‘রুগ্ণ ভবনে’ ঝুঁকিপূর্ণ স্বাস্থ্যসেবা
Published: 17th, January 2025 GMT
নাঙ্গলকোট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্রধান ভবনটি ৭ বছর ধরে ঝুঁকিপূর্ণ। অথচ এ ভবনেই চলছে স্বাস্থ্যসেবা। যে কোনো মুহূর্তে ভবনটি ধসে রোগীদের প্রাণহানির আশঙ্কা রয়েছে।
ভবনটির প্রবেশ মুখ থেকে শুরু করে ভেতরের প্রায় সব তলায় পিলারে ফাটল ধরেছে। ইট-সুরকি খসে পড়ে রড বেরিয়ে গেছে। ভবনের বিভিন্ন কক্ষের ছাদের পলেস্তারা খসে পড়েছে। এর মধ্যেই রোগীদের চিকিৎসাসেবা দেওয়া হচ্ছে। এ ভবনে রয়েছে জরুরি বিভাগ, আন্তঃবিভাগ। এ ছাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডরমেটরিসহ ১০টি আবাসিক ভবন ও প্রশিক্ষণ ভবনের দ্বিতীয় তলায় দুটি কক্ষ জরাজীর্ণ অবস্থায় রয়েছে। স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের একটি টিম গত মাসে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনটি পরিদর্শন করেছে। ভবনটি ভেঙে নতুন করে নির্মাণের জন্য মন্ত্রণালয়ে সুপারিশ করেছেন বলে জানা যায়। বর্তমানে নতুন ভবন নির্মাণের বিষয়টি মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করছে
বলে জানান কুমিল্লা বিভাগ স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী (এইচইডি) মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ।
গত বৃহস্পতিবার ভবনটি ঘুরে দেখা গেছে, প্রবেশ মুখে হাতের ডান পাশের মূল পিলারের ইট-সুরকি সরে রড বেরিয়ে আছে। ভেতরে ঢুকতেই আরও দুটি পিলারের ইট-সুরকি খসে পড়ে রড বের হয়ে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় থাকতে দেখা যায়। দোতলার বিভিন্ন স্থানে ইট-সুরকি খসে পড়ে পিলারে ফাটল সৃষ্টিসহ শিশু ওয়ার্ডের বারান্দার ছাদের
পলেস্তারা খসে পড়ে ফাটল সৃষ্টি হয়েছে। ল্যাব, ফার্মেসিসহ প্রশাসনিক সব কার্যক্রম ঝুঁকিপূর্ণভাবে পরিচালিত হচ্ছে।
জানা গেছে, ১৯৯৬ সালে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্রধান ভবনসহ আবাসিক ভবন উদ্বোধন করা হয়। এতে নাঙ্গলকোটের জনগণের স্বাস্থ্যসেবার পথ সুগম হয়। বিভিন্ন সময়
মেরামতের মাধ্যমে কোনোভাবে ভবনটি ব্যবহারের উপযোগী রাখা হয়।
হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা পেরিয়া ইউনিয়ন চাঁন্দপুর গ্রামের আনোয়ার হোসেন বলেন, হাসপাতালের প্রবেশ মুখ ও ভেতরের বিভিন্ন অংশে ফাটল ধরেছে। ভবনটি খুবই ঝুঁকিপূর্ণ
অবস্থায় রয়েছে। যে কোনো সময় ধসে পড়ে প্রাণহানি ঘটতে পারে।
স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর কুমিল্লা বিভাগের সহকারী প্রকৌশলী সাইফুল ইসলাম জানান, ভবনটি খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। বিষয়টি স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট বিভাগে জানানো হয়েছে। যার পরিপ্রেক্ষিতে গত ডিসেম্বরে মন্ত্রণালয়ের একটি ডিজাইন টিম স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি পরিদর্শন করে। তারা মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট বিভাগে নতুন ভবন নির্মাণের সুপারিশসহ প্রতিবেদন দিয়েছেন বলে জানা গেছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা বেলায়েত হোসেন বলেন, স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের একটি টিম ভবনটি পরিদর্শন করেছে। তারা বলতে পারবেন ভবনটি কতটা ঝুঁকিপূর্ণ।
