বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) আগামী আসরে মার্কেটিং ও ব্র্যান্ডিংয়ের দায়িত্ব নিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে পাঁচটি প্রতিষ্ঠান। গত ১০ই জুলাই বিপিএল আয়োজনে আগ্রহী প্রতিষ্ঠানের কাছে আগ্রহ জানতে চেয়ে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে বিসিবি।
অ্যাপেক্স স্পোর্টস কনসাল্টিং, আইএমজি, রিয়েল ইম্প্যাক্ট অ্যান্ড অ্যাবসলুট লিজেন্ডস স্পোর্টস, দ্য আইপিজি গ্রুপ ও মাইন্ড ট্রি লিমিটেড এবং ট্রান্সপোর্ট গ্রুপ বিপিএলে যুক্ত হতে আগ্রহী। আগ্রহী এই প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্য থেকে বিসিবি একটি কোম্পানিকে বেছে নেবে। বাছাই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে যেকোনো একটি কোম্পানিকে দায়িত্ব দেওয়া হবে। এজন্য তাদের কাছ থেকে বিস্তারিত প্রেজেন্টেশন ও অর্থনৈতিক প্রস্তাব চাওয়া হয়েছে।
১০ বছর পেরিয়ে যাওয়ার পরও বিপিএল যে কোনো মানদণ্ডেই দাঁড়ায়নি। অতীতের ব্যর্থতা, অপরিপক্কতা ঝেরে নতুন করে বিপিএল শুরুর সকল প্রস্তুতি নিয়েছে বোর্ড। আগামী ডিসেম্বর-জানুয়ারিতে বিপিএল আয়োজনের ইচ্ছা বোর্ডের। হাতে সময় কম। নতুন করে নতুন ফ্র্যাঞ্চাইজি নিয়ে আয়োজন করার চ্যালেঞ্জটা হাতে নিয়েছে বিসিবি।
আরো পড়ুন:
শূন্য থেকে শুরু বিপিএলের প্রস্তুতি
বিপিএলে আসছে ‘নোয়াখালী রয়্যালস’
বিদেশি পেশাদার স্পোর্টস মার্কেটিং প্রতিষ্ঠানকে নিয়োগ দেওয়ার জন্য দরপত্র আহ্বান করেছিল বিসিবি। যারা বিপিএলের বাণিজ্যিক মডেল রি-রিজাইন করবে। বিপিএলকে গ্রহণযোগ্য করবে, যেখানে ফ্র্যাঞ্চাইজিরা লাভবান হবেন, টুর্নামেন্ট লাভবান হবে। এই মডেলের ভেতরে মিডিয়া স্পন্সরশিপ রাইট থাকবে। এছাড়া ব্র্যান্ডিং অ্যান্ড মার্কেটিং স্ট্রাটেজি, ফ্র্যাঞ্চাইজি স্ট্রাইকচার এবং ম্যাচ ডে ফ্যান এনগেজমেন্ট বিষয়গুলো থাকবে।
বিসিবির যে চাহিদা সেই মোতাবেক যে পাঁচটি প্রতিষ্ঠান আগ্রহ দেখিয়েছে। যার চারটিই বিদেশি প্রতিষ্ঠান।
অ্যাপেক্স স্পোর্টস কনসাল্টিং সংযুক্ত আরব আমিরাতের একটি প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠানটির ওয়েবসাইটে তেমন তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে ইন্সস্ট্রাগ্রামে তারা জানিয়েছে, ৩০ বছর ধরে স্পোর্টসে কাজ করার অভিজ্ঞতা তাদের। যারা এ বছর আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফির প্রচারে আইসিসির সঙ্গে কাজ করেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠান