ভৈরবে খেলার মাঠ দখল নিয়ে সংঘর্ষে আহত ৩০
Published: 11th, June 2025 GMT
কিশোরগঞ্জের ভৈরবে খেলার মাঠ দখল নিয়ে সংঘর্ষে উভয় পক্ষের ৩০ জন আহত হয়েছেন।
মঙ্গলবার (১০ জুন) বিকেলে উপজেলা শ্রীনগর ইউনিয়নের জাফরনগর গ্রামে ভূঁইয়া বাড়ি বংশের সঙ্গে সালাম মেম্বার বাড়ি বংশের মধ্যে এ ঘটনা ঘটে। ঘণ্টাব্যাপী চলে এই সংঘর্ষ।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শ্রীনগর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান হারুনূর রসিদ।
সংঘর্ষে উভয় পক্ষের আহতরা হলেন, মাসুদ মিয়া (৩০), শাকিল মিয়া (২৫), রুমান মিয়া (৩৩), এমাদ হোসেন (৬০), জিহাদ মিয়া (২৫), শাহবুদ্দিন মিয়া (২৮), আরিফ মিয়া (২২), রুবেল হোসেন (৩০), আব্দুর রসিদ (৫৫), জিবন মিয়া (২০), মাসুম মিয়া (২৪), রিয়াদ মিয়া (১৮), হান্নান মিয়া (২০), হুমায়ুন কবির (২৬), শফিকুল ইসলাম (৩৫), অনন্ত মিয়া (১৬), শাহিন মিয়া (১৭), বিল্লাল মিয়া (৩৫)।
এদের মধ্যে এমাদ মিয়ার অবস্থার অবনতি থেকে চিকিৎসকরা তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। বিল্লাল মিয়া, আরিফ মিয়া ও জিহাদ মিয়াকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি রাখা হয়েছে।
এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক ওম্মে হাবীবা জুঁই বলেন, জাফরনগর গ্রামের সংঘর্ষের ঘটনায় সন্ধ্যা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত আহত ১৭ জন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নেন। তাদের মধ্যে ৩ জনকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি রাখা হয়েছে। একজনকে গুরুতর আহত অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আহতদের অনেকেই ভৈরবের বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালেও চিকিৎসা নিয়েছেন।
ভূঁইয়া বাড়ি বংশের রিয়াদ মিয়া বলেন, ঈদের দুইদিন আগে আমাদের সাদেকপুর ইউনিয়নের রসুলপুর গ্রামের সঙ্গে ফুটবল খেলা ছিল। এসময় আমরা মাঠে খেলতে গেলে সালাম মেম্বারের বাড়ির যুবকেরা মাঠে খেলতে বাধা দেয়। তখন তাদের সঙ্গে আমাদের বাকবিতণ্ডা হয়। পরে আমরা বাড়ি চলে আসি। এরপর থেকে আমাদের দেখলেই সালাম মেম্বারের বাড়ির বংশের যুবকেরা গালিগালাজ করে। একই ঘটনার জের ধরে ১০ জুন বিকেলে ইচ্ছে করে আমাদের বাড়ির এক যুবককে সালাম মেম্বারের বাড়ির এক যুবক মোটরসাইকেলে ধাক্কা দেয়। পরে ওই যুবককে জিজ্ঞাসা করতে গেলে বাকবিতণ্ডা হয়। বিষয়টি পরে সংঘর্ষে রূপ নেয়। আমাদের বাড়ির প্রায় পনেরো জনের মতো নারী পুরুষ আহত হয়েছে। একজনকে ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়েছে।
এ বিষয়ে সালাম মেম্বারের বাড়ির জিহাদ মিয়া বলেন, খেলার মাঠ দখল নিয়ে সপ্তাহখানেক আগে বাচ্চা ছেলেদের মধ্যে ঝগড়া হয়। ১০ জুন আমাদের বাড়ির ইয়ামিন নামে একজনের মোটরসাইকেলের চাবি রেখে দিয়ে ভূঁইয়া বাড়ির যুবকেরা গালিগালাজ করে ও হুমকি দেয়। পরে বিষয়টি এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে সংঘর্ষে রূপ নেয়। আমাদের বংশের প্রায় ১৫ জন নারী পুরুষ আহত হয়েছে।
