দুই ইউরোপীয় জায়ান্ট, দুই ভিন্ন ছন্দ। নিউ জার্সির মেটলাইফ স্টেডিয়ামে বুধবার রাতে ক্লাব বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে দেখা গেল এমনই এক অসম লড়াই। যেখানে পিএসজির ধারালো আক্রমণের সামনে অসহায় আত্মসমর্পণ করল রিয়াল মাদ্রিদ। ৪-০ গোলের হারের পর মাঠে নয়, রিয়ালকে খুঁজে পাওয়া গেল হতাশ চোখের করিডোরে।

দলকে নতুন এক যুগে নিতে এসেছেন কোচ জাবি আলোনসো। কিন্তু ক্লাব বিশ্বকাপের এই মঞ্চে তার শুরুর গল্পটা হলো অনেকটা বিপরীত স্রোতের মতো। পিএসজির কাছে এমন বড় ব্যবধানে হার শুধু পরাজয় নয়, বরং বড় এক আত্মজিজ্ঞাসার নাম হয়ে দাঁড়িয়েছে রিয়ালের জন্য।

খেলার মাত্র ৯ মিনিটের মধ্যেই দুইবার বল জালে জড়ায় ফরাসি জায়ান্টরা। ফ্যাবিয়ান রুইস ও উসমান দেম্বেলের দুই গোল রিয়ালের রক্ষণভাগের নড়বড়ে অবস্থানকে নগ্ন করে দেয়। এরপর রুইস নিজের দ্বিতীয় গোল করেন ২৪তম মিনিটে। আর শেষ মুহূর্তে বদলি ফরোয়ার্ড গঞ্জালো রামোস করেন চতুর্থ গোলটি।

আরো পড়ুন:

আবারও মায়ামিকে জেতালেন মেসি, গড়লেন অনন্য রেকর্ড

১৮ বছর পর হৃদয়ের ঠিকানায় ফিরলেন ডি মারিয়া, কান্নায় ভিজল রোসারিও

এই লজ্জাজনক পরাজয়ের পরও ভেঙে পড়েননি আলোনসো। বরং ম্যাচ শেষে ঠান্ডা মাথায় বললেন, “আমরা খেলায় ঢোকার আগেই দুই গোল হজম করে ফেলি। মানের দিক থেকে আমাদের পারফরম্যান্স আজ নিচে নেমে গিয়েছিল। খুবই কষ্টদায়ক হার। কিন্তু এই কষ্টই ভবিষ্যতের প্রস্তুতির জন্য দরকার।”

শুধু ব্যর্থতা নয়, আত্মসমালোচনাতেও পিছপা নন এই স্প্যানিশ কোচ। জানালেন, এদিন পুরনো পাঁচ ডিফেন্ডার কৌশল ছেড়ে চার রক্ষণভাগের ছকে নেমেছিলেন। কিন্তু পরিকল্পনাটি সফল হয়নি। দ্বিতীয়ার্ধে কিছু পরিবর্তন আনলেও সেটা ছিল খুবই দেরিতে। ফলাফল? রিয়াল পুরো ম্যাচজুড়েই ব্যাকফুটে।

তবুও এই হারের মধ্যেই লুকিয়ে আছে নতুন শুরুর বার্তা। আলোনসো আশাবাদী, “আমরা একধাপ দূরে ছিলাম। পরের মৌসুম থেকে একদম নতুন মানসিকতা নিয়ে এগোবো। আমাদের লক্ষ্য এমন একটি দল গড়া, যারা এক হয়ে লড়বে, এক হয়ে জিতবে।”

এই কথার মধ্যেই লুকিয়ে আছে ভবিষ্যতের রিয়ালের ছক। বড় পরিবর্তনের আভাস মিলেছে তার কণ্ঠে; দলে আসতে যাচ্ছে নতুন মুখ, কৌশলেও হবে রদবদল। কারণ, ইউরোপের ইতিহাস গড়া ক্লাবটি হার মানার জন্য নয়, ঘুরে দাঁড়ানোর জন্যই।

ঢাকা/আমিনুল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ফ টবল র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

