নাঙ্গলকোট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্রধান ভবনটি ৭ বছর ধরে ঝুঁকিপূর্ণ। অথচ এ ভবনেই চলছে স্বাস্থ্যসেবা। যে কোনো মুহূর্তে ভবনটি ধসে রোগীদের প্রাণহানির আশঙ্কা রয়েছে।
ভবনটির প্রবেশ মুখ থেকে শুরু করে ভেতরের প্রায় সব তলায় পিলারে ফাটল ধরেছে। ইট-সুরকি খসে পড়ে রড বেরিয়ে গেছে। ভবনের বিভিন্ন কক্ষের ছাদের পলেস্তারা খসে পড়েছে। এর মধ্যেই রোগীদের চিকিৎসাসেবা দেওয়া হচ্ছে। এ ভবনে রয়েছে জরুরি বিভাগ, আন্তঃবিভাগ। এ ছাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডরমেটরিসহ ১০টি আবাসিক ভবন ও প্রশিক্ষণ ভবনের দ্বিতীয় তলায় দুটি কক্ষ জরাজীর্ণ অবস্থায় রয়েছে। স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের একটি টিম গত মাসে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনটি পরিদর্শন করেছে। ভবনটি ভেঙে নতুন করে নির্মাণের জন্য মন্ত্রণালয়ে সুপারিশ করেছেন বলে জানা যায়। বর্তমানে নতুন ভবন নির্মাণের বিষয়টি মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করছে 
বলে জানান কুমিল্লা বিভাগ স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী (এইচইডি) মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ।
গত বৃহস্পতিবার ভবনটি ঘুরে দেখা গেছে, প্রবেশ মুখে হাতের ডান পাশের মূল পিলারের ইট-সুরকি সরে রড বেরিয়ে আছে। ভেতরে ঢুকতেই আরও দুটি পিলারের ইট-সুরকি খসে পড়ে রড বের হয়ে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় থাকতে দেখা যায়। দোতলার বিভিন্ন স্থানে ইট-সুরকি খসে পড়ে পিলারে ফাটল সৃষ্টিসহ শিশু ওয়ার্ডের বারান্দার ছাদের 
পলেস্তারা খসে পড়ে ফাটল সৃষ্টি হয়েছে। ল্যাব, ফার্মেসিসহ প্রশাসনিক সব কার্যক্রম ঝুঁকিপূর্ণভাবে পরিচালিত হচ্ছে।
জানা গেছে, ১৯৯৬ সালে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্রধান ভবনসহ আবাসিক ভবন উদ্বোধন করা হয়। এতে নাঙ্গলকোটের জনগণের স্বাস্থ্যসেবার পথ সুগম হয়। বিভিন্ন সময় 
মেরামতের মাধ্যমে কোনোভাবে ভবনটি ব্যবহারের উপযোগী রাখা হয়।
হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা পেরিয়া ইউনিয়ন চাঁন্দপুর গ্রামের আনোয়ার হোসেন বলেন, হাসপাতালের প্রবেশ মুখ ও ভেতরের বিভিন্ন অংশে ফাটল ধরেছে। ভবনটি খুবই ঝুঁকিপূর্ণ 
অবস্থায় রয়েছে। যে কোনো সময় ধসে পড়ে প্রাণহানি ঘটতে পারে।
স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর কুমিল্লা বিভাগের সহকারী প্রকৌশলী সাইফুল ইসলাম জানান, ভবনটি খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। বিষয়টি স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট বিভাগে জানানো হয়েছে। যার পরিপ্রেক্ষিতে গত ডিসেম্বরে মন্ত্রণালয়ের একটি ডিজাইন টিম স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি পরিদর্শন করে। তারা মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট বিভাগে নতুন ভবন নির্মাণের সুপারিশসহ প্রতিবেদন দিয়েছেন বলে জানা গেছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা বেলায়েত হোসেন বলেন, স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের একটি টিম ভবনটি পরিদর্শন করেছে। তারা বলতে পারবেন ভবনটি কতটা ঝুঁকিপূর্ণ।
কুমিল্লা বিভাগীয় স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ জানান, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভবন ঝুঁকিপূর্ণ বিষয়ে স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন দেওয়ার পর একটি টিম সরেজমিন ভবনটি পরিদর্শন করে মন্ত্রণালয় সুপারিশ করেছে। নতুন ভবন নির্মাণের বিষয়টি মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করছে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: স ব স থ য কমপ ল ক স ন ভবন উপজ ল র একট

এছাড়াও পড়ুন:

দশমিনায় ভবন নির্মাণের ছয় মাসের মধ্যে খসে পড়ছে পলেস্তারা

পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলার একটি মাদ্রাসার চারতলা ভবন নির্মাণের ছয় মাস যেতে না যেতেই পলেস্তারা খসে পড়ছে। উপজেলার মধ্য বগুড়া নূরিয়া দাখিল মাদ্রাসায় এ ঘটনা ঘটেছে। ভবনটি নির্মাণে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে।

জেলা শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯-২০ অর্থবছরে দরপত্রের মাধ্যমে ৩ কোটি ১৯ লাখ টাকা ব্যয়ে ভবনটির নির্মাণকাজের দায়িত্ব পায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আবুল কালাম আজাদ। ২০২০ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি ভবনটির নির্মাণকাজ শুরু হয়। চলতি বছরের জানুয়ারিতে ওই ভবনে পাঠদান কার্যক্রম শুরু হয়।

সরেজমিনে দেখা গেছে, চারপাশের দেয়ালের পলেস্তারা খসে পড়ছে। সিমেন্টের পরিমাণ কম ও নিম্নমানের বালু ব্যবহার করার অভিযোগ করেন স্থানীয় লোকজন। নির্মাণকাজের সময় এলাকাবাসী প্রতিবাদ করলেও ঠিকাদার তাঁদের কথায় কর্ণপাত করেননি।

মধ্য বগুড়া নূরিয়া দাখিল মাদ্রাসার সুপারিনটেনডেন্ট মো. মিজানুর রহমান বলেন, চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে ভবনটিতে পাঠদান শুরু হয়। এপ্রিল মাসের শুরুর দিকে দেয়ালের পলেস্তারা খসে পড়তে শুরু করে। যেভাবে পলেস্তারা খসে পড়ছে, তাতে মনে হচ্ছে ভবনটি ২০ বছর আগে নির্মিত হয়েছে। বিষয়টি তিনি সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে জানিয়েছেন।

এ বিষয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি মো. আজমের মুঠোফোন নম্বরে একাধিকবার কল করলেও বন্ধ থাকায় তাঁর বক্তব্য পাওয়া যায়নি। জেলা শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মোশফিকুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, বিষয়টি সম্পর্কে তিনি অবগত। এ কারণে ঠিকাদারের ২৭ লাখ টাকা পরিশোধ করা হয়নি। দ্রুত সময়ের মধ্যে ঠিকাদারকে ভবনটির পলেস্তারার কাজ আবার করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • দশমিনায় ভবন নির্মাণের ছয় মাসের মধ্যে খসে পড়ছে পলেস্তারা