Risingbd:
2025-07-03@00:53:06 GMT

২ সপ্তাহে ৯০০ বার ভূমিকম্প

Published: 2nd, July 2025 GMT

২ সপ্তাহে ৯০০ বার ভূমিকম্প

দক্ষিণ জাপানের একটি প্রত্যন্ত দ্বীপপুঞ্জে গত দুই সপ্তাহে ৯০০ বারেরও বেশি ভূমিকম্প হয়েছে। জাপানের আবহাওয়া সংস্থা বুধবার এ তথ্য জানিয়েছে।

ধারাবাহিক ভূমিকম্পের ফলে কোনো বড় ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি। তবে কিউশু অঞ্চলের দক্ষিণে টোকারা দ্বীপপুঞ্জে স্থানীয় সময় বিকাল ৩টা ৩০ মিনিটের দিকে ৫ দশমিক ৫ মাত্রার ভূমিকম্প রেকর্ড করার পর জরুরি সংবাদ সম্মেলন করেছে জাপান আবহাওয়া সংস্থা।

ভূমিকম্প ও সুনামি পর্যবেক্ষণ বিভাগের পরিচালক আয়তাকা এবিতা সাংবাদিকদের বলেন, “২১ জুন থেকে টোকারা দ্বীপপুঞ্জের আশেপাশের সমুদ্রে ভূমিকম্পের কার্যকলাপ খুব সক্রিয় রয়েছে। আজ বিকাল ৪ টা পর্যন্ত কম্পনের সংখ্যা ৯০০ ছাড়িয়ে গেছে।”

টোকারা গ্রাম তাদের ওয়েবসাইটে জানিয়েছে, বাসিন্দারা ঘুমাতে পারেনি এবং তারা এখন ক্লান্ত।

একজন বাসিন্দা আঞ্চলিক সম্প্রচারক এমবিসিকে বলেছেন, “মনে হচ্ছে এটি কাঁপছে। ঘুমিয়ে পড়াও খুব ভয়ঙ্কর।” 

আরেকজন বাসিন্দা বলেন, “এটা কখন শেষ হবে তা স্পষ্ট নয়। আমার বাচ্চাদের সরিয়ে নেব কিনা তা নিয়ে ভাবা উচিত।”

২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে টোকারা এলাকায় একই রকম তীব্র ভূমিকম্পের ঘটনা ঘটেছিল। ওই সময় ৩৪৬টি ভূমিকম্প রেকর্ড করা হয়েছিল।

প্রত্যন্ত টোকারা দ্বীপপুঞ্জের ১২টি দ্বীপের মধ্যে সাতটিতেই জনবসতি রয়েছে। এসব দ্বীপে মোট ৭০০ জন বাসিন্দা রয়েছেন।
 

ঢাকা/শাহেদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর দ ব পপ ঞ জ ভ ম কম প র

এছাড়াও পড়ুন:

ঢাকার বুকে স্বপ্নের গ্রাম

চারপাশে দালান, কংক্রিট, কাচ আর ধুলোর স্তূপ। ঢাকা শহরের এমন চেনা দৃশ্যের মাঝে হঠাৎ যদি কোথাও চোখে পড়ে ঘাসে মোড়া প্রান্তর, বাঁশ-কাঠের দোতলা ঘর, স্বচ্ছ লেকে মাছের লুকোচুরি, পাতায় পাতায় খেলা করা আলো! রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে জাতীয় বৃক্ষমেলায় দেখা মিলবে এমনই স্বপ্নঘেরা এক টুকরো গ্রাম। যেন শহুরে কোলাহল থেকে খানিকটা মুক্তির আশ্বাস; প্রকৃতির কোলে ফিরে যাওয়ার নীরব আমন্ত্রণ।

বৃক্ষমেলায় প্রবেশ করে ডান পাশে গিয়ে ঘাসের ওপর পা রাখতেই নরম পরশ লাগে। পাশেই পানির শব্দ, গাছের ফাঁকে দোল খাচ্ছে কাঠের দোলনা। কেউ বসে আছে, কেউ ছবি তুলছে। অনেকে নিঃশব্দে তাকিয়ে আছেন শুধু প্রকৃতির দিকে। 

এই সবুজ স্বপ্নের পেছনের কারিগর মো. রকিবুল আমিন। একজন প্রকৃতিপ্রেমী, যিনি শখ থেকেই গড়ে তুলেছেন একটি পূর্ণাঙ্গ ল্যান্ডস্কেপ প্রতিষ্ঠান ‘গার্ডেনিং বাংলাদেশ’। তাঁর স্বপ্ন শহরের প্রতি প্রান্তে এক চিলতে প্রকৃতি ফিরিয়ে আনা। ‘গার্ডেনিং বাংলাদেশ’ গড়ে তোলে অনুভূতির পরিসর। ঘরের কোণা, ছাদ, বারান্দা, দেয়াল কিংবা সিঁড়ি, যেখানে খানিকটা জায়গা মেলে, সেখানে গাছ আর প্রকৃতির ছোঁয়া পৌঁছে দিতে চায় তারা।