অমর একুশে বইমেলা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক

অমর একুশে বইমেলা বাংলাদেশের মানুষের প্রাণের মেলা। মূলত প্রকাশকদের উদ্যোগে মুক্তিযুদ্ধ উত্তর বাংলাদেশে এই বইমেলার সূত্রপাত। সম্প্রতি এই বইমেলা নানা কারণে-অকারণে ডিসেম্বরে করার কথা শোনা যাচ্ছে। এ প্রেক্ষিতে সুস্পষ্টভাবে বলতেই হচ্ছে -ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলা করা যাবে না। কারণ সেসময় সারাদেশে শিক্ষার্থীদের বার্ষিক পরীক্ষা চলবে।

বইমেলার প্রধান পাঠক আমাদের শিক্ষার্থী। তারা ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলায় আসতে পারবে না। প্রধান পাঠকই যদি মেলায় আসতে না পারে তাহলে মেলা প্রাণহীন হয়ে পড়বে। বইমেলায় অংশগ্রহণকারি প্রকাশকরাও ভয়াবহ ক্ষতির মুখে পড়বে। তাছাড়া একুশের চেতনাকে ধারণ করে যে অমর একুশে বইমেলা, সেটা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক। ভাষা শহীদদরর প্রতি বইমেলার মাধ্যমে আমাদের যে শ্রদ্ধাঞ্জলি, তা অক্ষুন্ন থাকুক। 

আরো পড়ুন:

রাজশাহীতে বইপড়ায় কৃতিত্বের পুরস্কার পেল ২৩০৩ শিক্ষার্থী

‘গল্পকারের পছন্দের ৫০ গল্প’ গ্রন্থ প্রকাশিত

সর্বোপরি ৫ জানুয়ারি থেকে ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, এই সময়ে বইমেলা হতে কোন সমস্যা হওয়ার কথা নয়। অথবা তারিখ দুই একদিন এদিক-সেদিক করে নেয়া যেতে পারে। এ সময়ে রোজা নেই, নির্বাচনও নেই। নির্বাচনী ক্যাম্পেইন চলবে। এই মাঠে বইমেলা চলাকালীন সর্বদলীয় সিদ্ধান্তে কেউ সভা-সমাবেশ না করার সিদ্ধান্ত নিলে অনায়াসে এই সময়টাতে বইমেলা করা যেতে পারে। আমার বিশ্বাস- সব দলই অমর একুশে বইমেলার জন্য এই ছাড়টুকু দেবেন।

প্রায় পঞ্চাশ বছরের অধিক সময়ের  প্রচেষ্টায় অমর একুশে বইমেলা মহিরুহ হয়ে আমাদের কাছে আবির্ভূত, হঠকারি কোন সিদ্ধান্তে তা যেনো ধ্বংস হওয়ার উপক্রম না হয়। জেনে শুনে বাঙালির এতো বড় একটি সাংস্কৃতিক উৎসবকে ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্থ না করে বরং তা যে কোন মূল্যে আমাদের রক্ষা করা উচিত।

জানুয়ারিতে বাণিজ্যমেলায়ও হয়ে থাকে। এতে অমর একুশে বইমেলার ওপর কোনো বিরূপ প্রভাব পড়বে বলে আমি তা মনে করি না। বইমেলার প্রধান পাঠক শিক্ষার্থী। তারা বইমেলায় আসার জন্য মুখিয়ে থাকে। বাণিজ্য মেলায় যাওয়ার লোকজন বেশির ভাগই আলাদা। তবে অনেকেই বইমেলা এবং বাণিজ্যমেলা দুটোতেই যান। এটা তারা ম্যানেজ করে নিতে পারবেন বলে আমার বিশ্বাস।

আমি বলেছি শুধুমাত্র মেলার মাঠ প্রাঙ্গনে সভা-সমাবেশ না করার মাধ্যমে যদি সর্বদলীয় একটা সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় তাহলে জানুয়ারি- ফেব্রুয়ারি মিলিয়ে  বইমেলা করা সম্ভব।আমার মনে হয়, বইমেলা চলাকালীন এই মাঠ কোন দলকে সভা-সমাবেশের জন্য সরকার বরাদ্দ না দিলে, অথবা বইমেলা চলাকালীন দলগুলো নিজের থেকেই এই মাঠের বরাদ্দ না চাইলে সমস্যা আর থাকে না।

লেখক: প্রকাশক পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স লিমিটেড

ঢাকা/লিপি

সম্পর্কিত নিবন্ধ