ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) গঠনতন্ত্র সংস্কারে ৯ দফা প্রস্তাবনা দিয়েছে শাখা ছাত্রশিবির।

গতকাল রবিবার (১২ জানুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে তারা এ প্রস্তাবনাগুলো দেয়। সোমবার (১৩ জানুয়ারি) বিকাল ৩টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানায় সংগঠনটি। 

গত বছর সংস্কার করা ডাকসুর গঠনতন্ত্র নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা হয়। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর ডাকসু নির্বাচনের দাবি জোরালো হয়। তবে সব ছাত্র সংগঠন ও অধিকাংশ শিক্ষার্থীদের দাবি, বিদ্যমান ডাকসুর গঠনতন্ত্র সংস্কার করার পরে নির্বাচন দিতে হবে। 

সংবাদ সম্মেলনে দেওয়া লিখিত বক্তব্যে প্রস্তাবনাগুলো বিস্তারিত উল্লেখ করেন ঢাবি শাখা শিবিরের সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দীন খান।

তিনি বলেন, “শিবিরের সংস্কার প্রস্তাবনার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে- লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যে ধারা ২(ক) সংস্কার করতে হবে। ডাকসুর ‘লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য’ ধারায় ধর্ম, বর্ণ, গোত্র, লিঙ্গ, রাজনৈতিক বিশ্বাস ও মতাদর্শ নির্বিশেষে সকল শিক্ষার্থীর সর্বোচ্চ স্বার্থ রক্ষা ও অধিকার আদায়ের মূল কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে কাজ করা। শিক্ষার্থীদের মতামতকে গুরুত্ব প্রদানের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ে নীতিমালা প্রণয়নে শিক্ষার্থীদের সক্রিয় অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে।”

তিনি আরো বলেন, “ডাকসুর কার্যাবলীতে শিক্ষার্থীদের স্বার্থ রক্ষা ও গণতন্ত্র চর্চা সংশ্লিষ্ট কার্যক্রমের উল্লেখ থাকতে হবে। গঠনতন্ত্র ‘৩-কার্যাবলীতে’ বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কার্যক্রম ও শিক্ষার্থীদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নের লক্ষ্যে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন, প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করা, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা পর্ষদ, বিদ্যমান প্রকল্প ও কার্যক্রমে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণের জন্য যৌক্তিক পদের সৃষ্টি ও শিক্ষার্থীদের প্রদান করা, বিভিন্ন বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের নীতি নির্ধারী সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে জরিপ ডিজিটাল আউটরিচ, দৈবচয়ন প্রভৃতি নানা বিজ্ঞানসম্মত ও যৌক্তিক উপায়ে শিক্ষার্থীর মতামত গ্রহণ ও প্রকাশ করতে হবে। সংসদের অনির্বাচিত সভাপতির স্বেচ্ছাচারী ক্ষমতা সীমিত করতে হবে এবং কার্যনির্বাহী পরিষদকে শক্তিশালী করতে হবে।”

প্রস্তাবনায় আরো বেলেন, “শিবির ডাকসুকে যুগাযোগী ও শিক্ষার্থী করার লক্ষ্যে নির্দিষ্ট কিছু সম্পাদকীয় পদের পরিবর্তন পরিমার্জন ও সংযোজন করা প্রয়োজন বলে মনে করছে। বর্তমান গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ‘স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক’ এর পরিবর্তে ‘স্বাধীনতা সংগ্রাম ও গণতান্ত্রিক আন্দোলন বিষয়ক সম্পাদক’ পদ রাখতে হবে। ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন থেকে শুরু করে ভাষা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধ, স্বৈরাচারীবিরোধী আন্দোলন, নিরাপদ সড়ক আন্দোলন ও জুলাই এর গণঅভ্যুত্থানসহ সকল গণতান্ত্রিক আন্দোলনের স্পিরিটকে ধারণ করে দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষা, মৌলিক মানবাধিকার, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ, পারস্পরিক সম্প্রীতি ও বাংলাদেশের জাতীয়তাবাদের প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবেন এ সম্পাদক।”

