রংপুরে জামায়াতের জনসভাস্থলে জমতে শুরু করেছে কর্মী-সমার্থক
Published: 4th, July 2025 GMT
দীর্ঘ ১৭ বছর পর রংপুরে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে জামায়াতে ইসলামীর বিভাগীয় জনসভা। শুক্রবার (৪ জুলাই) বিকেল ৩টায় রংপুর জিলা স্কুল মাঠে এই জনসভা অনুষ্ঠিত হবে। সকাল থেকেই দলে দলে কর্মী-সমর্থকরা ছুটে আসছেন রংপুর নগরীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে।
নগরীর গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে মোড়ে সভায় আগত লোকজনের সুবিধা এবং যানযট নিরসনে নিজস্ব নিরাপত্তা কর্মীর দায়িত্বও যেন ছিল চোখে পড়ার মতো।
জনসভাকে ঘিরে চারদিকে ইসলামী স্লোগান, রঙিন ব্যানার, ফেস্টুন, পোস্টার আর রাজনৈতিক উজ্জীবনের ছাপ। জনসভাস্থলকে ঘিরে উৎসবমুখর পরিবেশ যেন বিরাজ করছে।
দলীয় নেতাকর্মীরা বলছেন, বিপ্লব পরবর্তী এটি হবে উত্তরাঞ্চলের ইসলামী রাজনীতির এক ঐতিহাসিক রূপান্তরের মুহূর্ত।
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের প্রথম শহীদ, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ হত্যার সুষ্ঠু বিচার, তিস্তা মহা পরিকল্পনার দ্রুত বাস্তবায়ন, প্রয়োজনীয় সাংবিধানিক সংস্কার এবং নিরপেক্ষ নির্বাচনের উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি এই জনসভার মূল দাবি।
স্থানীয় দলীয় সূত্র জানায়, গণ অভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে শহীদ আবু সাঈদের কবর জিয়ারত করেই জামায়াত আমির ডা.
জনসভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখবেন জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমান। একই সঙ্গে দীর্ঘদিন কারাবন্দী থেকে সদ্য মুক্ত হওয়া জামায়াতের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য ও রংপুরের কৃতি সন্তান এটিএম আজহারুল ইসলাম থাকছেন প্রধান বক্তা হিসেবে।
এছাড়াও রংপুর বিভাগের ৩৩টি আসনে দলীয়ভাবে মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থীরাও মঞ্চে থাকবেন বলে জানা গেছে। জনসভাকে ঘিরে গঠিত হয়েছে হাজারের অধিক স্বেচ্ছাসেবক সদস্য। যারা সভাস্থলসহ পুরো নগরীকে নিরাপত্তা, সুশৃঙ্খলতা ও ব্যবস্থাপনায় কাছ করছেন সকাল থেকেই।
জনসভা বাস্তবায়ন কমিটির প্রধান রংপুর মহানগর জামায়াতের আমির এটিএম আজম খান জানান, প্রস্তুতি সম্পন্ন। জনসভায় দুই লাখেরও বেশি মানুষের উপস্থিতির আশা করা হচ্ছে। রংপুরের মাটি থেকে যে আওয়াজ উঠেছে, তা ইতিমধ্যেই ছড়িয়ে পড়েবে উত্তরাঞ্চলের প্রতিটি জেলা ও উপজেলায় বলে দাবি তার।
স্থানীয় নেতাকর্মীরা বলছেন, এই জনসভা কেবল একটি সমাবেশ নয় বরং এটি হতে যাচ্ছে এক নতুন রাজনৈতিক বাস্তবতার ঘোষণা।
রংপুর মহানগর কোতোয়ালি থানার ওসি আতাউর রহমান জানান, রংপুর জেলা স্কুল মাঠে জামাতের বিভাগীয় জনসভা থেকে ঘিরে পুলিশের যথাযথ নিরাপত্তা ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। যেন এই জনসভায় ঘিরে কোন পক্ষ কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটাতে না পারে সেদিকেও সজাগ রয়েছে মহানগর পুলিশ।
