ঢাকার সাভার উপজেলার আশুলিয়ায় গ্যাস সিলিন্ডারের ছিদ্র থেকে রান্নাঘরে জমে থাকা গ্যাসের বিস্ফোরণে পাঁচজন দগ্ধ হয়েছেন। দগ্ধ ব্যক্তিদের স্থানীয় একটি বেসরকারি হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে পাঠানো হয়েছে। আজ বুধবার সকালে আশুলিয়ার নিশ্চিন্তপুর এলাকায় মণ্ডল মার্কেট–সংলগ্ন বাধিয়ারপাড়ে জুয়েল আহমেদের দোতলা আবাসিক ভবনের নিচতলায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

দগ্ধ ব্যক্তিরা হলেন জাহানারা (৫০), জুয়েল (২২), জহুরুল ইসলাম (৩০), শান্ত (২১), ও হাওয়া আক্তার (২৩)।

আশুলিয়ায় নারী ‍ও শিশু হাসপাতালের ব্যবস্থাপক হারুন অর রশিদ প্রথম আলোকে বলেন, হাসপাতালে সকাল সাড়ে আটটার দিকে পাঁচজনকে আনা হয়। তাঁদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। তাঁদের মধ্যে চারজনকে ঢাকায় জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে পাঠানো হয়েছে। জাহানারা ও জহুরুল ইসলামের অবস্থা সংকটাপন্ন। বাকি দুজনের অবস্থাও ভালো বলা যাচ্ছে না। তবে জুয়েলের অবস্থা গুরুতর নয়।

ওই ভবনের একাধিক ভাড়াটে জানান, আজ সকাল সাতটার দিকে নিচতলার একটি কক্ষ–সংলগ্ন রান্নাঘরে জহিরুল ইসলামের পরিবারের এক সদস্য রান্না করতে যান। এ সময় চুলা জ্বালাতে গেলে বিকট শব্দে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে আগুন ধরে গেলে ওই কক্ষে থাকা জাহানারা, জুয়েল, জহুরুল ইসলাম দগ্ধ হন। এ ছাড়া দেয়াল ভেঙে পাশের কক্ষের শান্ত ও হাওয়া আক্তার (২৩) দগ্ধ হন। পরে আগুন নিভিয়ে আহত ব্যক্তিদের স্থানীয় হাসপাতালে পাঠানো হয়।

জহিরুলদের পাশের কক্ষের ভাড়াটে আরিফা বেগম বলেন, ‘বিস্ফোরণের পর আমি নিজেও পড়ে গেছিলাম। পরে আমার ভাই এসে আমাকে টেনে উঠাইছে। বাহিরে এসে দেখি থালা, বাটি পড়ে আছে। ওই ঘরের ভাড়াটেদের আশপাশের লোকজন উদ্ধার করে মেডিকেলে নিয়ে যায়।’

জিরাব মডার্ন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশনের কর্মকর্তারা জানান, সকালে রান্নাঘরে জমে থাকা গ্যাসের বিস্ফোরণে ঘটে। এতে ভবনটির নিচতলার রান্নাঘরের দেয়াল পুরোটা ধসে গেছে। নিচতলার সিঁড়ির দুই পাশে দুটি ইউনিট রয়েছে। এক পাশের রান্নাঘরে বিস্ফোরণে অপর পাশের ইউনিটের কক্ষের জানালার কাচও ভেঙে গেছে। রান্নাঘরে ও পাশের কক্ষে থাকা লোকজন আহত হয়েছেন।

ফায়ার সার্ভিস স্টেশনটির জ্যেষ্ঠ স্টেশন কর্মকর্তা আবু সায়েম মাসুম প্রথম আলোকে বলেন, সিলিন্ডার অক্ষত অবস্থায় পাশের একটি জায়গায় পড়ে ছিল।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র ন ন ঘর অবস থ ন চতল

এছাড়াও পড়ুন:

এক পত্রের পরীক্ষায় প্রশ্ন অন্য পত্রের, ৬ জনকে অব্যাহতি

যশোর বোর্ডের অধীনে কুষ্টিয়ার আদর্শ ডিগ্রি মহাবিদ্যালয় কেন্দ্রে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় ভুল প্রশ্নপত্র বিতরণের ঘটনায় কেন্দ্র সচিবসহ ছয়জনকে পরীক্ষা পরিচালনার দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

এছাড়া বিতরণ করা ভুল প্রশ্নপত্র নতুন করে ছাপার কাজ চলছে। এ ঘটনায় যশোর শিক্ষা বোর্ড ও কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক আলাদা তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।

কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মো. মিজানুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

শুক্রবার (১১ জুলাই) শিক্ষা বোর্ড থেকে গঠিত তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি কেন্দ্র পরিদর্শন করেছে। তদন্ত কমিটি বলছে, প্রশ্নপত্র কেন্দ্রে আসার আগে যে ধাপগুলো আছে, সেই হিসেবে এক পরীক্ষার প্রশ্ন আরেক পরীক্ষায় আসা অনেকটা অসম্ভব বলা যায়।

ট্রেজারিতে প্যাকেটবন্দির সময় যদি সতর্কতার সঙ্গে কাজগুলো করা হয়, তাহলে এ ধরনের ঘটার সম্ভাবনা থাকে না। এ ক্ষেত্রে দায়িত্বে থাকা কলেজের চার শিক্ষকের ভুলের কারণেই এমনটা হয়েছে।

কলেজ সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে যশোর শিক্ষা বোর্ডের গঠিত তিন সদস্যের তদন্ত টিম আদর্শ ডিগ্রি মহাবিদ্যালয় কেন্দ্রে আসে। সেখানে বেলা ৩টা পর্যন্ত তারা অবস্থান করেন। এরপর তদন্ত কাজ শেষ করে বের হয়ে যান। 

এর আগে গণিত বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আজব আলী জোয়ার্দ্দারকে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা করে নতুন করে তিন সদস্যের পরীক্ষা পরিচালনা কমিটি গঠন করা হয়।

অব্যাহতি পাওয়া ব্যক্তিরা হলেন, অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) ও কেন্দ্র সচিব সালাহ্ উদ্দিন, পরিচালনা কমিটির সদস্য রাজু উদ্দিন আহমেদ, সেলিম উদ্দিন, আব্দুর জব্বার, হারুনার রশিদ ও ট্যাগ অফিসার। 

কেন্দ্র সচিব ও আদর্শ ডিগ্রি মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) সালাহ্ উদ্দিন বলেন, ‘‘তদন্ত কমিটি লিখিতভাবে কিছু না জানালেও ওই চার শিক্ষকসহ আমাকে কেন্দ্রের পরিচালনা কমিটির দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।”

এ বিষয়ে মো. মিজানুর রহমান বলেন, “যুক্তিবিদ্যা বিষয়ের দ্বিতীয় পত্রের নৈর্ব্যক্তিক পরীক্ষার প্রশ্নপত্র নতুন করে ছাপার কাজ চলছে। আজকে রাতের মধ্যে প্রশ্নপত্র সব জায়গায় পৌঁছে যাবে। এছাড়া কেন্দ্রের পরীক্ষা পরিচালনা কমিটির দায়িত্বে থাকা ছয়জনকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।”

যশোর বোর্ডের তদন্ত টিম আজ কেন্দ্র ঘুরে গেছে। এর পাশাপাশি জেলা পরিষদের নির্বাহী কর্মকর্তাকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এরআগে বৃহস্পতিবার আদর্শ মহাবিদ্যালয় কেন্দ্রে মানবিক বিভাগের যুক্তিবিদ্যা বিষয়ের প্রথম পত্রের পরীক্ষা ছিল। সৃজনশীল পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার পর ৩০ নম্বরের নৈর্ব্যক্তিক পরীক্ষার প্রশ্ন বিতরণ করা হয়।

ঢাকা/কাঞ্চন/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