শেখ হাসিনা ভারতে বসে ষড়যন্ত্র করছেন: জামায়াত সেক্রেটারি
Published: 13th, January 2025 GMT
আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা ভারতে বসে ষড়যন্ত্র করছেন বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার। তিনি বলেন, ‘‘সব ধরনের খুনের মাস্টারমাইন্ড শেখ হাসিনা। তিনি বর্তমানের ভারতে বসেও ষড়যন্ত্র করছেন। অল্প দিনের মধ্যেই তাকে দেশে এনে ফাঁসির মঞ্চে দাঁড় করানো হবে।’’
সোমবার (১৩ জানুয়ারি) বিকেলে মাদারীপুর জেলার কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘‘অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টাকে অনুরোধ করব, দ্রুত নির্বাচনের একটা রোডম্যাপ ঘোষণা করুন। ১০ থেকে ১৫টি সংস্কার কমিশন গঠন করা হয়েছে, তারা ১৫ জানুয়ারির মধ্যে সরকারের কাছে তাদের সুপারিশ দেবে। সেখান থেকে গুরুত্ব বিবেচনায় সংস্কার করা হবে।’’
তিনি আরো বলেন, ‘‘অনেকে বলছেন, সংস্কার দরকার নেই। এটা সঠিক নয় কারণ সংস্কার না হলে সেই হাসিনা মার্কা নির্বাচন আবারো হবে। তাহলে এত রক্ত বিফলে যাবে। তাই নির্বাচন কমিশন, পুলিশ বাহিনী, সংবিধান, জুডিশিয়ারি এসব সংস্কার করে নির্বাচন দিন।’’
বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামীর মাদারীপুর জেলা শাখার আমীর মোকলেসুর রহমানের সভাপতিত্ব ও জেলা সেক্রেটারি এনায়েত হোসেনের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এএইচএম হামিদুর রহমান আজাদ, কেন্দ্রীয় সদস্য শামসুল ইসলাম আল-বারাদী, দলের ফরিদপুর অঞ্চলের সদস্য মাওলানা আবদুস সোবাহন খান, ফরিদপুর জেলা আমীর বদরউদ্দিন প্রমুখ।
এ সময় বিভিন্ন ইউনিয়ন, উপজেলা ও জেলা থেকে হাজার হাজার নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা/বেলাল/বকুল
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
নির্বাচন বাতিলের সব ষড়যন্ত্র রুখে দেওয়ার আহ্বান সিপিবির
আগামী জাতীয় নির্বাচন ঘিরে ‘নির্বাচন বাতিল বা বিলম্বের ষড়যন্ত্র’ রুখে দিতে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)। দলটি বলেছে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন ও শোষণমুক্ত সমাজ গড়তে হলে সাম্রাজ্যবাদ ও পুঁজিবাদবিরোধী আন্দোলনকে জোরদার করতে হবে।
শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর মিরপুরের ঈদগাহ মাঠসংলগ্ন সেনপাড়ায় সিপিবি ঢাকা মহানগর উত্তরের উদ্যোগে আয়োজিত জনসভায় এ আহ্বান জানানো হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন মহানগর উত্তরের সভাপতি হাসান হাফিজুর রহমান এবং সভা পরিচালনা করেন সংগঠনের এই শাখার সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য ফেরদৌস আহমেদ।
সভায় প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিপিবির সভাপতি কাজী সাজ্জাদ জহির। আরও বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন, কেন্দ্রীয় সদস্য ও মহানগর উত্তরের সাবেক সভাপতি আহাম্মদ সাজেদুল হক, মহানগর উত্তরের সাধারণ সম্পাদক লূনা নূর, সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য মোতালেব হোসেন ও মহানগর কমিটির সদস্য রিয়াজ উদ্দিন।
সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে কাজী সাজ্জাদ জহির বলেন, মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে অর্জিত চার মূলনীতি সমুন্নত রাখতে হবে। শোষণ ও বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠার সংগ্রামকে বেগবান করতে শ্রমিক, কৃষক, যুব ও নারী সমাজকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে মাঠে নামতে হবে। বামপন্থীদের সরকার গঠন করতে সব দেশপ্রেমিক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। তাঁদের নেতৃত্বেই আগামী দিনের ক্ষমতায় লড়াইকে অগ্রসর করতে হবে।
সিপিবির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রুহিন হোসেন বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে যাদের অবস্থান ছিল, আজ তারাই রাষ্ট্র ও সমাজের বিভিন্ন স্তরে পৃষ্ঠপোষকতা পাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে কেবল ক্ষমতার পরিবর্তন নয়, ব্যবস্থার পরিবর্তনই সময়ের দাবি। কমিউনিস্টরা সেই ব্যবস্থার পরিবর্তনের সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে। আমরা আহ্বান জানাই, গণতন্ত্রের প্রথম শর্ত হলো নিরপেক্ষ ও সময়োপযোগী নির্বাচন। আগামীকাল থেকেই আমরা জাতীয় নির্বাচনের কাউন্টডাউন (ক্ষণগণনা) দেখতে চাই।’
নির্বাচনের কাউন্টডাউন শুরু না হলে জনগণের মধ্যে অনিশ্চয়তা বাড়বে বলে উল্লেখ করেন রুহিন হোসেন। তিনি বলেন, ‘গণতন্ত্রের প্রথম শর্ত হলো নিরপেক্ষ ও সময়োপযোগী নির্বাচন। সরকারকে দ্রুত নির্বাচনের নির্দিষ্ট তারিখ ঘোষণা করতে হবে। কমিউনিস্টরা ক্ষমতায় গিয়ে দুর্নীতি, লুটপাট ও শোষণের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা বদলের সংগ্রামকে জনগণের আন্দোলনে রূপ দেবে।’
সাম্রাজ্যবাদী শক্তি ও তাদের দেশীয় দোসরদের হাতে দেশের সম্পদ লুট হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন সিপিবির ঢাকা মহানগর উত্তরের সাবেক সভাপতি আহাম্মদ সাজেদুল হক। তিনি বলেন, বাংলাদেশের জনগণ এখনো অনিশ্চিত যে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে কি না। কারণ, বর্তমান সরকার এখনো সুনির্দিষ্টভাবে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করেনি। জনগণ আজ অর্থনৈতিক সংকট, বৈষম্য ও দুর্নীতির শিকার। একদিকে জনগণের ঘামঝরানো টাকায় দেশ চলছে, অন্যদিকে সাম্রাজ্যবাদী শক্তি ও তাদের দোসররা দেশের সম্পদ লুট করছে। সমুদ্রবন্দর, গ্যাস, বিদ্যুৎ, টেলিযোগাযোগসহ জাতীয় সম্পদ বিদেশিদের হাতে তুলে দেওয়ার চক্রান্ত চলছে। এটি দেশের সার্বভৌমত্ব ও স্বাধীনতার ওপর সরাসরি আঘাত।