কুমিল্লা বিভাগীয় স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ জানান, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভবন ঝুঁকিপূর্ণ বিষয়ে স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন দেওয়ার পর একটি টিম সরেজমিন ভবনটি পরিদর্শন করে মন্ত্রণালয় সুপারিশ করেছে। নতুন ভবন নির্মাণের বিষয়টি মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করছে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: স ব স থ য কমপ ল ক স ন ভবন উপজ ল র একট
এছাড়াও পড়ুন:
শরীয়তপুরের সেই বিদ্যালয়টি অবশেষে ভেঙেই পড়ল পদ্মা নদীতে
শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলার কাচিকাটা ইউনিয়নের ১৫১ নম্বর উত্তর মাথাভাঙা মান্নান সরকার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবনটি পদ্মা নদীতে ভেঙে পড়েছে। বিলীন হয়ে গেছে বিদ্যালয়ের ৩০ শতাংশ জমি। বিদ্যালয়ের একমাত্র ভবন নদীতে বিলীন হওয়ায় পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে। সোমবার বিকেলে ভবনটির একটি অংশ নদীতে ভেঙে পড়ে।
ভেদরগঞ্জ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্র জানায়, শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলার কাচিকাটা ইউনিয়ন পদ্মা নদীর চরে অবস্থিত। ইউনিয়নটির একদিকে মুন্সিগঞ্জ ও আরেক দিকে চাঁদপুর জেলা। ওই এলাকাটির চার দিক দিয়ে পদ্মা নদী প্রবাহিত হয়েছে। ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের উত্তর মাথাভাঙা চরবানিয়াল গ্রামে ৪০০ পরিবারের বসবাস। ওই গ্রামের বাসিন্দারা নদীতে মাছ শিকার ও কৃষিকাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন। তাঁদের মধ্যে পড়ালেখার আগ্রহ কম। এ ছাড়া গ্রামটিতে কোনো প্রাথমিক বিদ্যালয় ছিল না। ২০১৭ সালে ওই গ্রামে একটি বিদ্যালয় স্থাপন করে সরকার। পরের বছর ২০১৮ সাল থেকে বিদ্যালয়ে পাঠদান কার্যক্রম চালু করা হয়। একতলা একটি পাকা ভবনের চারটি কক্ষে পাঠদান কার্যক্রম চলছিল। সোমবার বিকেলে বিদ্যালয় ভবনের একটি অংশ নদীতে ভেঙে পড়েছে।
আরও পড়ুনযেকোনো সময় পদ্মায় বিলীন হতে পারে শরীয়তপুরের বিদ্যালয়টি১৯ ঘণ্টা আগেবিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অভিভাবক ও শিক্ষকেরা জানান, ২০২৩ সালে বিদ্যালয়টি পদ্মার ভাঙনের ঝুঁকিতে পড়ে। তখন পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সেখানে বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন ঠেকানোর চেষ্টা করে। এ বছরের জুন মাসে সেই বালুর বস্তা নদীতে বিলীন হয়ে যায়। তখন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ভবনটি রক্ষা করার জন্য ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানিয়ে জেলা প্রশাসক, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা, ভেদরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে চিঠি দেন। কিন্তু স্থানীয় প্রশাসন ভাঙনের কবল থেকে বিদ্যালয় ভবনটি রক্ষার কোনো উদ্যোগ নেয়নি। বিদ্যালয় ভবনটি ভাঙনের মুখে পড়লে ৪ সেপ্টেম্বরের থেকে পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হয়। রোববার বিদ্যালয়ের আসবাব ও প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সরিয়ে নেওয়া হয়।
শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলার পদ্মার চরাঞ্চলে উত্তর মাথঅভাঙা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পদ্মা নদীতে বিলীন হয়ে গেছে