লিটনকে দুয়ো, ঢাল হয়ে পেশাদারিত্বের পরিচয় দিল ঢাকা
Published: 18th, January 2025 GMT
চলতি বিপিএলে দল হিসেবে ভালো করছে না ঢাকা ক্যাপিটালস। ৮ ম্যাচে মাত্র ১ জয় দলটির। ব্যাট হাতে ভালো করছেন না লিটন দাসও। দুটি ম্যাচেই কেবল ভালো খেলেছেন তিনি। যার একটিতে ১২৫ রানের ইনিংস খেলেছেন।
সিলেট পর্বে ওই ইনিংসের পর চট্টগ্রাম পর্বে ব্যাট হাতে আবারো ব্যর্থ হন লিটন। এরপরই গ্যালারি থেকে ‘ভুয়া, ভুয়া’ স্লোগান দেওয়া হয় লিটনকে উদ্দেশ্য করে। ডানহাতি টপ অর্ডার ব্যাটার কেবল ওই দর্শকদের দিকে নির্বাক তাকিয়ে ছিলেন।
ওই ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়েছে ঢাকা ক্যাপিটালস। লিটন দাসের পাশে দাঁড়িয়ে পেশাদারিত্বের পরিচয় দিয়েছে। দল না জিতলেও ফ্র্যাঞ্চাইজিটি সবচেয়ে বেশি পারিশ্রমিক পরিশোধ করেছে। লিটন অফ ফর্মে থাকায় অসন্তুষ্ট হতে পারত দলটি। কিন্তু তারা সেটা না করে লিটনের পাশে দাঁড়িয়েছে।
ঢাকা ক্যাপিটালস তাদের ফেসবুক পেজে এক পোস্টে লিখেছে, ‘আপনি হয়তো একটি ঝাপসা ভিডিওতে কাউকে দুয়োধ্বনি শুনতে দেখছেন, আমরা দেখছি একজন জাতীয় নায়কের বিপিএল ইতিহাসের দ্রুততম শতক হাঁকিয়ে রেকর্ড-গড়া পার্টনারশিপের অংশ হয়ে ওঠা।’
আপনি সমালোচনা দেখেন, আমরা দেখি একজন তারকা ব্যাটারের দেশের হয়ে সবচেয়ে বড় ওয়ানডে ইনিংস খেলা, এবং দেশের হয়ে টেস্ট র্যাংকিংয়ে ব্যাটার হিসেবে সর্বোচ্চ স্থানে আসা। আপনি বাধা-বিপত্তি দেখেন, আমরা দেখি ঐতিহাসিক কিছু মুহূর্তের সৃষ্টি। লিটন, আপনি আমাদের ভালবাসার প্রতীক। আপনি আমাদের গৌরব।’
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
সব্যসাচী কাজী মোতাহার হোসেন বিজ্ঞান ও শিল্পের মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন
প্রথিতযশা অধ্যাপক ও পরিসংখ্যানবিদ কাজী মোতাহার হোসেন ছিলেন একজন সব্যসাচী মানুষ। তিনি নিজের কাজের মাধ্যমে বিজ্ঞান ও শিল্পের মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন। তাঁর ঐতিহ্য শিক্ষার্থীদের ধারণ করতে হবে।
জ্ঞানতাপস কাজী মোতাহার হোসেনের ১২৮তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আজ বুধবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তারা এ কথাগুলো বলেন।
অনুষ্ঠানে স্মারক বক্তৃতা, বৃত্তি, পদক, পুরস্কার ও সনদ দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানের যৌথ আয়োজক কাজী মোতাহার হোসেন ফাউন্ডেশন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগ এবং পরিসংখ্যান গবেষণা ও শিক্ষণ ইনস্টিটিউট।
অনুষ্ঠানে ‘যুগলের বন্ধন: কাজী নজরুল ইসলাম-কাজী মোতাহার হোসেন’ শীর্ষক স্মারক বক্তৃতা দেন অধ্যাপক ভীষ্মদেব চৌধুরী। তিনি দুই বন্ধুর সম্পর্কের রসায়নের নানা দিক তুলে ধরেন।
প্রধান অতিথি বক্তব্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়াজ আহমেদ খান বলেন, এই অনুষ্ঠানের দুটো প্রাপ্তি আছে। প্রথমত, মানুষের অবদান ও মেধাকে স্বীকার করা হচ্ছে। দ্বিতীয়ত, এই উপমহাদেশের একজন প্রথিতযশা সব্যসাচী মানুষের ঋণ স্বীকার করা হচ্ছে।
কাজী মোতাহার হোসেন যেকোনো বিবেচনায় একজন দার্শনিক বলে উল্লেখ করেন নিয়াজ আহমেদ খান। তিনি বলেন, কাজী মোতাহার হোসেন বিজ্ঞান ও শিল্পের মধ্যে মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন। প্রথম সারির পরিসংখ্যানবিদ, বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা ছাড়াও তিনি অনেকগুলো সামাজিক আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছেন, প্রভাব বিস্তার করেছেন। একজন মানুষের ছোট জীবদ্দশায় এত গুণ সন্নিবেশিত করা কঠিন। কিন্তু তিনি তা করে দেখিয়েছেন।
সবাইকে নিয়ে চলা, প্রতিষ্ঠান তৈরি করা, নিজের জগতের বাইরে নানা কিছুতে হাত বাড়িয়ে দেওয়ার মতো ঐতিহ্য কাজী মোতাহার হোসেন করে গেছেন বলে উল্লেখ করেন নিয়াজ আহমেদ খান। তিনি বলেন, তাঁর সম্মানে যাঁরা আজ স্বীকৃতি পেলেন, তাঁরা এই ঐতিহ্যকে ধারণ করবেন। এটা (বিশ্ববিদ্যালয়) যে সামাজিক প্রতিষ্ঠান, সে বার্তা দেবেন। যেসব শিক্ষার্থী সম্মাননা পাচ্ছেন, তাঁদের ছোট প্রোফাইল তৈরি করে ওয়েবসাইটে তুলে দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
কাজী মোতাহার হোসেন ফাউন্ডেশনের সভাপতি অধ্যাপক আবদুল মাজেদ বলেন, কাজী মোতাহার হোসেন একজন সব্যসাচী মানুষ ছিলেন। বিজ্ঞানের এমন কোনো দিক নেই, যেখানে তাঁর পদচারণা ছিল না। তিনি দাবা খুব পছন্দ করতেন। দাবা খেলার কথা শুনলে তিনি ছুটে যেতেন। কাজী মোতাহার হোসেনকে নিয়ে তাঁর শোনা নানা গল্প তিনি স্মৃতিচারণা করেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক জাফর আহমেদ খান বলেন, কাজী মোতাহার হোসেন পরিসংখ্যান চর্চার পথিকৃৎ ছিলেন। বিজ্ঞান, দাবাচর্চারও পথিকৃৎ ছিলেন। এমন কোনো পুরস্কার নেই যে, তিনি পাননি। তাঁর দেখানো পথে যেন শিক্ষার্থীরা নিজেদের আলোকিত করতে পারেন।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন কাজী মোতাহার হোসেন ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক কাজী রওনাক হোসেন। এই আয়োজনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের বিভিন্ন বর্ষের সেরা শিক্ষার্থীদের বই, নগদ অর্থ ও সনদ তুলে দেওয়া হয়। এ ছাড়া কাজী মোতাহার হোসেনকে নিয়ে আয়োজিত রচনা প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়।