রাজধানীর এলিফ্যান্ট রোডে ইসিএস কম্পিউটার সিটির (মাল্টিপ্ল্যান সেন্টার) সামনে ব্যবসায়ীর ওপর হামলার ঘটনায় সানজিদুল হাসান ইমন জড়িত নন বলে দাবি করেছেন তার মা ডা. সুলাতানা জাহান।

শনিবার সেগুনবাগিচায় বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (ক্র্যাব) কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই দাবি করেন। তিনি বলেন, ইমনকে নিয়ে আবার নতুন করে ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে।

গত ১০ জানুয়ারি রাতে মাল্টিপ্ল্যান সেন্টারের দুই কম্পিউটার ব্যবসায়ী নেতার ওপর হামলা চালায় দুর্বৃত্তরা। এরমধ্যে কম্পিউটার ব্যবসায়ী এহতেসামুল হককে প্রকাশ্য কোপানোর ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এ ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়ে ইমনের মা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের গাইনি বিভাগের সাবেক প্রধান ডা.

সুলতানা জাহান বলেন, হামলায় জড়িত সন্ত্রাসীদের দ্রুত খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনার জন্য জোর দাবি জানাচ্ছি।

হামলার ঘটনায় ইমনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে নিউমার্কেট থানায়। এর প্রতিবাদে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তার মা ডা. সুলতানা লিখিত বক্তব্যে বলেন, বিদেশে অবস্থান করা আমার ছেলে ইমনকে জড়িয়ে মিথ্যা মামলা ও প্রচারণা চালানো হচ্ছে। বিগত ফ্যাসিবাদ সরকারের সময় ইমন আওয়ামী লীগ নেতা ও মন্ত্রীদের রোষানলে পড়ে একাধিক মিথ্যা মামলায় অভিযুক্ত হন। বিনা বিচারে বছরের পর বছর কারাবন্দি ছিলেন। ৫ আগস্ট স্বৈরাচার সরকার পতন এবং বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর ও বিচারিক আদালতে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা হওয়ায় আদালত ইমনকে জামিনে মুক্তি দেন। এরপর তিনি বিদেশ চলে যান। এরপরও তার নামে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টা ও স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার কাছে ওই হামলার ঘটনার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত দাবি জানান তিনি।

ইমনের মায়ের প্রশ্ন- তার ছেলে যদি কারো কাছে চাঁদা দাবি করে থাকেন, তাহলে সেই তথ্য কেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে জানানো হয় না। তিনি অভিযোগ করেন, এই মামলার বাদী ওয়াহিদুল হাসান দিপু শীর্ষ সন্ত্রাসী পিচ্চি হেলালের আপন বড় ভাই। ৫ আগস্টের পর বছিলায় খুনের ঘটনায় হেলাল আসামি। এ ছাড়া মোহাম্মদপুরের সাবেক ৪৬ নম্বর ওয়ার্ডের কমিশনার বিএনপি নেতা রাজু হত্যার ২ নম্বর আসামি ওয়াহিদুল।

ডা. সুলতানার অভিযোগ, এলিফ্যান্ট রোডের কম্পিউটার ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সভাপতি নির্বাচনে শুধু একটা ফরম বিক্রি হয়েছে, অন্য কাউকে ফরম কিনতে দেয়নি এই পিচ্চি হেলাল। হেলাল সবাইকে হুমকি দিয়ে সভাপতি পদের ফরম কেনা থেকে বিরত রাখায় তার ভাই ওয়াহিদুল বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সভাপতি পদে বিজয়ী হন।

এ বিষয়ে ওয়াহিদুল হাসান দিপু সমকালকে বলেন, আমি ব্যবসা করে খাই। রাজু হত্যায় কোনোভাবেই জড়িত ছিলাম না। আমাকে হয়রানি করার জন্য জড়ানো হয়েছিল। অবশ্য ওই মামলা থেকে খালাস পেয়েছি।

তিনি বলেন, নিয়ম মেনেই এলিফ্যান্ট রোড কম্পিউটার ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির নির্বাচন হয়েছে। এর আগেও আমি নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক ছিলাম। তবে গত ২৮ ডিসেম্বরের নির্বাচনে তিনজন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ঘটন য় ইমন র র ঘটন

এছাড়াও পড়ুন:

জেলা কৃষকদলের নেতাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ও অপপ্রচারের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন 

নারায়ণগঞ্জ জেলা জাতীয়তাবাদী কৃষকদলের আহ্বায়ক কমিটির নেতাদের বিরুদ্ধে একটি পক্ষের ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা অপপ্রচারের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছেন জেলা কৃষকদলের আহ্বায়ক ডা. শাহীন মিয়া।

মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবে জেলা কৃষকদলের আহ্বায়ক ডা. শাহীন মিয়া আহ্বায়ক কমিটির নেতৃবৃন্দের সঙ্গে নিয়ে এই সংবাদ সম্মেলন করেন।

