চাচা হত্যার প্রতিশোধে কাউন্সিলর টিপুকে খুন
Published: 15th, January 2025 GMT
চাচা হত্যার প্রতিশোধ নিতে খুলনার সাবেক কাউন্সিলর ও মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহসভাপতি গোলাম রাব্বানী টিপুকে কক্সবাজারে হত্যা করেন শেখ শাহরিয়ার ইসলাম ওরফে পাপ্পু (২৪)। পুলিশের কাছে এ কথা স্বীকার করেছেন তিনি। এ হত্যাকাণ্ডে ঋতুকে ইনফরমার হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে।
বুধবার দুপুরে নিজ কার্যালয়ে ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানিয়েছেন কক্সবাজারের পুলিশ সুপার রহমত উল্লাহ। তিনি জানান, বিশেষ অভিযানে সোমবার রাতে মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার কাপনা পাহাড়ি চা বাগান থেকে খুলনা সিটি করপোরেশনের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের দেওয়ানা মোল্লা পাড়ার সেলিম আকনের মেয়ে ঋতু (২৪), জামাল শেখের ছেলে শেখ শাহরিয়ার ইসলাম পাপ্পু (২৪) ও ৬ নম্বর ওয়ার্ডের মধ্য কারিগর পাড়ার হায়দার সরদার অদুদের ছেলে গোলাম রসুলকে (২৫) গ্রেপ্তার করা হয়।
গত ৮ জানুয়ারি রাত ১১টার দিকে গোলাম রাব্বানী টিপু, তাঁর বন্ধু আওয়ামী লীগ নেতা শেখ হাসান ইফতেখার ওরফে চালু ও ঋতু গ্রিনলাইন বাসে ঢাকা থেকে কক্সবাজার আসেন। ৯ জানুয়ারি রাত সাড়ে ৮টার দিকে কক্সবাজার শহরের ১২ নম্বর ওয়ার্ডের সুগন্ধা পয়েন্টের কাছাকাছি হোটেল সিগালের পশ্চিম পাশের ফুটপাতে টিপুকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় আগেই শেখ হাসান ইফতেখার ওরফে চালু ও কক্সবাজারের ব্যবসায়ী মেজবাহ উদ্দিন ভুট্টোকে গ্রেপ্তার করে র্যাব।
পুলিশ সুপার বলেন, চরমপন্থি সংগঠনের বিরোধে খুন হন শেখ শাহরিয়ার ইসলাম ওরফে পাপ্পুর চাচা হুজি শহিদ। ওই হত্যাকাণ্ডের মামলায় আসামি ছিলেন গোলাম রাব্বানী টিপু। তখন পাপ্পু ছোট ছিলেন। কিন্তু তিনি মানসিকভাবে চাচা হত্যার প্রতিশোধ নিয়ে বড় হয়েছেন। পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদেও পাপ্পু ‘টিপুকে যেখানে পেতাম, সেখানেই হত্যা করতাম’ বলেছেন।
কক্সবাজার সদর মডেল থানার ওসি ইলিয়াস খান জানান, গোলাম রাব্বানী টিপুর ভগ্নিপতি ইউনুস আলী শেখ অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন। এ পর্যন্ত পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
অমর একুশে বইমেলা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক
অমর একুশে বইমেলা বাংলাদেশের মানুষের প্রাণের মেলা। মূলত প্রকাশকদের উদ্যোগে মুক্তিযুদ্ধ উত্তর বাংলাদেশে এই বইমেলার সূত্রপাত। সম্প্রতি এই বইমেলা নানা কারণে-অকারণে ডিসেম্বরে করার কথা শোনা যাচ্ছে। এ প্রেক্ষিতে সুস্পষ্টভাবে বলতেই হচ্ছে -ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলা করা যাবে না। কারণ সেসময় সারাদেশে শিক্ষার্থীদের বার্ষিক পরীক্ষা চলবে।
বইমেলার প্রধান পাঠক আমাদের শিক্ষার্থী। তারা ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলায় আসতে পারবে না। প্রধান পাঠকই যদি মেলায় আসতে না পারে তাহলে মেলা প্রাণহীন হয়ে পড়বে। বইমেলায় অংশগ্রহণকারি প্রকাশকরাও ভয়াবহ ক্ষতির মুখে পড়বে। তাছাড়া একুশের চেতনাকে ধারণ করে যে অমর একুশে বইমেলা, সেটা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক। ভাষা শহীদদরর প্রতি বইমেলার মাধ্যমে আমাদের যে শ্রদ্ধাঞ্জলি, তা অক্ষুন্ন থাকুক।
আরো পড়ুন:
রাজশাহীতে বইপড়ায় কৃতিত্বের পুরস্কার পেল ২৩০৩ শিক্ষার্থী
‘গল্পকারের পছন্দের ৫০ গল্প’ গ্রন্থ প্রকাশিত
সর্বোপরি ৫ জানুয়ারি থেকে ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, এই সময়ে বইমেলা হতে কোন সমস্যা হওয়ার কথা নয়। অথবা তারিখ দুই একদিন এদিক-সেদিক করে নেয়া যেতে পারে। এ সময়ে রোজা নেই, নির্বাচনও নেই। নির্বাচনী ক্যাম্পেইন চলবে। এই মাঠে বইমেলা চলাকালীন সর্বদলীয় সিদ্ধান্তে কেউ সভা-সমাবেশ না করার সিদ্ধান্ত নিলে অনায়াসে এই সময়টাতে বইমেলা করা যেতে পারে। আমার বিশ্বাস- সব দলই অমর একুশে বইমেলার জন্য এই ছাড়টুকু দেবেন।
প্রায় পঞ্চাশ বছরের অধিক সময়ের প্রচেষ্টায় অমর একুশে বইমেলা মহিরুহ হয়ে আমাদের কাছে আবির্ভূত, হঠকারি কোন সিদ্ধান্তে তা যেনো ধ্বংস হওয়ার উপক্রম না হয়। জেনে শুনে বাঙালির এতো বড় একটি সাংস্কৃতিক উৎসবকে ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্থ না করে বরং তা যে কোন মূল্যে আমাদের রক্ষা করা উচিত।
জানুয়ারিতে বাণিজ্যমেলায়ও হয়ে থাকে। এতে অমর একুশে বইমেলার ওপর কোনো বিরূপ প্রভাব পড়বে বলে আমি তা মনে করি না। বইমেলার প্রধান পাঠক শিক্ষার্থী। তারা বইমেলায় আসার জন্য মুখিয়ে থাকে। বাণিজ্য মেলায় যাওয়ার লোকজন বেশির ভাগই আলাদা। তবে অনেকেই বইমেলা এবং বাণিজ্যমেলা দুটোতেই যান। এটা তারা ম্যানেজ করে নিতে পারবেন বলে আমার বিশ্বাস।
আমি বলেছি শুধুমাত্র মেলার মাঠ প্রাঙ্গনে সভা-সমাবেশ না করার মাধ্যমে যদি সর্বদলীয় একটা সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় তাহলে জানুয়ারি- ফেব্রুয়ারি মিলিয়ে বইমেলা করা সম্ভব।আমার মনে হয়, বইমেলা চলাকালীন এই মাঠ কোন দলকে সভা-সমাবেশের জন্য সরকার বরাদ্দ না দিলে, অথবা বইমেলা চলাকালীন দলগুলো নিজের থেকেই এই মাঠের বরাদ্দ না চাইলে সমস্যা আর থাকে না।
লেখক: প্রকাশক পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স লিমিটেড
ঢাকা/লিপি