আইএমজি। যারা ইন্টারন্যাশনাল ম্যানেজমেন্ট গ্রুপ নামে পরিচিত। বিশ্বব্যাপী ক্রীড়া, ফ্যাশন, ইভেন্ট এবং মিডিয়া নিয়ে কাজ করে। ভারতের প্রতিষ্ঠান রিয়েল ইম্প্যাক্ট। প্রতিষ্ঠানটি টিভি প্রোডাকশনে বিসিবির সঙ্গে কাজ করছে। তারাও যুক্ত হতে চাচ্ছে বিসিবির সঙ্গে। তবে তাদের নিয়ে এরই মধ্যে কানাঘুষা চলছে। বিপিএলের ফ্র্যাঞ্চাইজি খুলনা টাইগার্সের স্বত্বাধিকারী প্রতিষ্ঠান মাইন্ড ট্রি লিমিটেড সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রতিষ্ঠান আইপিজি গ্রুপের সঙ্গে মিলে বিপিএল আয়োজনে আগ্রহী হয়েছে।
বাংলাদেশের একমাত্র প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিপিএলে কাজ করতে আগ্রহ দেখিয়েছে ট্রান্সপোর্ট গ্রুপ। যাদের নিয়ে তেমন কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে শোনা যাচ্ছে, বিসিবির সঙ্গে কাজ করে এমন কয়েকটি প্রতিষ্ঠান কনসোর্টিয়াম করে গড়ে উঠেছে ট্রান্সপোর্ট গ্রুপ।
ঢাকা/ইয়াসিন/আমিনুল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব প এল ফ র য ঞ চ ইজ স প র টস ক জ কর
এছাড়াও পড়ুন:
স্তম্ভিত হারমানপ্রীত, আবেগ-রোমাঞ্চ-গর্ব-ভালোবাসায় মিলেমিশে একাকার
২০০৫ ও ২০১৭, ভারতের নারী ক্রিকেট দল ওয়ানডে বিশ্বকাপের খুব কাছে গিয়েও শিরোপা জিততে পারেননি। হারমানপ্রীত কৌররা লম্বা সেই অপেক্ষা দূর করলেন দুই হাজার পঁচিশে।
মুম্বাইয়ের নাভিতে প্রায় ষাট হাজার দর্শকের সামনে উচিুঁয়ে ধরলেন ওয়ানডে বিশ্বকাপের শিরোপা। ২০১৭ সালের ফাইনালেও খেলেছিলেন হারমানপ্রীত। রানার্সআপ হয়ে সন্তুষ্ট থাকতে হয় তাকে। এবার আর ভুল করলেন না। অধিনায়ক হয়ে জিতলেন শিরোপা। গড়লেন ইতিহাস। যে ইতিহাস কখনো মুছবে না। কখনো জং ধরবে না।
ঝলমলে হাসিতে হারমানপ্রীত ট্রফি হাতে নিয়ে প্রেস কনফারেন্স রুমে প্রবেশ করেন। এবার তার আবেগের ধরণ ছিল ভিন্ন, যেন স্বপ্ন পূরণের মাখামাখি। লম্বা সংবাদ সম্মেলন জুড়ে বারবার তার কণ্ঠ ধরে আসে। আবেগ, রোমাঞ্চ, গর্ব, ভালোবাসা, শ্রদ্ধা মিলেমিশে একাকার হয়ে যায়। তবে একটি শব্দের ওপর বারবার ফিরে আসছিলেন তিনি, তা হলো আত্মবিশ্বাস,
‘‘আমি কেবল আমার অনুভূতি প্রকাশ করার চেষ্টা করছি। আমি স্তম্ভিত, আমি বুঝতে পারছি না। আসলে, এতে উত্থান-পতন ছিল, কিন্তু দলের মধ্যে আত্মবিশ্বাস ছিল। আমি প্রথম দিন থেকেই এটা বলে আসছি। আমরা বাম বা ডানে তাকাচ্ছিলাম না। আমরা কেবল আমাদের মূল লক্ষ্যের দিকে তাকিয়েছিলাম।’’ - বলেছেন হারমানপ্রীত।
