কিশোরগঞ্জের ভৈরবে খেলার মাঠ দখল নিয়ে সংঘর্ষে উভয় পক্ষের ৩০ জন আহত হয়েছেন।

মঙ্গলবার (১০ জুন) বিকেলে উপজেলা শ্রীনগর ইউনিয়নের জাফরনগর গ্রামে ভূঁইয়া বাড়ি বংশের সঙ্গে সালাম মেম্বার বাড়ি বংশের মধ্যে এ ঘটনা ঘটে। ঘণ্টাব্যাপী চলে এই সংঘর্ষ।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শ্রীনগর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান হারুনূর রসিদ।

সংঘর্ষে উভয় পক্ষের আহতরা হলেন, মাসুদ মিয়া (৩০), শাকিল মিয়া (২৫), রুমান মিয়া (৩৩), এমাদ হোসেন (৬০), জিহাদ মিয়া (২৫), শাহবুদ্দিন মিয়া (২৮), আরিফ মিয়া (২২), রুবেল হোসেন (৩০), আব্দুর রসিদ (৫৫), জিবন মিয়া (২০), মাসুম মিয়া (২৪), রিয়াদ মিয়া (১৮), হান্নান মিয়া (২০), হুমায়ুন কবির (২৬), শফিকুল ইসলাম (৩৫), অনন্ত মিয়া (১৬), শাহিন মিয়া (১৭), বিল্লাল মিয়া (৩৫)।

এদের মধ্যে এমাদ মিয়ার অবস্থার অবনতি থেকে চিকিৎসকরা তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। বিল্লাল মিয়া, আরিফ মিয়া ও জিহাদ মিয়াকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি রাখা হয়েছে।

এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক ওম্মে হাবীবা জুঁই বলেন, জাফরনগর গ্রামের সংঘর্ষের ঘটনায় সন্ধ্যা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত আহত ১৭ জন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নেন। তাদের মধ্যে ৩ জনকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি রাখা হয়েছে। একজনকে গুরুতর আহত অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আহতদের অনেকেই ভৈরবের বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালেও চিকিৎসা নিয়েছেন।

ভূঁইয়া বাড়ি বংশের রিয়াদ মিয়া বলেন, ঈদের দুইদিন আগে আমাদের সাদেকপুর ইউনিয়নের রসুলপুর গ্রামের সঙ্গে ফুটবল খেলা ছিল। এসময় আমরা মাঠে খেলতে গেলে সালাম মেম্বারের বাড়ির যুবকেরা মাঠে খেলতে বাধা দেয়। তখন তাদের সঙ্গে আমাদের বাকবিতণ্ডা হয়। পরে আমরা বাড়ি চলে আসি। এরপর থেকে আমাদের দেখলেই সালাম মেম্বারের বাড়ির বংশের যুবকেরা গালিগালাজ করে। একই ঘটনার জের ধরে ১০ জুন বিকেলে ইচ্ছে করে আমাদের বাড়ির এক যুবককে সালাম মেম্বারের বাড়ির এক যুবক মোটরসাইকেলে ধাক্কা দেয়। পরে ওই যুবককে জিজ্ঞাসা করতে গেলে বাকবিতণ্ডা হয়। বিষয়টি পরে সংঘর্ষে রূপ নেয়। আমাদের বাড়ির প্রায় পনেরো জনের মতো নারী পুরুষ আহত হয়েছে। একজনকে ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়েছে। 

এ বিষয়ে সালাম মেম্বারের বাড়ির জিহাদ মিয়া বলেন, খেলার মাঠ দখল নিয়ে সপ্তাহখানেক আগে বাচ্চা ছেলেদের মধ্যে ঝগড়া হয়। ১০ জুন আমাদের বাড়ির ইয়ামিন নামে একজনের মোটরসাইকেলের চাবি রেখে দিয়ে ভূঁইয়া বাড়ির যুবকেরা গালিগালাজ করে ও হুমকি দেয়। পরে বিষয়টি এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে সংঘর্ষে রূপ নেয়। আমাদের বংশের প্রায় ১৫ জন নারী পুরুষ আহত হয়েছে। 

শ্রীনগর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান হারুনূর রসিদ বলেন, আমি ভৈরব শহরে ছিলাম। ঝগড়ার খবর পেয়ে স্থানীয়দের তা থামাতে বলি। উভয় পক্ষের সঙ্গে ফোনে কথা বলে পরিস্থিতি শান্ত করি। পরে রাতে হাসপাতালে ছুটে আসি। উভয় পক্ষের ১৭ জন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছেন। সার্বিক বিষয় তদারকি করছি। উভয় পক্ষের সঙ্গে কথা বলে দ্রুত সময়ের মধ্যে বিষয়টি মীমাংসা করবো।