শ্রীনগর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান হারুনূর রসিদ বলেন, আমি ভৈরব শহরে ছিলাম। ঝগড়ার খবর পেয়ে স্থানীয়দের তা থামাতে বলি। উভয় পক্ষের সঙ্গে ফোনে কথা বলে পরিস্থিতি শান্ত করি। পরে রাতে হাসপাতালে ছুটে আসি। উভয় পক্ষের ১৭ জন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছেন। সার্বিক বিষয় তদারকি করছি। উভয় পক্ষের সঙ্গে কথা বলে দ্রুত সময়ের মধ্যে বিষয়টি মীমাংসা করবো।
ভৈরব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খন্দকার ফুয়াদ রুহানি জানান, জাফরনগর গ্রামের সংঘর্ষে বিষয়টি আমার জানা নেই। আপনার মাধ্যমে জেনেছি। আমি সংঘর্ষের বিষয়টি খোঁজ নেবো। দুই পক্ষের অভিযোগের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: স ঘর ষ আহত স ব স থ য কমপ ল ক স আম দ র ব স ঘর ষ ব ষয়ট উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
কার্টুন, মিমে অভ্যুত্থানের ভিন্ন ধারার দৃশ্যায়ন
টাকার বস্তার ভেতর থেকে মাথা উঁচিয়ে আছেন শুভ্র কেশ, সফেদ দাড়ি, চশমা পরিহিত এক লোক। তাঁর ছবি দেখে তো বটেই, এই বর্ণনা থেকেও তাঁকে চিনবেন দেশবাসী। বর্তমানে কারাগারের বাসিন্দা পতিত স্বৈরশাসকের এই উপদেষ্টা বলছেন, ‘টাকার ওপর আমার বিশ্বাস উঠে গেছে।’ এই ছবির পাশেই এক কাটআউট। সেখানে ‘শেখ হাসিনা পালায় না’ বলতে বলতে দৌড়ে পালাচ্ছেন ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতার মসনদ থেকে উৎপাটিত শেখ হাসিনা।
এমন মজার মজার কার্টুন, মিম, গ্রাফিতি, ভিডিও স্থাপনাকর্মসহ বৈচিত্র্যময় সৃজনসম্ভার নিয়ে শুরু হয়েছে ‘বিদ্রূপে বিদ্রোহ’ নামের ব্যতিক্রমী এক প্রদর্শনী। আয়োজন করেছে অনলাইনভিত্তিক স্যাটায়ার সাময়িকী ‘ইয়ারকি’। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ধানমন্ডির আলিয়ঁস ফ্রঁসেজের লা গ্যালারিতে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে ছয় দিনের এ প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। চলবে ৫ আগস্ট পর্যন্ত। সবার জন্য প্রতিদিন বেলা তিনটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত খোলা।
গত বছর ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে উত্তাল ছিল জুলাই। একটি বৈষম্যহীন, উদার গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য পথে নেমেছিলেন অগণিত মানুষ। শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী সরকারকে উৎখাত করতে জীবন উৎসর্গ করেছেন তাঁদের অনেকে। আহত হয়েছেন বেশুমার। রক্তরঞ্জিত রাজপথ বেয়ে এসেছে জনতার বিজয়।
প্রদর্শনীতে প্রবেশপথটির দুই পাশে লাল রঙের পটভূমিতে বড় বড় ডিজিটাল পোস্টার। সেখানে ২ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিনের বিভিন্ন ঘটনার আলোকচিত্র, সংবাদপত্র, অনলাইন পোর্টাল, টেলিভিশনের রিপোর্ট, ছবি, ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমের পোস্ট—এসব তুলে আনা হয়েছে এ পোস্টারগুলোতে। প্রবেশপথটিও লাল রঙের। ‘জুলাই করিডর’ নামে এই রক্তিম পথটি বেয়ে দর্শনার্থীরা প্রদর্শনীতে প্রবেশের সময় অভ্যুত্থানের উত্তাল দিনগুলোর উত্তাপ ফিরে পাবেন।