মহিউদ্দিন খান বলেন, “গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ‘কমনরুম ও ক্যাফেটিরা বিষয়ক সম্পাদক’ পদের পরিবর্তে ‘পাঠাগার, পাঠ কক্ষ ও কমনরুম বিষয়ক সম্পাদক’ ও ‘ফেটেরিয়া ও ক্যান্টিন বিষয়ক সম্পাদক’ পদ সৃষ্টি করতে হবে।”

সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন, ঢাবি শিবিরের সভাপতি এস এম ফরহাদ, সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী আশিক, সাবেক প্রচার সম্পাদক হোসেন মোহাম্মদ জুবায়ের, সাবেক সাহিত্য প্রকাশনা সম্পাদক নুরুল ইসলাম নুর প্রমুখ।

ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী

.

উৎস: Risingbd

এছাড়াও পড়ুন:

লন্ডনে ড. ইউনূস-তারেক রহমানের বৈঠককে স্বাগত জানাল জেএসডি

লন্ডনে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বৈঠকের আলোচনা ও ঐকমত্যের সূচনাকে স্বাগত জানিয়েছে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি)। দলটি বলেছে, আমরা স্মরণ করিয়ে দিতে চাই, জনগণ শুধু কথায় নয়, বাস্তবে সংস্কার ও বিচারের দৃশ্যমান অগ্রগতির পদক্ষেপ দেখতে চায়।

শুক্রবার জেএসডির সভাপতি আ স ম আবদুর রব ও সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন এক বিবৃতিতে এ কথা বলেন।

তারা বলেন, এই উচ্চপর্যায়ের সংলাপ দেশে রাজনৈতিক সমঝোতা ও জাতীয় ঐক্যের মাধ্যমে গণঅভ্যুত্থানের কাঙ্ক্ষিত অভিপ্রায় অনুযায়ী রাষ্ট্র সংস্কার, শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তর এবং গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা প্রতিষ্ঠার পথে এক গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক।

বিবৃতিতে নেতারা বলেন, অধ্যাপক ইউনূস এবং তারেক রহমানের বৈঠক ও বিবৃতিতে আগামী বছরের পবিত্র রমজানের আগেই একটি নির্বাচন অনুষ্ঠানের সম্ভাবনার ওপর গুরুত্বারোপ এবং তার পূর্বশর্ত হিসেবে কাঙ্ক্ষিত সংস্কার ও ফ্যাসিস্ট সরকারের বিচারের প্রক্রিয়ায় দৃশ্যমান অগ্রগতি অর্জনের ঘোষিত প্রত্যয়ে রাজনীতিতে স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করবে।

বিবৃতিতে বলা হয়, গণমানুষের রক্তস্নাত গণঅভ্যুত্থানের অন্যতম দাবি- গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য কাঠামোগত মৌলিক সংস্কার এবং গণহত্যাকারী ফ্যাসিবাদী শক্তির বিচারের ব্যবস্থা। এই বিষয় দুটির দৃশ্যমান অগ্রগতিই কেবল একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের ভিত্তি রচনা করতে পারে।

রাজনৈতিক দলগুলোর পাশাপাশি সমাজের শ্রমজীবী, কর্মজীবী ও পেশাজীবীদের মতামত, আকাঙ্ক্ষা ও অংশগ্রহণে রাষ্ট্রীয় রাজনীতির মৌলিক সংস্কারের লক্ষ্যে দ্রুত ‘জাতীয় সনদ’ প্রণয়নের আহ্বান জানায় জেএসডি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নাগরিক সমাজ শাসকদের পক্ষে থাকে কেন?
  • আবু সাঈদ হত্যা: এক মাসের মধ্যে তদন্ত শেষ করার নির্দেশ ট্রাইব্যুনালের
  • রংপুরে আবু সাঈদ হত্যা: এক মাসের মধ্যে তদন্ত শেষ করার নির্দেশ ট্রাইব্যুনালের
  • গণঅভ্যুত্থানে আহত সামিউলের দিন কাটছে অনিশ্চয়তায়
  • লন্ডনে ড. ইউনূস-তারেক রহমানের বৈঠককে স্বাগত জানাল জেএসডি