ঝকঝকে টাইলসের মেঝে আর সাদা রঙের দেয়াল। কাঠের তৈরি চেয়ার-টেবিলগুলো এখনো নতুন। আধুনিক সুযোগ-সুবিধাসংবলিত বিশাল পাঠাগার দুটির তাকে তাকে সাজানো দেশ-বিদেশের হাজারো বই। কিন্তু যাঁদের জন্য এই আয়োজন, সেই পাঠকই নেই। ভেতরে সুনসান নীরবতা। পাঠক–খরায় বই, চেয়ার–টেবিলগুলো পড়ে থাকছে ফাঁকা।

এ অবস্থা দেখা গেছে জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ ও বকশীগঞ্জ সরকারি গণগ্রন্থাগারে। ২০১৫ সালে পাঠাগার দুটির উদ্বোধন হয়। প্রথমদিকে সেখানে কিছু পাঠক ছিলেন। এখন মাঝেমধ্যে স্কুলের কিছু শিক্ষার্থী এলেও ক্রমে পাঠকশূন্য হয়ে যাচ্ছে দৃষ্টিনন্দন পাঠাগার দুটি। পাঠক ফেরাতেও নেই তেমন কোনো উদ্যোগ।

৫ অক্টোবর সরেজমিনে দেখা যায়, দেওয়ানগঞ্জ শহর থেকে অল্প দূরেই এ কে মেমোরিয়াল কলেজ। কলেজের প্রধান ফটক পেরোতেই চোখে পড়ে দৃষ্টিনন্দন একটি ভবন। আর কলেজ ক্যাম্পাসের পূর্ব পাশে দাঁড়িয়ে আছে দেওয়ানগঞ্জ সরকারি গণগ্রন্থাগারের দোতলা ভবনটি। ভবনের নিচতলায় প্রায় ২০০ মানুষের ধারণক্ষমতাসংবলিত একটি বিশাল মিলনায়তন। ওপরে দোতলায় মূল পাঠাগার। কিন্তু পাঠাগারে কোনো পাঠক নেই। পাঠাগার বিষয়ে কথা বলার মতো লোকজনও খুঁজে পাওয়া গেল না।

১২ অক্টোবর সরেজমিনে দেখা যায়, বকশীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণের দক্ষিণ পাশে সরকারি গণগ্রন্থাগারের দোতলা ভবন। দেওয়ানগঞ্জের মতোই পুরো পাঠাগার চকচকে-তকতকে। ওপরে দোতলায় মূল পাঠাগার। সেখানে গিয়ে কিছু শিক্ষার্থীকে পাওয়া গেল। কয়েকজন পাঠাগারে বসে গল্প করছে। কয়েকজন বই পড়ছেন।

শিক্ষার্থীদের কয়েকজন বললেন, তাঁরা মাঝেমধ্যে এখানে আসেন। সব ধরনের বই এখানে আছে। গ্রন্থাগারটা অনেক সুন্দর করে বানানো হয়েছে। তবে তেমন কেউ যান না বই পড়তে। এখন সবাই মোবাইলেই সময় কাটান।

গণগ্রন্থাগার সূত্রে জানা গেছে, এ কে মেমোরিয়াল কলেজ ক্যাম্পাসে ও বকশীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে গণপূর্ত অধিদপ্তর ২০১৩ সালে পাঠাগার দুটির নির্মাণকাজ শেষ করে। সব কাজ শেষ হওয়ার পর ২০১৫ সালে এই দুটি পাঠাগার জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। পাঠাগার দুটিতে প্রায় ২০ হাজার বই আছে। প্রতিদিনের সংবাদপত্রও থাকে।

জামালপুর শহরের সরকারি আশেক মাহমুদ কলেজের অধ্যাপক মো.

আবদুল হাই আলহাদী প্রথম আলোকে বলেন, ‘পড়িলে বই আলোকিত হই’—জ্ঞানে, প্রজ্ঞায়, আচরণে এই আলোকিত হওয়ার প্রবণতা এখন উদ্বেগজনকভাবে কমে এসেছে। পাড়ায় পাড়ায় পাঠাগার গড়ে তোলার যে আন্দোলন একসময় ছিল, তা আর দেখা যায় না। কারণ, জেলা, উপজেলা বা কোনো কোনো ক্ষেত্রে বড় শহরের গ্রন্থাগারগুলোতেও এখন চলছে পাঠকের আকাল। সরকারি অর্থায়নে পরিচালিত গ্রন্থাগারেও পাঠক নেই।

জামালপুরের বকশীগঞ্জ উপজেলার সরকারি গণগ্রন্থাগারে ঢুকে কয়েকজনকে গল্প করতে এবং কয়েকজনকে বই পড়তে দেখা যায়

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: গ রন থ গ র উপজ ল সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

