‘কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্বে’ সচিবালয়ের ক্যানটিনে মারামারি, আহত ৫
Published: 24th, June 2025 GMT
কর্মচারীদের একটি সমিতির ‘কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে’ বাংলাদেশ সচিবালয়ের ক্যানটিনে মারামারির ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় পাঁচজন আহত হয়েছেন। আহত ব্যক্তিদের মধ্যে সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী সংযুক্ত পরিষদের একাংশের সভাপতিও রয়েছেন।
আহতদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, মঙ্গলবার রাত আটটার দিকে কর্মচারীদের একটি সমিতির কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে প্রতিপক্ষের লোকজন তাঁদের ওপর অতর্কিত হামলা চালান। এতে তাঁরা পাঁচজন আহত হয়েছেন। তাঁরা চিকিৎসা নিতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এসেছেন।
হাসপাতাল সূত্র বলছে, হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা ব্যক্তিরা হলেন নুরুল ইসলাম (৫৮), ওবায়দুল ইসলাম (৪৫), মিলন (৪০), মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম (৫০) ও হাসনাত (৪৫)।
আহত ব্যক্তিদের হাসপাতালে নিয়ে আসা সোহরাব হোসেন বলেন, আহত নুরুল ইসলাম সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী সংযুক্ত পরিষদের একাংশের সভাপতি। তিনি প্রশাসনিক শাখার কর্মচারী। সচিবালয়ে মঙ্গলবার রাতে সচিবালয় বহুমুখী সমবায় সমিতির কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে প্রতিপক্ষ অতর্কিত হামলা চালায়। তারা চেয়ার ও লাঠি দিয়ে পাঁচজনকে আহত করে।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক মো.
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
যাচাই ছাড়াই কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে হাসনাতের বক্তব্য মানহানিকর: দুদক
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ ফেইসবুকে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) এক মহাপরিচালকসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার ‘ঘুষ দাবি’ করা নিয়ে যে পোস্ট দিয়েছেন সেটিকে ‘যাচাই-বাছাইহীন’ ও মানহানিকর বলে বিবৃতি দিয়েছে সংস্থাটি।
মঙ্গলবার (২৪ জুন) রাত ৯টায় এনসিপি নেতার এ পোস্টের প্রতিবাদ জানিয়ে দুদক বলেছে, কমিশনের নাম ভাঙিয়ে বিভিন্নভাবে প্রতারণার শিকার হওয়া ব্যক্তিরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সংস্থাটিকে দোষারোপ করায় ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে।
প্রতারণার বিষয়ে আগে থেকে দুদক সতর্কবার্তা দিয়ে আসছে তুলে ধরে কমিশনের উপপরিচালক (জনসংযোগ) মো. আকতারুল ইসলাম স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জাতীয় নাগরিক পার্টির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহর একটি পোস্ট কমিশনের দৃষ্টি গোচর হয়েছে। পোস্টটিতে তিনি যাচাই-বাছাই ছাড়াই দুর্নীতি দমন কমিশনের মহাপরিচালকসহ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মানহানিকর বক্তব্য প্রদান করেন।”
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে দুদক আরো বলেছে, “এ বিষয়ে সবার অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে একটি প্রতারক চক্র দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান, মহাপরিচালক বা কর্মকর্তা পরিচয়ে মামলা থেকে অব্যাহতি প্রদানের কথা বলে প্রতারণা করে আসছে। যার সাথে দুদকের কর্মকর্তাদের কোন সম্পর্ক নেই। দুদক ইতোমধ্যে এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নিয়েছে এবং প্রতারক চক্রের অনেককে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে।”
