ভারতের মধ্যপ্রদেশ রাজ্যে তাজমহলের আদলে একটি বাড়ি তৈরি করেছেন একজন ব্যবসায়ী। সম্প্রতি বাড়িটির ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। এটি শুধু নান্দনিক স্থাপত্যের জন্য পরিচিতি পায়নি; বাড়িটি তৈরির উদ্দেশ্য সবার হৃদয় ছুঁয়ে গেছে।
কনটেন্ট ক্রিয়েটর প্রিয়ম সরস্বত ইনস্টাগ্রামে বাড়িটির একটি ভিডিও শেয়ার করেছেন। তাঁর মাধ্যমেই ব্যবসায়ী আনন্দ প্রকাশ চৌকসের মালিকানাধীন বিলাসবহুল মার্বেলের বাড়িটি সবার কাছে পরিচিতি পেয়েছে।
ভিডিওর শুরুতে সরস্বত বাড়ির মালিকের কাছে জানতে চান, এটি সত্যিই তাঁদের বাসভবন কি না এবং বাড়িটি আদৌ তাজমহলের অনুকরণে তৈরি করা হয়েছে কি না? জবাবে আনন্দ দম্পতি হাসিমুখে তাতে সম্মতি প্রকাশ করেন। এরপর ওই ব্যবসায়ীর কাছে জানতে চান, বাড়িটি তাঁর স্ত্রীকে উৎসর্গ করা হয়েছে? উত্তরে তিনি বলেন, নিঃসন্দেহে, বাড়িটি তাঁকে (স্ত্রীকে) উৎসর্গ করা হয়েছে, এটা শতভাগ নিশ্চিত।
এরপর ওই ব্যবসায়ী ব্যাখ্যা করেন, মাকরানা মার্বেল দিয়ে বাড়িটি নির্মাণ করা হয়েছে। একই উপাদান দিয়ে আগ্রায় মোগল সম্রাট শাহজাহানের অমর কীর্তি তাজমহল তৈরি করা হয়েছিল।
ভিডিওটি ইনস্টাগ্রামে শেয়ার করে সরস্বত লিখেছেন, মনোমুগ্ধকর এই বাড়ি মধ্যপ্রদেশের ইন্দোরের কাছাকাছি অবস্থিত। ভালোবাসা
ছড়িয়ে দেওয়ার প্রতীক হিসেবে তৈরি করা হয়েছে বাড়িটি। বাড়িটির ভেতরের মার্বেলের কাজ অনন্য। সবচেয়ে চমৎকার বিষয়, এটি একটি স্কুলের ভেতরে তৈরি করা হয়েছে। স্কুলটি ওই ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠা করেছেন। অসাধারণ বাড়িটি মহৎ উদ্দেশ্যকে ঘিরে তৈরি করা হয়েছে।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাড়িটি নির্মাণে প্রায় ২ কোটি রুপি খরচ হয়েছে। আনন্দ প্রকাশের বাড়ির চারপাশে সব মিলিয়ে ৫০ একর জমি রয়েছে। বাড়িটিতে চারটি শয়নকক্ষ, একটি ধ্যানকক্ষ, একটি গ্রন্থাগার, খোদাই করা স্তম্ভ এবং খিলানযুক্ত দরজা রয়েছে।
ইনস্টাগ্রামে ইতিমধ্যে ১ কোটি ৪৭ লাখের বেশি মানুষ ভিডিওটি দেখেছেন। লাইক দিয়েছেন ১৩ লাখের বেশি মানুষ। ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা নান্দনিক বাড়িটি ও ওই দম্পতির প্রশংসায় পঞ্চমুখ।
ভিডিওর নিচে একজন মন্তব্য করেছেন, ‘একটি স্কুল, স্মৃতিসৌধ ও একটি বার্তা—সবকিছু একসঙ্গে। অসাধারণ!’ আরেকজন লিখেছেন, ‘ভাবুন তো, আপনি এমন একটি স্কুলে বড় হচ্ছেন, যেখানকার চত্বরে একটি ছোট তাজমহল আছে।’
আরেকজন ব্যবহারকারী লিখেছেন, ‘কখনো কখনো কিছু রিল আপনার সামনে চলে আসে আর আপনার দিনটি উজ্জ্বল করে দেয়। এটাই সেই রিল.
