খুলনা মহানগরীতে ব্যাটারিচালিত ইজিবাইকগুলো নিয়মিত পূর্ণ যাত্রী বহন করলে যানজট উল্লেখযোগ্যভাবে কমাতে এবং বিদ্যুৎ সাশ্রয় করতে পারে। খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট) পরিচালিত এক গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে।

কুয়েটের জ্বালানি বিজ্ঞান ও প্রকৌশল (ইএসই) বিভাগের সহকারী অধ্যাপক নিরব মন্ডলের নেতৃত্বে গবেষণা দল গত ৭ থেকে ১০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত খুলনা শহরের গল্লামারী, সোনাডাঙ্গা বাস স্টেশন, শিববাড়ি, ময়লাপোতা, রয়েল এবং পিটিআই মোড়সহ গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে ইজিবাইক চলাচল পর্যবেক্ষণ করেছে।

আরো পড়ুন:

রবি শিক্ষার্থীদের কর্মসূচি প্রত্যাহার, যমুনা সেতুতে যান চলাচল স্বাভাবিক

রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সড়ক ব্লকেড, যান চলাচল বন্ধ

গবেষণায় দেখা গেছে, গত ১০ সেপ্টেম্বর মাত্র ১ ঘণ্টায় পিটিআই মোড় দিয়ে ৩ হাজার ২৫৩টি ইজিবাইক অতিক্রম করেছে। এর মধ্যে মাত্র ৫ শতাংশ বাইক পূর্ণ ছয়জন যাত্রী বহন করেছে, ১০-১৫ শতাংশ ৪-৫ জন যাত্রী বহন করেছে। তবে ৮০-৮৫ শতাংশ বাইক মাত্র ২-৩ জন যাত্রী বহন করেছে, যদিও সর্বোচ্চ ধারণক্ষমতা ছয়জন।

গবেষকরা যুক্তি বলছেন, এই বাহনের পূর্ণ ব্যবহার না হওয়ার ফলে রাস্তায় যানবাহনের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে যানজট বাড়ছে এবং বিদ্যুৎ ব্যবহারের ওপর অতিরিক্ত চাপ পড়ছে।

খুলনা সিটি কর্পোরেশনের সূত্র জানিয়েছে, ১০ হাজার ইজিবাইক শহরে চলাচলের জন্য লাইসেন্সপ্রাপ্ত। তবে ৪৫ হাজারেরও বেশি অননুমোদিত ইজিবাইক চলাচল করছে, যা ব্যাপক যানজট সৃষ্টি করছে। ফলে প্রায় ৩ লাখ যাত্রীর দৈনিক চলাচলে ব্যাঘাত ঘটাচ্ছে। এই বৈদ্যুতিক যানবাহনগুলো প্রতিদিন ৪৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ খরচ করে, যা স্থানীয় বিদ্যুৎ গ্রিডের উপর প্রচণ্ড চাপ সৃষ্টি করে।

গবেষক  অধ্যাপক নিরব মণ্ডল বলেন, “যদি যানবাহনগুলো তাদের পূর্ণ যাত্রী বহন করে, তবে রাস্তায় ইজি বাইকের সংখ্যা এবং বিদ্যুতের ব্যবহার প্রতিদিন ৫০-৭০ মেগাওয়াট হ্রাস করা যেতে পারে।”

তিনি পরামর্শ দিয়ে বলেন, “কঠোর ট্রাফিক নিয়ম, চালক এবং বাসিন্দাদের জন্য নিয়মিত সামাজিক সচেতনতামূলক প্রচারণা- বিশেষ করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ও চালকদের জন্য প্রশিক্ষণ কর্মসূচি ইজিবাইকের সংখ্যা এবং যানজট কমাতে সাহায্য করতে পারে।”

তিনি সতর্কতা উল্লেখ করে বলেন, “ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক পরিবেশবান্ধব। তবে ব্যাটারি ফেলে দেওয়ার ক্ষেত্রে সঠিক বৈজ্ঞানিক ব্যবস্থাপনা ছাড়া এগুলো মারাত্মক পরিবেশ দূষণের কারণ হতে পারে। কারণ ব্যবহৃত ব্যাটারি বাতাসে ক্ষতিকারক কার্বন নির্গত করে।”

“সঠিক রুট ব্যবস্থাপনার অভাব এবং চালকদের ট্রাফিক নিয়ম সম্পর্কে অসচেতনতার কারণে বিপুল সংখ্যক ইজিবাইক যানজট তৈরি করছে,” যুক্ত করেন এ অধ্যাপক।

খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের (কেএমপি) অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) খন্দকার হোসেন আহমেদ বলেন, “অনেক ছোট ব্যবসায়ী, শিক্ষার্থী এবং গৃহিণী এখন অর্থ উপার্জনের জন্য ইজিবাইক চালাচ্ছেন। কেএমপি গত ২ মাসে ৭ হাজার ১০ জন ইজিবাইক চালককে প্রশিক্ষণ দিয়েছে এবং সনদ বিতরণ করেছে। বর্তমানে এ কর্মসূচি স্থগিত রয়েছে। তবে শীঘ্রই আবার শুরু হবে।”

সুন্দরবন একাডেমির নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক আনোয়ারুল কাদির জানান, শহরে ঘন ঘন যানজট এবং দুর্ঘটনা রোধে চালকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া উচিত। শহরকে যানজটমুক্ত করতে এবং বাসিন্দাদের চলাচল সাবলীল করতে অননুমোদিত ইজিবাইকের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।

ঢাকা/নুরুজ্জামান/মেহেদী

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর য নজট য নজট র জন য ব যবহ ব যবস য নজট

এছাড়াও পড়ুন:

ডিএসইতে ৭৫ শতাংশ শেয়ার-মিউচুয়াল ফান্ডের দরপতন

চলতি সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবস সোমবার (৩ নভেম্বর) ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সূচকের বড় পতনে লেনদেন শেষ হয়েছে। লেনদেনে শেষে ডিএসইতে এ দিন ৩০০টি বা ৭৫.৩৮ শতাংশের বেশি শেয়ার এবং মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিটের দরপতন হয়েছে।

এ দিন আগের কার্যদিবসের চেয়ে ডিএসইতে লেনদেন কমলেও সিএসইতে কিছুটা বেড়েছে। তবে উভয় পুঁজিবাজারে লেনদেনে অংশ নেওয়া বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ার এবং মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিটের দাম কমেছে।

আরো পড়ুন:

৭ কোটি টাকা সংগ্রহে লিও আইসিটি ক্যাবলসের কিউআইও’র আবেদন

বিএসইসির চেয়ারম্যানের সঙ্গে আইসিএসবির প্রতিনিধিদলের সাক্ষাৎ

বাজার পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, অনেক দিন ধরে পুঁজিবাজারে লেনদেনের শুরুতে সূচকের উত্থান দেখা গেলেও লেনদেন শেষে তা পতনে রূপ নেয়। সোমবার সকাল থেকেই ডিএসইএক্স সূচকের নিম্নমুখী প্রবণতায় লেনদেনের শুরু হয়। লেনদেনের শেষ হওয়ার আগমুহূর্ত পর্যন্ত তা অব্যাহত ছিল। তবে গত কয়েক মাসের ব্যবধানে পুঁজিবাজারে লেনদেন অনেক কমে গেছে।

ডিএসই ও সিএসই সূত্রে জানা গেছে, দিনশেষে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের চেয়ে ৫৪.৮৭ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ৫ হাজার ৬১ পয়েন্টে। ডিএসই শরিয়াহ সূচক ১২.৩৬ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৬৬ পয়েন্টে এবং ডিএস৩০ সূচক ২১.৯৪ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৯৬০ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।

ডিএসইতে মোট ৩৯৮টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে ৪৫টি কোম্পানির, কমেছে ৩০০টির এবং অপরিবর্তিত আছে ৫৩টির।

ডিএসইতে মোট ৫১৮ কোটি ৬২ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ৫৪৪ কোটি ৭৬ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট।

অন্যদিকে, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সিএসসিএক্স সূচক আগের দিনের চেয়ে ৪৯.৫৯ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ৮ হাজার ৭৭৬ পয়েন্টে। সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ৮৭.৯৭ পয়েন্ট কমে ১৪ হাজার ২২৫ পয়েন্টে, শরিয়াহ সূচক ২.১৬ পয়েন্ট কমে ৮৯৬ পয়েন্টে এবং সিএসই ৩০ সূচক ৪.২৫ পয়েন্ট কমে ১২ হাজার ৬৬৬ পয়েন্টে অবস্থান করছে।

সিএসইতে মোট ১৯৩টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে ৪২টি কোম্পানির, কমেছে ১২৬টির এবং অপরিবর্তিত আছে ২৫টির।

সিএসইতে ২৪ কোটি ৫৩ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ১৬ কোটি ৫১ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট।
 

ঢাকা/এনটি/বকুল 

সম্পর্কিত নিবন্ধ