যে জমিতে আমনের বীজতলা তৈরি করেন, সেই জমি তলিয়ে আছে সপ্তাহ দুয়েক ধরে। এরই মধ্যে আমন চাষের মৌসুম চলে এসেছে। কিন্তু বীজতলায় চারা তৈরি নিয়ে কোনো আশা দেখছেন না শতাধিক চাষি। আসন্ন আমন মৌসুমে কী করবেন– এ নিয়ে চিন্তায় দিশেহারা তারা। 

এই চিত্র পিরোজপুরের ইন্দুরকানী উপজেলার টগড়া গ্রামে। গ্রামটি পড়েছে উপজেলার ১ নম্বর পাড়েরহাট ইউনিয়নে। এলাকাবাসী জানায়, টগড়া গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে গেছে কচা নদী। সাম্প্রতিক নিম্নচাপের প্রভাবে সৃষ্টি ভারী বর্ষণে কচা ও বলেশ্বর নদের পানি বৃদ্ধি পায়। এতে আশপাশের ১০টি গ্রাম প্লাবিত হয়। এসব গ্রামের পানি সরে গেলেও টগড়া গ্রামের পাশে বেড়িবাঁধ থাকায় পানি নামতে পারেনি। 

টগড়া গ্রামের কৃষক মোকাম্মেল হোসেন, আব্দুর হাওলাদার, নেসার হোসেনসহ কয়েকজন বুধবার জানান, তাদের জমি অন্তত তিন ফুট পানিতে তলিয়ে আছে। যে কারণে আমন চাষের জন্য বীজতলা তৈরি করতে পারছেন না। চারা তৈরি করতে না পারলে এবার আমনের চাষ করা যাবে না। এতে অন্তত শতাধিক কৃষকের ক্ষতি হবে। 

পাড়েরহাট ‌ইউপির প্যানেল চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক হাওলাদারের ভাষ্য, কচা নদীর বেড়িবাঁধ নির্মাণের সময় টগড়া প্রান্তে পানি নামার দুটি পয়েন্টও বেঁধে ফেলা হয়। এ কারণেই এই জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। তিনি জলাবদ্ধতা নিরসনে পাউবোর সঙ্গে আলোচনা করবেন। 

পিরোজপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) উপ-প্রকৌশলী ইলিয়াস হোসেন বলেন, বেড়িবাঁধ নির্মাণের সময় এলাকাবাসী বিষয়টি জানায়নি। তারা সহায়তা করলে পানি নিষ্কাশনের জন্য এ পয়েন্টগুলো রাখা যেত। এ বিষয়ে আলোচনা করে পানি নিষ্কাশনের পথ করতে হবে। 

হাঁটুপানিতে তলিয়ে আছে বাড়িঘর

সীতাকুণ্ডের সোনাইছড়ি ইউনিয়নের ফুলতলা গ্রামে জলাবদ্ধতা নিরসনের দাবি জানিয়েছেন বাসিন্দারা। বুধবার ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে মানববন্ধনে এমন দাবি তোলেন তারা। বৃষ্টিতে ভিজেই এই কর্মসূচিতে অংশ নেন কয়েকশ মানুষ। 

সেখানে বক্তারা অভিযোগ করেন, কিছুদিন আগে একটি শিল্প গ্রুপ ফুলতলা গ্রামে গুদাম তৈরি করে। এ জন্য গ্রামের পানি নামার পথ তারা বন্ধ করে দেয়। এরপর থেকে সামান্য বৃষ্টি হলেই পুরো গ্রামে পানি জমে যায়। এক দিন বৃষ্টি হলে ১৫-২০ দিন তাদের পানিবন্দি থাকতে হয়। 

তারা বলেন, পানি চলাচলের পথ বন্ধ হওয়ার পর থেকে গ্রামের প্রত্যেক বাড়িতে হাঁটুসমান পানি জমে আছে। গ্রামের সড়কগুলোও ডুবে আছে। ঘরে ঘরে পানি ঢুকে আসবাব নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। অনেকে রান্নাবান্না পর্যন্ত করতে পারছেন না। বেড়েছে সাপের উপদ্রব। দ্রুত সময়ের মধ্যে এই দুর্ভোগ নিরসনে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান তারা। 

কর্মসূচিতে বক্তব্য দেন শ্রমিক নেতা রবিউল হক, কামাল উদ্দিন, বায়তুল আমান জামে মসজিদের খতিব আবদুল হালিম হেলালি, সাবেক ইউপি সদস্য মঞ্জুরুল ইসলাম, বাবুল চৌধুরী প্রমুখ।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

সরকারের ভেতরে একটা অংশ নির্বাচন বানচালের পাঁয়তারা করছে: এনসিপি

সরকারের ভেতরের একটি পক্ষ ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশের বাইরে গিয়ে নিজেরাই ঐকমত্য কমিশন হওয়ার চেষ্টা করছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্যসচিব আখতার হোসেন। তিনি বলেন, এই চেষ্টার কারণে নির্বাচন ঝুঁকিতে পড়বে।

আজ সোমবার সন্ধ্যায় রাজধানীর বাংলামোটরে এনসিপির অস্থায়ী কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে আখতার হোসেন এ কথা বলেন।

আখতার হোসেন বলেন, তাঁদের কাছে স্পষ্টতই প্রতীয়মান যে সরকারের ভেতরের কোনো একটা অংশ সংস্কারকে ভন্ডুল করে নির্বাচন বানচালের পাঁয়তারা করছে।

রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলাপ–আলোচনার ভিত্তিতেই কমিশন সুপারিশ উপস্থাপন করেছে উল্লেখ করে সংবাদ সম্মেলনে এনসিপির সদস্যসচিব বলেন, সেই সুপারিশের ভিত্তিতেই সরকার আদেশ জারি করবে, সেটাই হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু যখন সরকারের তরফ থেকে সংবাদ সম্মেলন করে আরও এক সপ্তাহ রাজনৈতিক দলগুলোকে আলাপ–আলোচনার কথা বলা হয়, তখন মনে হয় যে সরকার আসলে এই সংস্কারের বিষয়গুলো নিয়ে সাপ-লুডো খেলছে। তিনি বলেন, ‘আমরা ৯৬-তে পৌঁছে গিয়েছিলাম, সেটাকে আবার তিনে নিয়ে আসা হয়েছে সাপ কেটে। এ অবস্থায় বাংলাদেশের বর্তমান যে রাজনৈতিক পরিস্থিতি, তাতে সংকট আরও ঘনীভূত হচ্ছে।’

অতি দ্রুত সরকারকে দায়িত্বশীল আচরণ করার আহ্বান জানিয়ে এনসিপির সদস্যসচিব বলেন, সরকারকে নিজেকেই দায়িত্ব নিয়ে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারি করতে হবে। সামনের সংসদকে গাঠনিক ক্ষমতা প্রদান করার মধ্য দিয়ে সংবিধান সংস্কার পরিষদ হিসেবে ঘোষণা করতে হবে। গণভোটের মাধ্যমে অর্জিত জনগণের অভিপ্রায় স্বয়ংক্রিয়ভাবে যেন বাস্তবায়িত হয়, সেই সুপারিশ বাস্তবায়ন করতে হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