ভৈরব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খন্দকার ফুয়াদ রুহানি জানান, জাফরনগর গ্রামের সংঘর্ষে বিষয়টি আমার জানা নেই। আপনার মাধ্যমে জেনেছি। আমি সংঘর্ষের বিষয়টি খোঁজ নেবো। দুই পক্ষের অভিযোগের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: স ঘর ষ আহত স ব স থ য কমপ ল ক স আম দ র ব স ঘর ষ ব ষয়ট উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসা ভিনগ্রহের বস্তু নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে ইলন মাস্ক

গত জুলাই মাসে শনাক্ত হওয়া রহস্যময় ‘৩আই/অ্যাটলাস’ নামের আন্তনাক্ষত্রিক বস্তুর পরিচয় নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে বিজ্ঞানীদের মধ্যে। আমাদের সৌরজগতের মধ্যে থাকা বস্তুটি এমন আচরণ করছে, যা বিজ্ঞানীরা আগে কখনো দেখেননি। কারও ধারণা এটি ধূমকেতু, আবার কারও মতে ভিনগ্রহ থেকে আসা মহাকাশযান। উৎস ও পরিচয় সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানাতে না পারলেও বস্তুটি পৃথিবীর জন্য কোনো হুমকি নয় বলে ধারণা করছে যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা। তবে যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের খ্যাতনামা জ্যোতির্বিজ্ঞানী অভি লোব অভিযোগ করেছেন, নাসা বস্তুটির বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য গোপন করছে। বিশাল আকারের অতিদ্রুতগামী মহাজাগতিক বস্তুটি অস্বাভাবিক রাসায়নিক উপাদান নিঃসরণ করছে, যা বিজ্ঞানের প্রচলিত ধারণাকে চ্যালেঞ্জ করছে। অনেকের ধারণা, ৩আই/অ্যাটলাস কোনো কৃত্রিম উৎস থেকে তৈরি হতে পারে। এবার এই বিতর্কে নাম লিখিয়েছেন মহাকাশ সংস্থা স্পেসএক্সের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ইলন মাস্ক।

জনপ্রিয় মার্কিন পডকাস্ট দ্য জো রোগান এক্সপেরিয়েন্সে ইলন মাস্ক ৩আই/অ্যাটলাস নামের আন্তনাক্ষত্রিক বস্তু সম্পর্কে নিজের ভাবনা প্রকাশ করেছেন। বস্তুটি কোনো ভিনগ্রহের মহাকাশযান হতে পারে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে ইলন মাস্ক বলেন, ‘আপনি যদি এটিকে সম্পূর্ণ নিকেল দিয়ে তৈরি করেন, তবে তা হবে একটি অত্যন্ত ভারী মহাকাশযান। এটি এমন একটি যান হতে পারে, যা একটি মহাদেশকে নিশ্চিহ্ন করে দিতে পারে। তার চেয়েও খারাপ কিছু ঘটাতে পারে। যদি আমি ভিনগ্রহের কোনো প্রমাণ সম্পর্কে জানতে পারি, তাহলে কথা দিচ্ছি আপনার অনুষ্ঠানে আসব। আর এখানেই তা প্রকাশ করব।’

অভি লোবের দাবি, আন্তনাক্ষত্রিক বস্তুটি পৃথিবীর ওপর নজরদারি করতে পাঠানো ভিনগ্রহের কোনো মহাকাশযান হতে পারে। অস্বাভাবিক লেজযুক্ত বস্তুটি প্রতি সেকেন্ডে চার গ্রাম নিকেল নিঃসরণ করছে; যদিও সেখানে কোনো লোহার উপস্থিতি নেই। ধূমকেতুর ক্ষেত্রে এমন আচরণ আগে দেখা যায়নি।

জো রোগান তাঁর আলোচনায় ধূমকেতুর রহস্যময় বৈশিষ্ট্যের ওপর জোর দেন। ধূমকেতুর গ্যাসের মেঘে নিকেলের উপস্থিতি উল্লেখ করেন। এই ধাতু পৃথিবীতে প্রধানত শিল্পক্ষেত্রে ব্যবহৃত সংকর ধাতুতে পাওয়া যায়। অন্যদিকে ইলন মাস্ক নিকেলের উপস্থিতির একটি পার্থিব ব্যাখ্যা দেন। তিনি বলেন, অনেক ধূমকেতু ও গ্রহাণু প্রাথমিকভাবে নিকেল দিয়ে তৈরি। পৃথিবীতে যেখানে নিকেলখনি দেখা যায়, সেখানে আসলে অতীতে নিকেলসমৃদ্ধ কোনো গ্রহাণু বা ধূমকেতু আঘাত করেছিল।

সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া

সম্পর্কিত নিবন্ধ