স্বপ্ন পূরণের রাতে হারমানপ্রীত কাছে পেয়েছিলেন সাবেক তিন ক্রিকেটার মিতালি রাজ, ঝুলন গোস্বামী এবং অঞ্জুম চোপড়াকে। প্রত্যেকেই স্বপ্ন দেখেছিলেন ভারতকে বিশ্বকাপ জেতানোর। তাদের অধরা সেই স্বপ্ন পূরণ করেছেন জেমিমা, দীপ্তি, শেফালি, স্মৃতিরা।
শিরোপা উৎসবে যোগ দেন মিতালি, ঝুলন, আঞ্জুমরা। তাদের হাতেও ট্রফি তুলে দেওয়া হয়। প্রাক্তন খেলোয়াড়দের সাথে সেই মুহূর্তটি ভাগ করে নেওয়ার অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে হারমানপ্রীত বলেন, ‘‘ঝুলন দি আমার সবচেয়ে বড় আইডল ছিলেন। যখন আমি দলে যোগ দিই, তখন তিনি নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন। আমি যখন খুব কাঁচা ছিলাম এবং ক্রিকেট সম্পর্কে তেমন কিছু জানতাম না, তখনও তিনি সবসময় আমাকে সমর্থন করতেন। অঞ্জুম দি-ও তাই। এই দুজন আমার জন্য দারুণ সমর্থন ছিলেন। আমি কৃতজ্ঞ যে আমি তাদের সাথে এই বিশেষ মুহূর্তটি ভাগ করে নিতে পেরেছি। এটি খুব আবেগপূর্ণ মুহূর্ত ছিল। আমার মনে হয় আমরা সবাই এটার জন্য অপেক্ষা করছিলাম। অবশেষে, আমরা এই ট্রফি স্পর্শ করতে পেরেছি।’’
তার জন্য বিশ্বকাপের পুরো অভিযানটিই ছিল গভীরভাবে আবেগপূর্ণ। রাউন্ড রবিন লিগে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ হার। চোট, অফ ফর্ম, জড়তা। সব সামলে সেরা হয়েছেন। তাইতো নিজেদের নিয়ে গর্বটাও বেশি হারমানপ্রীতদের, ‘‘আমরা প্রথম বল থেকেই অনুভব করেছিলাম যে আমরা জিততে পারি, কারণ শেষ তিন ম্যাচে আমাদের দল যেভাবে খেলছিল, তাতে আমাদের জন্য অনেক কিছুর পরিবর্তন এসেছিল, বিশেষ করে আমাদের আত্মবিশ্বাস। আমরা অনেকদিন ধরেই ভালো ক্রিকেট খেলছি। আমরা জানতাম দল হিসেবে আমরা কী করতে পারি।”
"গত এক মাস খুব আকর্ষণীয় ছিল। সেই দিনটির (ইংল্যান্ডের কাছে হারের) পর আমাদের মধ্যে অনেক পরিবর্তন আসে। সেই রাত আমাদের জন্য অনেক কিছু বদলে দিয়েছিল। এটি প্রত্যেকের উপর প্রভাব ফেলেছিল। আমরা বিশ্বকাপের জন্য আরও প্রস্তুত হলাম। আমরা ভিজ্যুয়ালাইজেশন এবং মেডিটেশন শুরু করেছিলাম। আমরা বারবার বলছিলাম, যে জন্য আমরা এখানে এসেছি এবং এবার আমাদের এটা করতেই হবে।" - যোগ করেন হারমানপ্রীত।
প্রথম যে কোনো কিছুই আনন্দের। রোমাঞ্চের। এই অভিজ্ঞতা শব্দে বয়ান করা যায় না। বয়ান করা সম্ভব হয় না। হারমানপ্রীতও পারেন না নিজের সবটা উজার করে বলতে। তবে এই শিরোপায় তাদের নাম লিখা হবে সেই আত্মবিশ্বাস তারও ছিল, ‘‘আমরা বহু বছর ধরে এটি নিয়ে কথা বলছি—আমরা ভালো ক্রিকেট খেলছি, কিন্তু আমাদের একটি বড় শিরোপা জিততেই হতো।"
ঢাকা/ইয়াসিন