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ই ব যবস ত জমহল কর ছ ন
এছাড়াও পড়ুন:
রোজার আগেই নির্বাচন, এরপর আগের কাজে ফিরে যাবেন
অন্তর্বর্তী সরকার সময়মতো ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন আয়োজনের জন্য অঙ্গীকারবদ্ধ বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, আগামী ফেব্রুয়ারিতে পবিত্র রমজানের আগেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনের পর তিনি তাঁর আগের কাজে ফিরে যাবেন।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভাকে এসব কথা বলেছেন প্রধান উপদেষ্টা। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ওয়াশিংটন থেকে ভিডিও ফোনকলে অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে কথা বলেন জর্জিয়েভা।
এ সময় তাঁরা বাংলাদেশের চলমান অর্থনৈতিক সংস্কার, আঞ্চলিক পরিস্থিতি এবং আগামী ফেব্রুয়ারিতে সাধারণ নির্বাচনের পূর্ববর্তী চ্যালেঞ্জ নিয়ে আলোচনা করেন।
আলোচনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করেন ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা। তিনি বলেন, অধ্যাপক ইউনূস দায়িত্ব গ্রহণের পর বাংলাদেশের অর্থনীতি উল্লেখযোগ্যভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে এবং এই কৃতিত্ব তাঁর নিজের।
অর্থনীতির সংকটকালীন পরিস্থিতি স্মরণ করে আইএমএফ প্রধান বলেন, ‘আপনার অর্জন আমাকে মুগ্ধ করেছে। অল্প সময়ে আপনি অনেক কিছু করেছেন। যখন অবনতির ঝুঁকি অত্যন্ত বেশি ছিল, তখন আপনি দেশের দায়িত্ব নিয়েছেন। আপনি সঠিক সময়ে সঠিক ব্যক্তি।’
ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা বিশেষভাবে বৈদেশিক মুদ্রা বাজারের স্থিতিশীলতা এবং রিজার্ভ পুনরুদ্ধারের জন্য সরকারের সাহসী পদক্ষেপ, বাজারভিত্তিক বিনিময় হার প্রবর্তনের প্রশংসা করেন।
অধ্যাপক ইউনূস বাংলাদেশের এক সংকটময় সময়ে আইএমএফ প্রধানের অবিচল সহায়তার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, ‘চমৎকার সহায়তার জন্য ধন্যবাদ।’ তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, গত বছর নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে তাঁদের প্রথম সাক্ষাৎ বাংলাদেশের অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের পথ সুগম করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল।
কথোপকথনে আইএমএফ প্রধান অভ্যন্তরীণ রাজস্ব আয় বৃদ্ধি এবং ব্যাংকিং খাতে গভীর সংস্কার বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, ‘শক্ত অবস্থানে থাকতে হলে সংস্কার অনিবার্য। এটি বাংলাদেশের ইতিহাসের এক অমূল্য মুহূর্ত।’
অধ্যাপক ইউনূস জানান, তাঁর সরকার ইতিমধ্যে ব্যাংকিং খাত পুনর্গঠন এবং রাজস্ব সংগ্রহ জোরদারের জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। তিনি বলেন, ‘আমরা এক বিধ্বস্ত ও সম্পূর্ণ ভেঙে পড়া অর্থনীতি উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছি। কিছু ব্যক্তি আক্ষরিক অর্থে ব্যাগভর্তি টাকা ব্যাংক থেকে নিয়ে পালিয়ে গেছে।’
এ ছাড়া আঞ্চলিক পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা হয়। এর মধ্যে ছিল নেপালে চলমান যুব আন্দোলন এবং আসিয়ানভুক্তির জন্য বাংলাদেশের আকাঙ্ক্ষা। অধ্যাপক ইউনূস আঞ্চলিক কানেক্টিভিটি জোরদারের লক্ষ্যে ঢাকার বৃহৎ অবকাঠামো উদ্যোগ—যেমন নতুন বন্দর ও টার্মিনাল প্রকল্প—সম্পর্কেও অবহিত করেন।
আলোচনাকালে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ এবং অর্থসচিব খায়রুজ্জামান মজুমদার উপস্থিত ছিলেন।