরতে সব সময় বদ্ধ পরিকর থাকবেন এই প্রত্যাশা করি। আমরা জাতীয়দাবাদী দলের নেতাকর্মীরা সব সময় সাংবাদিকদের পাশে ছিলাম এবং ভবিষ্যতেও থাকবো।
সভাপতির বক্তব্যে দৈনিক খবর প্রতিদিন পত্রিকার প্রকাশক/সম্পাদক এস এম ইকবাল রুমী বলেন, নারায়ণগঞ্জের মাটি আমার, এই মাটিতেই জন্মেছি আর এই মাটির সম্মান রক্ষার্থে সকল শ্রেণীর মানুষকে ঐক্যবদ্ধ ভাবে এগিয়ে যাওয়ার জন্য এখনই আমাদের সময়। গত ১৫ বছরে আমি কোন রাজনীতি দলের সঙ্গে জরিত ছিলাম না। মানুষের কল্যাণে সর্বদা দৈনিক খবর প্রতিদিন পত্রিকাটি আছে এবং ভবিষ্যতেও পাশে থাকবে।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ ন র য়ণগঞ জ র ব এনপ র আম দ র ন অন ষ ঠ ন র সদস য রহম ন
এছাড়াও পড়ুন:
সিদ্ধিরগঞ্জে সেনাবাহিনীর উদ্ধারকৃত ডিএনডি খাল দখল করে চাঁদাবাজি!
সিদ্ধিরগঞ্জের হীরার্ঝিল আবাসিক এলাকায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর উদ্ধারকৃত ডিএনডি (ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ-ডেমরা) খাল দখল করে দোকান বসিয়ে চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠেছে কয়েকজন বাড়ির মালিকের বিরুদ্ধে। এর ফলে ডিএনডি খালটি ফের সংকুচিত হতে শুরু করেছে। পাশাপাশি তৈরি হচ্ছে জলাবদ্ধতা।
এদিকে এই এলাকাটি শিমরাইল পাম্প স্টেশনের নিকটবর্তী এলাকা হওয়ায় দোকানগুলোর কারণে ঠিকমতোন পানি সরবরাহ হতে পারছে না। তবে প্রশাসনের ভাষ্য, খুব শিগগিরই এখানে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হবে।
বুধবার (৩০ জুলাই) বিকেলে নাসিক ১নং ওয়ার্ডের হীরাঝিল আবাসিক এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বালু খালপাড় দখল করে হরেক রকমের ছোট-বড় প্রায় ২৫টি দোকান বসানো হয়েছে। হাবিবুল্লাহ হবুলের মালিকানাধীন হাবিবুল্লাহ টাওয়ার থেকে শুরু করে মোক্তার হোসেন সরকারের মালিকানাধীন বিএম ভবন, সিদ্দিকুর রহমানের মালিকানাধীন মমতাজ ভিলা, নূর মোহাম্মদ টাওয়ার, নুরুল হুদা’র বাড়ির সামনে এসব স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছে।
এর বিনিময়ে প্রতি দোকান থেকে টাকা তুলছেন স্ব স্ব বাড়ির মালিকরা। চাঁদা তোলার বিষয়টি কয়েকজন বাড়িওয়ালা অকপটে স্বীকারও করেছেন।
এদিকে, দোকানগুলোর কারণে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর নির্মিত ওয়াকওয়ে দিয়ে চলাচল করতে গিয়ে পথচারীদের চরম দুর্ভোগের শিকার হতে হচ্ছে। পাশাপাশি হীরাঝিল এলাকাবাসীকেও ভোগান্তির মধ্যে পড়তে হচ্ছে।
স্থানীয়রা জানান, হীরাঝিল আবাসিক এলাকা একটি ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা। যানবাহন ও মানুষের চাপ বেশি থাকায় এই এলাকায় সবসময় যানজট লেগেই থাকে। চলাচলের সুবিধার্তে এলাকাবাসী ডিএনডি খালের পাড় দিয়ে নিজ নিজ গন্তব্যস্থলে যেতেন। কিন্তু কয়েকজন বাড়িওয়ালা এহেন কর্মকান্ডের কারণে হাজার হাজার মানুষ দুর্ভোগের মধ্যে পড়েছেন।
এসব দোকানের কারণে খালের সৌন্দর্য নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি পানি নিষ্কাশন মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। এসব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ এবং চাঁদাবাজি প্রশাসন বন্ধ করতে না পারলে আগামীতে ফের বন্যা হওয়ার শঙ্কা তৈরি হচ্ছে। তাই এ বিষয়ে প্রশাসনের দ্রুত প্রদক্ষেপ নেওয়ার অনুরোধ জানাচ্ছি।
