রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু), হল সংসদ ও সিনেট ছাত্র প্রতিনিধি নির্বাচনে প্রার্থীরা শিক্ষার্থীদের দ্বারে দ্বারে প্রচার ও প্রচারণা চালাচ্ছেন। প্রথম দিন থেকেই প্রচারে বাধা হয়ে দাঁড়ায় বৃষ্টি। প্রার্থীদের মাথায় রাখতে হচ্ছে বেঁধে দেওয়া সময়। এতে সব শিক্ষার্থীর কাছে নাম ও ব্যালট নম্বর পৌঁছাতে বেগ পেতে হচ্ছে প্রার্থীদের।

নির্বাচনের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে, প্রচার ও প্রচারণা আরও উৎসবমুখর হয়ে উঠছে। শিক্ষার্থীদের নজর কাড়তে অনেক প্রার্থীই বেছে নিয়েছেন প্রচারণার নানা কৌশল। কেউ গাচ্ছেন গান, কেউবা টাকা বা ডলারের আদলে প্রচারপত্র বানিয়ে প্রচারণা চালাচ্ছেন। তবে সরাসরি প্রচারের চেয়ে ফেসবুক পেজ বা গ্রুপে বেশি সরব প্রার্থীরা।

প্রচারণার চতুর্থ দিন আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন মার্কেট থেকে ভেসে আসছিল গান। গিয়ে দেখা গেল, একদল শিক্ষার্থী নেচে নেচে গান গাচ্ছেন। জানা গেল, গানের এ আয়োজন কেন্দ্রীয় সংসদে সাংস্কৃতিক সম্পাদক পদপ্রার্থী কাজী শফিউল কালামকে (কে এস কে হৃদয়) ঘিরে।

গান গাইতে গাইতে শফিউল কালাম বলেন, ‘আমি গানের মানুষ। রাকসু নির্বাচনে সাংস্কৃতিক সম্পাদক পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছি। অনেক আগে থেকেই সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে নিয়োজিত আছি।’ এই বলেই আবার গান ধরলেন।

ছাত্রশিবির–সমর্থিত প্যানেলের সাংস্কৃতিক সম্পাদক প্রার্থী জাহিদ হাসানকে লুঙ্গি ও পাঞ্জাবি পরে দেখা গেল একই জায়গায়। মাথায় কৃষকদের মাথাল আর কাঁধে গামছা। গম্ভীরা গানের সুরে তিনি ভোট প্রার্থনা করছিলেন।

অল্প সময়ের ব্যবধানে একই জায়গায় দেখা গেল স্বতন্ত্র ভিপি প্রার্থী মো.

আ. নূরকে। তিনি কর্কশিট কেটে নির্বাচনে তাঁর ব্যালট নম্বর লিখে দাঁড়িয়ে আছেন। তিনি বলেন, দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য কর্কশিট কেটে বড় করে ব্যালট নম্বর করেছেন। প্রচারণার শেষের দুই দিন আরও নতুন কিছু নিয়ে আসবেন।

নানা আদলে প্রচারপত্র

মিডিয়া ও প্রকাশনা সম্পাদক ও সিনেট ছাত্র প্রতিনিধি পদপ্রার্থী মীর কাদির একটু ভিন্ন আদলে প্রচারপত্র তৈরি করে বিলি করছেন। পুরোনো দিনের টেলিভিশনের ফ্রেমের ভেতরে তাঁর ছবি, পদের নাম ও ব্যালট নম্বর দেওয়া আছে। এক পাশে লিখে দিয়েছেন, ‘আমার ইশতেহার সম্পর্কে জানতে হলে স্ক্যান করুন।’ মিডিয়া ও প্রকাশনা সম্পাদক পদের আরেক প্রার্থী ফাহির আমির তাঁর অঙ্গীকারনামা লিখে খামে ভরে চিঠি আকারে শিক্ষার্থীদের দিচ্ছেন।

কর্কশিটে ব্যালট নাম্বার লেখে প্রচার চালাচ্ছেন এক ভিপি প্রার্থী। বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন মার্কেটের আমতলায়

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

সরকারের ভেতরে একটা অংশ নির্বাচন বানচালের পাঁয়তারা করছে: এনসিপি

সরকারের ভেতরের একটি পক্ষ ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশের বাইরে গিয়ে নিজেরাই ঐকমত্য কমিশন হওয়ার চেষ্টা করছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্যসচিব আখতার হোসেন। তিনি বলেন, এই চেষ্টার কারণে নির্বাচন ঝুঁকিতে পড়বে।

আজ সোমবার সন্ধ্যায় রাজধানীর বাংলামোটরে এনসিপির অস্থায়ী কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে আখতার হোসেন এ কথা বলেন।

আখতার হোসেন বলেন, তাঁদের কাছে স্পষ্টতই প্রতীয়মান যে সরকারের ভেতরের কোনো একটা অংশ সংস্কারকে ভন্ডুল করে নির্বাচন বানচালের পাঁয়তারা করছে।

রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলাপ–আলোচনার ভিত্তিতেই কমিশন সুপারিশ উপস্থাপন করেছে উল্লেখ করে সংবাদ সম্মেলনে এনসিপির সদস্যসচিব বলেন, সেই সুপারিশের ভিত্তিতেই সরকার আদেশ জারি করবে, সেটাই হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু যখন সরকারের তরফ থেকে সংবাদ সম্মেলন করে আরও এক সপ্তাহ রাজনৈতিক দলগুলোকে আলাপ–আলোচনার কথা বলা হয়, তখন মনে হয় যে সরকার আসলে এই সংস্কারের বিষয়গুলো নিয়ে সাপ-লুডো খেলছে। তিনি বলেন, ‘আমরা ৯৬-তে পৌঁছে গিয়েছিলাম, সেটাকে আবার তিনে নিয়ে আসা হয়েছে সাপ কেটে। এ অবস্থায় বাংলাদেশের বর্তমান যে রাজনৈতিক পরিস্থিতি, তাতে সংকট আরও ঘনীভূত হচ্ছে।’

অতি দ্রুত সরকারকে দায়িত্বশীল আচরণ করার আহ্বান জানিয়ে এনসিপির সদস্যসচিব বলেন, সরকারকে নিজেকেই দায়িত্ব নিয়ে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারি করতে হবে। সামনের সংসদকে গাঠনিক ক্ষমতা প্রদান করার মধ্য দিয়ে সংবিধান সংস্কার পরিষদ হিসেবে ঘোষণা করতে হবে। গণভোটের মাধ্যমে অর্জিত জনগণের অভিপ্রায় স্বয়ংক্রিয়ভাবে যেন বাস্তবায়িত হয়, সেই সুপারিশ বাস্তবায়ন করতে হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