নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লায় শ্রমিকরা দুটি পোশাক কারখানায় ভাঙচুর চালিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। গতকাল রোববার দুপুরে ফতুল্লার শাসনগাঁও এলাকার মাদার কালার ও আরএস গার্মেন্ট কারখানায় এ ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। এ সময় ঢাকা-মুন্সীগঞ্জ সড়কে প্রায় আধ ঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ থাকে।
প্রত্যক্ষদর্শী আরএস গার্মেন্টের শ্রমিক রুকাইয়া আক্তার ও শাহিনা বেগম জানান, শনিবার মাদার কালার গার্মেন্টের এক শ্রমিককে মারধর করেন কারখানার সুপারভাইজার। এর জের ধরে রোববার দুপুর ১২টার দিকে মাদার কালারের বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা লোহার পাইপ, লাঠিসোটা নিয়ে প্রথমে নিজেদের গার্মেন্ট ভাঙচুর করে। পরে পাশের আরএস নামে একটি কারখানার শ্রমিকদের নামিয়ে আনার চেষ্টা করে। কিন্তু ডাকে সাড়া না দেওয়ায় আরএস গার্মেন্টেও হামলা চালায়। খবর পেয়ে ফতুল্লা থানা পুলিশ, সেনাবাহিনী ও বিজিবি এসে বিক্ষুদ্ধ শ্রমিকদের ধাওয়া করে। দুপুরের পরে পরিস্থিতি শান্ত হয়। তবে এ ঘটনায় কেউ হতাহত হয়নি।
মাদার কালার গার্মেন্টের গেটে ছুটির নোটিশ টানানো হয়েছে। পরিস্থিতি অনুকূলে এলে কারখানাটি খোলা হবে বলে জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার শাহনেওয়াজ। তবে শ্রমিকদের অভিযোগ বিনা কারণে মালিকপক্ষ একজন শ্রমিককে মারধর করেন।
অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যাডমিন ম্যানেজার শাহনেওয়াজ জানান, রিপন নামে এক অপারেটর চার দিন অনুপস্থিত থাকার কারণে শনিবার লাইন সুপারভাইজার মিজান তাঁকে ধমক দিয়ে কথা বলেন। এতে ক্ষুব্ধ রিপন সুপারভাইজার মিজানকে মারধর করেন। মিজান ও রিপনের মধ্যে হাতাহাতি হয়। শনিবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে অপারেটর রিপন অন্য শ্রমিকদের সঙ্গে নিয়ে পুনরায় সুপারভাইজার মিজানকে মারধর করেন। রোববার সকালে কারখানা কর্তৃপক্ষ দুই শ্রমিককে ডেকে নিয়ে কথা বলে। এ সময় গুজব রটানো হয়, অপারেটর রিপনকে মালিকপক্ষ মারধর করে আটকে রেখেছে। এতে শ্রমিকরা উত্তেজিত হয়ে উঠলে মাদার কালার কর্তৃপক্ষ গার্মেন্ট ছুটি দিয়ে দেয়। উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে আরএস গার্মেন্টেও। বাধ্য হয়ে সেই কারখানাও ছুটি দেওয়া হয়।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
বেড়েছে মাছ, মুরগি ও ডিমের দাম
উৎপাদন ও বাজারে সরবরাহ কম থাকায় বেড়েছে ডিমের দাম। বিক্রেতারা বলছেন, উৎপাদন কম হওয়ায় খামারিরা মুরগি বিক্রি করে দিচ্ছেন এবং টানা বৃষ্টিপাতের জন্য সরবরাহ ব্যাহত হচ্ছে।
শুক্রবার (১ আগস্ট) রাজধানীর নিউ মার্কেট, রায়েরবাজারসহ গুরুত্বপূর্ণ বাজারগুলো ঘুরে ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত সপ্তাহে ফার্মের মুরগির ডিম বিক্রি হয়েছে প্রতি ডজন ১২০ টাকায়, এ সপ্তাহে তা বিক্রি হচ্ছে ১৩০ থেকে ১৩৫ টাকায়। সেই হিসেবে ডিমের দাম বেড়েছে ১০ থেকে ১৫ টাকা।
সবজির দাম স্বাভাবিক
এ সপ্তাহে বাজারে টমেটো ছাড়া অন্যান্য সবজির দাম স্বাভাবিক আছে। গত সপ্তাহে টমেটো বিক্রি হয়েছিল ১২০ থেকে ১৩০ টাকায়, এ সপ্তাহে বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকায়। কাঁচামরিচ ২০০ টাকা, শশা ৭০ টাকা, বেগুন ৭০ থেকে ৮০ টাকা, করলা ৭০ টাকা, গাজর (দেশি) ১২০ থেকে ১৩০ টাকা, চিচিঙ্গা ৪০ টাকা, বরবটি ৭০ থেকে ৮০ টাকা, ঢেঁড়স ৪০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৩০ টাকা, পটল ৫০ টাকা, কাকরোল ৬০ টাকা, কচুরমুখী ৬০ টাকা, প্রতিটি পিস জালি কুমড়া ৫০ টাকা এবং লাউ ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
মুদিবাজারে চালসহ অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম স্থিতিশীল আছে। তবে, পেঁয়াজের দাম সামান্য বেড়েছে। এ সপ্তাহে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা কেজি দরে। গত সপ্তাহে ৫৫ টাকায় কেজিতে বিক্রি হয়েছে। প্রতি কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ২৫ থেকে ৩০ টাকায়। রসুন ১৮০ থেকে ২০০ টাকা এবং দেশি আদা ১৭০ থেকে ১৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বেড়েছে মাছ ও মুরগির দাম
বিক্রেতারা বলছেন, নদীতে পানি বৃদ্ধির জন্য জেলেদের জালে মাছ কম ধরা পড়ছে এবং উজানের পানিতে খামারিদের পুকুর ও ঘের তলিয়ে যাওয়ায় মাছের দাম বেড়েছে। বাজারে এখন মাঝারি সাইজের চাষের রুই মাছ বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে থেকে ৩৫০ টাকায়। চাষের পাঙাসের কেজি ২০০ থেকে ২২০ টাকা, তেলাপিয়া ২০০ থেকে ২২০ টাকা, মাঝারি সাইজ কৈ মাছ ২৫০ থেকে ২৮০ টাকা, দেশি শিং ৬৫০ থেকে ৭০০ টাকা, বড় সাইজের পাবদা ৬০০ টাকা, চিংড়ি ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা, দেশি পাঁচমিশালি ছোট মাছ ৬০০ টাকা এবং এক কেজির বেশি ওজনের ইলিশ মাছ বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৫০০ থেকে ২ হাজার ৬০০ টাকায়।
এ সপ্তাহে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা, যা গত সপ্তাহ ছিল ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা। সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকায়। গরুর মাংস ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকা এবং খাসির মাংস ১ হাজার ১৫০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
ঢাকা/রায়হান/রফিক