প্রতারণার বিষয়ে সতর্কবার্তা দিয়ে এতে বলা হয়েছে, এর আগে এমন প্রতারণা রোধে সবাইকে সতর্ক করা হয়েছে, যা বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে।
“এরূপ প্রতারণার শিকার হয়ে অনেকে সমাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দুদককে দোষারোপ করে যার ফলে দুদকের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়।”
এর আগে হাসনাত তার ফেইসবুক পোস্টে লেখেন, “স্বাধীন বাংলাদেশে দুদকের চা খাওয়ার বিল ১ লাখ টাকা। আপনার নামে দুর্নীতির কোনো অভিযোগ না থাকলেও সেটার ক্লিয়ারেন্স নিতে আপনাকে ১ লাখ টাকা দিতে হবে। সম্প্রতি মাহমুদা মিতুর কাছে থেকে এই টাকা চাওয়া হয়েছে দুদকের ডিজি আকতার আর তার ডিডি পরিচয়ে। মাহমুদা মিতুকে বলা হয় আপনি একজন ডাক্তার, আপনার তো টাকা পয়সার অভাব থাকার কথা না, আপনি এক লাখ টাকা দিয়ে ক্লিয়ারেন্স নিয়ে যান।”
এ পোস্টের সঙ্গে তিনি ওই চিকিৎসকের রেকর্ড করা ফোনালাপের তিনটি অডিও ভিডিও আকারে পোস্ট করেন।
হাসনাত তার ফেইসবুক পোস্টে আরও লেখেন, “দুদকের সর্বনিম্ন রেট না কি ১ লাখ টাকা। টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে আকতার আবার ফোন দিয়ে জানতে চায়, টাকা দিবে কি না? টাকা না দিলে নাকি খবর করে ছেড়ে দেওয়া হবে। রেড ক্রিসেন্টে মাহমুদা মিতু যোগ দিয়েছেন ৫ আগস্টের পরে। দুদক এখন তদন্ত করছে আওয়ামী লীগের সময়ের দুর্নীতি নিয়ে। অথচ হাস্যকরভাবে আওয়ামী আমলের কর্মকর্তাদের নাম না দিয়ে তখনকার দায় চাপানোর চেষ্টা করা হচ্ছে এখনকার লোকজনের উপর। এখানে বড় অংকের টাকার লেনদেনের সমূহ সম্ভাবনা আছে। কিছু না করাদের কাছে থেকেই যদি ১ লাখ করে নেয়, আওয়ামী লীগ আমলের কর্মকর্তাদের থেকে তাহলে কত করে নিয়েছে।”
“দুদকের এইসব কাজকারবার এই প্রথম না। হাসিনার আমলে খালেদা জিয়াসহ বিরোধী দলের বহু নেতাকে এরা হয়রানি করেছে। অথচ আওয়ামী লীগের হাজার কোটি টাকার দুর্নীতি নিয়ে এরা কিছুই বলেনি। আমরা আশা করেছিলাম, ৫ আগস্টের পর এদের মধ্যে পরিবর্তন আসবে। কিন্তু আসেনি। বরং এরা এখন চা খাওয়ার জন্য ১ লাখ করে টাকা চাওয়া শুরু করেছে। মাহমুদা মিতু সাহস করে ভিডিও করে রেখেছেন, অন্যায় ঘুষ দেন নাই, কিন্তু কত সাধারণ মানুষ এদের এই চায়ের বিল দিতে বাধ্য হয়েছে জানা নেই।”
হাসনাত আরো লেখেন, “আমাদের অবস্থান পরিষ্কার। মাহমুদা মিতু কেন, যদি আমার নামেও এক পয়সা দুর্নীতির অভিযোগ আসে, সেটা মানুষের সামনে প্রকাশ করে দিন। কাউকে ফোন করারও দরকার নেই দুর্নীতি পেলেই সেগুলো প্রকাশ করে মামলা করে দেন। আইনের হাতে তুলে দিন। তা না করে নিরীহ লোকজনের উপরে এই চাঁদাবাজি কেন করছেন? কেন চা খাওয়ার বিল চান, কেন টাকা না দিলে হুমকি দেন?”
“ফ্যাসিবাদের পতনের পর আমরা একটা নতুন বাংলাদেশ চাই। হাসিনার করে যাওয়া দুর্নীতির পথে যেন আর কেউ না যেতে পারে সেজন্য দুদককেও আমরা নতুন রূপে দেখতে চেয়েছিলাম। কিন্তু নতুন বাংলাদেশেও দুদক সেই পুরনো পথেই হাঁটা শুরু করেছে। আমলাতন্ত্র আবারও বিষদাঁত নিয়ে কামড় বসাতে হাজির হয়েছে। এই বিষদাঁত ভাঙতে না পারলে নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন হেরে যাবে, আমরাও হেরে যাবো। আমরা দুদকের এই দুর্নীতির বিচার চাই। আমলাদেরকে এক লাখ টাকার চা খাওয়ানোর জন্যই কি জুলাইতে বাংলাদেশের মানুষ জীবন দিয়েছিল?”
ঢাকা/ইভা