Samakal:
2025-07-07@22:50:52 GMT

ফোবিয়া বা অহেতুক ভয় দূর করুন

Published: 7th, July 2025 GMT

ফোবিয়া বা অহেতুক ভয় দূর করুন

ভীতি মানুষের একেবারে স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া। তবে এই ভীতি যদি অযৌক্তিক হয়, তখন সেটিকে বলা হয় ফোবিয়া বা অযৌক্তিক ভীতি। ফোবিয়ার উপযুক্ত কারণ নেই। তবুও বিশেষ কিছু পরিস্থিতি, বস্তু বা প্রাণী থেকে অযৌক্তিক ভয় পাওয়া। যেমন– টিভিতে সাপ দেখে ভয় পেয়ে চিৎকার করা, উঁচু জানালা থেকে বাইরে তাকালে আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়া ইত্যাদি। আরেকটি লক্ষণ হচ্ছে– যেসব বিষয়ে ব্যক্তির অযৌক্তিক ভয় আছে, সেই বিষয় বা পরিস্থিতি এড়িয়ে চলা। যেমন– যিনি মানুষের ভিড় বা খোলা জায়গায় ভয় পান, তিনি দাওয়াতে যান না, বাজারে যান না, বদ্ধ জায়গায় ভয় পান, সব সময় ঘরের দরজা খোলা রাখেন, লিফটে ওঠেন না। কখনও যদি এ ধরনের পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েই যান, তখন তাঁর মধ্যে উৎকণ্ঠা বা অ্যাংজাইটির লক্ষণগুলো তৈরি হয়। যেমন রক্তচাপ পরিবর্তন হওয়া, হাত-পা ঠান্ডা হয়ে আসা, বুক ধড়ফড় করা, ঘাম হওয়া, মুখ ফ্যাকাশে হয়ে যাওয়া, মাথা ঘোরা, চিৎকার করা, অস্বাভাবিক আচরণ করা, মুখের ভেতর শুকিয়ে যাওয়া ইত্যাদি। শৈশবের ঘটনা-দুর্ঘটনা, একজন মানুষের বেড়ে ওঠা, তার মনের গড়ন, ব্যক্তিত্ব ইত্যাদি কারণে ফোবিয়া হতে পারে। সাধারণভাবে ফোবিয়াকে তিন ভাগে ভাগ করা হয়– সুনির্দিষ্ট ফোবিয়া কোনো বস্তু বা বিশেষ পরিস্থিতির প্রতি অহেতুক অযৌক্তিক ভয়। যেমন কোনো বিশেষ প্রাণী বা পোকার প্রতি ফোবিয়া, সাপের ছবি দেখে উদ্বিগ্ন হওয়া, উঁচু জায়গায় উঠে ভয় পাওয়া ইত্যাদি। 
সামাজিক অনুষ্ঠান, সভা, দাওয়াতে মানুষের সঙ্গে কথা বলতে, নিজেকে প্রকাশ করতে প্রচণ্ডভাবে অস্বস্তিবোধ করে। এ কারণে সে সামাজিকতা এড়িয়ে চলে। অ্যাগোরাফোবিয়া উন্মুক্ত খোলা জায়গা, জনবহুল এলাকা, বাজার, বাস, ট্রেন ইত্যাদিতে আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। ফলে সে এগুলো এড়িয়ে চলে। ভয় পাওয়ার মতো কোনো কারণ না থাকা সত্ত্বেও যদি কেউ ভয় পায়, সেটিই ফোবিয়া। যেমন সাপকে সবাই ভয় পায়, কিন্তু সাপের ছবি বা ভিডিও দেখে অযৌক্তিক ভয় পাওয়াটাই ফোবিয়া। ফোবিয়ার চিকিৎসায় প্রধানত সাইকো থেরাপি-কগনিটিভ থেরাপি, বিহেভিয়ার থেরাপি ইত্যাদির সঙ্গে ওষুধ প্রয়োগ করা হয়। একটু ধৈর্য ধরে চিকিৎসা করালে ভালো ফল পাওয়া যায়। v
[বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক] 
 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: পর স থ ত

এছাড়াও পড়ুন:

২০২৫ সালের প্রথম ছয় মাসের মানবাধিকার পরিস্থিতি হতাশাজনক

চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসের মানবাধিকার পরিস্থিতি হতাশাজনক বলে এক পর্যবেক্ষণ জানিয়েছে হিউম্যান রাইটস সাপোর্ট সোসাইটি (এইচআরএসএস)। এ সময়ের বিভিন্ন ঘটনায় মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে বলে জানিয়েছে সংগঠনটি। সোমবার এইচআরএসএসের নির্বাহী পরিচালক ইজাজুল ইসলামের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা বলা হয়েছে।  

