শেয়ার কারসাজি করে প্রায় ২৫৭ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ক্রিকেটার ও মাগুরার সাবেক এমপি সাকিব আল হাসানসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুদক। মঙ্গলবার দুদকের প্রধান কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক সাজ্জাদ হোসেন বাদী হয়ে কমিশনের ঢাকা-১ কার্যালয়ে মামলাটি করেন। 

অন্য আসামিরা হলেন- সমবায় অধিদপ্তরের উপনিবন্ধক আবুল খায়ের ওরফে হিরু, তার স্ত্রী কাজী সাদিয়া হাসান, খিলগাঁওয়ের আবুল কালাম মাদবর, তার মেয়ে কনিকা আফরোজ, ছেলে মোহাম্মদ বাশার, সাজেদ মাদবর, শরীয়তপুরের নড়িয়ার আলেয়া বেগম, কাজি ফুয়াদ হাসান, কাজি ফরিদ হাসান, মাগুরা পৌরসভার শিরিন আক্তার, ঢাকার গুলশানের জাভেদ এ মতিন, চাঁদপুরের মিরপুর উপজেলার জাহেদ কামাল, যশোরের শার্শা উপজেলার মো.

হুমায়ূন কবির ও ঢাকার কেরাণীগঞ্জের তানভীর নিজাম।

এজাহারে বলা হয়, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে ক্ষমতার অপব্যবহার করে দ্রুত সময়ে আর্থিকভাবে লাভবান হতে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ-সংক্রান্ত প্রচলিত আইন ও বিধি পরিকল্পিতভাবে লঙ্ঘন করেছেন। নিজেদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিও অ্যাকাউন্টগুলোতে অবৈধ উপায়ে ফটকা ব্যবসার মতো সিরিজ লেনদেন, প্রতারণামূলক ট্রেডিং, মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে বাজারকে প্রভাবিত করেছেন। পরিকল্পিতভাবে নির্দিষ্ট কিছু শেয়ার সংঘবদ্ধভাবে ক্রমাগত ক্রয়-বিক্রয় করে কৃত্রিমভাবে দাম বাড়িয়েছেন। সাধারণ বিনিয়োগকারীদের ওই শেয়ারগুলোতে বিনিয়োগে প্রলুব্ধ করে তাদের ২৫৬ কোটি ৯৭ লাখ ৭০ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেছেন।

এজাহারে আরও বলা হয়, আসামিরা অস্বাভাবিক রিয়ালাইজড ক্যাপিটাল গেইনের নামে অর্জিত অপরাধলব্ধ অর্থ শেয়ারবাজার থেকে সংঘবদ্ধভাবে উত্তোলন করেন। আসামি আবুল খায়ের কর্তৃক তার স্ত্রী সাদিয়ার সহায়তায় ক্যাপিটাল গেইনের নামে অর্জিত অপরাধলব্ধ অর্থের ২৯ কোটি ৯৪ লাখ ৪২ হাজার টাকার উৎস গোপনের অভিপ্রায়ে লেয়ারিং করে বিভিন্ন খাতে স্থানান্তর করেন। আবুল খায়েরের ১৭টি ব্যাংক হিসাবে ৫৪২ কোটি ৩১ লাখ ৫১ হাজার টাকার অস্বাভাবিক, অযৌক্তিক এবং সন্দেহজনক প্রকৃতির লেনদেন করা হয়।

সাকিব আল হাসানের অপরাধ: এজাহারে বলা হয়, আসামি আবুল খায়ের কর্তৃক শেয়ারবাজারে কারসাজিকৃত প্যারামাউন্ট ইন্স্যুরেন্স, ক্রিস্টাল ইন্স্যুরেন্স এবং সোনালী পেপারসের শেয়ারে সাকিব আল হাসান বিনিয়োগ করে বাজার কারসাজিতে যোগসাজশ করেছেন। তিনি সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কারসাজিকৃত শেয়ারে বিনিয়োগে প্রলুব্ধ করে তাদের ২ কোটি ৯৫ লাখ টাকা রিয়ালাইজড ক্যাপিটাল গেইনের নামে অপরাধলব্ধ আয় হিসেবে শেয়ারবাজার থেকে উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেন।

এর আগে গত এপ্রিলে সাকিবে বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। অর্থ পাচার ও জ্ঞাত আয়বর্হিভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধানে জন্য দুদকের উপপরিচালক মাহবুবুল আলমের নেতৃত্বে দুই সদস্যের একটি দল গঠন করা হয়। দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত সোমবার সাকিব আল হাসানসহ ১৫ জনের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দেন আদালত।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: স ক ব আল হ স ন স ক ব আল হ স ন শ য় রব জ র র ক রস জ কর ছ ন অপর ধ

এছাড়াও পড়ুন:

হত্যা মামলায় দেবিদ্বারের সাবেক পৌর মেয়র কারাগারে

কুমিল্লার দেবিদ্বারে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত আমিনুল ইসলাম সাব্বির (১৭) হত্যা মামলায় দেবিদ্বার পৌরসভার সাবেক মেয়র সাইফুল ইসলাম শামীমকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। 

মঙ্গলবার দুপুরে শামীম কুমিল্লা জজ আদালতে হাজির হয়ে জামিনের আবেদন করেন। সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মো. মাহাবুবুর রহমান জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। শামীম একই উপজেলার জাফরগঞ্জ মীর আব্দুল ডিগ্রি কলেজের পরিসংখ্যান বিভাগের প্রভাষক পদে কর্মরত।

আদালত সূত্রে জানা যায়, সাবেক পৌর মেয়র শামীম এ হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি। সম্প্রতি তিনি উচ্চ আদালতে হাজির হয়ে জামিনের আবেদন করলে তাকে দায়রা জজ আদালতে হাজির হতে নির্দেশনা দেওয়া হয়।

আসামিপক্ষের আইনজীবী  মো. শহিদুল্লাহ ও মো. জসিম উদ্দিন আবাদ বলেন, ‘ঘটনার সময় সাবেক মেয়র শামীম পরিবার নিয়ে কক্সবাজার ছিলেন। কক্সবাজার থেকে কোনো আসামি সরাসরি হত্যাকাণ্ডে অংশ নিতে পারেন না। আমরা তার কক্সবাজারে অবস্থানের সংশ্লিষ্ট প্রমাণও আদালতে উপস্থাপন করেছিলাম। এখন জামিনের জন্য আবারও উচ্চ আদালতে আবেদন করা হবে।’

গত বছরের ৫ আগস্ট হাসিনা সরকারের পতনের পর উল্লসিত জনতা দেবিদ্বার থানা ঘেরাওকালে সাব্বির মাথায় গুলিবিদ্ধ হন। ঢাকার একটি হাসপাতালে এক মাসেরও বেশি চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফেরার পর গত ১৪ সেপ্টেম্বর মারা যান তিনি। এ ঘটনায় তার মামা নাজমুল হাসান বাদী হয়ে দেবিদ্বারের সাবেক এমপি আবুল কালাম আজাদ, রাজী মোহাম্মদ ফখরুল ও পৌর মেয়র শামীমসহ ৯৯ জনকে আসামি করে একটি মামলা করেন।

দেবিদ্বার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শামস উদ্দিন মুহাম্মদ ইলিয়াস জানান, এ হত্যা মামলায় এ পর্যন্ত ৩১ জন গ্রেপ্তার হয়েছেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