গার্ডেনিং বাংলাদেশের কর্ণধার রকিবুল আমিনের শিকড় কুষ্টিয়ায়। ছোটবেলা থেকেই গাছের সঙ্গে তাঁর সখ্য। বাড়ির উঠোনে গড়া ফুলের বাগান, নানা রকম গাছের পরিচর্যা, পুকুরপাড়ে কাটানো দিন– সব মিলিয়ে প্রকৃতিই হয়ে ওঠে তাঁর প্রথম পাঠশালা। তাঁর ভাষায়, ‘বড় হয়ে দেখি শহরে মানুষ চার দেয়ালের মাঝে আবদ্ধ। সবুজ বলে কিছু নেই। এই অভাবটাই আমাকে নাড়া দেয়।’

ঢাকায় এসে বুঝলেন, এখানে গাছের চেয়ে ইটের দেয়াল বেশি। শিশুরা পাতার গন্ধ চেনে না; মাটিতে পা না দিয়েই বড় হয়। তখন তিনি ভেবেছিলেন, ‘মানুষের ঘরে যদি ফিরিয়ে দিতে পারি প্রকৃতির স্পর্শ, তাহলে তো শহরও একটু গ্রাম হয়ে উঠবে।’

ছাত্র অবস্থায় বিশ্ব ভালোবাসা দিবসে রাজধানীর শাহবাগে ১৪শ টাকার গোলাপ কিনে বিক্রি শুরু করেছিলেন রকিবুল। এক ঘণ্টা ভালো বিক্রির পরই নামল বৃষ্টি। এতে সব ফুল নষ্ট হয়ে যায়। লোকসান গুনলেন, কিন্তু পথ হারালেন না। ২০০৮ সালে বসুন্ধরা সিটিতে ভাড়া নিলেন ছোট দোকান; নাম দিলেন ‘একেশিয়া’। প্রথমে তেমন লাভ না হলেও একদিন ইনডোর প্লান্ট বিক্রি করে পেলেন চমক– ৭৫ হাজার টাকা! সেখান থেকে শুরু। পরে প্রতিষ্ঠানের নাম বদলে রাখলেন ‘গার্ডেনিং বাংলাদেশ’।

আজ তাঁর প্রতিষ্ঠান বছরে আয় করে প্রায় কোটি টাকা। ইতোমধ্যে শতাধিক ছোট-বড় ল্যান্ডস্কেপ প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে তারা। ‘গার্ডেনিং বাংলাদেশ’ গড়ে তোলে একেকটা জীবন্ত পরিমণ্ডল। টেরারিয়াম– কাচের পাত্রে তৈরি ক্ষুদ্র ইকোসিস্টেম। পেলুডারিয়াম– যেখানে জল আর স্থলের মিশেলে তৈরি হয় এক টুকরো বৃষ্টিবন। এসব তৈরি হয় পরম যত্নে; শিল্পের মতো। ঘরের ভেতরে এমন প্রকৃতি দেখে মুগ্ধ হন অনেকেই। ছোট পাত্রে যেন সেঁধিয়ে আছে গোটা জঙ্গল কিংবা ঝরনার পাশে বসে থাকা এক পাখির সকাল।

রকিবুল বলেন, ‘সবুজটা হারিয়ে যাচ্ছে। গাছের পাতা ছুঁয়ে দেখার অভ্যাস হারিয়ে ফেলছে মানুষ। আমি চাই, প্রত্যেক মানুষ প্রতিদিন অন্তত একবার গাছের সঙ্গে কথা বলুক। তাদের ঘরে, ছাদে গাছ থাকুক। সবুজ দেখলে চোখের ক্লান্তি কেটে যায়; মন শান্ত হয়। আমি চাই মানুষ তাদের জীবনে সেই প্রশান্তিটুকু ফিরে পাক। এটাই আমার যুদ্ধ।’

রকিবুলের প্রতিষ্ঠান জিরো সয়েল ধারণা নিয়ে কাজ করছে। তিনি চান খোলা কোনো মাটিকে অনাবৃত রাখা যাবে না। ঘাস, লতা বা উদ্ভিদ দিয়ে ঢেকে দিতে হবে সব ফাঁকা জায়গা। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