বশেমুরবিপ্রবিতে মেঘমল্লার বসুর গ্রেপ্তার দাবি
Published: 18th, January 2025 GMT
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি মেঘমল্লার বসু লাল সন্ত্রাসের ডাক দেওয়ায় তার গ্রেপ্তার এবং ছাত্র ইউনিয়নকে নিষিদ্ধের দাবিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বশেমুরবিপ্রবি) বিক্ষোভ মিছিল করা হয়েছে।
শনিবার (১৮ জানুয়ারি) সন্ধ্যা ৬টায় বশেমুরবিপ্রবি সাধারণ শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে আয়োজিত এ বিক্ষোভ মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ে লিপুচ ক্যান্টিন থেকে শুরু হয়ে ক্যাম্পাসের গুরুত্বপূর্ণ স্থান প্রদক্ষিণ করে জয় বাংলা চত্বরে এসে সমাবেশে মিলিত হয়।
এ সময় তারা ‘লাল সন্ত্রাসীর ঠিকানা, এই ক্যাম্পাসে হবে না’, ‘লাল সন্ত্রাসী, জঙ্গি বসু’, ‘জঙ্গিবাদের ঠিকানা, এই ক্যাম্পাসে হবে না’, ‘দিকে দিকে খবর দে, জঙ্গিবাদের কবর দে’, ‘উদ্যানের গাঁজাখোর, উদ্যানে ফিরে যা’, ‘একশন টু একশন, লাল সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে একশন’, ‘অ্যাকশন টু একশন, বাম রাজনীতির বিরুদ্ধে অ্যাকশন’, ‘অ্যাকশন টু একশন, শাহবাগীদের বিরুদ্ধে একশন’, ‘জঙ্গি বসুর ঠিকানা, এই ক্যাম্পাসে হবে না’, ‘হৈ হৈ রই রই, মেঘ মল্লার গেলি কই’, ‘জঙ্গি বসু, গোসল দে’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।
সমাবেশে ফার্মেসি বিভাগের ১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী শাহিনুর রহমান বলেন, “ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি মেঘমল্লার বসু ফেসবুক পোস্ট এবং লাইভের মাধ্যমে লাল সন্ত্রাসের ডাক দিয়েছে। বর্তমানে বাংলাদেশে আওয়ামী স্বৈরাচার ফ্যাসিস্টের যে আস্তানা, তার আশ্রয়দাতা হলো এ লাল সন্ত্রাসীরা। তারা আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসন করার জন্য কাজ করছে। আওয়ামী লীগকে এরাই স্বৈরাচার হতে সহযোগিতা করেছে। আওয়ামী লীগের অন্যতম সহযোগী ছিল তারা। এরাই ইসলামি দলগুলোকে জঙ্গি ট্যাগ দিয়েছিল। এই লাল সন্ত্রাসীকে অতিদ্রুত গ্রেপ্তার করে শাস্তির মুখোমুখি করার দাবি জানায়।”
পরিবেশ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের ১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আবু দারদা বলেন, “ভারত উপমহাদেশে এ লাল সন্ত্রাসী সংগঠন ছাত্র ইউনিয়ন প্রথম ছাত্র হত্যার রাজনীতি শুরু করে। তাদের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বলে তারা জঙ্গি। ১৯৬৯ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের এই লাল সন্ত্রাসীরা অস্ত্র দিয়ে তিনজন শিক্ষার্থীকে হত্যার মাধ্যমে প্রমাণ করেছে এরা জঙ্গি। তাদের একটাই পরিচয় তারা জঙ্গি।”
তিনি বলেন, “আওয়ামী লীগের ফ্যাসিস্ট আমলে সব স্থানে এরা ঘাপটি মেরে থেকেছে এবং প্রত্যেকটা জায়গায় তাদের কূটকৌশলের মাধ্যমে এ দেশকে ষড়যন্ত্রের মধ্যে ফেলে দিয়েছে। তাদের এসব ষড়যন্ত্র এখন থেকে ছাত্র জনতা রুখে দেবে।”
তিনি আরও বলেন, “তারা আমাদের এ বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থীকে ট্যাগ দিয়ে ধরিয়ে দিয়েছিল। আজ কেন তাদের গ্রেফতার করা হচ্ছে না, প্রশাসনের কাছে জানতে চাই। দ্রুত তাদের গ্রেপ্তার করতে হবে। তারা সব সময় এ দেশের মুসলমানদের নিয়ে ষড়যন্ত্র করেছে। তারা বলেছে ডানপন্থীদের কাছে নাকি এ দেশ সেভ না। আমি বলতে চাই বামপন্থিদের কাছে এই দেশ সেভ কখনো ছিল না এবং থাকবেও না।”
ছাত্র ইউনিয়নকে ফ্যাসিবাদের এক নাম্বার দোসর বলে উল্লেখ করে তিনি অতিদ্রুত এই মেঘমল্লার বসুকে গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্ত শাস্তির দাবি জানান।
শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি মেঘমল্লার বসু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে নিজের টাইমলাইনে এক ইংরেজি বার্তায় উল্লেখ করেন, ‘লাল সন্ত্রাসই একমাত্র পথ বা উপায়।’
ঢাকা/রিশাদ/মেহেদী
