মিজানুর রহমান আজহারীর কুরআন মাহফিল উপলক্ষে লালমনিরহাটের মানুষের মাঝে যেন ঈদের আমেজ বিরাজ করছে। আগামীকাল জেলার ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী মাঠে দেশের জনপ্রিয় বক্তা মিজানুর রহমান আজহারী উপস্থিত থেকে তাফসির পেশ করবেন। তবে তার আগের দিন থেকেই জনতার ঢল নেমেছে সমাবেশস্থলে।

মাহফিলের একদিন আগে শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) সকাল থেকেই প্যান্ডেলে জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে লোকজন আসতে শুরু করে। রাত নাগাদ আরও বাড়ে জনতার জোয়ার। 

আগামীকাল শনিবার (১৮ জানুয়ারি) ইসলামিক সোসাইটি লালমনিরহাটের আয়োজনে আয়োজিত মাহফিলে উপস্থিত থাকবেন এই সময়ের দেশের জনপ্রিয় বক্তা মিজানুর রহমান আজহারী। শুক্রবার থেকেই হাজার হাজার মুসুল্লি মাহফিল মাঠে সমবেত হচ্ছেন। 

শুক্রবার মিজানুর রহমান আজহারী তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে তিনি বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। 

তিনি তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে লিখেছেন, ‘‘রংপুর বিভাগের বন্ধুরা, ইনশাআল্লাহ আগামীকাল শনিবার থাকছি লালমনিরহাটের সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে, ইসলামিক সোসাইটি লালমনিরহাটের উদ্যোগে আয়োজিত তাফসিরুল কোরআন মাহফিলে। আসুন, দেখা হবে, কথা হবে।”

মাহফিলে কমপক্ষে ১০ লাখের অধিক মানুষের সমাগম হতে পারে বলে ধারণা করছেন মাহফিল আয়োজকরা। লাখ লাখ লোকের সমাগমের কথা চিন্তা করে ইতোমধ্যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা জনভোগান্তি এড়াতে ও মাহফিলে আগত মুসল্লিদের নিরাপত্তার বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছেন।

সরেজমিনে লালমনিরহাটের সোহরাওয়ার্দী মাঠে গেলে দেখা যায়, মুসুল্লিরা বেডিং পত্র নিয়ে মিজানুর রহমান আজহারীর তাফসীর শোনার জন্য একদিন আগেই মাঠে এসে জমায়েত হচ্ছেন। স্টেজের সামনে জায়গা পেতে এবং সামনে থেকে তাফসীর শোনার জন্য মুসুল্লিরা বিছানা পেতে জায়গা দখল করছেন। 

জামায়াতে ইসলামীর লালমনিরহাট জেলা আমির ফিরোজ হায়দার লাভলু জানান, মাহফিলে ১০ লক্ষেরও অধিক মুসুল্লির সমাগম হবে ইনশা আল্লাহ। বিশৃঙ্খলা এবং জনভোগান্তি এড়াতে আমাদের স্বেচ্ছাসেবক সদস্যরা নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করছে। পাশাপাশি পুলিশ প্রশাসনের সদস্যরাও গুরুত্বসহকারে দায়িত্ব পালন করছেন। ইনশাআল্লাহ সব ঠিক থাকলে আগামীকাল শনিবার লালমনিরহাটে ইতিহাস সৃষ্টি হবে বলেও জানান তিনি।

ঢাকা/আমিরুল/এস

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর করছ ন

এছাড়াও পড়ুন:

পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন

চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।

লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্‌যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।

চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।

লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।

প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।

লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।

লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’

তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্‌যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?

সম্পর্কিত নিবন্ধ