এতে বলা হয়, ‘স্বাধীনতার ৫৩ বছর পরেও বাংলাদেশে সাম্য, মানবিক মর্যাদা, সামাজিক সুবিচার, মানবাধিকার ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়নি। দেশের মানুষ এখনও স্বাধীনতার প্রকৃত সুফল পায়নি। স্বাধীনতার পর ২০২৪ সালে মানবাধিকার পরিস্থিতি ছিল সবচেয়ে ভীতিকর ও চরম উদ্বেগজনক। গত আগস্টের ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দেশের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ছাত্র-জনতার মাঝে স্বাধীনতার প্রকৃত স্বাদ আস্বাদনের আকাঙ্খা  সৃষ্টি হলেও তার প্রতিফলন মূলত ঘটেনি। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ও সংশ্লিষ্টরা এ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সফলতা দেখাতে পারেনি। ২০২৫ সালের প্রথম ছয় মাসেও মানবাধিকার পরিস্থিতির প্রকৃত অবস্থা হতাশাজনক। নতুন বছরে মানবাধিকার পরিস্থিতির সার্বিক উন্নয়নের প্রত্যাশা থাকলেও মানবাধিকার লঙ্ঘনের পূর্বের ধারা অব্যাহত থাকার পাশাপাশি এতে নতুন কিছু বিষয়ও যুক্ত হয়েছে। রমজান মাসে বিগত বছরগুলোর তুলনায় দ্রব্যমূল্য ও দুই ঈদযাত্রা কিছুটা স্বস্তিদায়ক হলেও আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির আশানুরূপ উন্নতি হয়নি। ’

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘২০২৫ সালের প্রথম ছয় মাসের মানবাধিকার পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, রাজনৈতিক সহিংসতায় মৃত্যু, গণপিটুনিতে নির্যাতন ও হত্যা, নারী নিপীড়ন ও ধর্ষণ, শিশু নির্যাতন ও সাংবাদিকদের ওপর হামলা বৃদ্ধি পেয়েছে। বাক স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হেফাজতে ও নির্যাতনে মৃত্যু, শ্রমিকদের ওপর হামলা, সংখ্যালঘু নির্যাতন, মাজারে হামলা ও ভাঙচুর, কারাগারে মৃত্যু, সভা-সমাবেশে বাধা প্রদান, আন্দোলনরত বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের ওপর পুলিশের হামলার মতো ঘটনা ঘটেছে। এ সময় চাঁদাবাজি, চুরি, ছিনতাই, ডাকাতি ও হত্যাসহ বেশ কিছু সামাজিক অপরাধ ঘটেছে যা জনমনে ভয় ও আতঙ্ক তৈরি করেছে। শেখ হাসিনার বক্তব্য নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের ভার্চ্যুয়াল অনুষ্ঠানে প্রচারের ঘোষণাকে কেন্দ্র করে বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা ৫, ৬ ও ৭ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে অবস্থিত শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়ি, শেখ হাসিনার বাসভবন সুধা সদন এবং সারা দেশে বিভিন্ন স্থানে আওয়ামী লীগের অফিস ও নেতাদের বাড়িঘরে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে।  জামায়াত নেতা এ টি এম আজহারের রায় ঘোষণার পর বাম ছাত্র সংগঠনগুলোর মোর্চা গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের সাথে শাহবাগ বিরোধী ঐক্যের উত্তেজনা ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। গত ১২ মে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার গত বছরের আগস্টে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ এবং এর অঙ্গ, সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সব সংগঠনের কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে।’

এতে আরও বলা হয়েছে, ‘দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছাত্র সংগঠনগুলোর মধ্যে উত্তেজনা ও সংঘর্ষ শিক্ষার্থীদের মনে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে। রাজধানীতে বিভিন্ন দাবি আদায়ে রাস্তা বন্ধ করে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করা হয়েছে। আদালত ও কারা ফটকে রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা; থানা ও পুলিশের ওপর হামলা করে রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টদের আসামি ছিনিয়ে নেওয়ার কয়েকটি ঘটনা ঘটেছে, যেখানে রাজনৈতিক সংগঠনের নেতাকর্মীদের সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ রয়েছে । দেশে সন্ত্রাসবাদ দমন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়ন ও সন্ত্রাসীদের আইনের আওতায় আনতে যৌথ বাহিনীর সমন্বয়ে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’ নামে ও বিশেষ অভিযানে বেশ কিছু অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। এছাড়া, ভারত সীমান্তে সংঘর্ষ, উত্তেজনা, বিএসএফের আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে বেড়া নির্মাণ, উসকানি, বাংলাভাষী মানুষদেরকে পুশইন করা, এমনকি নিরীহ বাংলাদেশিকে হত্যা, আহত ও গ্রেপ্তার এবং মিয়ানমারের আরাকান আর্মি কতৃক বাংলাদেশি জাহাজ আটক, সীমান্তে গুলি, মাইন ও মর্টারশেল বিস্ফোরণের মত বিভিন্ন ঘটনা মানবাধিকার পরিস্থিতির বিষয়ে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