বাইরের একটি আগ্রাসী শক্তি বাংলাদেশকে গ্রাস করতে চায় বলে মন্তব্য করেছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব গাজী আতাউর রহমান। তিনি বলেছেন, বাইরের যে আগ্রাসী শক্তি বাংলাদেশকে মুখের গ্রাসে পরিণত চায়, তাদের জন্য অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস হলেন গলার কাঁটা। তিনি যত দ্রুত চলে যাবেন, তত তাদের জন্য স্বস্তির বিষয়।

সোমবার বিকেলে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমি মিলনায়তনে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে রাজনৈতিক দলের নেতাদের আলোচনা শেষে সন্ধ্যায় সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন গাজী আতাউর রহমান।

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব গাজী আতাউর রহমান বলেন, মানুষের মধ্যে নির্বাচন নিয়ে যে সংকট আছে, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যে উদ্বেগ–উৎকণ্ঠা আছে তা স্পষ্ট করতে হবে। নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করতে হবে।

সংস্কারের বিষয়ে ইসলামী আন্দোলনের এ নেতা বলেন, ‘আগে সংস্কারের বিষয়টা সুস্পষ্টভাবে সামনে আসতে হবে। সংস্কারের আগে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা হলে পরিবেশ আরও ঘোলা হবে, এটা আমাদের আশঙ্কা। এ আশঙ্কার কথা (প্রধান উপদেষ্টাকে) বলেছি।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ইসল ম

এছাড়াও পড়ুন:

‘এক বদলির জন্য এক কোটি টাকার অফার এসেছিল’

শিক্ষা ব্যবস্থা স্বচ্ছ ও দুর্নীতিমুক্ত করতে নিজের জিরো টলারেন্স নীতিতে অবস্থানের কথা উল্লেখ করে শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. চৌধুরী রফিকুল আবরার জানিয়েছেন, ব্যক্তিগতভাবে তাকে একটি বদলির জন্য এক কোটি টাকা ঘুষের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল।

আজ বুধবার আসন্ন এইচএসসি পরীক্ষা ও অন্যান্য বিষয় নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় শিক্ষার দুর্নীতি চিত্র তুলে ধরতে গিয়ে এ কথা জানান শিক্ষা উপদেষ্টা।

তিনি উদাহরণ দিয়ে বলেন, ‘একটি বড় পদের পদায়নের জন্য আমার কাছে তদবির এসেছিল। তার জন্য প্রথিতযশা একজন কম্পিটিড ইন্সটেকলেকচুয়াল (বুদ্ধিজীবী) তদবির করেছিলেন। পরে তার বিষয়ে খোঁজ নিয়ে দেখি তিনি ওই পদের জন্য যোগ্য নন। তখন আমরা তাকে প্রত্যাখ্যান করি। পরবর্তীতে তিনি অন্য মাধ্যমে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেন এবং আমাকে একটা অ্যামাউন্ট অফার করেন। টাকাও আমি বলে দেই, এক কোটি টাকা অফার করেছিলেন। তিনি যাকে দিয়ে বলেছিলেন, তিনি আমার পরিচিত। যিনিও একটি প্রতিষ্ঠানে রয়েছেন। আমি আর বিস্তারিত বলতে চাচ্ছি না। আমি বুঝাতে চাচ্ছি আমার সহকর্মী যারা আছেন, তারা নৈতিক অবস্থানে স্থির থাকবেন। আমি পদে থাকা অবস্থায় কোন দুর্নীতি সহ্য করব না।’

ড. আবরার বলেন, ‘দুর্নীতির কথা আমরা বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে শুনি। আমার কাছে যে পত্রিকাগুলো আসে, সেগুলোর বেশিরভাগ কাটিং-এ দুর্নীতির খবর থাকে। তবে কোনটা সত্য, কোনটা সত্য না তা যাচাই করার সবসময় সক্ষমতা আমাদের হাতে থাকে না। তবে যেখানে ঘটনা ঘটে, আমরা যথাযথ ব্যবস্থা নিচ্ছি। দুর্নীতির বিরুদ্ধে আমাদের অবস্থান স্পষ্ট—জিরো টলারেন্স।’

পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগ: পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়ে দেশের সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে জন্য যোগ্য উপাচার্যদের খুঁজে নেওয়া হবে বলেও জানান শিক্ষা উপদেষ্টা সি আর আবরার। তিনি বলেন, উপাচার্য নিয়োগে নানা অসঙ্গতির কারণে আমরা উপাচার্য নিয়োগের জন্য একটি বোর্ড তৈরি করেছি। আমরা উপাচার্য নির্বাচনের জন্য পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেব। এতে আগ্রহীরা আবেদন করবেন। এরপর যথাযথ প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে যোগ্যদের উপাচার্য নিয়োগ দেওয়া হবে।

আগামী জুলাই থেকে কলেজ পর্যায়ে অনলাইনে শিক্ষকদের বদলি প্রক্রিয়া শুরু করা হচ্ছে বলেও জানান শিক্ষা উপদেষ্টা। তিনি আরও বলেন, শিক্ষার্থীদের হাতে সামান্য ভুল নিয়েও বই তুলে দিতে আমার মন সায় দিচ্ছে না। তাই আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, যতটা সম্ভব নির্ভুল বই দেব। এজন্য আমরা কাজ করছি। সময়স্বল্পতার কারণে ২০২৬ সালের বই চলমান বছরের কারিকুলা অনুযায়ী ছাপানো হবে এবং এতে যেসব সাধারণ ভুলভ্রান্তিগুলো ছিল সেগুলো ঠিক করে আগামীবছরের শুরুতেই যাতে শিক্ষার্থীরা পাঠ্যবই হাতে পায় তার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তাই যত কষ্টই হোক বইগুলো যত্ন এবং দায়িত্বের সঙ্গে নির্ভুল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমি আশাবাদী এনসিটিবি এ গুরুদায়িত্ব পালন করতে পারবে।’

উপদেষ্টা বলেন, ‘২০২৫ সালে সম্পন্ন হওয়া এসএসসি পরীক্ষায় শিক্ষাবোর্ডের কর্মকর্তাসহ সকলের অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলে প্রশ্নপত্র ফাঁসের মত অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। বড়ধরনের নকলের অভিযোগ শোনা যায়নি। ২০২৫ সালের এইচ এস সি পরীক্ষা একইভাবে সম্পন্ন হবে বলে আশা করি এবং এক্ষেত্রে সকলের সহযোগিতা চাই।’ তিনি বলেন, ‘আমার পুরো জীবনটাই আমি ব্যয় করেছি নিষ্ঠার সঙ্গে শিক্ষাকে এগিয়ে নিতে। এ লক্ষ্য থেকে শিক্ষার মত গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের গুরুদায়িত্ব আমি গ্রহণ করেছি।’

মতবিনিময়ে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সচিব সিদ্দিক জোবায়ের, কারিগরি ও মাদ্রাসা বিভাগের সচিব ড. খ ম কবিরুল ইসলাম, ঢাকা শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. খন্দকার এহসানুল কবিরসহ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