গাজায় ইসরায়েলি হামলার পরও যুদ্ধবিরতি কার্যকর আছে, দাবি ট্রাম্পের
Published: 20th, October 2025 GMT
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, ইসরায়েলি বাহিনীর গাজায় প্রাণঘাতী হামলা চালানোর পরও ইসরায়েল-হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি এখনো কার্যকর রয়েছে।
গতকাল রোববার সাংবাদিকদের এ কথা বলেন ট্রাম্প। হামাসের বিরুদ্ধে সম্ভাব্য যুদ্ধবিরতি ভঙ্গের অভিযোগ তুলে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠনটির ‘অবস্থানে’ ইসরায়েলি বাহিনী প্রাণঘাতী হামলা চালিয়েছে।
গতকাল রোববার এয়ারফোর্স ওয়ান উড়োজাহাজে বসে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন ট্রাম্প। গাজায় যুদ্ধবিরতি এখনো কার্যকর আছে কি না, এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘হ্যাঁ আছে।’
ইসরায়েল বলেছে, তারা গতকাল হামাসের অবস্থানে হামলা চালিয়েছে। এরপর আবার গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর করতে শুরু করেছে। ইসরায়েলের অভিযোগ, ইসরায়েলি সেনাদের হামলার লক্ষ্যবস্তু করেছে হামাস। এ কারণেই তারা হামাসের অবস্থানে হামলা চালিয়েছে।ট্রাম্প আরও ইঙ্গিত দেন, যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের সঙ্গে হামাসের নেতৃত্ব জড়িত নয়; বরং ‘কিছু বিদ্রোহী’ দায়ী।
ইসরায়েল বলেছে, তারা গতকাল হামাসের অবস্থানে হামলা চালিয়েছে। এরপর আবার গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর করতে শুরু করেছে।
ইসরায়েলের অভিযোগ, ইসরায়েলি সেনাদের হামলার লক্ষ্যবস্তু করেছে হামাস। এ কারণেই তারা হামাসের অবস্থানে হামলা চালিয়েছে।
গাজায় হামাসের নিয়ন্ত্রণাধীন উদ্ধারকারী সংস্থা সিভিল ডিফেন্স বলেছে, ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ৪৫ জন নিহত হয়েছেন।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী বলেছে, হতাহতের খবরগুলো তারা যাচাই করছে।
ট্রাম্প আশা প্রকাশ করেছেন, তাঁর মধ্যস্থতায় হওয়া এই যুদ্ধবিরতি টিকে থাকবে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘আমরা নিশ্চিত করতে চাই যে হামাসের সঙ্গে এটা (যুদ্ধবিরতি) শান্তিপূর্ণভাবে চলবে।’
আরও পড়ুনগাজাবাসীর ওপর হামলা চালাতে পারে হামাস, ‘বিশ্বাসযোগ্য তথ্য’ রয়েছে: দাবি যুক্তরাষ্ট্রের২২ ঘণ্টা আগেট্রাম্প আরও বলেন, ‘আপনারা জানেন, তারা বেশ বেপরোয়া আচরণ করছে। তারা কিছু গুলিও চালিয়েছে। আর আমরা মনে করি, এতে হয়তো (হামাসের) নেতৃত্ব জড়িত নয়।’
ট্রাম্পের বক্তব্যের আগে মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স গাজা প্রসঙ্গে কথা বলেন। তিনি গাজায় নতুন করে সহিংসতাকে খুব বড় কিছু মনে করছেন না। ভ্যান্স সাংবাদিকদের বলেন, যুদ্ধবিরতিতে ‘উত্থান-পতন’ থাকবে।
ভ্যান্স আরও বলেন, ‘আমরা মনে করি, এটা টেকসই শান্তি প্রতিষ্ঠার সর্বোচ্চ সুযোগ তৈরি করেছে। তবে এরপরও উত্থান-পতন থাকবে। আর আমাদের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করতে হবে।’
গাজায় দুই বছরের ভয়াবহ যুদ্ধের অবসানে ১০ অক্টোবর যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে প্রাণঘাতী হামলা চালিয়েছিল হামাস। জবাবে সেদিন থেকেই গাজায় নির্বিচারে পাল্টা হামলা শুরু করে ইসরায়েল। দুই বছরের এই যুদ্ধে ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে ৬৮ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। গাজার বেশির ভাগ অংশ ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।
ট্রাম্পের বক্তব্যের আগে মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স গাজা প্রসঙ্গে কথা বলেন। তিনি গাজায় নতুন করে সহিংসতাকে খুব বড় কিছু মনে করছেন না। ভ্যান্স সাংবাদিকদের বলেন, যুদ্ধবিরতিতে ‘উত্থান-পতন’ থাকবে।ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় হওয়া যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে বন্দী ও জিম্মি বিনিময়ের রূপরেখা নির্ধারণ করা হয়। পাশাপাশি গাজা পুনর্গঠনের জন্য একটি উচ্চাকাঙ্ক্ষী রূপরেখাও প্রস্তাব করা হয়েছে। তবে বাস্তবায়নে ইতিমধ্যে চ্যালেঞ্জ দেখা দিয়েছে।
হামাসকে নিরস্ত্র করতে ভ্যান্স পারস্য উপসাগরীয় দেশগুলোকে একটি ‘নিরাপত্তা কাঠামো’ তৈরির আহ্বান জানিয়েছেন। শান্তিচুক্তির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো হামাসকে নিরস্ত্র করা।
মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘হামাসকে নিরস্ত্র করার জন্য উপসাগরীয় আরব দেশগুলো এবং আমাদের মিত্ররা এখনো নিরাপত্তা কাঠামো তৈরি করেনি।’
পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের জন্য ট্রাম্প প্রশাসনের একজন কর্মকর্তা আগামী কয়েক দিনের মধ্যে ইসরায়েল সফর করবেন বলে জানিয়েছেন ভ্যান্স। কিন্তু কোন কর্মকর্তা এই সফরে যাবেন, তা তিনি নিশ্চিত করেননি। তবে ভ্যান্স বলেন, ‘আমিও হতে পারি।’
আরও পড়ুনহামাসকে ট্রাম্পের নতুন হুমকি১৭ অক্টোবর ২০২৫.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: হ ম স র অবস থ ন ইসর য় ল ক র যকর গতক ল
এছাড়াও পড়ুন:
জানুয়ারিতে নির্বাচন দাবি গণঅধিকার পরিষদের
পরিস্থিতি ঘোলাটে করে দেশে আরেকটি ১/১১ সৃষ্টির চক্রান্ত শুরু হয়েছে অভিযোগ করে জাতীয় নির্বাচন আগামী জানুয়ারিতে আয়োজনের দাবি জানিয়েছে নুরুল হকের গণঅধিকার পরিষদ।
সোমবার বিজয়নগরে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান দলটির সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান।
দেশের চলমান পরিস্থিতি নিয়ে জরুরি এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে গণঅধিকার পরিষদ।
জাতীয় জুলাই সনদ স্বাক্ষরিত হয়েছে বিধায় দ্রুতসময়ের মধ্যে জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারি করে আইনগত ভিত্তি প্রদানের দাবি জানিয়ে রাশেদ খাঁন বলেন, ‘‘আমরা লক্ষ্য করছি, নির্বাচন বানচালের জন্য সাম্প্রতিককালে অগ্নিসংযোগে লিপ্ত হয়েছে পতিত স্বৈরাচারের দোসররা। এভাবে পরিস্থিতি ঘোলাটে করে আরেকটি ১/১১ সৃষ্টির চক্রান্ত শুরু হয়েছে। নির্বাচন যতো দেরিতে হবে, ষড়যন্ত্র ততো বাড়বে। সুতরাং আগামী জানুয়ারি মাসে জাতীয় নির্বাচন আয়োজন করার আহ্বান করছি।’’
সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য পরিবেশ তৈরি খুবই গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য করে দলটির সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘‘সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরি করার জন্য ১৪, ১৮ ও ২৪ সালের নির্বাচনের সাথে জড়িত গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তা, ডিসি, এসপি, ইউএনও ও নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তাদের শাস্তির আওতায় আনতে হবে। বর্তমান প্রশাসনকে পরিবর্তন না করলে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভবপর নয়।’’
‘‘একইসঙ্গে নির্বাচন কমিশনকে পরিষ্কার করতে হবে, আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগের কেউ নির্বাচনে ডামি মামি স্বতন্ত্র, অন্যদলের হয়ে কোনোভাবেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবে না। এবং জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলও নির্বাচন করতে পারবে না। আওয়ামী লীগের মতো তাদেরও সাংগঠনিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ করতে হবে,’’ দাবি করেন তিনি।
শিক্ষকদের দাবি মেনে নেয়ার আহ্বান জানিয়ে রাশেদ খাঁন বলেন, ‘‘আমরা মনে করি, এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের আন্দোলন অত্যন্ত যৌক্তিক আন্দোলন। শিক্ষকদের দাবি মেনে না নিলে তাদের সাথে নিয়ে যমুনা-সচিবালয় ঘেরাও করা হবে। শিক্ষকদের কষ্ট দিয়ে কোন উপদেষ্টা গদিতে থাকতে পারবে না না। সুতরাং কালক্ষেপণ না করে শিক্ষকদের দাবি মেনে নিন।’’
লিখিত বক্তব্যে গণঅধিকার পরিষদের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও মুখপাত্র হাসান আল মামুন বলেন, ‘‘দেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় গণঅধিকার পরিষদ গভীর উদ্বিগ্ন। বিমান বন্দরে অগ্নিকাণ্ডসহ দেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা খতিয়ে দেখার আহ্বান জানায় গণঅধিকার পরিষদ।’’
গণঅধিকার পরিষদ মনে করে পতিত স্বৈরাচার দেশ অস্থিতিশীল করতে এ সকল অগ্নিকাণ্ড ঘটাতে পারে। তাই সরকারের বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থাকে বিষয়টি তদন্ত এবং বিমানবন্দর, স্থল বন্দরসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় নিরাপত্তা জোরদারের আহ্বান জানিয়েছে দলটি।
এ ছাড়া ১৭ অক্টোবর জুলাই সনদ স্বাক্ষরিত হয়েছে, দ্রুত এর বাস্তবতান চেয়ে হাসান আল মামুন বলেন, ‘‘আমরা শুরু থেকেই এই সরকারকে একনিষ্ঠভাবে আকুণ্ঠ সমর্থন দিয়ে আসছি। কিন্তু দুঃখের সাথে বলতে হয়, সরকার সেই আশার প্রতিফলন দেখাতে পারেনি। আইনশৃঙ্খলাসহ দেশের সার্বিক পরিস্থিতি অবনতির দিকেই যাচ্ছে।’’
‘‘বিগত শেখ হাসিনা সরকার এ দেশের মানুষের ভোটাধিকার হরণ করেছিল। আমরা দেশে আর কোনো বিশৃঙ্খলা দেখতে চাই না। তাই আগামী জানুয়ারি মাসেই জাতীয় নির্বাচন দিয়ে, নির্বাচিত সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের আহ্বান জানাই,’’ বলেন দলের এই সিনিয়র নেতা।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন গণঅধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদ সদস্য আবু হানিফ, শহিদুল ইসলাম ফাহিম, এডভোকেট সরকার নুরে এরশাদ সিদ্দিকী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জিলু খান, ময়মনসিংহ বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম আজহার, ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক রিদওয়ান উল্লাহ খান প্রমুখ।
ঢাকা/নঈমুদ্দীন//