এসময়ে উপস্থিত ছিলেন, জেলা কৃষকদলের সদস্য সচিব আলম মিয়া, যুগ্ম আহ্বায়ক জুয়েল আরমান, ফজলু মেম্বার, মনির মল্লিক, শাহাদাত হোসেন, ওবায়দুর রহমান, শাহ আল বেপারী, সেলিম হোসেন দিপু।

সংবাদ সম্মেলনে শাহীন মিয়া বলেন, কোন চাঁদাবাজ, দখলবাজ ও স্বৈরাচারের দোসর এদের বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি'র যেকোনো অঙ্গ সংগঠনের পদে থাকতে পারে না। নারায়ণগঞ্জ জেলা জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের সভাপতি হিসেবে আমার সংগঠনে যারা চাঁদাবাজ, দখলবাজ স্বৈরাচারের দোসর আমি তাদেরকে বহিষ্কার করেছি। 

আওয়ামীলীগের সাথে শাহীনের সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ আনাদের ব্যাপারে পাল্টা তিনি বলেন, রূপগঞ্জ থানার সাবেক সভাপতি নজরুল ইসলামকে স্বৈরাচার আওয়ামী লীগের দোসর, দলীয় নেতাকর্মীদের নির্যাতন ও সাংগঠনিক দূর্বলতার কারণে তাকে ৩০ নভেম্বর ২০২৩ সালে সভাপতি পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়। 

এছাড়াও বিএনপির অসহযোগ আন্দোলনে নজরুলের কোন প্রকার সম্পৃক্ততা ছিল না। সে স্বৈরাচার শেখ হাসিনার শাসনামলে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম হত্যা মামলার আসামি রূপগঞ্জ ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান সালাউদ্দিনের যোগসাজসে রূপগঞ্জ ইউনিয়নের একাধিক মৌজার আবাদী জমিতে বালি ভরাট করে সাধারণ কৃষকের দুর্ভিক্ষের সৃষ্টি করেছিল। 

এছাড়াও অসহায় ও সাধারন মানুষের বসতবাড়ি সহ জবরদখল করে নেয় তারা। নজরুল দোসরদের আস্থাভাজন হওয়ার জন্য দলীয় নেতা-কর্মীদের উপর বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় নির্যাতন করেছিল। এভাবে বিগত ১৭ বছরে স্বৈরাচার সরকারের আস্থাভাজন হয়ে কোটি কোটি টাকা কামিয়েছেন এই নজরুল। সে হলো মৌসুমী পাখি। 

তিনি বলেন, ১৭ টি বছর জুলুম নির্যাতন সহ্য করে এই নারায়ণগঞ্জে কৃষক দলকে হাতের মুঠোয় রেখেছি আজ সেই কৃষক দলের ভাবমূতি ক্ষুন্ন করতে এই নজরুল স্বৈরাচারের সাথে হাত মিলিয়ে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে সংগঠনের মানহানি করেছে।

আমি এরই মিথ্যা সংবাদ সম্মেলনের প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং তার বিরুদ্ধে কৃষক দলের কেন্দ্রীয় পর্যায়ে থেকে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিনীত অনুরোধ জানাচ্ছি। বিষয়টি আমি আমার হাইকমান্ডকে অবগত করেছি।

তিনি আরও বলেন, রূপগঞ্জ ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি সার্জন মোমেনকে চাঁদাবাজি, দখলবাজি ও দলীয় শৃংখল বঙ্গের দায়ে ১০ই এপ্রিল সভাপতি পদ থেকে তাকে বহিষ্কার করা হয়। সে বিগত সতেরো বছর নেতাকর্মীদের নির্যাতন করে নিজের স্বার্থ হাসিল করেছে। ৫ ই আগস্টের পর ৪০ বিঘা জমির উপর মাছের প্রজেক্ট দখল করে প্রায় অর্ধ কোটি টাকা হাতিয়ে নেন মোমেন। 

স্বৈরাচার শেখ হাসিনার সময় সে বিভিন্ন ধরনের সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করেছেন তার নিজের জন্য। এখনো সে এলাকায় সাধারণ মানুষকে মামলার ভয় দেখিয়ে চাঁদাবাজি করছে এর যথেষ্ট প্রমাণ আমার কাছে এসেছে এবং অনেক সাধারণ মানুষ তার বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়েছে। যে সমস্ত মানুষ কোন দল করে না দল বুঝেনা। এ সমস্ত অভিযোগের কারণে তাকে তার পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, গতকাল নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবে নজরুলসহ কৃষকদলের বেশ কয়েকজন নেতা সংবাদ সম্মেলন করেন। এসময় শাহীনের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের লোকজনকে টাকার বিনিময়ে পুনর্বাসনসহ বেশ কিছু অভিযোগ  আনেন তারা।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জেলা কৃষকদলের নেতাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ও অপপ্রচারের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন