পরিস্থিতি ঘোলাটে করে দেশে আরেকটি ১/১১ সৃষ্টির চক্রান্ত শুরু হয়েছে অভিযোগ করে জাতীয় নির্বাচন আগামী জানুয়ারিতে আয়োজনের দাবি জানিয়েছে নুরুল হকের গণঅধিকার পরিষদ।

সোমবার বিজয়নগরে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান দলটির সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান।

দেশের চলমান পরিস্থিতি নিয়ে জরুরি এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে গণঅধিকার পরিষদ। 

জাতীয় জুলাই সনদ স্বাক্ষরিত হয়েছে বিধায় দ্রুতসময়ের মধ্যে জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারি করে আইনগত ভিত্তি প্রদানের দাবি জানিয়ে রাশেদ খাঁন বলেন, ‘‘আমরা লক্ষ্য করছি, নির্বাচন বানচালের জন্য সাম্প্রতিককালে অগ্নিসংযোগে লিপ্ত হয়েছে পতিত স্বৈরাচারের দোসররা। এভাবে পরিস্থিতি ঘোলাটে করে আরেকটি ১/১১ সৃষ্টির চক্রান্ত শুরু হয়েছে। নির্বাচন যতো দেরিতে হবে, ষড়যন্ত্র ততো বাড়বে। সুতরাং আগামী জানুয়ারি মাসে জাতীয় নির্বাচন আয়োজন করার আহ্বান করছি।’’

সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য পরিবেশ তৈরি খুবই গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য করে দলটির সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘‘সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরি করার জন্য ১৪, ১৮ ও ২৪ সালের নির্বাচনের সাথে জড়িত গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তা, ডিসি, এসপি, ইউএনও ও নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তাদের শাস্তির আওতায় আনতে হবে। বর্তমান প্রশাসনকে পরিবর্তন না করলে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভবপর নয়।’’ 

‘‘একইসঙ্গে নির্বাচন কমিশনকে পরিষ্কার করতে হবে, আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগের কেউ নির্বাচনে ডামি মামি স্বতন্ত্র, অন্যদলের হয়ে কোনোভাবেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবে না। এবং জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলও নির্বাচন করতে পারবে না। আওয়ামী লীগের মতো তাদেরও সাংগঠনিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ করতে হবে,’’ দাবি করেন তিনি।

শিক্ষকদের দাবি মেনে নেয়ার আহ্বান জানিয়ে রাশেদ খাঁন বলেন, ‘‘আমরা মনে করি, এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের আন্দোলন অত্যন্ত যৌক্তিক আন্দোলন। শিক্ষকদের দাবি মেনে না নিলে তাদের সাথে নিয়ে যমুনা-সচিবালয় ঘেরাও করা হবে। শিক্ষকদের কষ্ট দিয়ে কোন উপদেষ্টা গদিতে থাকতে পারবে না না। সুতরাং কালক্ষেপণ না করে শিক্ষকদের দাবি মেনে নিন।’’

লিখিত বক্তব্যে গণঅধিকার পরিষদের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও মুখপাত্র হাসান আল মামুন বলেন, ‘‘দেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় গণঅধিকার পরিষদ গভীর উদ্বিগ্ন। বিমান বন্দরে অগ্নিকাণ্ডসহ দেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা খতিয়ে দেখার আহ্বান জানায় গণঅধিকার পরিষদ।’’

গণঅধিকার পরিষদ মনে করে পতিত স্বৈরাচার দেশ অস্থিতিশীল করতে এ সকল অগ্নিকাণ্ড ঘটাতে পারে। তাই সরকারের বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থাকে বিষয়টি তদন্ত এবং বিমানবন্দর, স্থল বন্দরসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় নিরাপত্তা জোরদারের আহ্বান জানিয়েছে দলটি।  

এ ছাড়া ১৭ অক্টোবর জুলাই সনদ স্বাক্ষরিত হয়েছে, দ্রুত এর  বাস্তবতান চেয়ে হাসান আল মামুন বলেন, ‘‘আমরা শুরু থেকেই এই সরকারকে একনিষ্ঠভাবে আকুণ্ঠ সমর্থন দিয়ে আসছি। কিন্তু দুঃখের সাথে বলতে হয়, সরকার সেই আশার প্রতিফলন দেখাতে পারেনি। আইনশৃঙ্খলাসহ দেশের সার্বিক পরিস্থিতি অবনতির দিকেই যাচ্ছে।’’

‘‘বিগত শেখ হাসিনা সরকার এ দেশের মানুষের ভোটাধিকার হরণ করেছিল। আমরা দেশে আর কোনো বিশৃঙ্খলা দেখতে চাই না। তাই আগামী জানুয়ারি মাসেই জাতীয় নির্বাচন দিয়ে, নির্বাচিত সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের আহ্বান জানাই,’’ বলেন দলের এই সিনিয়র নেতা। 

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন গণঅধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদ সদস্য আবু হানিফ, শহিদুল ইসলাম ফাহিম, এডভোকেট সরকার নুরে এরশাদ সিদ্দিকী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জিলু খান, ময়মনসিংহ বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম আজহার, ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক রিদওয়ান উল্লাহ খান প্রমুখ। 

ঢাকা/নঈমুদ্দীন// 

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র আহ ব ন জ ন শ ক ষকদ র পর স থ ত ন বল ন সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

ভোটে আওয়ামী দোসরদের সুযোগ দিলে নির্বাচন কমিশন ঘেরাও

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের দোসর ও ডামি প্রার্থীরা অংশ নিলে নির্বাচন কমিশন ঘেরাও করা হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন গণঅধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান। 

তিনি বলেন, ‍“ভারতের ইশারায় টাকা দিয়ে আওয়ামী লীগের লোকজন স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে ভোটে অংশ নিলে জনগণ তাদের রুখে দেবে। অন্তর্বর্তী সরকার নমনীয়তা দেখালে প্রয়োজনে সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।”

বুধবার (৩ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় ঝিনাইদহ সদর উপজেলার হাটগোপালপুর বাজারে পথসভা শেষে গণমাধ্যমকে তিনি এসব কথা বলেন।

রাশেদ খান বলেন, “জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আমার ভাই আবু সাইদ, মুগ্ধ, ওয়াসিমরা শহীদ হয়েছেন। দুই হাজার ভাই বোন জীবন দিয়েছেন। শিশুরাও হাসিনার গুলি থেকে রেহাই পায়নি। কাজেই, সেই আওয়ামী লীগের লোকজন আগামী নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না। আওয়ামী লীগ ও তাদের দোসরদের বিচার না হওয়া পর্যন্ত তাদের নির্বাচনে অংশ নিতে দেওয়া হবে না।”

তিনি বলেন, “যেসব আওয়ামী লীগের লোকজন মানুষের সঙ্গে জুলুম করেনি, অন্যায় করেনি, অত্যাচার করেনি, তাদের সঙ্গে আমরাও কোনো জুলুম করব না। রিফাইন্ড আওয়ামী লীগের নামে ডামি এমপি ও আওয়ামী দোসরদের বাংলাদেশের রাজনীতিতে মেনে নেওয়া হবে না।”

ভোটারদের উদ্দেশে রাশেদ খান বলেন, “আগামী নির্বাচন হবে সচ্ছ ও সুষ্ঠুভাবে। ভোটের মাঠে টাকা ছিটিয়ে কোনো লাভ হবে না। আওয়ামী লীগের ডামি এমপিরা টাকার জোরে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার চেষ্টা করবে। এই ডামি আওয়ামী দোসররা হাসিনার ফ্যাসিবাদকে টিকিয়ে রেখেছিল।”

বিএনপি চেয়ারপারসনের সুস্থতা কামনা করে তিনি বলেন, “বেগম খালেদা জিয়া অসুস্থ। আমরা তার জন্য দোয়া চাই। আমরা দোয়া করি, তিনি সুস্থ হয়ে বাংলাদেশের হাল ধরবেন। বেগম খালেদা জিয়া সার্বভৌম বাংলাদেশের প্রতীক। তিনি গণতন্ত্রের প্রতীক।”

এর আগে, বিকেল ৫টায় ঝিনাইদহ সদর উপজেলার হাটগোপালপুর বাজারে পথসভায় বক্তব্য রাখেন রাশেদ খান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন- জেলা গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি মো. সাখাওয়াত হোসেন, সাধারণ সম্পাদক জাহিদ ইকবাল রাজন, যুব অধিকার পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক মিশন আলী।

ঢাকা/শাহরিয়ার/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ‘হাসিনার ষড়যন্ত্রে খালেদা জিয়া বারবার হেনস্থার শিকার হয়েছেন’
  • ভোটে আওয়ামী দোসরদের সুযোগ দিলে নির্বাচন কমিশন ঘেরাও