যশোরের ঝিকরগাছায় কুপিয়ে আহত করার পর পাল্টা হামলায় একজনকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। বুধবার দুপুরে উপজেলার হাজিরবাগ ইউনিয়নের সোনাকুড় গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। 

নিহত রফিকুল ইসলাম (৫০) ওই গ্রামের ইসমাইল হোসেনের ছেলে।

তবে স্থানীয়দের দাবি করেন, তিনি মাদক সেবন ও কারবারের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। এছাড়া আগেও তিনি বিভিন্ন মানুষকে কারণে-অকারণে মারধর করে আহত করেন।

এলাকাবাসী জানান, বুধবার সকালে সোনাকুড় গ্রামের আজগার আলীর বাড়ি থেকে তার জামাতা জহর আলী (৪০) মোটরসাইকেলযোগে বাঁকড়া বাজারে যাচ্ছিলেন। পথে শ্বশুরের চায়ের দোকানের সামনে পৌঁছালে হঠাৎ প্রতিবেশী রফিকুল ইসলাম তার মাথায় দা দিয়ে কুপিয়ে আহত করেন। পরে আশঙ্কাজনক অবস্থায় স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে পাঠান। এ ঘটনায় স্থানীয় লোকজন উত্তেজিত হয়ে রফিকুল ইসলামকে দড়ি দিয়ে বেঁধে গণপিটুনি দেন। একপর্যায়ে তিনি ঘটনাস্থলেই মারা যান।

জহর আলীর স্ত্রী নাজমা খাতুন বলেন, ‘আমাদের সঙ্গে প্রতিবেশী রফিকুলের ব্যক্তিগত অথবা পারিবারিক কোনো শত্রুতা ছিল না। টাকা-পয়সারও কোনো লেনদেন নেই। কি কারণে আমার স্বামীকে কুপিয়েছে বুঝতে পারছি না।’ তিনি জানান, কিছুদিন আগে মাদকসেবী রফিকুল সোনাকুড় গ্রামের হিন্দুপাড়ায় একজনের ঘাড়ে কোপ দেন। তবে ঘাড়ে না লেগে তার একটি আঙুল কেটে যায়।

নিহত রফিকুল ইসলামের জামাতা বাপ্পারাজ বলেন, ‘জহর আলীর সঙ্গে আমার শ্বশুর বাড়ির কোনো বিরোধ ছিল না। লোকমুখে শুনলাম আমার শ্বশুর নাকি জহর আলীকে কুপিয়েছে। পরে গ্রামবাসী তাকে দড়ি দিয়ে বেঁধে পেটালে তিনি মারা যান। এ বিষয়ে পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা করা হবে।’

বাঁকড়া তদন্ত কেন্দ্রের এসআই সাহিদুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে সোনাকুড় থেকে রফিকুল ইসলামের মরদেহ উদ্ধার করে সুরতহাল প্রতিবেদন শেষে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। লাশের পাশে দড়ি পাওয়া গেছে বলেও তিনি জানান।

ঝিকরগাছা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নূর মোহাম্মদ গাজী বলেন, ‘নিহত রফিকুল ইসলাম মাদকাসক্ত ছিলেন বলে প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছি। তিনি জহর আলী নামে এক ব্যক্তিকে দা দিয়ে আঘাত করায় উত্তেজিত জনতা তাকে পিটুনি দেন। একপর্যায়ে তিনি মারা যান। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: যশ র হত য

এছাড়াও পড়ুন:

মোহাম্মদপুরে বাসে বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া তরুণীকে হেনস্তার ভিডিও ভাইরাল, হেনস্তাকারী গ্রেপ্তার

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে বাসে বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া তরুণীর পোশাক নিয়ে কটূক্তি ও হেনস্তার ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার তিন দিন পর হেনস্তাকারীকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব। গ্রেপ্তার নাজিম উদ্দিন (৪৫) ওই বাসের কন্ডাক্টর ও চালকের সহকারী বলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী জানিয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মোহাম্মদপুরের বছিলা এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে র‍্যাব।

ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, একটি বাসে এক তরুণী তাঁর পোশাক নিয়ে কটূক্তির প্রতিবাদ করছেন। বাসে ওঠার পর সামনের আসনে বসা ওই ব্যক্তি তাঁর পোশাক নিয়ে অশোভন মন্তব্য করেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে তরুণী প্রতিবাদ জানাতে সামনে এগিয়ে যান এবং প্রশ্ন করেন, ‘আমার পোশাক নিয়ে আপনার সমস্যা কী?’ পরিস্থিতি উত্তপ্ত হলে ওই ব্যক্তি উঠে দাঁড়িয়ে তরুণীকে চড় মারেন। মুহূর্তেই তরুণী জুতা খুলে পাল্টা আঘাত করেন। ভিডিওতে আরও দেখা যায়, ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে দুজনই বাসের সামনের দিকে পড়ে যান। তরুণী নিজেকে সামলে নিয়ে আবারও প্রতিরোধ করেন।

ঘটনার ভিডিওটি ফেসবুকে ভাইরাল হওয়ার পর নানামুখী প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। অনেকেই তরুণীর সাহসী অবস্থানের প্রশংসা করেছেন, অন্যদিকে কেউ কেউ ঘটনাটিতে উভয় পক্ষের আচরণ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।

নাজিম উদ্দিনকে আটক করার সঙ্গে যুক্ত র‍্যাব-৪–এর মেজর আবরার ফয়সাল সাদী প্রথম আলোকে বলেন, তরুণীকে কটূক্তি ও হেনস্তা করার ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ার পর হেনস্তকারী ব্যক্তিকে আটক করতে র‍্যাব-৪–এর একটি দল অভিযান শুরু করে। গতকাল সন্ধ্যায় নাজিম উদ্দিনকে শনাক্ত করে আটক করা হয়। পরে তাঁকে মোহাম্মদপুর থানায় সোপর্দ করা হয়।

যোগাযোগ করা হলে মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী রফিক প্রথম আলোকে বলেন, হেনস্তার শিকার বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী শ্লীলতাহানির অভিযোগ এনে আজ শুক্রবার সকালে নাজিম উদ্দিনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। ওই মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। নাজিম উদ্দিন ধানমন্ডি ১৫ থকে মোহাম্মদপুরের বছিলায় চলাচলরত রমজান পরিবহনের কন্ডাক্টর। ভাড়া নিয়ে কথা–কাটাকাটির জের ধরে তাঁদের দুজনের মধ্যে মারামারি হয়। ছাত্রীটি মোহাম্মদপুরের একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েন।

আজ সন্ধ্যায় পাঠানো র‍্যাব-৪–এর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৭ ফেব্রুয়ারি রমজান পরিবহনের একটি বাস ধানমন্ডি ১৫ থেকে মোহাম্মদপুরের বছিলায় যাচ্ছিল। বাসটি বছিলার মেট্রো হাউজিংয়ের সামনে পৌঁছালে চালকের সহকারী মো. নিজাম উদ্দিন বাসটির যাত্রী বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া তরুণীর দিকে তাকিয়ে তাঁর পোশাক নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করেন। এতে ওই তরুণী প্রতিবাদ করায় নাজিম উদ্দিন তাঁর সঙ্গে ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করেন এবং তাঁকে চড় মারেন। একপর্যায়ে তরুণীও আত্মরক্ষার্থে নিজের পায়ের জুতা খুলে অভিযুক্ত নাজিম উদ্দিনকে আঘাত করেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • দুই শিশুর ঝগড়ায় জড়ালেন বড়রা, বড় ভাইয়ের হাতে খুন ছোট ভাই
  • রাজশাহীতে ‘প্রেমিকার’ সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে মারধরের শিকার কিশোরের মৃত্যু
  • প্রেমিকার সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে মারধরের শিকার কিশোরের মৃত্যু
  • মোহাম্মদপুরে বাসে বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া তরুণীকে হেনস্তার ভিডিও ভাইরাল, হেনস্তাকারী গ্রেপ্তার