এমন অভিযোগের প্রেক্ষিতে ‘কাবাব বাড়ি’ ভবনের মালিক মো. রফিক বলেন, আমার বাড়ির সামনে ডিএনডি খাল দখল করে আমি কোনো দোকান বসাই নি। আমি নিজেও চাই এখানে কোনো দোকান না বসুক। কিন্তু আমি যতটুকু শুনেছি টিএইচ তোফা নামের এক ব্যক্তি এই দোকানগুলো বসিয়েছেন। আমি অনেক চেষ্টা করেছে দোকানগুলো সরিয়ে দেওয়ার। আর এখানে দোকান বসিয়ে টাকা তোলার প্রশ্নই উঠে না।
একই অভিযোগ স্বীকার করে মমতাজ ভিলার মালিক সিদ্দিকুর রহমান বলেন, অন্যসবাই দোকান বসিয়েছে। আমি তা দেখাদেখি ২টি দোকান বসিয়েছি। এটা আমার অপরাধ হয়েছে তা আমি নিজেও বুঝি। আমি মূলত সবার দেখাদেখি দোকান বসিয়েছি।
নুরুল হুদা নামের আরেক বাড়িওয়ালা বলেন, আমি দোকান বসিয়েছি। কিন্তু ওইখান থেকে কোনো অর্থ আদায় করি না। চাইলে এ বিষয়ে তদন্ত করা হতে পারে। আর এখানে দীর্ঘদিন ধরেই দোকান ছিল।
নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জাফর সাদিক চৌধুরী বলেন, এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহিনূর আলম বলেন, চাঁদাবাজির বিষয়টি আমাদের জানা নেই। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
নারায়ণগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শুভ আহমেদ বলেন, এ বিষয়ে আমি অবগত ছিলাম না। তবে অভিযোগ যেহেতু পেয়েছি তাহলে অবশ্যই ঘটনাস্থলে লোক পাঠানো হবে। ডিএনডি খালপাড় থেকে স্থাপনা সরিয়ে নেওয়ার জন্য প্রথমে আমরা একাধিকবার তাদের নোটিশ পাঠাবো।
যদি তারা কথা না শোনেন তাহলে আইন অনুযায়ী উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হবে। খাল দখলের বিরুদ্ধে আমরা সবসময় জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করছি।
নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক (ডিসি) জাহিদুল ইসলাম মিঞা বলেন, জলাবদ্ধতা নিরসনে আমরা এরই মধ্যে নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন খাল পরিষ্কার করা শুরু করেছি। ডিএনডি খালসহ যেকোনো খাল এভাবে দখল হয়ে থাকলে দখলকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমি শিগগিরই এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নিচ্ছি।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালে ৮ ডিসেম্বর ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ-ডেমরা (ডিএনডি) পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা উন্নয়নে ডিএনডি প্রকল্প হাতে নেয় পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। শুরুতে প্রকল্পের বাজেট ৫৫৮ কোটি টাকা ধরা হলেও তা বাস্তবায়নে সবমোট ১৩০০ কোটি টাকা খরচ হয়।
২০২৫ সালের জুন মাসে এই প্রকল্পের কাজ শেষ করে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। সেনাবাহিনীর প্রকল্প বাস্তবায়ন করাকালে তখন খালটি দখল না হলেও প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার পর পরই হীরাঝিল এলাকার কয়েকজন বাড়িওয়ালা ডিএনডি খাল দখল করে দোকান বসানো শুরু করে।