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ত র কর আওয় ম
এছাড়াও পড়ুন:
নির্বাচন বাতিলের সব ষড়যন্ত্র রুখে দেওয়ার আহ্বান সিপিবির
আগামী জাতীয় নির্বাচন ঘিরে ‘নির্বাচন বাতিল বা বিলম্বের ষড়যন্ত্র’ রুখে দিতে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)। দলটি বলেছে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন ও শোষণমুক্ত সমাজ গড়তে হলে সাম্রাজ্যবাদ ও পুঁজিবাদবিরোধী আন্দোলনকে জোরদার করতে হবে।
শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর মিরপুরের ঈদগাহ মাঠসংলগ্ন সেনপাড়ায় সিপিবি ঢাকা মহানগর উত্তরের উদ্যোগে আয়োজিত জনসভায় এ আহ্বান জানানো হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন মহানগর উত্তরের সভাপতি হাসান হাফিজুর রহমান এবং সভা পরিচালনা করেন সংগঠনের এই শাখার সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য ফেরদৌস আহমেদ।
সভায় প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিপিবির সভাপতি কাজী সাজ্জাদ জহির। আরও বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন, কেন্দ্রীয় সদস্য ও মহানগর উত্তরের সাবেক সভাপতি আহাম্মদ সাজেদুল হক, মহানগর উত্তরের সাধারণ সম্পাদক লূনা নূর, সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য মোতালেব হোসেন ও মহানগর কমিটির সদস্য রিয়াজ উদ্দিন।
সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে কাজী সাজ্জাদ জহির বলেন, মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে অর্জিত চার মূলনীতি সমুন্নত রাখতে হবে। শোষণ ও বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠার সংগ্রামকে বেগবান করতে শ্রমিক, কৃষক, যুব ও নারী সমাজকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে মাঠে নামতে হবে। বামপন্থীদের সরকার গঠন করতে সব দেশপ্রেমিক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। তাঁদের নেতৃত্বেই আগামী দিনের ক্ষমতায় লড়াইকে অগ্রসর করতে হবে।
সিপিবির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রুহিন হোসেন বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে যাদের অবস্থান ছিল, আজ তারাই রাষ্ট্র ও সমাজের বিভিন্ন স্তরে পৃষ্ঠপোষকতা পাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে কেবল ক্ষমতার পরিবর্তন নয়, ব্যবস্থার পরিবর্তনই সময়ের দাবি। কমিউনিস্টরা সেই ব্যবস্থার পরিবর্তনের সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে। আমরা আহ্বান জানাই, গণতন্ত্রের প্রথম শর্ত হলো নিরপেক্ষ ও সময়োপযোগী নির্বাচন। আগামীকাল থেকেই আমরা জাতীয় নির্বাচনের কাউন্টডাউন (ক্ষণগণনা) দেখতে চাই।’
নির্বাচনের কাউন্টডাউন শুরু না হলে জনগণের মধ্যে অনিশ্চয়তা বাড়বে বলে উল্লেখ করেন রুহিন হোসেন। তিনি বলেন, ‘গণতন্ত্রের প্রথম শর্ত হলো নিরপেক্ষ ও সময়োপযোগী নির্বাচন। সরকারকে দ্রুত নির্বাচনের নির্দিষ্ট তারিখ ঘোষণা করতে হবে। কমিউনিস্টরা ক্ষমতায় গিয়ে দুর্নীতি, লুটপাট ও শোষণের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা বদলের সংগ্রামকে জনগণের আন্দোলনে রূপ দেবে।’
সাম্রাজ্যবাদী শক্তি ও তাদের দেশীয় দোসরদের হাতে দেশের সম্পদ লুট হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন সিপিবির ঢাকা মহানগর উত্তরের সাবেক সভাপতি আহাম্মদ সাজেদুল হক। তিনি বলেন, বাংলাদেশের জনগণ এখনো অনিশ্চিত যে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে কি না। কারণ, বর্তমান সরকার এখনো সুনির্দিষ্টভাবে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করেনি। জনগণ আজ অর্থনৈতিক সংকট, বৈষম্য ও দুর্নীতির শিকার। একদিকে জনগণের ঘামঝরানো টাকায় দেশ চলছে, অন্যদিকে সাম্রাজ্যবাদী শক্তি ও তাদের দোসররা দেশের সম্পদ লুট করছে। সমুদ্রবন্দর, গ্যাস, বিদ্যুৎ, টেলিযোগাযোগসহ জাতীয় সম্পদ বিদেশিদের হাতে তুলে দেওয়ার চক্রান্ত চলছে। এটি দেশের সার্বভৌমত্ব ও স্বাধীনতার ওপর সরাসরি আঘাত।