ঝকঝকে ভবন, তাকে তাকে সাজানো বই, নেই শুধু পাঠক

ঝকঝকে টাইলসের মেঝে আর সাদা রঙের দেয়াল। কাঠের তৈরি চেয়ার-টেবিলগুলো এখনো নতুন। আধুনিক সুযোগ-সুবিধাসংবলিত বিশাল পাঠাগার দুটির তাকে তাকে সাজানো দেশ-বিদেশের হাজারো বই। কিন্তু যাঁদের জন্য এই আয়োজন, সেই পাঠকই নেই। ভেতরে সুনসান নীরবতা। পাঠক–খরায় বই, চেয়ার–টেবিলগুলো পড়ে থাকছে ফাঁকা।

এ অবস্থা দেখা গেছে জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ ও বকশীগঞ্জ সরকারি গণগ্রন্থাগারে। ২০১৫ সালে পাঠাগার দুটির উদ্বোধন হয়। প্রথমদিকে সেখানে কিছু পাঠক ছিলেন। এখন মাঝেমধ্যে স্কুলের কিছু শিক্ষার্থী এলেও ক্রমে পাঠকশূন্য হয়ে যাচ্ছে দৃষ্টিনন্দন পাঠাগার দুটি। পাঠক ফেরাতেও নেই তেমন কোনো উদ্যোগ।

৫ অক্টোবর সরেজমিনে দেখা যায়, দেওয়ানগঞ্জ শহর থেকে অল্প দূরেই এ কে মেমোরিয়াল কলেজ। কলেজের প্রধান ফটক পেরোতেই চোখে পড়ে দৃষ্টিনন্দন একটি ভবন। আর কলেজ ক্যাম্পাসের পূর্ব পাশে দাঁড়িয়ে আছে দেওয়ানগঞ্জ সরকারি গণগ্রন্থাগারের দোতলা ভবনটি। ভবনের নিচতলায় প্রায় ২০০ মানুষের ধারণক্ষমতাসংবলিত একটি বিশাল মিলনায়তন। ওপরে দোতলায় মূল পাঠাগার। কিন্তু পাঠাগারে কোনো পাঠক নেই। পাঠাগার বিষয়ে কথা বলার মতো লোকজনও খুঁজে পাওয়া গেল না।

১২ অক্টোবর সরেজমিনে দেখা যায়, বকশীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণের দক্ষিণ পাশে সরকারি গণগ্রন্থাগারের দোতলা ভবন। দেওয়ানগঞ্জের মতোই পুরো পাঠাগার চকচকে-তকতকে। ওপরে দোতলায় মূল পাঠাগার। সেখানে গিয়ে কিছু শিক্ষার্থীকে পাওয়া গেল। কয়েকজন পাঠাগারে বসে গল্প করছে। কয়েকজন বই পড়ছেন।

শিক্ষার্থীদের কয়েকজন বললেন, তাঁরা মাঝেমধ্যে এখানে আসেন। সব ধরনের বই এখানে আছে। গ্রন্থাগারটা অনেক সুন্দর করে বানানো হয়েছে। তবে তেমন কেউ যান না বই পড়তে। এখন সবাই মোবাইলেই সময় কাটান।

গণগ্রন্থাগার সূত্রে জানা গেছে, এ কে মেমোরিয়াল কলেজ ক্যাম্পাসে ও বকশীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে গণপূর্ত অধিদপ্তর ২০১৩ সালে পাঠাগার দুটির নির্মাণকাজ শেষ করে। সব কাজ শেষ হওয়ার পর ২০১৫ সালে এই দুটি পাঠাগার জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। পাঠাগার দুটিতে প্রায় ২০ হাজার বই আছে। প্রতিদিনের সংবাদপত্রও থাকে।

জামালপুর শহরের সরকারি আশেক মাহমুদ কলেজের অধ্যাপক মো. আবদুল হাই আলহাদী প্রথম আলোকে বলেন, ‘পড়িলে বই আলোকিত হই’—জ্ঞানে, প্রজ্ঞায়, আচরণে এই আলোকিত হওয়ার প্রবণতা এখন উদ্বেগজনকভাবে কমে এসেছে। পাড়ায় পাড়ায় পাঠাগার গড়ে তোলার যে আন্দোলন একসময় ছিল, তা আর দেখা যায় না। কারণ, জেলা, উপজেলা বা কোনো কোনো ক্ষেত্রে বড় শহরের গ্রন্থাগারগুলোতেও এখন চলছে পাঠকের আকাল। সরকারি অর্থায়নে পরিচালিত গ্রন্থাগারেও পাঠক নেই।

জামালপুরের বকশীগঞ্জ উপজেলার সরকারি গণগ্রন্থাগারে ঢুকে কয়েকজনকে গল্প করতে এবং কয়েকজনকে বই পড়তে দেখা যায়

সম্পর্কিত নিবন্ধ