বরিশাল বিভাগে ডেঙ্গুর প্রকোপ ক্রমেই বেড়ে চলেছে। এই রোগে আক্রন্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে হাসপাতালগুলোতে। মৃত্যুও হয়েছে অনেকের।

গত ২৪ ঘণ্টায় এই বিভাগের দুইটি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, ছয়টি সদর হাসপাতালসহ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ১২৪ জন ভর্তি হয়েছেন। একই সময়ে মারা গেছেন তিনজন।

বৃহস্পতিবার (১২ জুন) দুপুরে এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা.

শ্যামল কৃষ্ণ মন্ডল।

আরো পড়ুন:

হাসপাতালে ঢুকে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সংগঠকসহ ১০ জনকে পিটুনি

ঈদে বিএমইউর বহির্বিভাগ খোলা থাকবে ৫, ৮ ও ১১ জুন

বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য দপ্তরের কর্মকর্তারা জানান, বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় পিরোজপুরের নেছারাবাদ এলাকার বাসিন্দা ইসরাত জাহান (২০) এবং বরগুনা হাসাতালে চিকিৎসাধীন চাঁন মিয়া (৭৫) ও গোশাই দাস (৮৫) মারা গেছেন।

বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য দপ্তরের তথ্য মতে, চলতি বছরের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত বরিশাল বিভাগের ছয় জেলার বিভিন্ন হাসপাতালে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছেন ২ হাজার ৪৮৬ জন। বর্তমানে চিকিৎসা নিচ্ছেন ৩২৪ জন। মারা গেছেন সাতজন। এরমধ্যে বরগুনায় আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। বরগুনায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা ১ হাজার ৩৫৪ জন। আর মারা যাওয়া সাতজনের মধ্যে পাঁচজনই বরগুনার।

বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. শ্যামল কৃষ্ণ মন্ডল বলেন, “বৃষ্টি বাড়লেই আতঙ্ক বেড়ে যায়। কারণ বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা হয়। তখন মশার বিস্তার বৃদ্ধি পায়। যে কারণে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যাও বাড়ছে। তবে এবার বিষয়টি ভিন্ন। কারণ বৃষ্টি ছাড়াও ডেঙ্গু তার প্রভাব বিস্তার করছে। এর বড় কারণ অসচেতনতা।”

তিনি বলেন, “সরকারি হাসপাতালে যতো রোগী ভর্তি হয়েছে প্রকৃত সংখ্যা আরো বেশি। কারণ বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিকে ভর্তি হওয়াসহ অনেক রোগী বাসাতে থেকে চিকিৎসা নিয়েছেন। যার হিসেব আমাদের কাছে নেই। সেই সংখ্যা থাকলে সবাই বুঝতো ডেঙ্গু কতোটা ভয়াবহ আকার ধারণ করছে।”

ডা. শ্যামল কৃষ্ণ মন্ডল বলেন, “আমাদের চিকিৎসা সেবা দেওয়ার মতো সামর্থ্য রয়েছে। সবাই মিলে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে কাজও করছে। তবে ডেঙ্গু প্রতিরোধ করতে হলে সবার সচেতন হওয়ার বিকল্প নেই। মশা জন্মায় এমন সব জায়গা পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।” 

ঢাকা/পলাশ/মাসুদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর বর শ ল ব ভ গ য় স ব স থ য বরগ ন

এছাড়াও পড়ুন:

পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন

চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।

লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্‌যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।

চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।

লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।

প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।

লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।

লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’

তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্‌যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?

সম্পর্কিত নিবন্ধ