ঢাকা/আমিরুল/এস
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ই জনসভ ইসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
বিদেশি বিনিয়োগ বেড়েছে
বাংলাদেশে বৈদেশিক প্রত্যক্ষ বিনিয়োগ (এফডিআই) গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী এক বছরে ১৯ দশমিক ১৩ শতাংশ বেড়েছে। এর মধ্যে দিয়ে দেশে বিনিয়োগের অনুকূল পরিবেশের প্রতি আন্তর্জাতিক আস্থার প্রতিফলন দেখা গেছে।
বিশ্বব্যাংকের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, সম্প্রতি যেসব দেশে গণঅভ্যুত্থান ঘটেছে, সেসব দেশে পরবর্তী এক বছরে এফডিআই উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। এর মধ্যে শ্রীলঙ্কায় ২০২২ সালের পর এফডিআই কমেছে ১৯.৪৯ শতাংশ, চিলিতে ২০১৯ সালের পর কমেছে ১৫.৬৮ শতাংশ, সুদানে ২০২১ সালের পর ২৭.৬০ শতাংশ, ইউক্রেনে ২০১৪ সালের পর ৮১.২১ শতাংশ, মিশরে ২০১১ সালের পর ১০৭.৫৫ শতাংশ এবং ইন্দোনেশিয়ায় ১৯৯৮ সালের পর ১৫১.৪৯ শতাংশ কমেছে। এই ধারাবাহিক হ্রাসের মধ্যে বাংলাদেশে এফডিআইর ১৯.১৩ শতাংশ বৃদ্ধির চিত্র বিশেষভাবে নজরকাড়া।
বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী বলেছেন, “বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় গুণ হলো—শত প্রতিকূলতা সত্ত্বেও অর্থনীতিকে পুনরায় চালু করার অদ্ভুত ক্ষমতা। এই পরিসংখ্যান তার দারুন একটা প্রতিফলন। সাধারণত, গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে বিদেশি বিনিয়োগ কমে যায়, কিন্তু আমরা উল্টা দেখছি। সঠিক নীতি নির্ধারণ, বাংলাদেশ ব্যাংক, এনবিআরসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থার আন্তরিকতা এবং প্রাইভেট সেক্টরের অদম্য স্পৃহা কারণে এটি সম্ভব হয়েছে। আমরা সব সময় বিনিয়োগকারীদের সাহায্য করার চেষ্টা করেছি। সব সমস্যার সমাধান হয়নি, তবে সদিচ্ছার কোনো ত্রুটি ছিল না। শিগগিই সারা বছরের একটি আমলনামা (রিপোর্ট কার্ড) প্রকাশ করা হবে।”
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২১ সালে বিদেশি বিনিয়োগ ছিল ৪৮৮ দশমিক ৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, ২০২২ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৬৭০ দশমিক ৭ মিলিয়ন ডলারে। ২০২৩ সালে বিনিয়োগের পরিমাণ হয় ৯২৪ দশমিক ৪ মিলিয়ন ডলার, তবে ২০২৪ সালে কিছুটা কমে দাঁড়ায় ৬৭৬ দশমিক ৬ মিলিয়ন ডলারে। ২০২৫ সালের প্রথম ছয় মাসে বিদেশি বিনিয়োগ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৯২ দশমিক ৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে।
অর্থনীতিবিদদের মতে, বর্তমান বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে এই ধারা বজায় থাকা অত্যন্ত ইতিবাচক। রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, দীর্ঘমেয়াদি নীতি সহায়তা ও অবকাঠামোগত উন্নয়নের মাধ্যমে বাংলাদেশ ভবিষ্যতে আরো বড় পরিসরে বৈদেশিক বিনিয়োগ আকর্ষণ করতে পারবে বলে মনে করছেন তারা।
ঢাকা/নাজমুল/রফিক